কিশোরগঞ্জের ইটনায় ধনু নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া এক জেলের মরদেহ ৪৮ ঘণ্টা পর উদ্ধার করেছে পুলিশ। রবিবার (১৯ অক্টোবর) সকাল ৮টার দিকে উপজেলার শিমুলবাঁক গ্রামের পাশের নদী থেকে তার মরদেহ উদ্ধার হয়।

মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম শ্রীকৃষ্ণ দাস (৫০)। তিনি উপজেলার এলংজুরী ইউনিয়নের বড়হাটি গ্রামের মৃত রসিক দাসের ছেলে।

আরো পড়ুন:

রূপপুর প্রকল্পের দোভাষীর মরদেহ উদ্ধার

ওমান থেকে ফিরল ৭ প্রবাসীর মরদেহ, জানাজা আজ

ধনপুর নৌ পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) নিখিল চন্দ্র দাস বলেন, ‍“আজ সকালে স্থানীয়রা নদীতে মরদেহটি ভাসতে দেখে আমাদের জানান। পরে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করি।” 

স্বজনদের বরাতে এসআই নিখিল চন্দ্র দাস জানান, শ্রীকৃষ্ণ দাস কয়েকদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন। তারপরও জীবিকার তাগিদে মাছ ধরতে বের হন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মাছ ধরার সময় দুর্বল শরীরের কারণে তিনি নদীতে পড়ে যান এবং ডুবে মারা যান।

গত, শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে শ্রীকৃষ্ণ দাস নিজের বাড়ির পাশের ধনু নদীতে একটি ডিঙি নৌকায় করে মাছ ধরতে যান। সকাল ৮টার দিকে অন্যান্য জেলেরা দেখতে পান, তার নৌকায় জাল ও মোবাইল ফোন পড়ে আছে, কিন্তু তিনি নেই। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তার কোনো সন্ধান মেলেনি।

ঢাকা/রুমন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মরদ হ নদ র মরদ হ উদ ধ র

এছাড়াও পড়ুন:

ক্লোজড হওয়া এসআই রাসেলের ঘুষের টাকা নিয়ে তোলপাড়

যুবদল নেতাকে থাপ্পড় মারার ঘটনায় ক্লোজড হওয়া এসআই রাসেল মিয়ার এবার ৬৫ হাজার টাকা ঘুষ নেওয়ার বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, এসআই রাসেল এক সিএনজি চালককে ভয় দেখিয়ে দুই দফায় ৬৫ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন। 

পুলিশের এই কর্মকর্তা বর্তমানে যমুনা সেতু পূর্ব থানায় এসআই হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

এর আগে গত ২৬ আগস্ট গোপালপুর থানায় আলমনগর ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচিব আমিনুল ইসলামকে থাপ্পড় দেওয়ার ঘটনায় উপপরিদর্শক (এসআই) রাসেল মিয়াকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, গত ৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় কালিহাতীর দেউপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের হাফেজ জোনায়েদ আল হাবিব টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়কের ৭নং সেতু থেকে নিজ বাড়ির দিকে যাচ্ছিলেন। সেসময় মীরহামজানি গ্রামের সেলিম নামে এক সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালককে গাড়ি থামাতে ইশারা দেন। অটোরিকশাটি একটু দূরে গিয়ে থামে। 

ততক্ষণে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি ট্রাক মহাসড়কের পাশে পড়ে যায়। ট্রাক চাপায় হাফেজ জোনায়েদ নামে এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেলারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে নিহতের পরিবার থানায় কোন অভিযোগ করেনি। ট্রাক মালিকের পক্ষ থেকে জোনায়েদের পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতা করতে চাইলে তারা কোন সহযোগিতা নেয়নি। 

এদিকে ১২ সেপ্টেম্বর যমুনা সেতুর এসআই মো. রাসেল মিয়াসহ দুই পুলিশ সদস্য সিএনজি চালক সেলিমের বাড়িতে গিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে ২৫ হাজার টাকাসহ সিএনজিটি থানায় নিয়ে যান। পরে দিন রাতে তৎকালীন ওসিকে টাকা দিতে হবে বলে আরো ৪৫ হাজার টাকা নিয়ে সিএনজি ছেড়ে দেন। এসময় সেলিমের বাবা আব্দুল হাই, আত্মীয় হাফেজ আলী, স্থানীয় তানভীর আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।

তারা জানান, মহাসড়কে দায়িত্ব পালন করা পুলিশ সদস্য কীভাবে গ্রামে প্রবেশ করে ঘুষ নিলো এটা নিয়ে সম্প্রতি সময়ে জানাজানি হলে এলাকায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে।

হাফেজ জোনায়েদের ভাই ইলিয়াস বলেন, “জোনায়েদের জানাযায় ট্রাক মালিক এসে ক্ষতিপূরণ দিতে চেয়েছিলেন। আমরা নেইনি। এছাড়া থানায়ও কোন অভিযোগ করা হয়নি। তবে ট্রাক মালিক আমাকে ফোন করে জানিয়েছেন, পুলিশ তাদের কাছে মোটা অংকের টাকা চাচ্ছে।”

ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্থানীয় তানভীর আহমেদ জানান, “আইন অমান্য করে এসআই রাসেল সেলিমের বাড়িতে প্রবেশ করেছে। রাসেল তো সেতু থানার পুলিশ। সে তো কোনভাবে বাড়িতে প্রবেশ করতে পারে না। সাথে কালিহাতী থানা পুলিশ থাকলে ভাল হতো। রাসেল বাড়ির নারী সদস্যসহ অনেককেই অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। অভ্যুত্থানের পর ভেবেছিলাম পুলিশ মানুষকে ভয় দেখি ঘুষ নেওয়া বন্ধ করবে। ফ্যাসিস্ট সরকারের পুলিশের মতো কাজ করেছে এসআই রাসেল।”

স্থানীয় ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান ফরিদ বলেন, “রাত ১১টার পর এসআই রাসেল সেলিমের বাড়ি যান। সড়ক দুর্ঘটনায় মানুষ মরছে সেই ভয় দেখিয়ে এসআই রাসেল দুই দফায় ৭০ হাজার টাকা নিয়েছে। গরিব মানুষকে এভাবে অত্যাচার করা ঠিক না।”

সেলিমের বাবা আব্দুল হাই বলেন, “পুলিশ বাড়িতে গিয়ে অনেক ভয় দেখিয়ে দুই লাখ টাকা দাবি করে। ভয় বা হুমকি ধামকি থেকে বাঁচতে সর্বশেষ ৭০ লাখ টাকায় দফারফা হয়। ঋণ করে প্রথম দিন ২৫ হাজার পরের দিন ৪৫ হাজার টাকা দিলে পাঁচ হাজার টাকা ফেরত দেয়। সেসময় থানার ওসি অসুস্থ থাকায় তার জন্য দোয়া করতে বলেন এসআই রাসেল মিয়া। টাকা ফেরতসহ রাসেলের বিচার চাই।”

সিএনজি চালক মো. সেলিম মিয়া বলেন, “আমরা গরিব মানুষ। আমাদের অনেক ভয় দেখিয়েছে। এই পুলিশের বিচার হওয়া জরুরি।”

এ প্রসঙ্গে এসআই রাসেল মিয়া বলেন, “বিষয়টি সমাধানের জন্য স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”

যমুনা সেতু পূর্ব থানার তৎকালীন ওসি ফয়েজ আহম্মেদ জানান, তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না।

যমুনার সেতু পূর্ব থানার ওসি মো. শবজেল বলেন, “আমি নতুন যোগদান করেছি। এ বিষয়ে কিছুই বলতে পারব না।”

টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রবিউল ইসলাম বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই। কেউ অভিযোগ দিলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ঢাকা/কাওছার/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাদ্রাসায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে শ্রমিক দল নেতা গ্রেপ্তার
  • ক্লোজড হওয়া এসআই রাসেলের ঘুষের টাকা নিয়ে তোলপাড়