ভারতশাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামের বাইসরন উপত্যকায় বন্দুকধারীদের গুলিতে ২৬ জন নিহত হওয়ার ১১ দিন পর ভারত ও পাকিস্তান একটি সামরিক সংঘাতের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে।

গত ২২ এপ্রিলের হামলার পর থেকে পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশী এ দুই দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপ ঘোষণা করেছে। ভারত পরোক্ষভাবে পাকিস্তানকে এ হামলার জন্য দায়ী করেছে, যদিও ইসলামাবাদ এ হত্যাকাণ্ডে কোনো ধরনের ভূমিকা রাখার কথা অস্বীকার করেছে।

পাল্টা পদক্ষেপের অংশ হিসেবে সিন্ধু পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে ভারত। সিন্ধু অববাহিকার অভিন্ন নদ–নদীগুলোর পানির ওপর পাকিস্তান অনেকাংশে নির্ভরশীল। এদিকে ভারতের এ চুক্তি স্থগিত করার জবাবে পাকিস্তান হুমকি দিয়েছে ১৯৭২ সালের সিমলা চুক্তি বাতিলের। এ চুক্তি অনুসারেই কাশ্মীরের যুদ্ধবিরতি রেখাকে নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে আসছে দুই দেশ।

এ ছাড়া উভয় দেশ পরস্পরের নাগরিকদের বহিষ্কার করেছে ও কূটনৈতিক মিশনগুলোও সীমিত করেছে।

২০২১ সাল থেকে দুই দেশের মধ্যে যদিও একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর রয়েছে, তবু বর্তমানে যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে, তা ২০১৯ সালের পর সবচেয়ে গুরুতর। এ সময় কাশ্মীরের পুলওয়ামায় এক হামলায় ৪০ ভারতীয় সেনা নিহত হলে ভারত পাকিস্তানে বিমান হামলা করে। সম্প্রতি আবারও নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর গোলাগুলি শুরু করেছে তারা।

এখন পর্যন্ত উভয় দেশ তাদের কূটনৈতিক অংশীদারদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখছে। গত বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করে উভয় পক্ষকে উত্তেজনা কমানোর পথ খুঁজে বের করার আহ্বান জানান।

এ অবস্থায় এখন উদ্বেগ বাড়ছে যে ভারত আবারও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান চালাতে পারে।

এখন পর্যন্ত উভয় দেশ তাদের কূটনৈতিক অংশীদারদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখছে। গত বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করকে ফোন করে উভয় পক্ষকে উত্তেজনা কমানোর পথ খুঁজে বের করার আহ্বান জানান। পরদিন গত বৃহস্পতিবার মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংকে ফোন করে কাশ্মীর হামলার নিন্দা জানান ও ভারতের প্রতি ‘দৃঢ় সমর্থন’ ব্যক্ত করেন।

ইতিমধ্যে শাহবাজ শরিফ সমর্থন আদায়ে পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ মিত্র চীন, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে কথা বলেছেন। দুই উপসাগরীয় দেশের রাষ্ট্রদূতদের তিনি অনুরোধ করেন, তাঁরা যেন ভারতকে উত্তেজনা হ্রাসের আহ্বান জানান।

সামনে কী ঘটতে পারে—এ বিষয়ে পাকিস্তানি কৌশলবিদদের দৃষ্টিভঙ্গি বোঝার জন্য দেশটির সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) মুঈদ ইউসুফের সঙ্গে কথা বলেছে আল–জাজিরা। ২০২১ সালের মে থেকে ২০২২ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন সরকারের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ছিলেন তিনি।

মুঈদ ইউসুফ বর্তমানে লাহোরভিত্তিক বেসরকারি বিকনহাউস ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্যের দায়িত্ব পালন করছেন। দক্ষিণ এশিয়া ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিষয়ে কয়েকটি বই রচনা ও সম্পাদনা করেছেন তিনি।

২০১৪ সাল থেকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় রয়েছেন। তাঁর মেয়াদে পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক উত্তেজনাকর হয়ে রয়েছে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পরর ষ ট রমন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় নারী বক্সিংয়ে রৌপ্য পেলেন যবিপ্রবির আফরা

সপ্তম জাতীয় নারী বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপ প্রতিযোগিতায় রৌপ্য পদক অর্জন করেছেন যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শিক্ষার্থী আফরা খন্দকার প্রাপ্তি।

বৃহস্পতিবার(৩১ জুলাই) বাংলাদেশ আনসারের হয়ে অংশ নিয়ে ফাইনাল ম্যাচে তিন রাউন্ড শেষে রানার্সআপ হন তিনি। 

বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক আফঈদা খন্দকার প্রান্তির বড়বোন আফরা খন্দকার। তিনি যবিপ্রবির শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও সাতক্ষীরা জেলার সুলতানপুর গ্রামের খন্দকার আরিফ হাসান প্রিন্সের বড় মেয়ে।

পল্টনের মোহাম্মদ আলী স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার জাতীয় বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপে মেয়েদের ৫২ কেজি ওজন শ্রেণির ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রতিপক্ষ যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী জিনাত ফেরদৌসের মুখোমুখি হন আফরা। টানা তিন রাউন্ড শেষে বিজয়ী হতে না পারলেও নকআউট সামলিয়ে নেন ভালোভাবেই।

ম্যাচ শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “হেরেছি এতে আক্ষেপ নেই। খেলাটি শেষ পর্যন্ত নিয়ে যেতে চেয়েছিলাম, আলহামদুলিল্লাহ সেটা পেরেছি।”

খেলা শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরষ্কার তুলে দেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মাহবুব উল আলম।

তিনি ২০১৭ সালে জুনিয়র ন্যাশনাল বক্সিংয়ে তৃতীয়, ২০১৮ সালে বাংলাদেশ যুব গেমসে প্রথম, ২০১৯ সালে জুনিয়র ন্যাশনাল, স্বাধীনতা কাপ ও বিজয় কাপে প্রথম স্থান অর্জন করেন। ২০২১ ও সর্বশেষ জাতীয় প্রতিযোগিতায় তিনি দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন।

এদিকে রৌপ্য পদক অর্জন প্রসঙ্গে আফরা বলেন, “আমি আমার এ অর্জনে অত্যন্ত আনন্দিত। আন্তর্জাতিক একজন প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে খেলা আমার জন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা। একজন খেলোয়াড় হিসেবে আমার বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরতে এবং গৌরব বয়ে আনতে চাই।”

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে তিনি বলেন, “অনার্স শেষ করে বক্সিং বিষয়ে পেশাদার কোচ হওয়ার ইচ্ছা রয়েছে। পাশাপাশি সুযোগ পেলে অলিম্পিক গেমসে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে চাই।”

ঢাকা/ইমদাদুল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জাতীয় নারী বক্সিংয়ে রৌপ্য পেলেন যবিপ্রবির আফরা
  • ডিসেম্বরের নির্বাচনকে সামনে রেখে মিয়ানমারে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন