তিন দিনের ছুটিতে কক্সবাজারে কত পর্যটক গেলেন
Published: 3rd, May 2025 GMT
মে দিবস উপলক্ষে টানা তিন দিনের ছুটিতে কক্সবাজার সৈকত ভ্রমণে এসেছেন অন্তত পাঁচ লাখ পর্যটক। এর মধ্যে ৭০০টির বেশি বাসে ঢাকা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে চার হাজারের বেশি মানুষ শিক্ষাসফর ও পিকনিকে এসেছেন। এর বাইরে বাসসহ আরও অন্তত ছয় যানবাহনে আসেন লাখো মানুষ। অতিরিক্ত যানবাহনের ভিড়ে শহরের সৈকত সড়ক, কলাতলী হাঙর ভাস্কর্য মোড় ও বাইপাস সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। যানজট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশকে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
ট্রাফিক পুলিশ কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো.
আজ শনিবার দুপুরে সৈকতে সুগন্ধা পয়েন্টে নেমে দেখা গেছে অন্তত ২০ হাজার মানুষ লোনা জলে নেমে গা ভাসাচ্ছেন। দক্ষিণ দিকের কলাতলী এবং উত্তর দিকের লাবণী পয়েন্টের চার কিলোমিটারে রয়েছেন আরও ২০-৩০ হাজার। প্রচণ্ড গরমে কমবেশি সবাই সমুদ্রে নেমেছেন।
গোসলে নেমে নিখোঁজ পর্যটকদের উদ্ধার তৎপরতায় নিয়োজিত বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সি-সেফ লাইফগার্ডের সুপারভাইজার সিফাত সাইফুল্লাহ বলেন, বৈরী পরিবেশে সাগর প্রচণ্ড উত্তাল রয়েছে। তার ওপর প্রচণ্ড গরম পড়ছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসা পর্যটকেরা ক্লান্তি দূর করতে সমুদ্রে নামছেন। ঢেউয়ের ধাক্কায় ভেসে যাওয়া পর্যটকদের উদ্ধার তৎপরতায় ব্যস্ত রয়েছেন ২৭ জন লাইফগার্ড। কয়েকটি উঁচু চৌকিতে বসে পর্যটকদের নজরদারিতে রাখেন লাইফ গার্ড সদস্যরা।
কক্সবাজার কলাতলী হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান বলেন, ১ মে থেকে টানা তিন দিনের ছুটিতে সৈকত ভ্রমণে এসেছেন পাঁচ লাখের বেশি পর্যটক। সমুদ্রস্নানের পাশাপাশি অধিকাংশ পর্যটক কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ, পাহাড়ি ঝরনার হিমছড়ি, পাথুরে সৈকত ইনানী ও পাটোয়ারটেক, রামু বৌদ্ধপল্লি, ডুলাহাজারা সাফারি পার্কসহ বিভিন্ন বিনোদনকেন্দ্র দেখতে যাচ্ছেন। ছুটি শেষ হওয়ায় আজ শনিবার বিকেল থেকে অনেকে গন্তব্যে ফিরতে শুরু করেছেন।
ট্যুর অপারেটর ও হোটেল মালিকেরা জানান, অন্যান্যবারের তুলনায় এবার পিকনিক ও শিক্ষাসফরে আসা বাসের সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় ছয় শতাধিক পিকনিকের বাস রাখা হয় শহরের বাইপাস সড়কের দুই পাশে, উত্তরণ আবাসিক এলাকার সড়কে, আশপাশের আরও তিনটি খোলা জায়গায়। শহরের অভ্যন্তরে পর্যটন করপোরেশনের বিশাল মাঠেও শতাধিক বাস রাখা হয়। কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে বাসের ধারণক্ষমতা ১২০টি।
ঢাকার তেজগাঁও এলাকা থেকে ১ মে বিকেলে পিকনিকে আসেন একটি শ্রমিক সংগঠনের ৫০-৬০ জন। বাইপাস সড়কে গাড়ি রেখে সবাই সৈকতে নেমে পড়েন। তাঁদের একজন নজরুল ইসলাম (৪৫) বলেন, কমবেশি সবাই বিভিন্ন পোশাক কারখানার শ্রমিক। সারা দিন কাজকর্মে ব্যস্ত থাকতে হয় তাঁদের। পয়লা মে উপলক্ষে তিন দিনের ছুটি কাটাতে সবাই কক্সবাজার ছুটে আসেন। আজ বিকেলে সবার গন্তব্যে ফেরার কথা।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট ক্লাব ও ট্যুর অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের (টুয়াক) সভাপতি রেজাউল করিম বলেন, কম খরচে সৈকত ভ্রমণে বেশির ভাগ মানুষ এখন ট্যুর অপারেটরের সহযোগিতা নিচ্ছেন। তাতে নিরাপত্তাও নিশ্চিত হয়। অল্প সময়ে বিনোদনকেন্দ্রগুলো ঘুরে আসার সুযোগ পান। তবে বঙ্গোপসাগরের মধ্যের প্রবালসমৃদ্ধ দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় পর্যটকের ভ্রমণ বন্ধ রয়েছে। সাগর উত্তাল থাকায় সাগরদ্বীপ মহেশখালী ভ্রমণেও পর্যটকদের নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স কত ভ রমণ এস ছ ন শহর র
এছাড়াও পড়ুন:
সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হবে: ডিএমপি কমিশনার
বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী। তিনি বলেন, আগের মতো সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শারদীয় দুর্গাপূজা অনুকূল পরিবেশে ও নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হবে।
আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে আজ বৃহস্পতিবার ডিএমপি সদর দপ্তরে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে আয়োজিত এক প্রস্তুতি সভায় ডিএমপি কমিশনার এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে এবং আগের মতো সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বাঙালি হিন্দুধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা অনুকূল পরিবেশে ও নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হবে।
সভার শুরুতে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (অপারেশনস) মো. শহীদুল্লাহ দুর্গাপূজা উপলক্ষে ডিএমপির গৃহীত নিরাপত্তা পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। তিনি বলেন, এ বছর ঢাকা মহানগরীতে ২৫৮টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। মণ্ডপভিত্তিক নিরাপত্তা পরিকল্পনার বাইরে পৃথক ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাও থাকবে। এ ছাড়া প্রতিমা বিসর্জনের দিন সার্বিক নিরাপত্তা দেওয়া হবে।
ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (প্রশাসন) মো. সরওয়ার পূজামণ্ডপে আসা দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে রাস্তাঘাটের প্রয়োজনীয় সংস্কার ও তা পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। এ ছাড়া অগ্নিনিরাপত্তা–সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেন।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, পূজামণ্ডপগুলো যেন কোনোভাবেই অরক্ষিত না থাকে। সিসিটিভি (ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন) ক্যামেরা স্থাপনের মাধ্যমে পূজামণ্ডপের নিরাপত্তা বাড়াতে হবে। এ ছাড়া পূজা চলাকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কোনো প্রকার ভুল তথ্য বা অপতথ্য সম্পর্কে সতর্ক থাকার অনুরোধ করেন তিনি।
সভায় বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ, মহানগর পূজা উদ্যাপন পরিষদ, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ, রামকৃষ্ণ মিশন মঠের উপাধ্যক্ষসহ সংশ্লিষ্ট নেতারা উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা দুর্গাপূজা উপলক্ষে ডিএমপির গৃহীত নিরাপত্তা পরিকল্পনা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং ধন্যবাদ জানান।
এ সময় ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (সিটিটিসি) মো. মাসুদ করিম, অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মো. শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (লজিস্টিকস) হাসান মো. শওকত আলী, অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. জিললুর রহমানসহ ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনী, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও সেবা সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।