সরকার উন্নয়ন কাজ অব্যাহতভাবে চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর: পার্বত্য উপদেষ্টা
Published: 9th, May 2025 GMT
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেছেন, সরকার দেশের সম্পদ বিনষ্ট রোধ ও ব্যাপক অপচয় রোধসহ উন্নয়ন কাজ অব্যাহতভাবে চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর।
শুক্রবার রাঙ্গামাটি জেলা সদরের রাজবন বিহার কমপ্লেক্স ভবনে বৈশাখী পূর্ণিমার ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে ধর্মীয় উপাসকগণের উদ্দেশ্যে তিনি এই কথা বলেন।
সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, সরকার দেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ও আত্মনির্ভরশীল হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাতে চায়।
তিনি বলেন, আমাদের সরকার ক্ষতিকর ও দুষ্টচক্রের শাস্তির ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে চায়।
উপদেষ্টা আরো বলেন, যারা সৎকর্ম করেন ও কীর্তিমান তাদের মৃত্যু নাই। আমরা সৎকর্ম করব, পরজীবনে অবশ্যই শান্তি ভোগ করবো। একজন মানুষের জন্ম, জ্ঞান-প্রজ্ঞা ও মৃত্যু তখনই সার্থক হয়, যখন বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের সকল প্রাণীর মঙ্গলের জন্য নিজেকে উৎসর্গ করা হয়।
ধর্মীয় উৎসবে সদ্যপ্রয়াত নবারুণ চাকমার বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করা হয়। নবারুণ-এর মৃত্যুতে স্মরণ সভায় উপদেষ্টা বলেন, মানুষের জীবন কর্ম, জ্ঞান ও মৃত্যু সবকিছুই স্মরণ উৎসবে আলোচনা হয়ে থাকে। কাজেই যিনি যেমন কর্ম করবেন ঠিক তেমনি ফল ভোগ করবেন। নিজের কল্যাণে, দেশের কল্যাণে নিজেকে পাপাচার কাজ থেকে বিরত রাখতে হবে। তিনি সকলকে ভাল কর্মে নিয়োজিত থাকার জন্য আহ্বান জানান।
উপদেষ্টা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মঙ্গল কামনায় নিজে দান দাতব্য প্রদান করেন। পরে তিনি প্রার্থনায় যোগ দেন। প্রার্থনায় সৎকর্ম, সৎ চিন্তা ও মৈত্রীর প্রসার লাভসহ সকল প্রাণীর সুখ ও শান্তি কামনা করা হয়। এই সময় উপদেষ্টার সহধর্মিনী নন্দিতা চাকমা তার সঙ্গে ছিলেন।
বৈশাখী পূর্ণিমার ধর্মীয় অনুষ্ঠানের স্মরণ সভায় ত্রিপিটকের বক্তব্য পাঠ ও বুদ্ধের জীবন নিয়ে আলোচনা হয়।
আলোচনা সভায় রাজবন বিহারের ভিক্ষু সৌরজগৎ ভান্তে, মঙ্গল তিষ্য, দীপবংশ ভিক্ষু, ধম্যানু ভান্তে, মগ লায়ন ভিক্ষু বক্তব্য রাখেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উৎসব পালনে পূজা পরিষদের মতবনিময় সভা
আগামী ১৬ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী।
উৎসবকে সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (৮ আগস্ট) বিকেলে শহরের চাষাঢ়াস্থ শ্রী শ্রী গোপাল জিউর বিগ্রহ মন্দির প্রাঙ্গণে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সভাপতি বিষ্ণুপদ সাহা'র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাধারণ সম্পাদক সুশীল দাসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান, প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপু। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক সংকর কুমার দে এবং শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখন সরকার শিপন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান সনাতন ধর্মাবলম্বী সকলকে শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী উৎসবের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ধর্মীয় সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী।
এখানে সকল ধর্মের মানুষ একসাথে মিলেমিশে থাকতে চায় কিন্তু গত ১৫ বছর স্বৈরাচারী খুনি হাসিনা সরকার মুসলমানদের আলেম সমাজের উপর নির্মম জুলুম অত্যাচার চালিয়েছিলেন। তারা দেশের মানুষের মধ্যে একটা ধর্মীয় বিরোধ তৈরি করেছিলো।
তিনি বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় আমরা সকল ধর্মের মানুষের সুখ দুঃখের পাশে থাকবো। ৫ আগস্ট সরকার পতনের পরপরই তিনি আমাদের নির্দেশনা দিয়েছেন, নারায়ণগঞ্জে যাতে কোনো ধর্মীয় সহিংসতা না ঘটে। আমরাও সেই নির্দেশনা মোতাবেক আপনাদের পাশে ছিলাম এবং এখনো আছি। হিন্দু মুসলমান বৌদ্ধ খ্রিস্টান সকল ধর্মের মানুষ আমরা মিলেমিশে থাকবো।
তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশে কেউ প্রথম শ্রেণীর নাগরিক কিংবা কেউ দ্বিতীয়, তৃতীয় শ্রেণীর নাগরিক প্রথা চালু নেই। আমাদের দেশের সকল নাগরিকের সমান অধিকার। সকল ধর্মের, সকল পেশার এবং সকল বয়সের নাগরিক সমান অধিকার নিয়ে জন্মায়। তাই নিজেকে সংখ্যালঘু কিংবা সংখ্যাগরিষ্ঠ ভাবার সুযোগ নাই। আমরা সবাই মিলেমিশে এদেশে বসবাস করবো।
বিশেষ বক্তার বক্তব্যে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, পৃথিবীর সকল ধর্মই শান্তির কথা বলে। সত্য ও ন্যায়নীতির কথা বলে।
আমাদের ইসলাম ধর্মে আমাদের রাসূল আছেন, নবী আছেন, পীর আউলিয়া আছেন। আমরা যাদের আদর্শ মনে কর জীবন যাপন করি, তেমনিভাবে আপনারাদের ধর্মেও ঠাকুর দেবতা রয়েছে তাদের আদর্শে আপনারা পরিচালিত হন।
সবখানেই আপনি শান্তির বাণী পাবেন। তাই আমরা সকল ধর্মের মানুষ এদেশে সুন্দরভাবে বসবাস করবো। আপনারা যেখানেই ডাকবেন আমরা মহানগর বিএনপি সবসময় আপনাদের পাশে থাকব।
তিনি বলেন, আসন্ন জন্মাষ্টমীর উৎসব উপলক্ষে সকল হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভাইবোনদেরকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আপনারা সকল ভয়-ভীতির উর্ধ্বে উঠে জাঁক জমকপূর্ণভাবে জন্মাষ্টমী আয়োজনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করুন। কোথাও কোন বাঁধার সম্মুখীন হলে আমাদেরকে জানাবেন।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখণ সরকার শিপন বলেন, আমরা ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষ শান্তিতে একসাথে বসবাস করতে চাই, কোনো সাম্প্রদায়িক সহিংসতা চাই না। গত ৫ আগস্টের পর থেকে নারায়ণগঞ্জের হিন্দু সম্প্রদায়ের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিয়েছেন স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। ভবিষ্যতে এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে বলে আমরা আশা রাখি। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাছে শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমী অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। নারায়ণগঞ্জসহ সারাদেশে জন্মাষ্টমী উৎসব পালন করা হবে।
এবার নারায়ণগঞ্জ জেলার প্রত্যেকটি উপজেলায় প্রশাসনের সাথে সমন্বয় করে প্রাণবন্তভাবে সনাতন ধর্মাবলম্বী সকলে যেন এই উৎসব নির্বিঘ্নে উদযাপন করতে পারে সেই লক্ষ্যে সব ধরণের প্রস্তুতি নেয়া হবে। নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে সকলকে জন্মাষ্টমীর আগাম শুভেচ্ছা ও নিমন্ত্রণ।