Prothomalo:
2025-08-15@16:27:00 GMT

পরের জায়গা পরের জমি

Published: 1st, July 2025 GMT

ইয়েমেনের সানা অঞ্চলে এক ধনী লোক বসবাস করতেন। তিনি ছিলেন বেশ দানশীল ও আল্লাহওয়ালা। তাঁর বিশাল এক বাগান ছিল। বাগান থেকে যে ফলমূল ও শস্য উৎপন্ন হতো, তিনি তা থেকে গরিব-মিসকিনদের দান করতেন।

একদিন তিনি ইন্তেকাল করেন। এরপর বাগানের মালিকানা সন্তানদের হাতে চলে যায়।

কিন্তু তাঁরা মোটেও বাবার মতো উদার মনের ছিলেন না। তাঁরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করলেন, ‘বাগান থেকে যে পরিমাণ ফলমূল আসে, এতে তো আমাদের সংসারই চলে না, গরিব-মিসকিনদের দান করব কোত্থেকে?’

সেদিন রাতে তাঁরা যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, তাঁদের বাগানের ওপর আল্লাহর আজাব নেমে আসে। মুহূর্তেই পুরো বাগান পুড়ে ছারখার হয়ে যায়।আরও পড়ুনকোরআনের সবচেয়ে চমৎকার কাহিনি১৭ মে ২০২৫

তাঁরা নিয়ত করে একদম সকাল-সকাল বাগানে গিয়ে সব ফলমূল পেড়ে আনবেন, গরিব-মিসকিনরা যেন মোটেও টের না পান, তাহলে তাঁরা এসে ভিড় জমাবেন। কিন্তু তাঁরা যখন এই কথা বলেন, ‘একদম সকালেই বাগানে যাব’, তখন ‘ইনশাআল্লাহ’ বলেননি।

সম্পদের মোহে তাঁরা ভুলে গিয়েছিলেন সবকিছুর মালিক আল্লাহ তাআলা। ভাবখানা এমন ছিল, ‘আমাদের সম্পদ আমরাই আনতে যাব, এখানে আল্লাহর নাম নেওয়ার কী আছে।’ কিন্তু তাঁরা জানতেন না তাঁদের ভাগ্যে কী লেখা আছে।

সেদিন রাতে তাঁরা যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, তাঁদের বাগানের ওপর আল্লাহর আজাব নেমে আসে। মুহূর্তেই পুরো বাগান পুড়ে ছারখার হয়ে যায়। বোঝারই উপায় নেই গতকাল এখানে এক সবুজ-শ্যামল মনোরম বাগান ছিল।

সকালবেলা তাঁরা একে অপরকে ডেকে বললেন, ‘বাগানে যেতে চাইলে এখনই চলো, আর আস্তে আস্তে কথা বলবে, গরিব-মিসকিনরা যেন (আমাদের কথা শুনে) বাগানে আসতে না পারে।’

তাঁরা বাগানে ঢুকে দেখলেন সেখানে কিছুই নেই। তাঁরা বললেন, ‘আমরা বোধ হয় ভুল পথে চলে এসেছি।’ কিন্তু আশপাশ দেখে যখন বুঝলেন তাঁরা ঠিক জায়গাতেই এসেছেন, তখন বললেন, ‘হায়, আমাদের তো সব শেষ!’

আরও পড়ুনকোরআনের প্রজ্ঞাবান ব্যক্তি২৬ মে ২০২৫

তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন অন্যদের চেয়ে ভালো। তিনি বললেন, ‘আমি কি তোমাদের বলিনি, তোমরা আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছ না কেন?’

তাঁরা বললেন, ‘আমরা আমাদের রবের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছি। নিশ্চয় আমরা জালেম ছিলাম।’ (সুরা কলম, আয়াত: ২৯)

তাঁরা যখন এই কথা বলেন, ‘একদম সকালেই বাগানে যাব’, তখন ‘ইনশাআল্লাহ’ বলেননি। সম্পদের মোহে তাঁরা ভুলে গিয়েছিলেন সবকিছুর মালিক আল্লাহ তাআলা।

এভাবে তাঁরা নিজেদের ভুল বুঝতে পারলেন এবং মন থেকে তওবা করে সৎপথে ফিরে এলেন। তাঁরা বললেন, ‘দুর্ভোগ আমাদের, নিশ্চয় আমরা সীমালঙ্ঘনকারী ছিলাম। আমরা আশা রাখি, আমাদের প্রতিপালক এর পরিবর্তে আমাদেরকে আরও উন্নত বাগান দান করবেন। (তাই) আমরা আমাদের প্রতিপালকের দিকে ফিরে যাচ্ছি।’ (সুরা কলম, আয়াত: ৩১-৩২)

আসলে এই দুনিয়ায় যা আছে সবই আল্লাহর, আমরা কোনো কিছুরই প্রকৃত মালিক নই। শাহ ওলিউল্লাহ দেহলবি (রহ.

) বলেন, ‘সবকিছুর প্রকৃত মালিক আল্লাহ। অন্য কারও প্রকৃত মালিকানা দাবির কোনো অধিকার নেই।

তবে আল্লাহ মানবজাতিকে এই পৃথিবী থেকে উপকৃত হওয়ার সুযোগ দিয়েছেন। আর মানুষে মানুষে সংঘাত শুরু হলে তিনি ‘উপকৃত হওয়ার’ মালিকানা দান করেন।’ (রহমাতুল্লাহিল ওয়াসিয়া শরহে হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা, ৪/৫২২, প্রকাশনী: মাকতাবায়ে হেজায, দেওবন্দ)

আরও পড়ুনআদ জাতি ও ইরাম নগরী ধ্বংসের কাহিনি১৪ জুন ২০২৫

এর মানে আল্লাহ তাআলা আমাদের জায়গাজমি ও সহায়-সম্পত্তি সাময়িক ভোগ করার সুযোগ দিয়েছেন। তিনি চাইলেই আবার তা ফিরিয়ে নিতে পারবেন। এই যে মানুষে মানুষে এত হানাহানি ও পুঁজির লড়াই, এর সবই কিন্তু দুনিয়া নিয়ে।

অথচ কী আশ্চর্য, আমরা এর কোনো কিছুরই মালিক নই। আল্লাহর দেওয়া নেয়ামত ভোগ করে আল্লাহর কথাই অমান্য করছি, তাঁর আদেশ-নিষেধ পালন করছি না, উল্টো তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করছি।

আল্লাহ আমাদের ‘ইচ্ছাশক্তি’ দিয়েছেন। আমরা চাইলে যেমন সৎপথে চলতে পারি, আবার চাইলে সীমালঙ্ঘন করতে পারি। কিন্তু দ্বিতীয় পথ অবলম্বনের পরিণতি সুখকর নয়। এর ফলে আমরা যেমন দুনিয়া হারাব, আবার পরকালেও শাস্তি ভোগ করতে হবে।

তাই আমাদের উচিত আল্লাহর দেওয়া নেয়ামতের সঠিক ব্যবহার করা, আল্লাহর হক ও বান্দার হক—দুটিই আদায় করা। ধনী কিংবা গরিব যা-ই হই না কেন, মানুষের সহায়তায় এগিয়ে যাব, কেবল নিজের স্বার্থ দেখব না। প্রয়োজনে নিজের ভাগ থেকে ছেড়ে দেব, তবু অন্যের ভাগ কেড়ে নিয়ে জালেমের কাতারে নাম লেখাব না।

আরও পড়ুনসুরা সাবায় আছে সাবাবাসীর কাহিনি১৯ মার্চ ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ ন কর আল ল হ আম দ র বলল ন

এছাড়াও পড়ুন:

শনিবার ঢাকার যেসব সড়ক এড়িয়ে চলাচলের অনুরোধ ডিএমপির

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন অর্থাৎ জন্মাষ্টমী শনিবার (১৬ আগস্ট)। এদিন ঢাকার বেশকিছু সড়ক বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত যথাসম্ভব এড়িয়ে চলাচল করার অনুরোধ জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।

শুক্রবার (১৫ আগস্ট) ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী স্বাক্ষরিত এক গণবিজ্ঞপ্তিতে এই অনুরোধ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ১৬ আগস্ট (শনিবার) সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন (জন্মাষ্টমী) অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে ঢাকার বেশকিছু সড়ক বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত এড়িয়ে চলার অনুরোধ করা হলো।

আরো পড়ুন:

সড়ক দুর্ঘটনায় কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপি নেতার ছেলে নিহত

পঞ্চগড়ে রাতভর বর্ষণে স্লুইসগেটের সংযোগ সড়কে ধস

যেসব রুটে হবে জন্মাষ্টমীর শোভাযাত্রা: শ্রী শ্রী ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির-পলাশী বাজার-জগন্নাথ হল-কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার-দোয়েল চত্বর-হাইকোর্ট-বঙ্গবাজার-ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ভবন-গোলাপশাহ মাজার-গুলিস্থান মোড়-নবাবপুর রোড-রায় সাহেব বাজার মোড় হয়ে বাহাদুর শাহ্ পার্ক। এসব রোড এড়িয়ে চলাচলের অনুরোধ করেছে ডিএমপি।

গণবিজ্ঞপ্তিতে যেসব নির্দেশনা অনুসরণ করার অনুরোধ করা হয়েছে

১. উল্লিখিত শোভাযাত্রার রুটে কোনো ধরনের যানবাহন পার্কিং করা যাবে না।

২. উচ্চস্বরে পিএ/সাউন্ড সিস্টেম বাজানো থেকে বিরত থাকতে হবে।

৩. অংশগ্রহণেচ্ছুদদের প্রারম্ভেই শোভাযাত্রায় মিলিত হতে হবে কোনো ক্রমেই মাঝপথে শোভাযাত্রায় যোগ দেওয়া যাবে না।

৪. নিরাপত্তার স্বার্থে হ্যান্ড ব্যাগ, ট্রলি, বড় ভ্যানিটি ব্যাগ, পোটলা, দাহ্য পদার্থ, চুরি, অস্ত্র, কাঁচি, ক্ষয়কারক তরল, ব্রেড, দিয়াশলাই, গ্যাসলাইটার ইত্যাদি সঙ্গে নিয়ে শোভাযাত্রায় অংশ নেওয়া যাবে না।

৫. শোভাযাত্রা চলাকালীন রুটে কোনো ধরনের ফলমূল ছোড়া যাবে না।

৬. শোভাযাত্রা চলাকালীন রাস্তায় অহেতুক দাঁড়িয়ে থেকে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা যাবে না।

৭. সন্দেহজনক কোনো ব্যক্তি বা বস্তু পরিলক্ষিত হলে তাৎক্ষণিক নিকটস্থ পুলিশকে অবহিত করুন।

৮. শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীদের স্বেচ্ছাসেবক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশনা মেনে চলার জন্য অনুরোধ করা হলো।

৯. ব্যারিকেড, পিকেট ও আর্চওয়ে ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত পুলিশকে দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা করুন।

শোভাযাত্রা চলাকালীন নগরবাসীকে পুলিশের নির্দেশিত বিকল্প সড়কে চলাচল করতে অনুরোধ করা হয়েছে।

এছাড়া জন্মাষ্টমী শোভাযাত্রা যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসবমুখর পরিবেশে উদযাপনের লক্ষ্যে সবার সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেছে ডিএমপি।

ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ