ব্যর্থ পাঁচ বিয়ে, অভিনেতার করুণ মৃত্যুর গল্প
Published: 6th, May 2025 GMT
বলিউড অভিনেতা মহেশ আনন্দ। তেলেগু, মালায়ালাম, কন্নড় ভাষার সিনেমায়ও দেখা গেছে তাকে। ১৯৮২ সালে ‘সনম তেরি কসম’ সিনেমায় নৃত্যশিল্পী হিসেবে কাজ করেন। মূলত, এ সিনেমার মাধ্যমে রুপালি জগতে পা রাখেন। ১৯৮৪ সালে তার ভাগ্যবদল হয়। এ বছর ‘কারিশমা’ সিনেমায় অভিনেতা হিসেবে কাজের সুযোগ পান। এরপর শুরু করেন মডেলিং।
মার্শাল আর্টে প্রশিক্ষণ নিয়ে ব্ল্যাক বেল্ট লাভ করেন মহেশ। নায়ক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠার জন্য বলিউডে আসলেও খলনায়ক হয়ে যান মহেশ। কারণ প্রযোজকরা তাকে খল চরিত্রের জন্য কাস্ট করতে থাকেন। সময়ের সঙ্গে জনপ্রিয়তা লাভ করেন মহেশ। উপহার দেন ৩ শতাধিক সিনেমা। কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে পাঁচটি বিয়ে করেও দাম্পত্য জীবনে ব্যর্থ হন। সর্বশেষ করুণ পরিণতির মাধ্যমে তার জীবনের যবনিকাপাত হয়। চলুন জেনে নিই, তার প্রেম-বিয়ে ও জীবনের করুণ পরিণতির গল্প—
মহেশের জীবনে প্রেম বহুবার এসেছে। জানা যায়, ডজনখানেক নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। যাইহোক, মহেশের প্রথম দুই সিনেমার প্রযোজক ছিলেন বরখা রায়। অভিনেত্রী রীনা রায়ের বোন ছিলেন তিনি। বরখার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান এই অভিনেতা। এ জুটির প্রেম পরিণয় পায়। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে তাদের।
বরখার সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের পর মহেশ মিস ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনালের এরিকা মারিয়ার প্রেমে পড়েন। এ প্রেমও পরিণয় পায়। তাদের সংসার আলো করে জন্ম নেয় একটি পুত্রসন্তান। তবে এ বিয়েও টেকেনি। এরপর মধু মালহোত্রার সঙ্গে ঘর বাঁধেন মহেশ। অভিনেত্রী ঊষা বাচানির সঙ্গে চতুর্থ সংসার বাঁধেন মহেশ। কিন্তু এই দুই সংসারও ভেঙে যায়। লামা নামে রাশিয়ান এক নারীর প্রেম পড়েন মহেশ। এটি তার পঞ্চম বিয়ে। কিন্তু এই সংসারও ভেঙে যায়। তারপর রাশিয়ায় ফিরে যান লানা।
অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের কারণে ক্রমেই দুর্বিষহ হয়ে উঠতে থাকে মহেশের জীবন। বলিউড বড়ই নিষ্ঠুর। এখানে কিছুই থেমে থাকে না। সময়ের সঙ্গে মহেশ আনন্দেরও কাজ কমতে থাকে। একবার শহরের এক নাইট ক্লাবে অভিনেতা অক্ষয় কুমারের সঙ্গে ঝামেলায় জড়ান মহেশ। জানা যায়, কয়েকজন নারীকে উদ্দেশ্য করে কুমন্তব্য করেছিলেন মহেশ। তা ভালো লাগেনি অক্ষয়ের। প্রতিবাদ করতেই ঝামেলা তৈরি হয়। জায়গা ফাঁকা থাকে না। মহেশের উশৃঙ্খল কর্মকাণ্ডের জন্য ক্রমশই লাইমলাইট থেকে দূরে সরতে শুরু করেন মহেশ। দীর্ঘ ১৮ বছর তার হাতে কোনো কাজ ছিল না!
অর্থনৈতিকভাবে খুবই খারাপ অবস্থা ছিল মহেশের। সেই সময়ে এক ফেসবুক পোস্টে এই অভিনেতা বলেছিলেন, “বন্ধুরা আমাকে মাদকাসক্ত বলে। আমার পরিবার নেই। আমার সৎভাই ৬ কোটি রুপি নিয়ে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। আমি ৩ শতাধিক সিনেমায় অভিনয় করেছি। অথচ এক বোতল পানি কেনারও টাকা নেই। এই পৃথিবীতে আমার একটিও বন্ধু নেই। এটি খুবই হতাশাজনক।”
নিউজ১৮ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০১৯ সালে ৯ ফেব্রুয়ারি মারা যান মহেশ আনন্দ। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর। তার মৃত্যুর সময়ে কেউই তার পাশে ছিলেন না। তার বাসার গৃহপরিচারিকা টানা দুদিন কলিং বেল বাজিয়ে সাড়া না পেয়ে তার বোনকে খবর দেয়। পরে ভারসোভা থানায় খবর দিলে পুলিশ গিয়ে দরজা ভেঙে মহেশের মরদেহ উদ্ধার করে।
সোফার ওপরে মরে পড়েছিলেন মহেশ। চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল মদের বোতল ও খাবার। তার মৃত্যু নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছিল। বিশেষ করে স্ত্রীদের সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদসহ নানা বিষয় আলোচনায় আসে। তবে জ্যোতি নামে তার এক আত্মীয় মনে করেন, এটা স্বাভাবিক মৃত্যু। ময়নাতদন্তের পর জানা যায়, মরদেহ উদ্ধারের ৩ দিন আগে তার মৃত্যু হয়েছে। মহেশের মরদেহে পচন ধরেছিল।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সিরাজের ভুলের খেসারত কি দিতে হবে ভারতকে
কথায় আছে ‘ক্যাচ মিস তো ম্যাচ মিস’। তবে মোহাম্মদ সিরাজ ক্যাচ মিস না করেও করলেন বড় এক ভুল।
প্রসিধ কৃষ্ণার শর্ট লেংথের বলে পুল করেছিলেন হ্যারি ব্রুক। কিন্তু টাইমিং ঠিকঠাক না হওয়ায় বল চলে যায় লং লেগে দাঁড়ানো সিরাজের হাতে। তিনি বলটা ভালোভাবেই মুঠোবন্দী করেন। কিন্তু এরপর শরীরের ভারসাম্য ঠিক রাখতে পারেননি। তাঁর ডান পা স্পর্শ করে সীমানারেখা সঙ্গে।
ব্যস, ‘জীবন’ পাওয়ার পাশাপাশি ছক্কাও পেয়ে যান ব্রুক। ২১ বলে ১৯ রানে থাকতে বেঁচে যাওয়া এই ব্যাটসম্যান এরপর টি-টোয়েন্টি মেজাজে খেলতে শুরু করেছেন। পরের ১৯ রান করেছেন মাত্র ৯ বলে। তাঁকে দারুণ সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছেন ‘অভিজ্ঞতার ভান্ডার’ জো রুট। তাতে ওভাল টেস্টের চতুর্থ দিনের প্রথম সেশন শেষে ইংল্যান্ডই কিছুটা সুবিধাজনক অবস্থানে আছে।
৩৭৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নামা ইংল্যান্ড ৩ উইকেটে ১৬৪ রান তুলে মধ্যাহ্ন বিরতিতে গেছে। ৩-১ ব্যবধানে সিরিজ জিততে স্বাগতিকদের দরকার আরও ২১০ রান। ২-২ সমতায় সিরিজ শেষ করতে ভারতের চাই ৭ উইকেট।
কাল ১ উইকেটে ৫০ রান তুলে তৃতীয় দিন শেষ করেছিল ইংল্যান্ড। দিনের শেষ ভাগে সিরাজের বলে বোল্ড হন জ্যাক ক্রলি। আজ অধিনায়ক ওলি পোপকে নিয়ে দলকে ভালোই টানছিলেন আরেক ওপেনার বেন ডাকেট। তবে ফিফটি পেরোনোর পরপরই কৃষ্ণার বলে দ্বিতীয় স্লিপে লোকেশ রাহুলের হাতে ধরা পড়েন ডাকেট।
এরপর পোপও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। ব্যক্তিগত ২৭ রানে থাকতে সিরাজের বলে এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়েন। সিরাজ ব্রুকের ক্যাচটা ঠিকঠাক নিতে পারলে ভারতই এতক্ষণে চালকের আসনে থাকত। কিন্তু ব্রুক আর রুট মিলে ৬৩ বলে অবিচ্ছিন্ন ৫৮ রানের জুটি গড়ে ভারতকে চাপে রেখেই মধ্যাহ্ন বিরতিতে গেছেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোরভারত: ২২৪ ও ৩৯৬
ইংল্যান্ড: ২৪৭ ও ৩৮ ওভারে ১৬৪/৩ (ডাকেট ৫৪, ব্রুক ৩৮*, পোপ ২৭, রুট ২৩*; সিরাজ ২/৪৪, কৃষ্ণা ১/৭৪)
* চতুর্থ দিনের প্রথম সেশন শেষে।