নিম্ন মানের ইটের খোয়ার ওপর প্রাইম কোট ছাড়াই ধুলাবালুর ওপর দেওয়া হচ্ছে কার্পেটিং। পাঁচ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ সড়কে ১৬ ফুট প্রস্থ এবং ৪০ মিলিমিটার কার্পেটিং করার কথা থাকলেও তা অনেকাংশেই করা হচ্ছে না। কার্পেটিংয়ে লিকুইড বিটুমিনের পরিমাণও কম। সড়কের যেসব স্থানে কার্পেটিং শেষ হয়েছে, এর কিছু স্থান থেকে কার্পেটিং উঠে গেছে। এভাবে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করে পটুয়াখালীর কুয়াকাটার মেরিন ড্রাইভ সড়ক পাকা করার অভিযোগ উঠেছে। কাজ নিম্নমানের হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ‘বরিশাল বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রশস্তকরণ’ প্রকল্পের আওতায় এ সড়ক পাকাকরণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ কোটি ৬১ লাখ টাকা। বরেন্দ্র কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ কাজ পেলেও সাব-কন্ট্রাকে কাজটি করছেন ফোরকান হোসেন নামের এক ঠিকাদার। 

কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট থেকে ধোলাই বাজার পর্যন্ত এ সড়কের কাজ নিম্নমানের হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন পর্যটক ও স্থানীয় বাসিন্দারা। অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। 

কুয়াকাটা পৌর শহরের পুনামা পাড়ার বাসিন্দা নুরজামাল মিয়া বলেছেন, যখন এ সড়কে নিম্নমানের ইটের খোয়া ফেলা হয়েছিল, তখন আমরা প্রতিবাদ করেছি। কিন্তু, আমাদের কথা কেউ শোনেনি। এখন আবার প্রাইম কোট ব্যবহার না করেই বিটুমিন দেওয়া হচ্ছে। এ রাস্তা বেশি দিন টিকবে না। 

একই এলাকার আরেক বাসিন্দা জাকির হোসেন বলেন, আমাদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা ছিল, এ রাস্তাটি পাকা হবে। তবে, কাজটি খুবই নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে করা হচ্ছে। আমরা এলাকাবাসী বার বার প্রতিবাদ করেছি। ঠিকাদার কোনোকিছুতে কর্ণপাত না করে ইচ্ছেমতো সড়ক নির্মাণ করছে।

এ বিষয়ে বরেন্দ্র কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী বা তার প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে, সাব-কন্ট্রাক্টর ফোরকান হোসেন বলেছেন, এলজিইডি কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুসারে সড়ক পাকা করার কাজ হচ্ছে। কোনো অনিয়ম করা হচ্ছে না।

কলাপাড়া উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মোহাম্মদ সাদেকুর রহমান বলেছেন, সড়কের পাকা করার কাজে অনিয়মের অভিযোগ ওঠার পরপরই আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং কিছু সময়ের জন্য কাজ বন্ধ রেখেছিলাম। কিছু স্থানে কার্পেটিং ৪০ মিলিমিটারের কম পেয়েছি। সেগুলো ঠিক করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সিডিউল অনুযায়ী কার্য সম্পাদনের জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

ঢাকা/ইমরান/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এ সড়ক

এছাড়াও পড়ুন:

বান্দরবানে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে পদযাত্রা

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বান্দরবানে জেলা বিএনপি থেকে সাচিংপ্রু জেরীর দলীয় প্রার্থিতা বাতিল করে জাবেদ রেজাকে প্রার্থী ঘোষণার দাবিতে জেলা শহরে আজ সোমবার পদযাত্রা ও সমাবেশ করেছে দলটির একটি পক্ষ। কর্মসূচিতে মাম্যাচিং-জাবেদ রেজা পক্ষের বিএনপির নেতা-কর্মীরা ভারপ্রাপ্ত দলীয় চেয়ারপারসনের কাছে দলীয় প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি জানান।

আজ বেলা ১১টায় মাম্যাচিং-জাবেদ পক্ষের কয়েক শ নেতা-কর্মী জেলা শহরের বিভিন্ন সড়কে পদযাত্রা করেন। তাঁরা পদযাত্রা শেষে প্রেসক্লাব চত্বরে এসে সমাবেশে মিলিত হন। এ সময় বক্তব্য দেন বান্দরবান সদর উপজেলা মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক পম্পি রানি দাশ, জিয়া পরিষদের সাবেক সভাপতি মো. মুসা, পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর মো. আয়ুব এবং মহিলা দলের সদস্য সাইং সাইং নু মারমা।

মহিলা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক পম্পি রানি দাশ বলেন, বিগত স্বৈরাচারী সরকারের আমলে ১৭ বছর ধরে মাম্যাচিং ও জাবেদ রেজা এবং তাঁদের নেতা-কর্মীরা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। বাড়িতে থাকতে পারেননি। কিন্তু সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেও জাবেদ রেজাকে সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী না করা অবিচার। পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর মো. আইয়ুব বলেন, যোগ্য হিসেবে জাবেদ রেজাই প্রার্থী হওয়ার কথা। কিন্তু তাঁকে প্রার্থী করা হয়নি। বিএনপি এবার এই আসনে জিততে না পারলে জেলা থেকে বিলীন হয়ে যাবে।

তবে প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে নিজের অনুসারীদের এ কর্মসূচিতে জাবেদ রেজা নিজেই অনুপস্থিত ছিলেন। এমনকি তাঁর পক্ষের শীর্ষ নেতারাও কেউ ছিলেন না। বিষয়টি জানতে জাবেদ রেজাকে ফোন করলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

বান্দরবান ৩০০ আসনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী সাচিংপ্রু জেরীর পক্ষের নেতা ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মজিবুর রশিদ বলেন, জাবেদ রেজা মনোনয়ন না পাওয়ার বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না। এ জন্য তিনি অথবা অন্য কোনো পক্ষ তাঁর নামে পদযাত্রা করিয়েছে। তবে নির্বাচন কমিশন থেকে তফসিল ঘোষণার পর মনোনয়নপত্র দাখিল করলে সব ঠিক হয়ে যাবে। তখন সবাই একযোগে কাজ করবেন। কোনো বিভেদ থাকবে না।

১৯৯৬ সালে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচন ছাড়া কোনো সংসদীয় নির্বাচনে এই আসনে বিএনপি জয়লাভ করতে পারেনি। বান্দরবান জেলা বিএনপিতে সাচিংপ্রু জেরী ও মাম্যাচিং-জাবেদ পক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে বারবারই দলটি নির্বাচনে হারছে বলে দলের নেতা–কর্মী ও সমর্থকদের ধারণা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ