মে দিবস উপলক্ষে টানা তিন দিনের ছুটিতে কক্সবাজার সৈকত ভ্রমণে এসেছেন অন্তত পাঁচ লাখ পর্যটক। এর মধ্যে ৭০০টির বেশি বাসে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে চার হাজারের বেশি মানুষ শিক্ষাসফর ও পিকনিকে এসেছেন। এর বাইরে বাসসহ আরও অন্তত ছয় যানবাহনে আসেন লাখো মানুষ। অতিরিক্ত যানবাহনের ভিড়ে শহরের সৈকত সড়ক, কলাতলী হাঙর ভাস্কর্য মোড় ও বাইপাস সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।

ট্রাফিক পুলিশ কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.

জসিম উদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ১ মে থেকে আজ ৩ মে পর্যন্ত টানা তিন দিনের ছুটিতে কক্সবাজার সৈকত ভ্রমণে এসেছেন অন্তত পাঁচ লাখ পর্যটক। এর মধ্যে ট্রাফিক পুলিশের অনুমতি নিয়ে শহরে ঢুকেছে বিভিন্ন জেলা থেকে পিকনিক ও শিক্ষাসফরে আসা ৬০০টির বেশি বাস। আরও শতাধিক বাস শহরের বাইরে অবস্থান করছে। অধিকাংশ বাস বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ক্লাব-সংগঠন, ট্যুর অপারেটর ও বেসরকারি শিল্প ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে আসা।

আজ শনিবার দুপুরে সৈকতে সুগন্ধা পয়েন্টে নেমে দেখা গেছে অন্তত ২০ হাজার মানুষ লোনা জলে নেমে গা ভাসাচ্ছেন। দক্ষিণ দিকের কলাতলী এবং উত্তর দিকের লাবণী পয়েন্টের চার কিলোমিটারে রয়েছেন আরও ২০-৩০ হাজার। প্রচণ্ড গরমে কমবেশি সবাই সমুদ্রে নেমেছেন।

গোসলে নেমে নিখোঁজ পর্যটকদের উদ্ধার তৎপরতায় নিয়োজিত বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সি-সেফ লাইফগার্ডের সুপারভাইজার সিফাত সাইফুল্লাহ বলেন, বৈরী পরিবেশে সাগর প্রচণ্ড উত্তাল রয়েছে। তার ওপর প্রচণ্ড গরম পড়ছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসা পর্যটকেরা ক্লান্তি দূর করতে সমুদ্রে নামছেন। ঢেউয়ের ধাক্কায় ভেসে যাওয়া পর্যটকদের উদ্ধার তৎপরতায় ব্যস্ত রয়েছেন ২৭ জন লাইফগার্ড। কয়েকটি উঁচু চৌকিতে বসে পর্যটকদের নজরদারিতে রাখেন লাইফ গার্ড সদস্যরা।

কক্সবাজার কলাতলী হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান বলেন, ১ মে থেকে টানা তিন দিনের ছুটিতে সৈকত ভ্রমণে এসেছেন পাঁচ লাখের বেশি পর্যটক। সমুদ্রস্নানের পাশাপাশি অধিকাংশ পর্যটক কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ, পাহাড়ি ঝরনার হিমছড়ি, পাথুরে সৈকত ইনানী ও পাটোয়ারটেক, রামু বৌদ্ধপল্লি, ডুলাহাজারা সাফারি পার্কসহ বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্র দেখতে যাচ্ছেন। ছুটি শেষ হওয়ায় আজ শনিবার বিকেল থেকে অনেকে গন্তব্যে ফিরতে শুরু করেছেন।

ট্যুর অপারেটর ও হোটেল মালিকেরা জানান, অন্যান্যবারের তুলনায় এবার পিকনিক ও শিক্ষাসফরে আসা বাসের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় ছয় শতাধিক পিকনিকের বাস রাখা হয় শহরের বাইপাস সড়কের দুই পাশে, উত্তরণ আবাসিক এলাকার সড়কে, আশপাশের আরও তিনটি খোলা জায়গায়। শহরের অভ্যন্তরে পর্যটন করপোরেশনের বিশাল মাঠেও শতাধিক বাস রাখা হয়। কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে বাসের ধারণক্ষমতা ১২০টি।

ঢাকার তেজগাঁও এলাকা থেকে ১ মে বিকেলে পিকনিকে আসেন একটি শ্রমিক সংগঠনের ৫০-৬০ জন। বাইপাস সড়কে গাড়ি রেখে সবাই সৈকতে নেমে পড়েন। তাঁদের একজন নজরুল ইসলাম (৪৫) বলেন, কমবেশি সবাই বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিক। সারা দিন কাজকর্মে ব্যস্ত থাকতে হয় তাঁদের। পয়লা মে উপলক্ষে তিন দিনের ছুটি কাটাতে সবাই কক্সবাজার ছুটে আসেন। আজ বিকেলে সবার গন্তব্যে ফেরার কথা।

কক্সবাজার ট্যুরিস্ট ক্লাব ও ট্যুর অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (টুয়াক) সভাপতি রেজাউল করিম বলেন, কম খরচে সৈকত ভ্রমণে বেশির ভাগ মানুষ এখন ট্যুর অপারেটরের সহযোগিতা নিচ্ছেন। তাতে নিরাপত্তাও নিশ্চিত হয়। অল্প সময়ে বিনোদনকেন্দ্রগুলো ঘুরে আসার সুযোগ পান। তবে বঙ্গোপসাগরের মধ্যের প্রবালসমৃদ্ধ দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় পর্যটকের ভ্রমণ বন্ধ রয়েছে। সাগর উত্তাল থাকায় সাগরদ্বীপ মহেশখালী ভ্রমণেও পর্যটকদের নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স কত ভ রমণ এস ছ ন শহর র

এছাড়াও পড়ুন:

এখনো শ্রমিকদের লড়াই করতে হচ্ছে, কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি

ন্যায্য মজুরি ও অধিকার আদায়ের জন্য এখনো শ্রমিকদের লড়াই করতে হচ্ছে। বিভিন্ন সেক্টরে ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়ন করা হয়নি। অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত শোষণ ও জুলুমের বিরুদ্ধে নিপীড়িত শ্রমিকদের এই লড়াই ও সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে মহান মে দিবস উপলক্ষে আয়োজিত শ্রমিক সমাবেশ ও লাল পতাকা মিছিলে বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের (টিইউসি) চট্টগ্রামের সভাপতি ও সরকার গঠিত শ্রম কমিশনের সদস্য শ্রমিকনেতা তপন দত্ত এসব কথা বলেন। টিইউসি নগরের কাজীর দেউড়ি মোড়ে এ সমাবেশের আয়োজন করে। এতে তপন দত্ত সভাপতিত্ব করেন।

সমাবেশে নির্মাণ, হোটেল, বেসরকারি হাসপাতাল, চা, পোশাক, রিকশা, পরিবহন, জাহাজভাঙা, পাটকলশ্রমিকসহ বিভিন্ন সংগঠন অংশ নেয়।

তপন দত্ত বলেন, ‘১৮৮৬ সালে শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের যে আন্দোলনের শুরু হয়েছিল, তা এখনো চলছে। শ্রমিকদের আট ঘণ্টার কর্মঘণ্টা ও ন্যূনতম মজুরি নিশ্চিত করা যায়নি। কর্মক্ষেত্রে তাঁরা এখনো নিপীড়নের শিকার। কথায় কথায় শ্রমিক ছাঁটাই করা হচ্ছে। এসব বন্ধ করতে হবে। শ্রমিকের ঘামে গড়ে উঠেছে এই দেশ এই উন্নতি। তাই শ্রমিক বাঁচলে দেশ বাঁচবে। জনগণ বাঁচবে।’

তপন দত্ত বলেন, ‘সরকার একটা শ্রম সংস্কার কমিশন করেছে। এই কমিশন স্থায়ী জাতীয় মজুরি কমিশন গঠন, ন্যূনতম মজুরি বাড়ানো, রেশনিং প্রথা চালুসহ নানা সুপারিশ করেছে। এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে।’

সমাবেশে বক্তব্য দেন শ্রমিকনেতা ইফতেখার কামাল খান, ফজলুল কবির, বেসরকারি হাসপাতাল কর্মচারী ও শ্রমিকনেতা আবদুর রহিম, হোটেল রেস্তোরাঁ শ্রমিক নেতা মো. হানিফ, মাহিন উদ্দিন, দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।

পরে একটি লাল পতাকা মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি কাজীর দেউড়ি থেকে মেহেদীবাগ হয়ে প্রবর্তক মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সমাবেশে গণসংগীত পরিবেশন করে উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী চট্টগ্রাম জেলা সংসদ।

মহান মে দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন নগরের নিউমার্কেট এলাকায় পৃথক সমাবেশ করেছে। এতে প্রধান বক্তব্য দেন সংগঠনের সভাপতি মৃণাল চৌধুরী। এরপর লাল পতাকা মিছিল বের করা হয়।

বাংলাদেশ শ্রমিককল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগরী দিবসটি উপলক্ষে পৃথক সমাবেশ ও মিছিল করেছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টানা বৃষ্টিতে আরও মোহনীয় সিলেটের সাদা পাথর, বেড়েছে পর্যটক
  • কাশ্মীরে পর্যটকদের ওপর হামলার গোয়েন্দা তথ্য আগেই ছিল: কর্মকর্তাদের দাবি
  • ‘বিএনপিকে মাইনাস করতে গেলে রাজনীতি থেকে হারিয়ে যাবেন’
  • পেহেলগামে হামলার ছক ‘পাকিস্তানে লস্কর-ই-তৈয়বার সদরদপ্তরে’
  • পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়টি নিশ্চিত হোক
  • তিন দিনের ছুটিতে পর্যটকে মুখর কুয়াকাটা
  • শ্রমিক দিবস উপলক্ষে সিদ্ধিরগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের র‌্যালি
  • ক্ষমতায় গেলে নারীদের মর্যাদা, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে: জামায়াত আমির
  • এখনো শ্রমিকদের লড়াই করতে হচ্ছে, কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের দাবি