চোয়ালের সঙ্গে কলম চেপে লিখে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছে লিতুন জিরা
Published: 12th, July 2025 GMT
লিতুন জিরার জন্ম থেকে দুটি পা নেই। নেই হাত দুটিও। ডান বাহুর মাথা ও চোয়ালের সঙ্গে কলম চেপে ধরে লিখে লিখে চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় সে। প্রকাশিত ফলাফলে সে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে। অদম্য এই কিশোরী একই ফল করেছিল পিইসিতেও। বড় হয়ে চিকিৎসক হিসেবে দেখার স্বপ্ন তার। লিতুন জিরার স্বপ্ন পূরণের পথে শুরু থেকেই তার পাশে আছে পরিবার।
লিতুন জিরা যশোরের মনিরামপুর উপজেলার শেখপাড়া খানপুর গ্রামের হাবিবুর রহমান ও জাহানারা খাতুন দম্পতির মেয়ে। সে উপজেলার গোপালপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।
লিতুন জিরার বাবা হাবিবুর রহমান উপজেলার শহীদ মুক্তিযোদ্ধা এ আর মহিলা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ের প্রভাষক। মা জাহানারা খাতুন গৃহিণী। দুই ভাই-বোনের মধ্যে সে ছোট। বড় ভাই ইশতিয়াক আহমেদ ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং তৃতীয় বর্ষের ছাত্র।
ফলাফল প্রসঙ্গে লিতুন জিরা বলে, ‘পরীক্ষার ফলাফলে আমি খুব খুশি। মা-বাবা ছাড়াও স্কুলের স্যার ও বন্ধুরা আমাকে সহযোগিতা করেছে। সবার কাছে আমি কৃতজ্ঞ। আমার ইচ্ছা ভালো মানুষ হওয়ার। লেখাপড়া শিখে আমি চিকিৎসক হতে চাই। মানুষের সেবা করতে চাই।’
মা-বাবার সঙ্গে লিতুন জিরা.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দুই স্কুলের ২২ শিক্ষক পাস করাতে পারেননি ৩০ শিক্ষার্থীকে!
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বিশ্বনাথপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় ও সাঘাটা উপজেলার ঘুরিদহ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এ বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কেউ পাস করেনি।
শুক্রবার (১১ জুলাই) দুপুরে এমপিওভুক্ত দুটি বিদ্যালয়ের শতভাগ শিক্ষার্থী ফেল করার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান। এর আগে, গতকাল এসএসসির ফল প্রকাশিত হয়।
জানা যায়, সাঘাটা উপজেলার ঘুরিদহ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এ বছর ২৪ জন শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন। এর মধ্যে, বিজ্ঞান বিভাগ থেকে ১০ জন ও মানবিক বিভাগ থেকে ১৪ জন। তবে, তাদের একজনও পাস করেনি। বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন ১৭ জন। তার মধ্যে শিক্ষক ১২ জন।
আরো পড়ুন:
কুড়িগ্রামের ৩ বিদ্যালয়ে কেউ পাস করেনি
জবিতে দুই শিক্ষক ও বাগছাসের নেতাদের ওপর ছাত্রদলের হামলা
অপরদিকে, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার বিশ্বনাথপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে ১২ জন শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে শিক্ষক ১০ জন। বিদ্যালয়টি থেকে এবার পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন মানবিক বিভাগের ৬ জন শিক্ষার্থী। তবে সবাই ফেল করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে ঘুরিদহ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. শাহেদা বেগম এবং বিশ্বনাথপুর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইলিয়াস হোসাইনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তারা রিসিভ করেননি।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আতাউর রহমান বলেন, ‘‘গত ২ জুলাই আমি এখানে যোগদান করেছি। রেজাল্ট সংক্রান্ত বিষয়ে আগামী রবিবার বিস্তারিত বলতে পারব। তবে, জেলায় পাসের হার ৬২ শতাংশ এবং একজন শিক্ষার্থীও পাস করেনি, এমন বিদ্যালয়ের সংখ্যা দুটি।’’
তিনি বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, ‘‘প্রতি মাসে শিক্ষকদের এত টাকা বেতন দেওয়ার পরও একজন শিক্ষার্থী পাস করতে না পারার বিষয়টি অত্যন্ত লজ্জার। প্রতিষ্ঠান দুটিকে শতভাগ জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে। পাশাপাশি যেসব বিদ্যালয়ে ফেলের হার উদ্বেগজনক, তাদেরকেও জবাবদিহিতার আওতায় আনা হবে।’’
ঢাকা/মাসুম/রাজীব