জুলাই-আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানে শহীদ আনিসুর রহমান আশিকের পরিবারকে মামলা তুলে নিতে আসামিরা হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন মামলার বাদী। সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন আনিসুরের বোন ও মামলার বাদী তাহমিনা আক্তার।

তাহমিনা আক্তার সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন, গত শুক্রবার একটি মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করে বিপ্লব সাহা পরিচয় দিয়ে আসামি দিলীপ কুমার আগারওয়ালের নাম মামলা থেকে বাদ দিতে বলা হয়। দিলীপ কুমার আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক উপকমিটির সম্পাদক। তিনি রাজি না হওয়ায় দিলীপ কুমার ফোন করে ২৫ লাখ টাকার বিনিময়ে মামলা তুলে নিতে বলেন। কিন্তু রাজি না হওয়ায় তাঁকে গালাগাল করেন এবং হুমকি দেন।

দিলীপ কুমার আগারওয়াল গত ২২ এপ্রিল গ্রেপ্তার হন। এরপর অসুস্থতা দেখিয়ে বাংলাদেশ মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানিয়েছে আনিসুর রহমানের পরিবার।

তাহমিনা আক্তার আরও বলেন, মামলার আরেক আসামি শ্রমিক লীগ নেতা আওরঙ্গজেব সিদ্দিক নান্নু। তাঁর কথিত বোন পরিচয় দিয়ে জোবাইদা ইসলাম নামের এক নারী ফোন করে মামলা থেকে তাঁর নাম বাদ দিতে বলেন। রাজি না হওয়ায় উল্টো তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দেন।

জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে জোবাইদা ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আওরঙ্গজেব সিদ্দিক তাঁর কাছের ভাই। তিনি রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে (রাউজক) চাকরি করেন। তিনি শ্রমিক দলের সদস্য, শ্রমিক লীগ নেতা নন। তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে মামলা দেওয়া হয়েছে।

অপর দিকে দিলীপ কুমার আগারওয়াল পরিচয় দিয়ে যে মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করে হুমকি দেওয়া হয়েছে, সেই নম্বরে একাধিকবার চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

তাহমিনা আক্তার উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, মামলার এজাহারভুক্ত অধিকাংশ আসামি এখনো গ্রেপ্তার হয়নি। পলাতক ও কারাগারে থাকা আসামিদের হুমকিতে তিনি ও তাঁর পরিবার বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। অবিলম্বে আসামিদের গ্রেপ্তার ও অন্য মামলায় কারাগারে থাকা আসামিদের এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখাতে প্রধান উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ ন কর

এছাড়াও পড়ুন:

দাম না কমলে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি, ২,৮০০ আবেদন জমা মন্ত্রণালয়ে

দেশে পেঁয়াজের কোনো সংকট নেই। কৃষি মন্ত্রণালয় পেঁয়াজ সংরক্ষণ সুবিধাজনক করার জন্য ১০ হাজার মেশিন বিতরণ করেছে। ফলে পেঁয়াজ সংরক্ষণ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটেছে। এদিকে ১০ দিন ধরে পেঁয়াজের দাম বাড়তে দেখা গেছে।

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন এসব তথ্য জানিয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, চলতি সপ্তাহের মধ্যে বাজারে দাম না কমলে পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে দাম স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলে আর অনুমতি দেওয়া হবে না।

আজ রোববার ঢাকায় সচিবালয়ে বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে হঠাৎ সংবাদ সম্মেলন করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। এ সময় বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘পেঁয়াজ আমদানি করতে ইচ্ছুক ২ হাজার ৮০০ জনের আবেদন আছে মন্ত্রণালয়ে। এর ১০ শতাংশকেও যদি পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়, তাহলে বাজারে ধস নামবে। আমরা ধস নামাতে চাই না।’

বাংলাদেশে রপ্তানি করার জন্য স্থলবন্দরের ওপাশে অনেক পেঁয়াজ মজুত করা হয়েছে জানিয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আপনাদের মনে থাকার কথা পেঁয়াজের দাম ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় নেমে এসেছিল। সেটা কৃষকদের উৎপাদন ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল না। তবে অনেক দিন পেঁয়াজের দাম ৬০ থেকে ৬৫ টাকার মধ্যে ছিল। মৌসুমের শেষ সময় হওয়ায় এবং পেঁয়াজের ওজন কমে যাওয়ার কারণে সম্প্রতি দাম বাড়তে পারে।’

বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা চাই পেঁয়াজের একটা স্বাভাবিক মূল্য পরিস্থিতি বিরাজ করুক। এতে আমরা আমাদের নিজস্ব কৃষি সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে পারব। আমরা চাই কৃষক যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন, আবার ভোক্তারাও যেন ক্ষতির শিকার না হন।’

সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর কোনো তথ্য তাঁর কাছে নেই বলে সাংবাদিকদের জানান বাণিজ্য উপদেষ্টা।

কয়েক দিনের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৪০ থেকে ৫০ টাকা বেড়ে যাওয়াকে যৌক্তিক মনে করেন কি না, জানতে চাইলে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘অবশ্যই যুক্তিসংগত নয়। তবে সামগ্রিক অর্থনীতি মাথায় রেখে সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এটি কোনো সাইকেল নয় যে আমরা যেকোনো একটা গলিতে ঢুকিয়ে দিলাম।’

বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, কৃষিসচিবের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী সাড়ে তিন লাখ টনের মতো পেঁয়াজ মজুত আছে। চলতি মাসের মধ্যে আসবে ৮৫ থেকে ৮৭ হাজার টন এবং আগামী মাসে আসবে আড়াই লাখ টন। এরপর নিয়মিত পেঁয়াজের সরবরাহও থাকবে বাজারে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ