রাজধানীর শাহবাগে দিনভর অবরোধের পর রাতে তা প্রত্যাহার করেছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের একটি দল। গতকাল রোববার রাত ১০টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করা হয় বলে জানান আহত আরমান আহমেদ। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি, জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন এবং আহতদের উন্নত চিকিৎসার দাবিতে রোববার দিনভর শাহবাগে মঞ্চ স্থাপন করে অবরোধ করে রাখেন তারা। 

এর আগে শনিবার সরকার আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার পর রাত সাড়ে ৩টার দিকে হাসনাত আবদুল্লাহ একে ইতিবাচক অভিহিত করে আন্দোলন স্থগিত করে শাহবাগ ত্যাগ করেন। হাসনাত বলেন, সোমবার আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে প্রজ্ঞাপন জারি হবে। প্রজ্ঞাপন জারি হলে আনন্দ মিছিল হবে বলে ঘোষণা দেন তিনি। 

তবে রোববার সকাল থেকে আহতদের একটি দল শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেয়। তাদের অবরোধ কেন্দ্র করে কাঁটাবন মোড়, ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় ও মৎস্য ভবন মোড় থেকে শাহবাগমুখী সড়ক বন্ধ রাখা হয়। তারাও শাহবাগ মোড়ের চতুর্দিকে ব্লকেড দিয়ে রাখেন। 
সরেজমিন দেখা যায়, অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। গাড়িগুলো কাঁটাবন মোড়, হেয়ার রোড হয়ে ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড় ও মৎস্য ভবন মোড় দিয়ে চলাচল করছে। এই সড়কগুলোতে ব্যাপক যানজট দেখা গেছে। 

রোববার সন্ধ্যায় শাহবাগে আহত মোহাম্মদ রুবায়েত হাসান বলেন, আওয়ামী লীগকে জঙ্গি সংগঠন হিসেবে নিষিদ্ধ করতে হবে। আমরা জুলাইয়ে যে যুদ্ধ করেছি, জুলাই সনদের মাধ্যমে জুলাইয়ের স্বীকৃতি দিতে হবে। যারা আহত-পঙ্গু, এদের  চিকিৎসা এবং পুনর্বাসন করতে হবে। 
আহতদের আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী মোহাম্মদ আরমান বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের তিন দফা দাবি মেনে না নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা এখানে থাকব। আমরা এর আগেও আশ্বাস পেয়েছি, তবে পরে সেটি বাস্তবায়িত হয়নি।  

আন্দোলনরত আহত কামরুল হাসান বলেন, আমি নিউমার্কেটে ৪ আগস্ট আহত হয়েছি। আমরা হাসনাতের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে গত তিন দিন ধরে আছি, আজও থাকব। হাসনাত তো আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ায় চলে গেছে। তবে আমাদের দাবি বাস্তবায়িত না হওয়ায় আমরা এখানে অবস্থান নিয়েছি। আমরা কোনো প্ল্যাটফর্মে এখানে জড়ো হইনি। হাসনাতের সঙ্গে আহত যারা আন্দোলনে এসেছিলেন, তারাই  এখানে রয়েছি। 

 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ন ষ দ ধ কর আহতদ র শ হব গ অবর ধ আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

চট্টগ্রামে জুলাই শহীদ স্মৃতি সম্মাননা ও আহতদের সংবর্ধনা

চট্টগ্রামে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি সম্মাননা ও আহতদের সংবর্ধনা’ দিয়েছে সন্তান ও অভিভাবক ফোরাম। আজ রোববার বিকেল ৩টার দিকে থিয়েটার ইন্সটিটিউটে জুলাই আন্দোলনে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ২৮ জুলাই শহীদ পরিবারের হাতে ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি সম্মাননা স্মারক’ এবং আহত ১০০ জনকে ‘জুলাই যোদ্ধা সম্মাননা স্মারক’ প্রদান করা হয়।

অধ্যাপক ডা. মো. আব্বাস উদ্দিন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহদাত হোসেন। অনুষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত ছাত্র-জনতা, শহীদদের পরিবার, আন্দোলনকারী ও নাগরিক সমাজের বিশিষ্টজনরা উপস্থিত ছিলেন।  

প্রধান অতিথি ডা. শাহাদাত হোসেন সন্তান ও অভিভাবক ফোরামকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে স্বৈরাচারী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে কাজ করতে হবে। নিজেদের মধ্যে বিভক্তি এড়িয়ে সুন্দর বাংলাদেশে গড়ার অনুরোধ জানান তিনি। 

জুলাই শহীদ পরিবার সোসাইটির চেয়ারম্যান গোলাম রহমান আন্দোলনে শহীদ ছেলে নাফিজকে স্মরণ করেন। তিনি ছেলে হত্যার বিচারে অগ্রগতি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন।  এর জন্য সরকারকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্য আন্দোলন গড়ে তোলাও আহ্বান জানান তিনি।

জুলাই যোদ্ধা সাইফুদ্দিন এমদাদ গণহত্যাকারী সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার ও নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি তাদের সহায়তাকারীদেরও বিচারের দাবি জানান। 

হাসান আলী ১০ মাসেও ছেলে শহীদ আলভীর বিচারের দৃশ্যমান অগ্রগতি না হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করেন। বিচার নিয়ে প্রহসন না করার আহবান জানান তিনি।

শহীদ ইমামের ভাই রবিউল আউয়াল ভুঁইয়া সুবিচার না পাওয়া পর্যন্ত জোর আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

শহীদ সৈকতের বোন শারমিন আফরোজ সেবন্তি জুলাই’২৪ এর আন্দোলনে এলোপাতাড়ি গুলি, হাত-পা হারানো অসংখ্য যোদ্ধা, বাবা-মায়ের অসহায়ত্ব তুলে ধরেন।গণহত্যাকারী দল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে সরকারের গড়িমসি ও চালাকি করছে বলেও প্রশ্ন তোলেন তিনি। 

জুলাই যোদ্ধা ডা. জুনায়েদ রায়হান বলেন, আওয়ামী লীগের বিচার এখনও না হওয়ায় হতাশা হয়েছি। 

জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ফারহান ফাইয়াজের বাবা শহিদুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, ‘প্রতি মাসের ১৮ তারিখ আমাদের জন্য বেদনাদায়ক। এ তারিখে হৃদয়ের রক্তক্ষরণ বেড়ে যায়।’

শহীদ আহনাফের মা জারতাজ পারভীন বলেন, ‘আমার সন্তানের হত্যাকারীরা এখনও বাইরে। তারা কার মদদে এখনও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে? তারা কীভাবে এখনও দেশের বাইরে যাচ্ছে?’  

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন শহীদ ওয়াসিমের বাবা শফি আলম, শহীদ শ্রাবণের বাবা নেসার আহমেদ, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল করিম কচি, চট্টগ্রাম  মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শাহ নেওয়াজ, চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির ভিসি অধ্যাপক এস এম নসরুল কদির, সন্তান ও অভিভাবক ফোরামের সমন্বয়ক  ডা. শাকিল আরিফ চৌধুরী, ডা. দলিলুর রহমান, আহত যোদ্ধা আরিফুল ইসলাম ফরহাদ, জিসান প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডা. ইশরাত জাহান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তরুণকে কুপিয়ে হত্যা
  • চট্টগ্রামে জুলাই শহীদ স্মৃতি সম্মাননা ও আহতদের সংবর্ধনা
  • আজ শাহবাগ অবরোধ করলেন জুলাইয়ের আহতরা
  • নবীনগরে সিএনজি-মোটরসাইকেল সংঘর্ষে নিহত ৩
  • নবীনগরে অটোরিকশা-মোটরসাইকেলে সংঘর্ষে নিহত ১