শ্রীমঙ্গলে তেলবাহী ট্রেনের ইঞ্জিন লাইনচ্যুত
Published: 10th, May 2025 GMT
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে তেলবাহী খালি একটি ট্রেনের ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হয়েছে। শনিবার (১০ মে) বেলা দেড়টায় শ্রীমঙ্গল রেলস্টেশন এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। তবে, এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, দুপুরে তেলবাহী একটি খালি ট্রেন ঘুরানোর সময় চালকের ভুলে ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হয়ে পাশে মাটির মধ্যে আটকে যায়। এতে অল্পের জন্য রেললাইনের পাশে থাকা বেশ কয়েকটি ঘর দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায়।
শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘‘স্টেশনের তিন নম্বর লাইনে তেলবাহী খালি একটি ট্রেনের ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হয়েছে। এতে অন্য ট্রেন চলাচলে কোনো সমস্যা হবে না। লাইনচ্যুত ইঞ্জিনটি উদ্ধারে সময় লাগবে।’’
আরো পড়ুন:
কুড়িগ্রামে ট্রাক্টরে ট্রেনের ধাক্কা, আহত ২
খিলক্ষেতে ট্রেনের ধাক্কায় যুবকের মৃত্যু
ঢাকা/আজিজ/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পৃথক ভূখণ্ডে সাহসের একই কালিতে লেখা আলজেরিয়া আর বাংলাদেশের ইতিহাস: রাষ্ট্রদূত আবদেলউহাব সাইদানি
ঢাকায় আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত আবদেলউহাব সাইদানি বলেছেন, পৃথক ভূখণ্ডে রচিত হলেও সাহসের একই কালিতে রচিত হয়েছে দুই দেশের ইতিহাস।
শুক্রবার সকালে বারিধারায় আলজেরিয়া দূতাবাসে দেশটির ন্যাশনাল ইমিগ্রেশন ডে উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশে আলজেরিয়া দূতাবাস ১৯৬১ সালের ১৭ অক্টোবরের হত্যাকাণ্ডের ৬৪তম বার্ষিকী স্মরণে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। প্যারিসে ১৯৬১ সালে আলজেরীয়দের ওপর চালানো রক্তাক্ত দমন-পীড়নের স্মৃতিতে হত্যাকাণ্ডের দিনটি ২০২১ সাল থেকে আলজেরিয়ায় ন্যাশনাল ইমিগ্রেশন ডে হিসেবেও পালন করা হচ্ছে।
প্যারিসের ঐতিহাসিক দিনটির উল্লেখ করে আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত আবদেলউহাব সাইদানি বলেন, ‘এই দিনটি শুধু শোক প্রকাশের জন্য নয়—এটি সাহসকে সম্মান জানানোর, সত্যকে পুনরুদ্ধার করার এবং আমাদের সাধারণ মানবিকতাকে পুনর্ব্যক্ত করার দিন।’
তিনি বলেন, ‘প্যারিসে শীতের সেই রাতে ৩০ হাজারের বেশি আলজেরীয় পুরুষ, নারী এবং এমনকি শিশুরাও শান্তিপূর্ণভাবে শহরের রাজপথে নেমেছিল। তারা ফ্রান্সে মুসলিমদের ওপর আরোপিত বৈষম্যমূলক কারফিউর প্রতিবাদে এবং আলজেরিয়ার স্বাধীনতার দাবিকে সামনে আনার লক্ষ্যে, জাতীয় মুক্তি ফ্রন্টের ফরাসি শাখার আহ্বানে রাস্তায় নেমেছিল। তাদের হাতে ছিল না কোনো অস্ত্র—ছিল কেবল ন্যায়বিচার, মর্যাদা ও স্বাধীনতার স্বপ্ন।’
আবদেলউহাব সাইদানি বলেন, ‘কিন্তু তাদের (বিক্ষোভকারীরা) জন্য আলোচনা নয়, অপেক্ষা করছিল অন্ধকার। রাষ্ট্র শান্তিকে রুখে দিয়েছিল সহিংসতা দিয়ে, মানবতার জবাব দিয়েছিল ঘৃণার মাধ্যমে। অনেকে নির্যাতনের শিকার হন, গুলিবিদ্ধ হন কিংবা সেন নদীতে নিক্ষিপ্ত হন। তাঁদের আর্তনাদ হারিয়ে যায় রাতের নিস্তব্ধতায়, কিন্তু তাঁদের সাহস উজ্জ্বল হয়ে ওঠে সেই নীরবতার মধ্যেই।’
আলজেরিয়ার রাষ্ট্রদূত বলেন, এটি ছিল ফরাসি ঔপনিবেশিক শাসনের অন্যতম নৃশংস দমন-পীড়নের একটি অধ্যায়, যা অন্যায়ের নিষ্ঠুরতা ও এক অবিনাশী জাতির অদম্য ইচ্ছাশক্তিকে যুগপৎভাবে তুলে ধরে। তাঁর মতে, ১৭ অক্টোবরের সেই গণহত্যা আলজেরীয় জাতিকে দমন করতে পারেনি; বরং উল্টো তাদের আরও উদ্দীপ্ত করেছিল। এটি পরিণত হয়েছিল স্বাধীনতার চূড়ান্ত পথের এক প্রজ্বালিত স্ফুলিঙ্গে—ভয়ের ওপরে ঐক্যের জয় ঘোষণাকারী এক অমর দলিল। বিশ্ব যদিও দেরিতে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল, ইতিহাস কিন্তু মনে রেখেছে। সেন নদী হয়তো তাঁদের দেহগুলো বহন করেছিল, কিন্তু তাঁদের গল্প নয়। তাঁদের সাহস প্রবাহিত হয়েছে একটি জাতির অন্তরে এবং সমগ্র মানবতার বিবেকের মধ্যে।
আলজেরিয়ার জন্য স্মৃতির দিনটি বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়েও গভীরভাবে নাড়া দেয় উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত আবদেলউহাব সাইদানি বলেছেন, ‘আমরাও জানি স্বাধীনতার মূল্য—আমরাও বুঝি ত্যাগের ভার, শোকের যন্ত্রণা এবং দৃঢ়তার বিজয়। আমাদের ইতিহাস আলাদা ভূমিতে লেখা হলেও সাহসের একই কালি দিয়ে রচিত।’