মাদারীপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত তরুণের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু, এলাকায় উত্তেজনা
Published: 27th, May 2025 GMT
মাদারীপুরের শিবচরে পূর্বশত্রুতার জেরে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে আহত তরুণ ইবনে সামাদ (১৮) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।
৬ মে রাতে জমিজমার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পূর্বশত্রুতার জেরে সংঘর্ষে ইবনে সামাদ আহত হয়েছিলেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ২১ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর তাঁর মৃত্যু হয়। ইবনে সামাদ শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়ন সর্দারকান্দি গ্রামের কালাম সরদারের ছেলে।
এদিকে ইবনে সামাদের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে দুপক্ষের মধ্যে আবার উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। আজ সকালে ইবনে সামাদের পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কয়েকটি বাড়িতে হামলা করেন। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে চারটি বাড়িঘরে লুটপাট ও ভাঙচুর করা হয়েছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৬ মে রাতে জমিজমাকে কেন্দ্র করে পূর্বশত্রুতার জেরে সর্দারকান্দি গ্রামের কালাম সরদারের বাড়িতে হামলা করেন মাদবর বংশের লোকজন। এ সময় দুপক্ষের সংঘর্ষে কালাম সরদার, তাঁর ছেলে ইবনে সামাদ (১৮), জুয়েল সরদার (৩৫), তাঁর স্ত্রী ইরানী বেগম (৫৫), মাদবর বংশের রাসেল মাদবর (৩৭), মাহমুদা বেগমসহ (৩০) বেশ কয়েকজন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ঢাকা ও শিবচরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে ইবনে সামাদের মৃত্যু হয়।
এর আগের হামলার ঘটনায় ৮ মে ইবনে সামাদের বাবা কালাম সরদার বাদী হয়ে শিবচর থানায় ২৯ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। মামলার আসামিরা জামিনে আছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
শিবচর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহজাহান মিয়া জানান, ইবনে সামাদের বাবা সংঘর্ষের ঘটনায় আগেই একটি মামলা করেছেন। মামলাটিকে হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হবে। মূলত মাদবর ও সরদার বংশের লোকজন পূর্ববিরোধ থেকে সংঘর্ষে জড়ান। এতে উভয়পক্ষের লোক আহত হয়েছিলেন। সকালে সরদার বংশের এক তরুণ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এরপর এলাকায় উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আবার সংঘাত এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
শাহজাহান মিয়া আরও জানান, তরুণের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। আজ বিকেলে জানাজা শেষে তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে। এ ঘটনায় মূল আসামিরা পলাতক। তাঁদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক ল ম সরদ র র ল কজন এল ক য় স ঘর ষ ম দবর র ঘটন শ বচর
এছাড়াও পড়ুন:
দক্ষিণখানে নারীকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা, স্বামী গ্রেপ্তার
রাজধানীর দক্ষিণখানের চালাবন এলাকায় শিল্পী বেগম (২৫) নামে এক নারীকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করেছেন তাঁর স্বামী মো. তুহিন। মঙ্গলবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। পরে তুহিনকে বেধড়ক পিটুনি দিয়ে পুলিশে দেন জনতা। পুলিশ তাঁকে এ ঘটনায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠায়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের উত্তরা বিভাগের সহকারী কমিশনার নাসিম এ গুলশান সমকালকে বলেন, কী কারণে এ হত্যাকাণ্ড তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, পারিবারিক কলহের জের ধরে অন্তত এক মাস ধরে দু’জন আলাদা থাকতেন। এর মধ্যে শিল্পী তালাক দেন স্বামীকে। মঙ্গলবার বিষয়টি জানার পর তুহিন ক্ষিপ্ত হয়ে এ ঘটনা ঘটান।
পুলিশ সূত্র জানায়, চালাবন এলাকার ভাড়া বাসায় থাকতেন শিল্পী। তিনি একটি পোশাক কারখানায় জুনিয়র অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। জান্নাত নামে তাঁর ৭ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে চালাবনের রাস্তায় শিল্পীর পথরোধ করেন তুহিন। এর পর তাঁকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দা দিয়ে কয়েকটি কোপ দেন। এতে ওই নারীর মাথা শরীর থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। তাঁর বাড়ি ভোলার দুলালহাট উপজেলার আবু বাকেরপুর গ্রামে। বাবার নাম দুলাল মিয়া। তিনি উত্তরখানে থাকেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দোকানি কামাল শেখ সাংবাদিকদের জানান, কোপানোর দৃশ্য দেখে তিনি এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু তুহিন তখন দা হাতে ভয়ংকর ভঙ্গিতে থাকায় আর এগোনোর সাহস করেননি। আরও কিছু লোক এ দৃশ্য দেখেছেন। তারাও নিষ্ক্রিয় ভূমিকায় ছিলেন। স্ত্রীকে কোপানোর পর তুহিন পালানোর কোনো চেষ্টাই করেননি। বরং লাশের পাশে হাঁটাহাঁটি করছিলেন আর বলছিলেন, ‘এই মেয়ে আমার সব শেষ করে দিয়েছে।’ কিছুক্ষণ পর লোকজন তাঁকে আটক করে পিটুনি দেন।