১৬ দিন ধরে বন্ধ আটলংকা বাজারের ২০টি দোকান
Published: 19th, October 2025 GMT
ঈদগাহ মাঠ নিয়ে দুই গ্রামের দ্বন্দ্বের জেরে গত ১৬ দিন ধরে বন্ধ স্থানীয় বাজারের অন্তত ২০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন ব্যবসায়ীরা। পরিবার নিয়ে কষ্টে দিন কাটছে তাদের। অনেকে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পেরে পড়েছেন বিপাকে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ঈদগাহ মাঠ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে এক গ্রাম দিয়ে অন্য গ্রামের মানুষদের চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যেতে দেওয়া হচ্ছে না বাজারে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় নষ্ট হচ্ছে মালামাল।
আরো পড়ুন:
টাঙ্গাইলে মহাসড়ক থেকে সরলেন আন্দোলনকারীরা, যান চলাচল স্বাভাবিক
ক্যান্সার আক্রান্ত ছরোয়ারের পাশে উপজেলা প্রশাসন
পাবনার চাটমোহর উপজেলার মূলগ্রাম ইউনিয়নের বন্যাগাড়ি গ্রামের ভুক্তভোগী ২০ জন ব্যবসায়ী পরিস্থিত থেকে উত্তোরণে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। কোনো সুরাহা পাননি তারা।
লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, আটলংকা বাজারের পাশে চিকনাই নদীর ধারে অবস্থিত ঈদগাহ মাঠ নিয়ে বন্যা গাড়ি ও আটলংকা গ্রামের মানুষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে। এ নিয়ে গত ২ অক্টোবর দুই গ্রামবাসী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হন। ঘটনার পর থেকে দুই গ্রামবাসীর দ্বন্দ্ব প্রকট আকার ধারণ করে। আটলংকা বাজারে রয়েছে বন্যাগাড়ি গ্রামের অনেকের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। সংঘর্ষের ঘটনার পরদিন থেকে তাদের সেই সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।
বন্যাগাড়ি গ্রামের ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, আটলংকা গ্রামের মানুষ তাদের বাজারে যেতে দিচ্ছে না। দোকান খুলতে দিচ্ছে না।
মামুন টেইলার্সের মালিক আল মামুন বলেন, “ঈদগাহ মাঠ নিয়ে দ্বন্দ্ব আছে, ঠিক আছে। এ কারণে আমরা বাজারে ব্যবসা করতে পারব না কেন? আমাদের দোকান খুলতে দিচ্ছে না আটলংকা গ্রামের মানুষ। ঋণ নিয়ে ব্যবসা করে এখন ঋণের কিস্তি শোধ করতে পারছি না। বিগত ১৬ দিন ধরে দোকান বন্ধ থাকায় পরিবার নিয়ে খুব হতাশায় দিন কাটাচ্ছি।”
মুদি দোকানদার হাবিবুল্লাহ বলেন, “১৬ দিন ধরে দোকান বন্ধ থাকায় আমার দোকানের মালামাল নষ্ট হচ্ছে। এই ক্ষতি কে পুষিয়ে দেবে? ব্যবসা করতে না পারলে পরিবার নিয়ে পথে বসতে হবে। দোকান খুলতে গেলে বাধা দেওয়া হচ্ছে, হুমকি দিচ্ছে।”
পল্লী চিকিৎসক আব্দুল করিম বলেন, “দোকান বন্ধ থাকায় আমি ওষুধপত্র নিয়ে রোগী দেখতে পাচ্ছি না। বাইরে থেকে ওষুধ কিনে নিয়ে যেতে হচ্ছে। এভাবে তো চলতে পারে না। গ্রামের রোগীরাও কষ্ট পাচ্ছেন।”
রড-সিমেন্ট-ঢেউটিন ব্যবসায়ী ফজলুল হক ও ওয়ার্কসপ মালিক রুবেল হোসেন জানান, অনেকগুলো টাকা ঋণ নিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছি। এ সপ্তাহে আমাদের কিস্তি আছে। কীভাবে কিস্তি দেব, সেই চিন্তায় আমরা দিশেহারা। ব্যবসা করতে না পারায় আমরা পরিবার নিয়ে খুব দীনহীন অবস্থা পার করছি। অসুস্থ মানুষ চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে পারছি না।
অভিযোগের বিষয়ে আটলংকা গ্রামের বাসিন্দা হারেস আলী বলেন, “বন্যাগাড়ি গ্রামের মানুষ রাস্তা অবরোধ করে রাখছে। ওই রাস্তা দিয়ে আটলংকা গ্রামের কেউ গেলে তাকে হেনস্তা করা হচ্ছে। নারীরা তাদের বাচ্চাদের মাদরাসায় ভাত দিতে গেলে তারা নানাভাবে হয়রানি করে। এখন গ্রামের প্রধানরা আছেন, তারা যেটা করার সেটা করবেন।”
আটলংকা গ্রামের বাসিন্দা বিএনপি নেতা অধ্যক্ষ মাহমুদুল আলম মাহমুদ বলেন, “গ্রামের মুরব্বিরা আছেন, গ্রাম প্রধানরা আছেন, সবাইকে ডেকে নিয়ে বসে আলোচনা করে দেখি কি করা যায়।”
এ বিষয়ে চাটমোহর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মনজুরুল আলম বলেন, “উভয়পক্ষ কে নিয়ে বসে আলোচনা করেছি। দুই পক্ষের ইতিবাচক মনোভাব পাওয়া গেছে। আটলংকা গ্রামের মানুষ বন্যাগাড়ি দিয়ে চলাচল করবে। আবার বন্যাগাড়ি গ্রামের মানুষও আটলংকা বাজারে যাবে, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলবে। আশা করছি দুই-একদিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান হবে।”
ইউএনও মুসা নাছের চৌধুরী বলেন, “আমরা উভয় পক্ষকে নিয়ে এর আগেও বসেছি। আবার বসে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করা হবে।”
ঢাকা/শাহীন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউএনও অভ য গ ঈদগ হ ম ঠ ন য ন বন ধ থ ক পর ব র ন দ বন দ ব বন য গ আটল ক ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
ওমান থেকে ফিরল ৭ প্রবাসীর মরদেহ, আজ জানাজা
ওমানের সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া সাত প্রবাসীর জানাজা রবিবার (১৯ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টায় পূর্ব সন্দ্বীপ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মংচিংনু মারমা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, শনিবার (১৮ অক্টোবর) রাতে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে মরদেহগুলো চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। এ সময় স্বজনদের আহাজারিতে বিমানবন্দরে শোকের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহিম খলিল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরো পড়ুন:
গাইবান্ধায় বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
জুলাই যোদ্ধাদের লাঠিচার্জের প্রতিবাদে ফেনীতে সড়ক অবরোধ
আরো পড়ুন: ওমানে সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ বাংলাদেশির মৃত্যু
সূত্র জানায়, বিমানবন্ধরে মারা যাওয়াদের মরদেহ গ্রহণ করেন স্বজনরা। এরপর রাতেই সাতটি দেহ নেওয়া হয় সীতাকুণ্ডের কুমিরা ঘাটে। রবিবার সকালে মরদেহগুলো সন্দ্বীপে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ারা হলেন- আমিন মাঝি (৫০), মো. সাহাবুদ্দিন (২৮), মো. বাবলু (২৮), মো. রকি (২৭), মো. আরজু (২৬), মো. জুয়েল (২৮) ও মোশারফ হোসেন রনি (২৬)।
সন্দ্বীপ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মংচিংনু মারমা জানান, রবিবার সকাল সাড়ে ৯টায় পূর্ব সন্দ্বীপ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে একসঙ্গে সবার জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর নিজ নিজ গ্রামে তাদের দাফন করা হবে।
গত ৮ অক্টোবর বিকেল ৪টার দিকে ওমানের দুখুম সিদ্দা এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান সাত প্রবাসী। মাছ পরিবহনকারী একটি বড় ট্রাকের ধাক্কায় তাদের গাড়ি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। নিহতদের মধ্যে সন্দ্বীপ উপজেলার সাতজন ও রাউজানের একজন ছিলেন।
ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ