Prothomalo:
2025-11-17@09:27:54 GMT

পরের জায়গা পরের জমি

Published: 1st, July 2025 GMT

ইয়েমেনের সানা অঞ্চলে এক ধনী লোক বসবাস করতেন। তিনি ছিলেন বেশ দানশীল ও আল্লাহওয়ালা। তাঁর বিশাল এক বাগান ছিল। বাগান থেকে যে ফলমূল ও শস্য উৎপন্ন হতো, তিনি তা থেকে গরিব-মিসকিনদের দান করতেন।

একদিন তিনি ইন্তেকাল করেন। এরপর বাগানের মালিকানা সন্তানদের হাতে চলে যায়।

কিন্তু তাঁরা মোটেও বাবার মতো উদার মনের ছিলেন না। তাঁরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করলেন, ‘বাগান থেকে যে পরিমাণ ফলমূল আসে, এতে তো আমাদের সংসারই চলে না, গরিব-মিসকিনদের দান করব কোত্থেকে?’

সেদিন রাতে তাঁরা যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, তাঁদের বাগানের ওপর আল্লাহর আজাব নেমে আসে। মুহূর্তেই পুরো বাগান পুড়ে ছারখার হয়ে যায়।আরও পড়ুনকোরআনের সবচেয়ে চমৎকার কাহিনি১৭ মে ২০২৫

তাঁরা নিয়ত করে একদম সকাল-সকাল বাগানে গিয়ে সব ফলমূল পেড়ে আনবেন, গরিব-মিসকিনরা যেন মোটেও টের না পান, তাহলে তাঁরা এসে ভিড় জমাবেন। কিন্তু তাঁরা যখন এই কথা বলেন, ‘একদম সকালেই বাগানে যাব’, তখন ‘ইনশাআল্লাহ’ বলেননি।

সম্পদের মোহে তাঁরা ভুলে গিয়েছিলেন সবকিছুর মালিক আল্লাহ তাআলা। ভাবখানা এমন ছিল, ‘আমাদের সম্পদ আমরাই আনতে যাব, এখানে আল্লাহর নাম নেওয়ার কী আছে।’ কিন্তু তাঁরা জানতেন না তাঁদের ভাগ্যে কী লেখা আছে।

সেদিন রাতে তাঁরা যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, তাঁদের বাগানের ওপর আল্লাহর আজাব নেমে আসে। মুহূর্তেই পুরো বাগান পুড়ে ছারখার হয়ে যায়। বোঝারই উপায় নেই গতকাল এখানে এক সবুজ-শ্যামল মনোরম বাগান ছিল।

সকালবেলা তাঁরা একে অপরকে ডেকে বললেন, ‘বাগানে যেতে চাইলে এখনই চলো, আর আস্তে আস্তে কথা বলবে, গরিব-মিসকিনরা যেন (আমাদের কথা শুনে) বাগানে আসতে না পারে।’

তাঁরা বাগানে ঢুকে দেখলেন সেখানে কিছুই নেই। তাঁরা বললেন, ‘আমরা বোধ হয় ভুল পথে চলে এসেছি।’ কিন্তু আশপাশ দেখে যখন বুঝলেন তাঁরা ঠিক জায়গাতেই এসেছেন, তখন বললেন, ‘হায়, আমাদের তো সব শেষ!’

আরও পড়ুনকোরআনের প্রজ্ঞাবান ব্যক্তি২৬ মে ২০২৫

তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন অন্যদের চেয়ে ভালো। তিনি বললেন, ‘আমি কি তোমাদের বলিনি, তোমরা আল্লাহর পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছ না কেন?’

তাঁরা বললেন, ‘আমরা আমাদের রবের পবিত্রতা ও মহিমা ঘোষণা করছি। নিশ্চয় আমরা জালেম ছিলাম।’ (সুরা কলম, আয়াত: ২৯)

তাঁরা যখন এই কথা বলেন, ‘একদম সকালেই বাগানে যাব’, তখন ‘ইনশাআল্লাহ’ বলেননি। সম্পদের মোহে তাঁরা ভুলে গিয়েছিলেন সবকিছুর মালিক আল্লাহ তাআলা।

এভাবে তাঁরা নিজেদের ভুল বুঝতে পারলেন এবং মন থেকে তওবা করে সৎপথে ফিরে এলেন। তাঁরা বললেন, ‘দুর্ভোগ আমাদের, নিশ্চয় আমরা সীমালঙ্ঘনকারী ছিলাম। আমরা আশা রাখি, আমাদের প্রতিপালক এর পরিবর্তে আমাদেরকে আরও উন্নত বাগান দান করবেন। (তাই) আমরা আমাদের প্রতিপালকের দিকে ফিরে যাচ্ছি।’ (সুরা কলম, আয়াত: ৩১-৩২)

আসলে এই দুনিয়ায় যা আছে সবই আল্লাহর, আমরা কোনো কিছুরই প্রকৃত মালিক নই। শাহ ওলিউল্লাহ দেহলবি (রহ.

) বলেন, ‘সবকিছুর প্রকৃত মালিক আল্লাহ। অন্য কারও প্রকৃত মালিকানা দাবির কোনো অধিকার নেই।

তবে আল্লাহ মানবজাতিকে এই পৃথিবী থেকে উপকৃত হওয়ার সুযোগ দিয়েছেন। আর মানুষে মানুষে সংঘাত শুরু হলে তিনি ‘উপকৃত হওয়ার’ মালিকানা দান করেন।’ (রহমাতুল্লাহিল ওয়াসিয়া শরহে হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা, ৪/৫২২, প্রকাশনী: মাকতাবায়ে হেজায, দেওবন্দ)

আরও পড়ুনআদ জাতি ও ইরাম নগরী ধ্বংসের কাহিনি১৪ জুন ২০২৫

এর মানে আল্লাহ তাআলা আমাদের জায়গাজমি ও সহায়-সম্পত্তি সাময়িক ভোগ করার সুযোগ দিয়েছেন। তিনি চাইলেই আবার তা ফিরিয়ে নিতে পারবেন। এই যে মানুষে মানুষে এত হানাহানি ও পুঁজির লড়াই, এর সবই কিন্তু দুনিয়া নিয়ে।

অথচ কী আশ্চর্য, আমরা এর কোনো কিছুরই মালিক নই। আল্লাহর দেওয়া নেয়ামত ভোগ করে আল্লাহর কথাই অমান্য করছি, তাঁর আদেশ-নিষেধ পালন করছি না, উল্টো তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করছি।

আল্লাহ আমাদের ‘ইচ্ছাশক্তি’ দিয়েছেন। আমরা চাইলে যেমন সৎপথে চলতে পারি, আবার চাইলে সীমালঙ্ঘন করতে পারি। কিন্তু দ্বিতীয় পথ অবলম্বনের পরিণতি সুখকর নয়। এর ফলে আমরা যেমন দুনিয়া হারাব, আবার পরকালেও শাস্তি ভোগ করতে হবে।

তাই আমাদের উচিত আল্লাহর দেওয়া নেয়ামতের সঠিক ব্যবহার করা, আল্লাহর হক ও বান্দার হক—দুটিই আদায় করা। ধনী কিংবা গরিব যা-ই হই না কেন, মানুষের সহায়তায় এগিয়ে যাব, কেবল নিজের স্বার্থ দেখব না। প্রয়োজনে নিজের ভাগ থেকে ছেড়ে দেব, তবু অন্যের ভাগ কেড়ে নিয়ে জালেমের কাতারে নাম লেখাব না।

আরও পড়ুনসুরা সাবায় আছে সাবাবাসীর কাহিনি১৯ মার্চ ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: দ ন কর আল ল হ আম দ র বলল ন

এছাড়াও পড়ুন:

বগুড়ায় গ্রামীণ ব্যাংকের শাখায় পেট্রল ঢেলে আগুন

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় গ্রামীণ ব্যাংকের গোসাইবাড়ী ইউনিয়ন শাখা কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ সোমবার ভোরে গ্রামীণ ব্যাংকের ওই শাখা ভবনের বারান্দায় পেট্রল আগুন দেওয়া হয়। এতে ব্যাংকের বৈদ্যুতিক তার পুড়ে গিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ ছাড়া বারান্দায় একটি ব্যানার, ক্যারম বোর্ড ও আসবাব আগুনে পুড়ে যায়।

ধুনট থানা-পুলিশ ও গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, আজ ভোরে দুর্বৃত্তরা গ্রামীণ ব্যাংকের ওই শাখার কার্যালয়ের বারান্দায় পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা বালু ও পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। খবর পেয়ে সকাল ১০টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শেরপুর-ধুনট সার্কেল) সজীব শাহরীন ও ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

ব্যাংকের নৈশপ্রহরী শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রাতে বারান্দায় সতর্ক অবস্থায় ছিলাম। রাত তিনটা থেকে সাড়ে তিনটার দিকে হঠাৎ বারান্দায় আগুনের লেলিহান শিখা দেখতে পাই। দুর্বৃত্তরা পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।’

শাখাটির ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা বলেন, রাতে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত থাকা নৈশপ্রহরী সামান্য সময়ের জন্য বারান্দা থেকে একটি কক্ষের ভেতরে যান। এ সুযোগে দুর্বৃত্তরা বারান্দায় অগ্নিসংযোগ করে দ্রুত পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। আগুনে বড় রকমের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আগে থেকেই বালু ও পানি মজুত ছিল। আজ সকাল থেকে যথারীতি ব্যাংকের কার্যক্রম চলছে।

ধুনট থানার ওসি সাইদুল আলম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে নাশকতাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজীব শাহরীন বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে দুর্বৃত্তদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ধুনট থানার পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ