বর্তমানে অনেক সংবাদমাধ্যমে ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানকে’ শুধু আন্দোলন হিসেবে দেখানো হচ্ছে। এভাবে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানকে আন্দোলন হিসেবে চিত্রায়িত করার মাধ্যমে একসময় দেখানো হবে এটি শুধু একটি ‘রেজিম চেঞ্জের’ আন্দোলন ছিল। বিশ্বব্যাপীও জুলাই গণ–অভ্যুত্থানকে নেতিবাচকভাবে তুলে ধরা হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে যে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার ছিল, তা করা হচ্ছে না।

বুধবার রাতে রাজধানীর কাঁটাবনের একটি রেস্তোরাঁয় বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথাগুলো বলা হয়। জুলাই গণ–অভ্যুত্থানকেন্দ্রিক ১২টি সংগঠনের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে এই সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনটি। মতবিনিময় সভায় অংশ নেওয়া সংগঠনগুলোর মধ্যে ছিল জুলাই ম্যাসাকার আর্কাইভ, রিলায়েবল টেলস, জুলাই স্টোরি, ওয়ারিয়র্স অব জুলাই, ইনকিলাব মঞ্চ, রেভল্যুশন ওয়াচ।

সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের সদস্যসচিব জাহিদ আহসান বলেন, ‘আমরা যখনই আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের কথা বলি, আমরা যখন বিচারের কথা বলি, তখন আমাদেরকে হাইকোর্ট দেখানো হয়।.

..বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থা, আইন, আদালতের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা আছে। কিন্তু আমরা চাই বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ আমলে বাংলাদেশের আইনকে আদালতকে যেভাবে ইচ্ছে করে নষ্ট করা হয়েছে, সেভাবে না করে খুব দ্রুত পদ্ধতিতে এবং কোনো রকমের জটিলতা ছাড়া যাতে আওয়ামী লীগের বিচার সম্পন্ন করা হয়।’

প্রয়োজন হলে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ও তাদের বিচার নিশ্চিত করার দাবিতে সবাইকে নিয়ে রাজপথে নামবেন বলে জানান তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের মুখ্য সংগঠক তাহমিদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরী বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, সারা বিশ্বব্যাপী বর্তমান সময়ে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানকে নিয়ে যে ধরনের কার্যক্রমগুলো পরিচালনা হচ্ছে, সেগুলোতে অনেকভাবেই জুলাই গণ–অভ্যুত্থানকে নেতিবাচকভাবে তুলে ধরা হচ্ছে। আমরা দেখতে পাচ্ছি, এই অভ্যুত্থানকে মৌলবাদের উত্থান কিংবা বিভিন্ন নামে এটাকে সম্বোধিত করা হচ্ছে। বর্তমান সময় আমরা দেখতে পাচ্ছি যতগুলো ইংরেজি আর্টিকেল আছে, তার একটা বড় অংশ বিভিন্ন বিদেশি লেখক, বিশেষ করে ইন্ডিয়ান লেখকদের লেখা এবং সেই আর্টিকেলগুলোতে পুরো জুলাইকে ভিন্নভাবে চিত্রায়িত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।’  

তাহমিদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরী বলেন, ‘আমরা বর্তমান সময়ে লক্ষ করছি যে সরকারের পক্ষ থেকে জুলাই গণ–অভ্যুত্থানকে নিয়ে যে ধরনের প্রপার ডকুমেন্টেশনের দরকার ছিল, সে ডকুমেন্টেশনগুলো হচ্ছে না। আহত এবং শহীদ পরিবারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত কীভাবে করা হবে, সে বিষয়গুলো নিয়েও কোনো ধরনের কার্যক্রম পরিলক্ষিত হচ্ছে না।’

তাহমিদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরী বলেন, ‘আমরা আশঙ্কা করছি, যেভাবে বর্তমানে মিডিয়ায় জুলাই গণ–অভ্যুত্থানকে শুধুমাত্র আন্দোলন হিসেবে দেখানো হচ্ছে এবং এ থেকে আমরা আশঙ্কা প্রকাশ করছি এভাবে জুলাই আন্দোলন হিসেবে এটাকে পোর্ট্রেট করার মাধ্যমে একসময় শুধুমাত্র দেখানো হবে, এটা একটা রেজিম চেঞ্জের আন্দোলন ছিল।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের মুখপাত্র আশরেফা খাতুন উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্য ট্রাফিক পুলিশে কাজ করতেন আব্বাস

১৯৭০–এর দশকেই সাড়া জাগিয়েছিলেন ইরানে। দেশের অনেক মানুষের কাছে একসময় তিনি আইকনে পরিণত হন। সিনেমা দিয়ে তাঁর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে ইউরোপ থেকে গোটা বিশ্বে। চলচ্চিত্র অঙ্গনের নতুন সম্ভাবনার দ্বার সূচিত করা মানুষটির নাম চলচ্চিত্র পরিচালক আব্বাস কিয়ারোস্তামি। আজ ২২ জুন তাঁর জন্মদিন। একসময় পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্য ট্রাফিক পুলিশে কাজ করতেন আব্বাস। তারপরের গল্প যেন সিনেমার মতোই। শিশুদের জন্য ভিডিও বানানো এক শিক্ষক কীভাবে চলচ্চিত্রবিশ্বে জায়গা করেন নেন? কেন এখনো তিনি অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক?

কিয়ারোস্তামি তেহরান বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলায় পড়াশোনা করে গ্রাফিকস ডিজাইনার হিসেবে কাজ শুরু করে। তখনো সিনেমা তাঁকে ততটা পায়নি। সে সময়ই তিনি শিশু–বয়স্কদের বুদ্ধিবৃত্তিক উন্নয়নে (দ্য সেন্টার ফর দ্য ইন্টেলেকচুয়াল ডেভেলপমেন্ট অব চিলড্রেন অ্যান্ড ইয়াং অ্যাডাল্ট) যোগ দেন। এই কাজ করতে গিয়ে তাঁর মনে হয়, পাঠদানের চেয়ে শিশুদের ভিজুয়াল কোনো মাধ্যমে শেখালে কেমন হয়? এই প্রথম শিশুদের জন্য হাতে তুলে নেন ক্যামেরা। বানিয়ে ফেলেন ভিডিও চিত্র, যার মূল বিষয় ছিল, একটি ছোট শিশুর হাতে রুটি। এটি কিনে শিশুটি বাড়ি ফিরছে। হঠাৎ একটি কুকুর তার পিছু নেয়। একসময় সামনে এসে দাঁড়ায়। ভয়ে কুঁকড়ে যায় শিশুটি। এমন পরিস্থিতিতে শিশুরা কী করবে?

এমন প্রশ্নে ইরানের অভিভাবকেরাও তখন শঙ্কিত ছিলেন। কারণ, রাস্তায় প্রায়ই কুকুর দেখে শিশুরা ভয় পেত। ভিডিওটিতে এর উত্তর দেন কিয়ারোস্তামি। তিনি ভিডিওতে দেখান, শিশুটি নিরুপায় হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে। পরে তার মাথায় বুদ্ধি খেলা করে। রুটির কিছুটা অংশ ছুড়ে ফেললে দেখা যায়, কুকুর সেটা খেতে থাকে। কিছুটা দূরে ছুড়ে দিলে কুকুরও দূরে দৌড়ে চলে যায়। কুকুর তখন শিশুটির বশ্যতা মানে। এ সময় শিশুটি দৌড়ে তার বাসায় চলে আসে।

১৯৭০–এর দশকেই সাড়া জাগিয়েছিলেন ইরানে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্য ট্রাফিক পুলিশে কাজ করতেন আব্বাস
  • ছাত্রদল নেতা ‘মুজিবীয় শুভেচ্ছা’ জানালেন, মাইক্রোফোন কেড়ে নিলেন বিএনপি নেতা