শ্রীমঙ্গলে তেলবাহী ট্রেনের ইঞ্জিন লাইনচ্যুত
Published: 10th, May 2025 GMT
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে তেলবাহী খালি একটি ট্রেনের ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হয়েছে। শনিবার (১০ মে) বেলা দেড়টায় শ্রীমঙ্গল রেলস্টেশন এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। তবে, এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, দুপুরে তেলবাহী একটি খালি ট্রেন ঘুরানোর সময় চালকের ভুলে ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হয়ে পাশে মাটির মধ্যে আটকে যায়। এতে অল্পের জন্য রেললাইনের পাশে থাকা বেশ কয়েকটি ঘর দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পায়।
শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার শাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘‘স্টেশনের তিন নম্বর লাইনে তেলবাহী খালি একটি ট্রেনের ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হয়েছে। এতে অন্য ট্রেন চলাচলে কোনো সমস্যা হবে না। লাইনচ্যুত ইঞ্জিনটি উদ্ধারে সময় লাগবে।’’
আরো পড়ুন:
কুড়িগ্রামে ট্রাক্টরে ট্রেনের ধাক্কা, আহত ২
খিলক্ষেতে ট্রেনের ধাক্কায় যুবকের মৃত্যু
ঢাকা/আজিজ/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
‘বোম ফালাইয়া আমার ছেলেরে মাইরা ফেলছে’
সুদানের আবেই এলাকায় শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের আওতাধীন কাদুগলি লজিস্টিক বেসে সন্ত্রাসীদের হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয়জন সদস্য শহীদ হয়েছেন। তাদের মধ্যে আছেন মেস ওয়েটার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম (৩০)।
জাহাঙ্গীরের বাড়ি কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের তারাকান্দি গ্রামে। তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। তার মৃত্যুর খবরে বাড়িতে চলছে মাতম।
আরো পড়ুন:
জাতিসংঘের ঘাঁটিতে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত সবুজের বাড়িতে শোকের মাতম
বিজয় দিবসে বর্ণাঢ্য সামরিক ফ্লাইপাস্ট ও প্যারাজাম্পের আয়োজন
শহীদ জাহাঙ্গীর তারাকান্দি গ্রামের মো. হজরত আলী রহমানের ছেলে। জাহাঙ্গীরের মৃত্যু হয়েছে জানার পর থেকে বারবার মুর্চ্ছা যাচ্ছিলেন স্ত্রী রুবাইয়া আক্তার। তার তিন বছর বয়সী একমাত্র সন্তান ইফরান কী হয়েছে বুঝতেই পারছিল না। সকলের কোলে কোলে ঘুরছিল সে, আর অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখছিল সবাইকে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, ২০১৪ সালের অক্টোবরে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন জাহাঙ্গীর। ৩৭ দিন আগে তিনি সুদানের আবেই অঞ্চলের জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী হিসেবে যোগ দেন।
নিহত জাহাঙ্গীর আলমের বাবা হজরত আলী রহমান বলেন, “রাতে আমার এক ভাই ফোন দিয়ে বলছে, সুদানে বোমা ফুটছে তোমরা খবর রাখছো। পরে আমি বাড়িতে আইসা বলি জাহাঙ্গীর যেহানো থাহে, ওইহানো বোমা ফুটছে বুলে। পরে শুনছি, বোম ফালাইয়া আমার ছেলেরে মাইরা ফেলছে।”
তিনি বলেন, “আমার ছেলে যেখানে থাকত এর থেকে একটু দূরে যারা থাকত তারা রাতে জানাইছে। যা হওয়ার তাতো হইয়া গেছে। অহন আমি সরকারের কাছে আমার ছেলের মরদেহ পাইতে হাতজোড় করতাছি।”
সেনা সদস্য জাহাঙ্গীরের ছোট ভাই মো. শাহীন বলেন, “আমি পেশায় গাড়ি চালক। অনেক রাতে বাসায় ফিরে দেখি, সবাই কান্নাকাটি করতেছে। পরে জানতে পারি, আমার ভাই বোমা হামলায় মারা গেছে।” এ কথা বলেই ভাইয়ের ছেলেকে কোলে নিয়ে বুকফাটা কান্নায় ভেঙে পড়েন শাহীন। তিনি সরকারের কাছে দ্রুত তার ভাইয়ের মরদেহ পাওয়ার দাবি জানান।
নিহত জাহাঙ্গীরের চাচাতো ভাই আরিফুর ইসলাম বাধন বলেন, “শনিবার রাতে জাহাঙ্গীরের সহকর্মী মনির হোসেন এবং ভোরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ইমরান টেলিফোনে ঘটনাটি আমাদের জানান। এরপর থেকে পরিবারে মাতম চলছে। কান্নায় কান্নায় সবাই পাথর হয়ে গিয়েছে। বৃদ্ধ বাবা হজরত আলী ছেলের শোকে স্তব্ধ হয়ে গেছেন। জাহাঙ্গীরের স্ত্রী রুবাইয়া স্বামীর ছবি বুকে আঁকড়ে কেঁদেই চলেছেন। কখনো কখনো অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছেন। মাঝেমধ্যে চিৎকার করে কেঁদে উঠছেন।”
জাহাঙ্গীর আলমের মামা ওয়ালিউল্লাহ বলেন, “অফিসিয়ালি রংপুর ক্যান্টনমেন্ট থেকে ক্যাপ্টেন ইমরান আমাদের বিষয়টা জানান। এর আগে, শনিবার রাতে আমাদের স্বজনরা জানান, জাহাঙ্গীর মারা গেছেন।”
পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রুপম দাস বলেন, “মরদেহ কীভাবে আনা হবে এ ব্যাপারে কোনো সরকারি নির্দেশনা এখনো পাইনি। আমরা যোগাযোগ রাখছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথাও হচ্ছে। যে কোন আপডেট পেলেই আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।”
ঢাকা/রুমন/মাসুদ