মধ্যপ্রাচ্যের কিছু দেশ পারস্য উপসাগরের নাম পরিবর্তন করতে চায়। তারা চায়, যুক্তরাষ্ট্র নতুন নামটি গ্রহণ করুক। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আসন্ন মধ্যপ্রাচ্য সফরে স্বাগতিক দেশের নেতারা তাঁকে এ বিষয়ে অনুরোধ করতে পারেন। তখন তাঁদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান ট্রাম্প। গতকাল বুধবার হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘জলপথটির (পারস্য উপসাগরের) নাম নিয়ে আমি কোনো ঘোষণা দেব কি না, সে বিষয়ে আমাকে একটি সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমি কারও অনুভূতিতে আঘাত দিতে চাই না। তবে আমি জানি না, এতে (নাম পরিবর্তন করা হলে) কারও অনুভূতিতে আঘাত লাগবে কি না।’

১৩ থেকে ১৬ মের মধ্যে ট্রাম্প সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) সফর করবেন। গত জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণের পর মধ্যপ্রাচ্যে এটাই তাঁর প্রথম সফর।

যুক্তরাষ্ট্রের কিছু সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্য সফরে ট্রাম্প পারস্য উপসাগরের নতুন নাম ঘোষণা করতে পারেন। যুক্তরাষ্ট্র পারস্য উপসাগরের নতুন নাম হিসেবে ‘অ্যারাবিয়ান গালফ’ বা ‘গালফ অব অ্যারাবিয়া’ বেছে নিতে পারে।

গতকাল সাংবাদিকেরা এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি যেসব দেশে যাচ্ছি, তাঁদের নেতারা এ প্রসঙ্গে আমার মতামত চাইতে পারেন। দেখি, কী করা যায়।’

পারস্য উপসাগরের নাম পরিবর্তনের চেষ্টা নতুন নয়। এটা নিয়ে আরব দেশগুলো ও ইরানের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে তর্ক-বিতর্ক চলছে।

ইরানের যুক্তি, এই জলপথের নাম ‘পারস্য উপসাগর’–ই যথাযথ, ইতিহাসও তা–ই বলে। প্রাচীন মানচিত্রসহ নানান প্রাচীন নথিপত্রে দেখা যায়, এই জলপথ ইরানি ভূখণ্ডের অংশ।

সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরাক এবং অন্যান্য আরব দেশ ইরানের যুক্তি মানতে চায় না। তারা পারস্য উপসাগরের পরিবর্তে আরব উপসাগর বা শুধু উপসাগর শব্দটি ব্যবহার করে।

ইরাক ২০২৩ সালে ওই অঞ্চলের জনপ্রিয় ফুটবল টুর্নামেন্টের নাম দিয়েছিল ‘অ্যারাবিয়ান গালফ কাপ’। তখন এর প্রতিবাদে ইরাকি রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছিল তেহরান।

গুগল পারস্য উপসাগরের নাম ব্যবহার না করায় ২০১২ সালে ইন্টারনেট জায়ান্টটিকে সতর্ক করেছিল ইরান।

পারস্য উপসাগরের নাম পরিবর্তনের সর্বশেষ তৎপরতাকেও ভালোভাবে নেয়নি ইরান। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি আজ বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে লিখেছেন, ‘অনেক ভৌগোলিক নামের মতো পারস্য উপসাগরের নামও মানব ইতিহাসে গভীরভাবে প্রোথিত। ইরান কখনো ওমান সাগর, ভারত মহাসাগর, আরব সাগর বা লোহিত সাগরের মতো নাম ব্যবহারে আপত্তি জানায়নি। এসব নাম ব্যবহারে কোনো একটি দেশের মালিকানা প্রকাশ পায় না, তবে…’

আব্বাস আরাগচি নাম পরিবর্তনের প্রস্তাবের নিন্দা করে বলেন, এটা ‘ইরান ও তার জনগণের প্রতি শত্রুতাপূর্ণ মনোভাবের ইঙ্গিত’। তিনি হুঁশিয়ারি দেন, ‘এই পদক্ষেপ ইরানের সব স্তরের মানুষের মধ্যে ক্রোধ তৈরি করবে।’

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লেখেন, ‘পারস্য উপসাগর নিয়ে যে উদ্ভট গুজব ছড়ানো হচ্ছে, তা অপতথ্যের প্রচারণা ছাড়া কিছু নয়। শেষ পর্যন্ত এমনটি প্রমাণিত হবে বলেই আমাদের প্রত্যাশা।’

গত জানুয়ারিতে ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই ট্রাম্প যেসব নির্বাহী আদেশে সই করেছেন, সেগুলোর মধ্যে মেক্সিকো উপসাগরকে ‘আমেরিকার উপসাগর’ নামে পুনর্নামকরণের ঘোষণা অন্যমত।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র নত ন ন

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতের সেনা-স্থাপনায় হামলা, অস্বীকার পাকিস্তানের

ভারতের সেনাবাহিনী দাবি করছে, পাকিস্তান ভারত-শাসিত কাশ্মীরের উধমপুর এবং পাঞ্জাবের পাঠানকোটের তিনটি সামরিক স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র আর ড্রোন দিয়ে হামলা চালিয়েছে।

তবে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ভারতের এই অভিযোগ নাকচ করে বলেছেন, ভারত শাসিত কাশ্মীরে কোনো হামলার দায় তার দেশের নয়।

ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের এক্স হ্যান্ডেলে লিখেছে, ওইসব ‘হামলা’র ফলে তাদের কোনোরকম ক্ষয়ক্ষতি হয় নি এবং হামলাগুলো নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় দাবি করছে, ‘জম্মু, পাঠানকোট আর উধমপুরে সামরিক ঘাঁটির ওপরে পাকিস্তানের দিক থেকে ড্রোন আর ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আক্রমণ করা হয়েছিল। এইসব হামলা রুখে দেওয়া গেছে। কোনও জান মালের ক্ষতি হয় নি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ