মানুষের পথচলায় ঘোড়ার পিঠে যাত্রার সূচনা সেই আদি যুগে। সময় বদলেছে, বাহন বদলেছে, আধুনিক হয়েছে সবকিছু; কিন্তু ঘোড়া আবার ফিরছে। তবে ভবিষ্যতের সবচেয়ে আধুনিক
বাহন হয়ে।
যান্ত্রিক ঘোড়া কর্লিও উদ্ভাবন করে চমক সৃষ্টি করেছে জাপানি বাইক নির্মাতা কাওয়াসাকি। অসমান হোক বা পাহাড়ি পথ– এমন যে কোনো ভূমিতে যাত্রীকে পিঠে নিয়ে দুর্দান্ত গতিতে ছুটতে পারবে হাইড্রোজেন জ্বালানিতে সচল বিশেষ ঘোড়া কর্লিও। জাপানি নির্মাতারা ত্রিমাত্রিক প্রযুক্তিকে আরেক মাত্রায় পৌঁছে দিল। এবার যান্ত্রিক ঘোড়া (রোবটিক হর্স) উদ্ভাবন করে সারাবিশ্বকে চমক দেখিয়েছে সূর্যোদয়ের দেশ খ্যাত জাপান।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা এআই) প্রযুক্তির উন্মাদনায় নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে পারে কর্লিও। পাহাড়ি পথে বুদ্ধিদীপ্ত গতিতে ছুটে চলার সক্ষমতা আছে। এমন যান্ত্রিক ঘোড়া ভবিষ্যতে দুর্গম পথে যাত্রী পারাপারে বৈপ্লবিক ও দৃশ্যমান পরিবর্তন আনবে বলে নির্মাতারা দাবি করেছে।
জাপানের বিখ্যাত মোটরসাইকেল নির্মাতা কাওয়াসাকি হেভি ইন্ডাস্ট্রিজ হাইড্রোজেন শক্তির চার পায়ের বিশেষ ধরনের যান্ত্রিক ঘোড়ার ডিজাইন করেছে। রোবটিক ঘোড়ার নাম দেওয়া হয়েছে ‘কর্লিও’। চলতি বছরের ওসাকা-কানসাই প্রদর্শনীতে যান্ত্রিক ঘোড়াকে প্রথমবার প্রকাশ্যে আনে নির্মাতারা। ঠিক তার পরই কর্লিও নিয়ে দুনিয়াজুড়ে হইচই পড়ে যায়।
নির্মাতারা বলছে, যান্ত্রিক ঘোড়ার চার পা পথের প্রয়োজনে আলাদাভাবে কাজ করতে পারদর্শী। তাই যে কোনো দুর্গম পথে ঘোড়াটি নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারবে। গন্তব্যের পথে ছুটে চলার সময় যাত্রীকে পিঠে নিতে পারবে কর্লিও। যার মধ্যে রয়েছে ১৫০ সিসির হাইড্রোজেন
পরিচালিত ইঞ্জিন।
কাওয়াসাকি উদ্ভাবিত যান্ত্রিক ঘোড়ার অবয়ব ধাতু ও কার্বনের তৈরি। সামনের প্রান্তে মাথার মতো ঢাল রয়েছে। দৃষ্টিনন্দন বাইকের ডিজাইনসদৃশ কর্লিওর নকশা করা হয়েছে। কৃত্রিম বুদ্ধিতে নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা থাকায় ঘোড়া সওয়ারের শরীরের নড়াচড়ায় তাৎক্ষণিক সাড়া দিতে সক্ষম কৃত্রিম ঘোড়াটি।
বাইকের বিকল্প কোনো চিন্তা থেকে এমন বাহনের চিন্তা করা হয়েছে কিনা– এ বিষয়ে নির্মাতার তরফ থেকে তেমন কিছু জানানো হয়নি। তবে যাত্রীর স্বাচ্ছন্দ্যের কথা মাথায় রেখে বহুমাত্রিক ফিচার যুক্ত করা করেছে। যার মধ্যে দিকনির্দেশনা যন্ত্র, হেড আপ ডিসপ্লে, হাইড্রোজেন জ্বালানির পরিমাপক এবং ওজন বণ্টনের যন্ত্র অন্যতম। রিয়েল টাইম তথ্য সরবরাহে দারুণ পারদর্শী অত্যাধুনিক এ ঘোড়া। নির্মাতা কাওয়াসাকি বলছে, দ্রুত যান্ত্রিক ঘোড়ার প্রযুক্তিতে দৃশ্যমান বেশ কিছু পরিবর্তন আনা হবে। গবেষণা ও মানোন্নয়নে সব রকমের ধাপ পেরিয়ে তবেই একে বাণিজ্যিক করা হবে। কর্লিওর সম্ভাব্য দাম নিয়েও তেমন কোনো আভাস পাওয়া যায়নি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কর ল ও
এছাড়াও পড়ুন:
নানা আয়োজনে দিনভর উৎসবের আমেজ
লম্বা পায়ে মাঠজুড়ে হেঁটে বেড়াচ্ছে এক ব্যক্তি। মাথায় রঙিন পরচুলা। সাজসজ্জাও অদ্ভুত। বিশেষ কায়দায় বাঁশের এক জোড়া লম্বা লাঠির সাহায্যে ‘রণপা’ তৈরি করে হাঁটছিল ওই ব্যক্তি, যা গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের একটি অংশ। সেই রণপা সাজের ব্যক্তির কাছে শিশু-কিশোরদের অনেকে আগ্রহ নিয়ে যাচ্ছিল, কেউ আবার কাছে যেতে ভয় পাচ্ছিল। এর মধ্যেই পাশে দাঁড়িয়ে ছবি কিংবা সেলফি তোলা ও হাত মিলিয়ে করমর্দনও করছিল কেউ কেউ।
এ ছাড়া মাঠজুড়েই ছিল শিশু-কিশোরদের খেলাধুলার নানা উপকরণ। মিনি ফুটবল খেলে গোল দেওয়া, লুডু খেলে পুরস্কার জেতা কিংবা বুদ্ধি খাটিয়ে ‘ফুট স্টেপ’ খেলা। এর বাইরে অনেক শিশু-কিশোর ছিল বাবুল্যান্ডে খেলাধুলায় কিংবা বায়োস্কোপ দেখায় মত্ত। অনেকে আবার টিয়া পাখির সাহায্যে নিজেদের ভবিষ্যৎও জেনে নিচ্ছিল।
রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় দক্ষিণ বারিধারা সোসাইটি মাঠে প্রথম আলো আনন্দমেলায় গতকাল শুক্রবার সারা দিনের চিত্র ছিল এমনই। সকাল থেকেই সেখানে ছিল উৎসবের আমেজ। মেলা শুরু হয় সকাল আটটায়। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলে শিশু-কিশোর, অভিভাবকসহ এলাকাবাসীর আগমনে তা জমজমাট হয়ে ওঠে।
শুক্রবার সকাল আটটার কিছু আগে মাঠে গিয়ে দেখা যায়, অভিভাবক নিজ নিজ সন্তানদের নিয়ে মাঠে আসছেন। সবার হাতে হাতে আঁকাআঁকির রংপেনসিল, তুলি, খাতা, স্কেল ও অন্যান্য সরঞ্জাম। সাড়ে আটটায় শিশু-কিশোরদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে শুরু হয় ‘প্রথম আলো আনন্দমেলা’। প্রতিযোগিতায় তিন শতাধিক শিশু-কিশোর অংশ নেয়।
প্রতিযোগিতায় পাশাপাশি বসে আঁকে দুই ভাই মেহরাব তালহা ও মাহির তাহমিদ। পাশে দাঁড়িয়ে থাকা তাদের বাবা মনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে জানান, বড় ছেলের স্কুল মাঠের পাশেই। স্কুলে ছেলেকে আনা–নেওয়ার সময় দেখেন মাঠে এই অনুষ্ঠান আছে। পরে দুই ছেলেকে বলে রেখেছিলেন যে তাদের এখানে অংশগ্রহণ করাবেন। ছোট ছেলে মাহিরের চিত্রাঙ্কনে বেশি ঝোঁক বলেও জানান তিনি। পরে মেহরাব জুনিয়র ক্যাটাগরিতে দশম স্থান অর্জন করে। সে স্মৃতিসৌধ এঁকেছিল।
প্রথম আলো আনন্দমেলায় ছিল বায়োস্কোপ প্রদর্শনী