মাদারীপুরের শিবচরে পূর্বশত্রুতার জেরে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে আহত তরুণ ইবনে সামাদ (১৮) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।

৬ মে রাতে জমিজমার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পূর্বশত্রুতার জেরে সংঘর্ষে ইবনে সামাদ আহত হয়েছিলেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ২১ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর তাঁর মৃত্যু হয়। ইবনে সামাদ শিবচর উপজেলার শিরুয়াইল ইউনিয়ন সর্দারকান্দি গ্রামের কালাম সরদারের ছেলে।

এদিকে ইবনে সামাদের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে দুপক্ষের মধ্যে আবার উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। আজ সকালে ইবনে সামাদের পরিবারের লোকজন ও এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের কয়েকটি বাড়িতে হামলা করেন। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে চারটি বাড়িঘরে লুটপাট ও ভাঙচুর করা হয়েছে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ৬ মে রাতে জমিজমাকে কেন্দ্র করে পূর্বশত্রুতার জেরে সর্দারকান্দি গ্রামের কালাম সরদারের বাড়িতে হামলা করেন মাদবর বংশের লোকজন। এ সময় দুপক্ষের সংঘর্ষে কালাম সরদার, তাঁর ছেলে ইবনে সামাদ (১৮), জুয়েল সরদার (৩৫), তাঁর স্ত্রী ইরানী বেগম (৫৫), মাদবর বংশের রাসেল মাদবর (৩৭), মাহমুদা বেগমসহ (৩০) বেশ কয়েকজন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ঢাকা ও শিবচরের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকাল সাড়ে আটটার দিকে ইবনে সামাদের মৃত্যু হয়।

এর আগের হামলার ঘটনায় ৮ মে ইবনে সামাদের বাবা কালাম সরদার বাদী হয়ে শিবচর থানায় ২৯ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। মামলার আসামিরা জামিনে আছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।

শিবচর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহজাহান মিয়া জানান, ইবনে সামাদের বাবা সংঘর্ষের ঘটনায় আগেই একটি মামলা করেছেন। মামলাটিকে হত্যা মামলায় রূপান্তর করা হবে। মূলত মাদবর ও সরদার বংশের লোকজন পূর্ববিরোধ থেকে সংঘর্ষে জড়ান। এতে উভয়পক্ষের লোক আহত হয়েছিলেন। সকালে সরদার বংশের এক তরুণ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এরপর এলাকায় উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আবার সংঘাত এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

শাহজাহান মিয়া আরও জানান, তরুণের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। আজ বিকেলে জানাজা শেষে তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে। এ ঘটনায় মূল আসামিরা পলাতক। তাঁদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক ল ম সরদ র র ল কজন এল ক য় স ঘর ষ ম দবর র ঘটন শ বচর

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতের ওডিশায় বাংলাদেশি সন্দেহে আটক ৪০৩ জনকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ

ভারতের ওডিশা রাজ্যের ঝাড়সুগুদা জেলায় অবৈধ বাংলাদেশী সন্দেহে আটক ৪৪৪ জনের মধ্যে ৪০৩ জনকে ছেড়ে দিয়েছে রাজ্য পুলিশ। তারা সবাই পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। গত সোমবার রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে তাদের আটক করা হয়।

পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল কংগ্রেসের সংসদ সদস্য ও পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যান বোর্ডের চেয়ারম্যান সমিরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশি সন্দেহে পশ্চিমবঙ্গের যেসব পরিযায়ী শ্রমিকদের আটক করা হয়েছিল, তাদের অধিকাংশকেই মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, মুক্তি পাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকদের বেশিরভাগই বীরভূম, মুর্শিদাবাদ ও দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসিন্দা। তাদের আটক করেছিল ওডিশার ঝাড়সুগুদা পুলিশ।

তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও অবৈধ অনুপ্রবেশকারী চিহ্নিত করার নাম করে বাংলাভাষী পরিযায়ী শ্রমিকদের বেআইনিভাবে আটক করে বিজেপিশাসিত ওডিশা সরকার।

উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া, মুর্শিদাবাদ, মালদা, পূর্ব মেদিনীপুর, বীরভূম, পূর্ব বর্ধমান ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে অনেক শ্রমিক ওডিশায় কাজ করতে যান। তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, সেসব শ্রমিকদেরই বাংলাদেশি আখ্যা দিয়ে আটক করা হচ্ছে।

কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব ওডিশা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে শ্রমিকদের মুক্তির অনুরোধ করেছিলেন। প্রথমে ওডিশা পুলিশ আটক ব্যক্তিদের বৈধ নথি না থাকার অভিযোগ করলেও পরে নিজেদের ভুল স্বীকার করে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ