দুইটি পৃথক বিভাগের সভাপতির দায়িত্বের পর এবার ডিনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের (গবি) শিক্ষক অধ্যাপক ড. মো, নুরুল ইসলামকে। তবে তাকে অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগে নিয়ম মানা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (৭ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে আগামী ১৬ মে থেকে বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন হিসেবে তাকে সাময়িকভাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২২ সালের ৬ নভেম্বর থেকে ড.

নুরুল ইসলাম মেডিকেল ফিজিক্স অ্যান্ড বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। পরে তাকে পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান হিসেবেও নিয়োগ দেওয়া হয়। সর্বশেষ তাকে ডিন হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে অধ্যাপক পদমর্যাদার ভিত্তিতে।

আরো পড়ুন:

প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহ উদ্বোধন শনিবার

প্রতিপক্ষের লাঠির আঘাতে স্কুল শিক্ষক নিহত

তবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত নীতিমালা অনুযায়ী, অধ্যাপক পদে নিয়োগের জন্য কমপক্ষে সহযোগী অধ্যাপক পদে ৫ বছরসহ মোট ১২ বছর যেকোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতার অভিজ্ঞতা আবশ্যক।

কিন্তু তিনি প্রায় ৩০ বছর বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনে চাকরি করেছেন এবং অবসরে যাওয়ার আগে কমিশনের মহাপরিচালক পদে কর্মরত ছিলেন। কখনো কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেননি।

এ নিয়ে গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ড. ফাতেমা নাসরিন ইউজিসি বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন। তার অভিযোগের ভিত্তিতে ইউজিসি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাখ্যা চায়।

সংশ্লিষ্ট অভিযোগের জেরে সত্যতা জানতে চাওয়া হলে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সাবেক এই মহাপরিচালক নিজেও নিশ্চিত করেছেন, গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের আগে তিনি কোনো প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেননি।

তবে ইউজিসির চিঠির ব্যাপারে ড. নুরুল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে কোনো কিছু তিনি জানেন না।

ক্ষোভ প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নাসিম খান বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন যদি মনে করে, আমাদের শিক্ষাজীবন নিয়ে ছেলেখেলা খেলবে, তা করতে দেওয়া হবে না। আমরা চাই, আইন অনুযায়ী তাকে সরিয়ে দিয়ে যোগ্য কাউকে নিয়োগ দেওয়া হোক।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বলেন, “ড. নুরুল ইসলামের অধ্যাপক হওয়ার যোগ্যতা নেই জানার পরেও তাকে একাধিক পদে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। এর আগেও তার যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবুও তাকে ডিনের দায়িত্ব দেওয়া তো ফ্যাসিবাদী ধরণ মনে হচ্ছে, যেন একের পর এক স্বেচ্ছাচারিতা করা।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, “ইউজিসি থেকে একটি চিঠি এসেছিল, আমরা তার উত্তর দিয়েছি। এরপর আর কোনো চিঠি আসেনি। যেহেতু তিনি অধ্যাপক হিসেবে নিযুক্ত, তাই সাময়িকভাবে ডিন হিসেবে তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে কোনো নির্দেশনা এলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

ঢাকা/সানজিদা/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন র ল ইসল ম ইউজ স

এছাড়াও পড়ুন:

অর্থ উপদেষ্টার আহ্বানে সাড়া দেননি এনবিআরের আন্দোলনকারীরা, ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচি ঘোষণা

অর্থ উপদেষ্টার আহ্বানে সাড়া দিলেন না জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। আগামীকাল বৃহস্পতিবার এনবিআর আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছিলেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। দুপুরে এ নিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়।

অন্যদিকে আজ বিকেল পাঁচটার দিকে আন্দোলনরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংগঠন এনবিআর সংস্কার পরিষদ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দেয়, অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে তারা যাচ্ছে না। ফলে তিন ধরে চলমান কলমবিরতি কর্মসূচির অচলাবস্থার অবসান হলো না। আজ সকাল থেকে আগারগাঁও এনবিআর ভবনের সামনে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবস্থান নেন।

এ দিকে আগের কর্মসূচির সঙ্গে নতুন কর্মসূচিও দিয়েছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ। সেটি হলো ২৮ জুন সারা দেশের কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তর থেকে এনবিআর অভিমুখে ‘মার্চ টু এনবিআর’ পালিত হবে।

এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ এক দফা দাবি জানিয়েছে। সংগঠনটি আরও বলেছে, অনতিবিলম্বে বর্তমান এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণ করতে হবে। এনবিআরের চেয়ারম্যানের অপসারণের মধ্য দিয়েই সরকারের রাজস্ব ব্যবস্থা সংস্কারের যাত্রা শুরু হবে। আগামী ৭ জুলাই রাজস্ব ব্যবস্থা সংস্কারের একটি পূর্ণাঙ্গ রূপরেখা তুলে ধরবে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।

এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অন্যান্য কর্মসূচি হলো আগামীকাল দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা ও রপ্তানি ব্যতীত কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের এনবিআরসহ সারা দেশের সব দপ্তরে অবস্থান কর্মসূচি ও কলমবিরতি; এনবিআরের বর্তমান চেয়ারম্যানকে ২৭ জুনের মধ্যে অপসারণ না করা হলে ২৮ জুন কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে লাগাতার কমপ্লিট শাটডাউন চলবে। তবে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা এই কমপ্লিট শাটডাউনের আওতাবহির্ভূত থাকবে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ নামে দুটি বিভাগ করে ১২ মে অধ্যাদেশ জারি করে সরকার। এর পর থেকে এর প্রতিবাদে নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করেন রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে এসব কর্মসূচি পালন করা হয়।

গত ২৬ মে সরকার ঘোষণা দেয়, আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এনবিআর নিয়ে জারিকৃত অধ্যাদেশের প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ