নাটোরে সংস্কার কমিশনের নারীদের কোরআন বিরোধী প্রস্তাব বাতিল করে সংবিধানে কোরআনের পূর্ণআস্থা পুনর্বহাল ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে নাটোর জেলা হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (১২ মে) বিকেলে শহরের ভবানীগঞ্জ মোড় এলাকায় হেফাজতে ইসলাম নাটোর জেলার উদ্যোগে আয়োজিত মহাসমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী।

অনুষ্ঠানে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ নাটোর জেলা শাখার সভাপতি আব্দুল্লাহ মাদানীর সভাপতিত্বে ও জেলা সেক্রেটারি মাওলানা রফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব শায়খ মুফতি হারুন ইজহার। 

আরো পড়ুন:

সামাজিক মাধ্যমে আ.

লীগ ও সহযোগী সংগঠনের প্রচার-প্রচারণা নিষিদ্ধ

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন জারি

বক্তারা বলেন, ‘‘দেশের স্বার্থে যেকোনো ক্রান্তিলগ্নে আলেমরা রক্ত দিতে দ্বিধাবোধ করেননি। আবারো যদি ইসলামবিরোধী কোনো আইন পাস করার স্পর্ধা দেখায় তাহলে আমরা রাজপথে রক্ত দিয়ে রুখে দিবো।’’

তারা আরো বলেন, ‘‘জুলাই বিপ্লবের কমিশন গঠন করলেন কিন্তু শাপলা চত্বরে গণহত্যার কোনো কমিশন গঠন করা হলো না। ফ্যাসিস্ট আওয়াসী লীগ আমলে কোনো ব্যক্তি স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারেনি। আওয়ামী লীগকে শুধু নিষিদ্ধ করলেই হবে না, গণহত্যাকারী হাসিনাসহ তার দোসরদের ফাঁসি কার্যকর করতে হবে।’’

বক্তারা বলেন, ‘‘সংস্কার কমিশনের নারীদের কোরআন বিরোধী প্রস্তাব বাতিল করতে হবে। সংবিধানে বহুত্ববাদের পরিবর্তে আল্লাহর উপর পূর্ণআস্থা পুনর্বহাল করতে হবে। ফ্যাসিস্ট আওয়াসী লীগের আমলে শাপলা চত্বরসহ সকল গণহত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’’

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন হেফাজত ইসলাম ঢাকা মহানগরীর যুগ্ম সম্পাদক মাওলানা ফয়সাল মাহমুদ হাবীবী, নাটোর জেলা হেফাজত ইসলামের সহ-সভাপতি মাওলানা আবুল কালাম আজাদ,সাংগাঠনিক সম্পাদক মোয়াজ্জাজ নাইম, সদর থানা সভাপতি আহম্মদ মোস্তফাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা। 

ঢাকা/আরিফুল/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ ইসল ম র ক রআন

এছাড়াও পড়ুন:

গাজা দখল করে ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ গড়তে চান নেতানিয়াহু

নিজের জনগণকে ৬৭০ দিনের বেশি সময় ধরে ধ্বংস হতে দেখার বেদনা ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন। এত কষ্ট, এত অপরাধের সাক্ষী হওয়ার পরও গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে আরেক দফা ইসরায়েলি হামলার কথা ভাবা পর্যন্ত কল্পনার বাইরে। অথচ বিশ্বের চোখের সামনেই এটি হচ্ছে। প্রশ্ন হচ্ছে, বিশ্ব কি শুধু দাঁড়িয়ে দেখে যাবে?

ইসরায়েলের নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিসভা গাজায় এই নতুন হামলার ঘোষণা দিয়েছে। গাজা উপত্যকাকে ‘সম্পূর্ণ দখল’ করার জন্যই তারা সেখানকার জনবসতিগুলোয় হামলা চালানোর পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। এ হামলা শুরু হবে গাজা সিটি থেকেই। এর ফলাফল অনুমান করা কঠিন নয়।

২০২৪ সালের মে মাসে আন্তর্জাতিক সতর্কবার্তা ও আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) নির্দেশ অমান্য করে ইসরায়েল রাফা এলাকায় হামলা চালায়। আজ রাফার কোনো অস্তিত্ব নেই। এরপর ২০২৪ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বরে তারা উত্তর গাজার বেইত লাহিয়া, বেইত হনুন ও জাবালিয়া শহরে হামলা চালিয়ে সেগুলো ধ্বংস করে দেয়। 

আরও পড়ুনমুখ ফিরিয়েছে বিশ্ব, গাজা কি নিভে আসছে ০৯ জুন ২০২৫

সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোশে ইয়ালন এ অভিযানকে বলেছেন ‘জাতিগত নিধন’। এরপর ইসরায়েল একতরফাভাবে যুদ্ধবিরতি ভেঙে ফেলে, ২০ লাখ বেঁচে থাকা মানুষকে অনাহারে রাখে এবং দক্ষিণের খান ইউনিস শহর ধ্বংস করে দেয়। এসব কাজ ২০২৪ সালের জানুয়ারি, মার্চ ও মে মাসে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের দেওয়া তিনটি গণহত্যাবিরোধী রায়ের সরাসরি লঙ্ঘন।

জানুয়ারিতে আদালত গাজায় গণহত্যার ঝুঁকি আছে বলে জানান এবং তা ঠেকাতে কিছু ব্যবস্থা নিতে বলেন। এর মধ্যে ছিল গাজায় মানবিক সাহায্য পৌঁছে দেওয়া। কিন্তু দেখা গেল, ইসরায়েল এই নির্দেশ মানছে না। গাজা সিটিতে হামলা হলে তা এই গণহত্যা অভিযানের শেষ ধাপ হবে।

যুক্তরাজ্যের মতো পশ্চিমা দেশগুলো গত দুই বছরে ইসরায়েলের গণ–অত্যাচারের সহযোগিতার দায় থেকে নিজেদের মুক্ত করতে পারবে না। ইসরায়েলকে জবাবদিহি থেকে মুক্তি দিয়ে এবং এই দুষ্ট রাষ্ট্রকে অস্ত্র সরবরাহ করে পশ্চিমারা এই অপরাধগুলোকে সম্ভব করেছে। সম্প্রতি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার যে ঘোষণাগুলো এসেছে, তা কেবল প্রচারমূলক চাল ও মনোযোগ সরানোর কৌশল।

৭ অক্টোবরের পরপরই ইসরায়েলের নেতা, রাজনীতিক, সামরিক কমান্ডার ও সেনারা প্রকাশ্যে বলেছিলেন, তাঁরা গাজাকে ধ্বংস করে দেবেন, পুড়িয়ে দেবেন এবং সমতল করে দেবেন। তাঁরা ঠিক সেটাই করেছেন। তাঁরা গাজার ৯০ শতাংশ এলাকা কার্যত ধ্বংস করে এটিকে জনমানবহীন মরুভূমিতে পরিণত করেছেন। বাকি জনসংখ্যাকে ঠাসা অবস্থায় মাত্র ১২ শতাংশ এলাকায় গাদাগাদি করে রাখা হয়েছে। সেখানে মানুষের বেঁচে থাকার মতো কোনো পরিবেশ নেই। অবরোধ আর বোমাবর্ষণের মাধ্যমে ইসরায়েল গাজায় কোনো নিরাপদ জায়গা রাখেনি। বাইরে যাওয়ারও কোনো পথ রাখেনি।

এখন গাজা সিটি, দেইর আল-বালাহ বা আল-মাওয়াসির বাকি জনবসতিতে হামলার মানে হবে নতুন গণহত্যা, আরও ব্যাপক বাস্তুচ্যুতি এবং অবশিষ্ট অনাহারগ্রস্ত মানুষকে সরাসরি নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া। এর মানে ইসরায়েল আসলে ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ গড়ার মেসিয়ানি কল্পনা ও অপরাধমূলক প্রকল্প চালিয়ে যাচ্ছে—ইসরায়েলের লক্ষ্য ‘সর্বোচ্চ পরিমাণ জমি, সর্বনিম্নসংখ্যক আরব’।

গাজায় দাতব্য রান্নাঘরের সরবরাহ করা খাবার সংগ্রহ করতে ফিলিস্তিনিদের ভিড়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গাজা দখল করে ‘বৃহত্তর ইসরায়েল’ গড়তে চান নেতানিয়াহু
  • গাজায় ‘গণহত্যার’ প্রমাণ তুলে ধরার কারণেই কি সাংবাদিক আল-শরিফকে হত্যা করল ইসরায়েল
  • তারা তোমার অশ্রুর যোগ্য ছিল না, আনাস!
  • গাজায় গণহত্যা নিয়ে ভারত সরকারের নীরবতা ‘লজ্জাজনক’: প্রিয়াঙ্কা গান্ধী
  • অস্ট্রেলিয়াও সেপ্টেম্বরে ফিলিস্তিনকে ‘স্বীকৃতি দেবে’
  • জাতিসংঘে তীব্র সমালোচনার মুখে ইসরায়েল, গাজা–পরিকল্পনার পক্ষে সাফাই নেতানিয়াহুর
  • নিষেধাজ্ঞার মধ্যেই গাজার পক্ষে নরওয়ে কাঁপিয়ে দিল ব্যান্ডটি