হবিগঞ্জের মাধবপুরে ট্রাকের ধাক্কায় ইজিবাইকের আরোহী দুই নারী শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আজ শনিবার সকাল ৮টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের দরগা গেট এলাকায় ঘন কুয়াশার মধ্যে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিনজন আহত হয়েছেন।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার জনতরী গ্রামের দিলারা বেগম (৩০) ও একই জেলার বানিয়াচং উপজেলার মজলিশপুর গ্রামের উর্মি আখতার (১৮)। তাঁরা স্থানীয় বাদশা গ্রুপের কারখানার নিয়মিত শ্রমিক ছিলেন।

শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ টি এম মাহমুদুল হক বলেন, নিহত শ্রমিকেরা বাদশা কোম্পানির পাইওনিয়ার ডেনিম কারখানার শ্রমিক। সকালে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইকে তাঁরা কারখানায় যাচ্ছিলেন। এ সময় মহাসড়কের দরগা গেট এলাকায় পেছন দিক থেকে আসা একটি ট্রাক তাঁদের ইজিবাইককে ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই এক নারী শ্রমিক নিহত হন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর আরও একজনের মৃত্যু হয়। ঘন কুয়াশার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।

ঘটনার পর কারখানার বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেন। পরে ৪০ মিনিট পর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁদের শান্ত করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

গাজার ত্রাণপ্রত্যাশীদের গুলি করে বুলডোজার দিয়ে মাটিচাপা দিয়েছে ইসরায়েল

ফিলিস্তিনের গাজায় গত জুনে জিকিম ক্রসিংয়ের কাছে ত্রাণবাহী ট্রাক থেকে পরিবারের জন্য এক ব্যাগ আটা আনতে গিয়েছিলেন আম্মার ওয়াদি। তিনি জানতেন, এর মাধ্যমে তিনি নিজের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলছেন।

ওয়াদি তাঁর মোবাইলের স্ক্রিনে ‘মা, আমার কিছু হয়ে গেলে আমাকে ক্ষমা করো। যে আমার ফোনটি পাবেন, তিনি যেন আমার পরিবারকে বলে দেন, আমি তাদের খুব ভালোবাসি’—লিখে রেখেছিলেন।

গ্রীষ্মের ওই সময় ত্রাণ আনতে যাওয়া ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনী নিয়মিতভাবে গুলিবর্ষণ করত। এর মধ্যেই একদিন ত্রাণ আনতে যান ওয়াদি। কিন্তু এরপর আর বাড়ি ফেরা হয়নি। কয়েক সপ্তাহ পর এক ব্যক্তি ওয়াদির মোবাইল ফোন পেয়ে তাঁর পরিবারের কাছে পৌঁছে দেন। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তাঁর কাছ থেকে পাওয়া শেষ বার্তাটি পায় পরিবার।

তখন অসংখ্য ফিলিস্তিনি জিকিমের কাছে নিখোঁজ হন। ওয়াদি ছিলেন তাঁদের একজন। এসব ফিলিস্তিনির ভাগ্যে কী জুটেছে, তা আজও অজানা।

তবে ওই ফিলিস্তিনিদের ভাগ্যে কী ঘটেছে, তার কিছুটা আঁচ পাওয়া গেছে সিএনএনের এক অনুসন্ধানে। তাতে দেখা গেছে, ইসরায়েলি সেনারা জিকিম ক্রসিংয়ের কাছে কিছু ব্যক্তির মরদেহ বুলডোজার দিয়ে মাটিচাপা দিয়েছেন। তাঁদের এভাবে কবর দেওয়ার চিহ্নও রাখা হয়নি। এ ছাড়া কিছু মরদেহ সে সময় খোলা মাঠে ফেলে রাখা হয়। বিকৃত হয়ে যাওয়ায় সেগুলোও আর উদ্ধার করা যায়নি।

আইনবিশেষজ্ঞদের মতে, বুলডোজার দিয়ে অচিহ্নিত কবরে মরদেহ চাপা দেওয়া আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন হতে পারে।

অসংখ্য ফিলিস্তিনি জিকিমের কাছে নিখোঁজ হন। ওয়াদি তাঁদের একজন। এসব ফিলিস্তিনির ভাগ্যে কী জুটেছে, আজও অজানা।

সিএনএনের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ক্রসিংয়ের কাছে থাকা ত্রাণপ্রত্যাশীরা ইসরায়েলি সেনাদের নির্বিচার ছোড়া গুলিতে নিহত হয়েছেন। জিকিমের আশপাশের শত শত ছবি ও ভিডিও এবং প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় ত্রাণবাহী ট্রাকের চালকদের সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে এ পর্যালোচনা করা হয়েছে।

কৃত্রিম উপগ্রহের ছবিতেও ত্রাণপ্রত্যাশীরা যে এলাকায় নিহত হয়েছেন, সেখানে বুলডোজারের তৎপরতা চোখে পড়েছে।

ইসরায়েলের দুজন সাবেক সেনাসদস্যের সঙ্গে কথা বলেছে সিএনএন। তাঁরা যুদ্ধের সময় গাজার অন্যত্র ঘটে যাওয়া এমন সব ঘটনা বর্ণনা করেছেন, যেখানে ফিলিস্তিনিদের মরদেহ অগভীর কবরের মধ্যে বুলডোজারের মাধ্যমে চাপা দেওয়া হয়েছিল। এ বিষয়ে কথা বলার অনুমতি না থাকায় তাঁরা নাম–পরিচয় গোপন রাখতে চেয়েছেন।

ফিলিস্তিনি মা সামাহ মাতার অপুষ্টিজনিত অসুস্থতায় ভোগা ছেলে ইউসেফকে কোলে ধরে রেখেছেন

সম্পর্কিত নিবন্ধ