জুলাই গণ–অভ্যুত্থানকে নেতিবাচক হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে: গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ
Published: 7th, May 2025 GMT
বর্তমানে অনেক সংবাদমাধ্যমে ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানকে’ শুধু আন্দোলন হিসেবে দেখানো হচ্ছে। এভাবে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানকে আন্দোলন হিসেবে চিত্রায়িত করার মাধ্যমে একসময় দেখানো হবে এটি শুধু একটি ‘রেজিম চেঞ্জের’ আন্দোলন ছিল। বিশ্বব্যাপীও জুলাই গণ–অভ্যুত্থানকে নেতিবাচকভাবে তুলে ধরা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে যে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার ছিল, তা করা হচ্ছে না।
বুধবার রাতে রাজধানীর কাঁটাবনের একটি রেস্তোরাঁয় বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথাগুলো বলা হয়। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানকেন্দ্রিক ১২টি সংগঠনের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে এই সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনটি। মতবিনিময় সভায় অংশ নেওয়া সংগঠনগুলোর মধ্যে ছিল জুলাই ম্যাসাকার আর্কাইভ, রিলায়েবল টেলস, জুলাই স্টোরি, ওয়ারিয়র্স অব জুলাই, ইনকিলাব মঞ্চ, রেভল্যুশন ওয়াচ।
সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদস্যসচিব জাহিদ আহসান বলেন, ‘আমরা যখনই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের কথা বলি, আমরা যখন বিচারের কথা বলি, তখন আমাদেরকে হাইকোর্ট দেখানো হয়।.
প্রয়োজন হলে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও তাদের বিচার নিশ্চিত করার দাবিতে সবাইকে নিয়ে রাজপথে নামবেন বলে জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের মুখ্য সংগঠক তাহমিদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরী বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, সারা বিশ্বব্যাপী বর্তমান সময়ে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানকে নিয়ে যে ধরনের কার্যক্রমগুলো পরিচালনা হচ্ছে, সেগুলোতে অনেকভাবেই জুলাই গণ–অভ্যুত্থানকে নেতিবাচকভাবে তুলে ধরা হচ্ছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, এই অভ্যুত্থানকে মৌলবাদের উত্থান কিংবা বিভিন্ন নামে এটাকে সম্বোধিত করা হচ্ছে। বর্তমান সময় আমরা দেখতে পাচ্ছি যতগুলো ইংরেজি আর্টিকেল আছে, তার একটা বড় অংশ বিভিন্ন বিদেশি লেখক, বিশেষ করে ইন্ডিয়ান লেখকদের লেখা এবং সেই আর্টিকেলগুলোতে পুরো জুলাইকে ভিন্নভাবে চিত্রায়িত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’
তাহমিদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরী বলেন, ‘আমরা বর্তমান সময়ে লক্ষ করছি যে সরকারের পক্ষ থেকে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানকে নিয়ে যে ধরনের প্রপার ডকুমেন্টেশনের দরকার ছিল, সে ডকুমেন্টেশনগুলো হচ্ছে না। আহত এবং শহীদ পরিবারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত কীভাবে করা হবে, সে বিষয়গুলো নিয়েও কোনো ধরনের কার্যক্রম পরিলক্ষিত হচ্ছে না।’
তাহমিদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরী বলেন, ‘আমরা আশঙ্কা করছি, যেভাবে বর্তমানে মিডিয়ায় জুলাই গণ–অভ্যুত্থানকে শুধুমাত্র আন্দোলন হিসেবে দেখানো হচ্ছে এবং এ থেকে আমরা আশঙ্কা প্রকাশ করছি এভাবে জুলাই আন্দোলন হিসেবে এটাকে পোর্ট্রেট করার মাধ্যমে একসময় শুধুমাত্র দেখানো হবে, এটা একটা রেজিম চেঞ্জের আন্দোলন ছিল।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের মুখপাত্র আশরেফা খাতুন উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জোহরান মামদানির জয়: নিউইয়র্কের ইহুদিদের ইসরায়েলে চলে আসতে বলছেন ইসরায়েলি মন্ত্রী
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানিকে হামাসের (ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন) সমর্থক আখ্যা দিয়ে সেখানে বসবাসকারী ইহুদিদের ইসরায়েলে চলে আসার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটির এক মন্ত্রী।
গত মঙ্গলবার নিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচনের ভোট অনুষ্ঠিত হয়। স্বতন্ত্র প্রার্থী নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের সাবেক গভর্নর অ্যান্ড্রু কুমোকে বিপুল ভোটে হারিয়ে নতুন মেয়র হয়েছেন জোহরান মামদানি। পরদিন গতকাল বুধবার ইসরায়েলের কট্টর দক্ষিণপন্থী ওই মন্ত্রী এ আহ্বান জানান।
৩৪ বছর বয়সী দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত ও অভিবাসী পরিবারের সন্তান জোহরান মামদানি নিউইয়র্কের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম মেয়র। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনি আন্দোলনের পক্ষে কথা বলে আসছেন। তবে সাম্প্রতিক মাসগুলোয় তিনি যেমন স্পষ্টভাবে ইহুদিবিদ্বেষের নিন্দা জানিয়েছেন, তেমনি নিজে ইসলামবিদ্বেষের শিকার হওয়া নিয়ে খোলাখুলি কথা বলেছেন।
যে শহর (নিউইয়র্ক) একসময় বৈশ্বিক স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে পরিচিত ছিল, সেই শহর এখন নিজের নিয়ন্ত্রণ তুলে দিয়েছে এক হামাস সমর্থকের (জোহরান মামদানি) হাতে।আমিখাই চিকলি, ইসরায়েলের মন্ত্রীইসরায়েলের প্রবাসী ও ইহুদিবিদ্বেষ প্রতিরোধবিষয়ক মন্ত্রী আমিখাই চিকলি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে লেখেন, ‘যে শহর (নিউইয়র্ক) একসময় বৈশ্বিক স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে পরিচিত ছিল, সেই শহর এখন নিজের নিয়ন্ত্রণ তুলে দিয়েছে এক হামাস সমর্থকের হাতে।’
এই মন্ত্রী আরও বলেন, ‘নিউইয়র্ক কখনো আর আগের মতো থাকবে না, বিশেষ করে ইহুদি সম্প্রদায়ের জন্য। আমি নিউইয়র্কের ইহুদিদের ইসরায়েলের ভূখণ্ডে নিজেদের নতুন বসতি গড়ার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করার আমন্ত্রণ জানাই।’
আরও পড়ুনজোহরান মামদানিকে বেছে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সার্বভৌমত্ব হারিয়েছে: ডোনাল্ড ট্রাম্প১ ঘণ্টা আগেইসরায়েলকে নিয়ে কথা বলার সময় জোহরান মামদানি দেশটিতে ‘বর্ণবৈষম্যমূলক শাসনব্যবস্থা’ চলছে বলে মন্তব্য করেন। এ ছাড়া তিনি ইসরায়েলে গাজা যুদ্ধকে ‘জাতিগত নিধন’ বলে বর্ণনা করেছেন। এসব কারণে ইহুদি সম্প্রদায়ের একাংশের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। যদিও নিউইয়র্কে ইহুদিদের একাংশ তাঁকে সমর্থন জানিয়েছেন এবং তাঁর পক্ষে ভোটের প্রচার চালিয়েছেন।
জয় নিশ্চিত হওয়ার পর বিজয় ভাষণের মঞ্চে স্ত্রী রামা দুয়াজিকে নিয়ে জোহরান মামদানি। ৫ নভেম্বর ২০২৫