৯১০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রন হক শিকদার ও দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে মামলা
Published: 6th, February 2025 GMT
চার প্রতিষ্ঠানের নামে ৯১০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মসাৎ করার অভিযোগে ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক পরিচালক রন হক শিকদার এবং দেশ টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ হাসানসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বৃহস্পতিবার তাঁদের বিরুদ্ধে পৃথক মামলা করা হয়।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন বলেন, ব্রডওয়ে রিয়েল এস্টেট লিমিটেড নামের একটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে ভুয়া তথ্য দিয়ে ন্যাশনাল ব্যাংকের মহাখালী শাখা থেকে ৪৯০ কোটি ঋণ নেওয়ার পর তা আত্মাসাৎ করা হয়েছে। মরিয়ম কনস্ট্রাকশন লিমিটেড নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠানের নামে ন্যাশনাল ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে আত্মাসাৎ করা হয়েছে ৩০০ কোটি টাকা। এ ছাড়া প্রকৃতি অ্যাসোসিয়েট ও দ্য ভিউ হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট লিমিটেডের নামে ১২০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মাসাৎ করা হয়েছে।
দুদক সূত্র বলছে, ব্রডওয়ে রিয়েল এস্টেট লিমিটেডের মামলায় ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক পরিচালক মনোয়ারা শিকদার, পারভীন শিকদার এবং দেশ টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক ও হাসান টেলিকম লিমিটেডের শেয়ার হোল্ডার আরিফ হাসানসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তারা রয়েছেন।
মরিয়ম কনস্ট্রাকশন লিমিটেডের নামে ৩০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আত্মাসাতের মামলায় ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক পরিচালক রন হক শিকদার, রিক হক শিকদারসহ ১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে। বাকি আসামিরা ন্যাশনাল ব্যাংক ও মরিয়ম কনস্ট্রাকশনের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা।
এ ছাড়া প্রকৃতি অ্যাসোসিয়েটস লিমিটেডের নামে ন্যাশনাল ব্যাংকের মহাখালী শাখা থেকে ৮০ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় ১৪ জনকে এবং দ্য ভিউ হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট লিমিটেডের নামে কুয়াকাটা শাখা থেকে ৪০ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলায় ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে। ন্যাশনাল ব্যাংকের সাবেক চার পরিচালক, দেশ টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ন্যাশনাল ব্যাংকের কোনো কোনো কর্মকর্তাকে এই মামলাগুলোয় একাধিকবার আসামি করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ৎ কর
এছাড়াও পড়ুন:
পাঁচ ঘণ্টায় চিন্ময় দাসের জামিন নিয়ে ৩ আদেশ, ফের শুনানি রোববার
রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় প্রাক্তন ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিতের আদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। আগামী রোববার এ বিষয়ে ফের শুনানির জন্য দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় চেম্বার আদালতের বিচারপতি মো. রেজাউল হক এ আদেশ দেন। এর আগে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে চিন্ময় দাসকে দেওয়া হাইকোর্টের জামিন স্থগিত করেন চেম্বার আদালত। এদিন দুপুর ২টার দিকে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট। পরে ওই জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল করে রাষ্ট্রপক্ষ।
চেম্বার আদালতের জামিন স্থগিতের আদেশ প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ আবদুল জব্বার ভূঞা। সমকালকে তিনি বলেন, এটি স্পর্শকাতর মামলা। একজন শিক্ষানবিশ আইনজীবীকে হত্যা করা হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টের জামিন আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছিল। চেম্বার আদালত আমাদের আবেদনটি মঞ্জুর করেছিলেন। তবে পরে আসামিপক্ষের আইনজীবীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আগের আদেশটি প্রত্যাহার করা হয়েছে। আগামী রোববার এ বিষয়ে ফের শুনানি হবে।
চেম্বার আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ আবদুল জব্বার ভূঞা ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনিক আর হক। অন্যদিকে চিন্ময় দাসের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য।
গত ২৫ অক্টোবর চিন্ময় দাসের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে সনাতনী সম্প্রদায়ের একটি বড় সমাবেশ হয়। এর কয়েক দিন পর গত ৩১ অক্টোবর তাঁর বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়। এ মামলায় আসামি করা হয় আরও ১৮ জনকে। ২২ নভেম্বর চিন্ময়ের নেতৃত্বে রংপুরে আরও একটি বড় সমাবেশ হয়। এরপর রাষ্ট্রদ্রোহের সেই মামলায় চিন্ময় দাসকে গত ২৫ নভেম্বর ঢাকায় গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন জামিন আবেদন করা হলে তা নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট। আদালত চিন্ময়কে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিলে সেদিন চট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আইনজীবীদের সঙ্গে চিন্ময়ের অনুসারীর সংঘর্ষ বাধে। এ সময় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে আদালত চত্বরের বাইরে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।
এর পর থেকেই কারাগারে আছেন চিন্ময়। ২ জানুয়ারি চিন্ময়ের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ আদালত। এরপর হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন চিন্ময়। ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ৪ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় চিন্ময় দাসকে কেন জামিন দেওয়া হবে না– তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। গতকাল ওই রুলের শুনানি শেষে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেন হাইকোর্ট।