যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপ করা পাল্টা শুল্ক থেকে রেহাই পেতে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর দাপ্তরিক প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ট্যারিফ লাইনে থাকা প্রায় ৪০টি এইচএস কোডের পণ্যের আমদানি বাড়ানো এবং ১০০ পণ্যে শুল্ক কমানোর জন্য খসড়া তালিকা তৈরি করেছে সরকার। তালিকা চূড়ান্ত করে শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) দপ্তরে পাঠানো হবে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও এনবিআর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। 

গত ৭ মে লিখিত প্রস্তাব চেয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনকে চিঠি দেন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার। চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে লিখিত প্রস্তাব পেলে আনুষ্ঠানিক দরকষাকষি শুরু হবে। এর আগে গত ৭ এপ্রিল বাণিজ্য উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে পদক্ষেপ নেওয়া এবং আলোচনার আগ্রহের কথা জানিয়ে জেমিসন গ্রিয়ারকে চিঠি দেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল সোমবার বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান সমকালকে বলেন, আমদানি বাড়ানো যায় এমন কিছু পণ্যের একটি খসড়া তৈরি করা হয়েছে। ১০০টি পণ্যকে শুল্কমুক্ত তালিকায় যুক্ত করার বিষয়েও সরকার কাজ করছে। তালিকা চূড়ান্ত করে শিগগিরই যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হবে। 
গত ২ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্বের ৫৭টি দেশের ওপর বিভিন্ন হারে পাল্টা শুল্ক বসানো হয়। বাংলাদেশের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক ঘোষণা করা হয় ৩৭ শতাংশ। তবে ৯ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন প্রেসিডেন্ট। যদিও সব দেশের ওপর ন্যূনতম ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কার্যকর করা হয়েছে। এর প্রভাব বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের ওপর এরই মধ্যে পড়তে শুরু করেছে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ বিশ্ববাজার থেকে ২০ কোটি ডলারের বেশি আমদানি করে এমন অন্তত ১৪ পণ্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে বেশি আনার সুযোগ রয়েছে। যেমন– বাংলাদেশ ২০২৩ সালে বিশ্ববাজার থেকে ৭১৬ কোটি টাকার কিছু পেট্রোলিয়াম পণ্য আমদানি করেছে। একই বছর যুক্তরাষ্ট্র সারাবিশ্বে ৬ হাজার ৬৪৫ কোটি ডলারের পেট্রোলিয়াম রপ্তানি করেছে, যা বিশ্বে মোট রপ্তানির ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশে এ পণ্য এসেছে প্রায় শূন্য শতাংশ। বিভিন্ন ধরনের পেট্রোলিয়াম পণ্য আমদানিতে শুল্ক ৫ থেকে ২৫ শতাংশ। 
২০২৩ সালে বাংলাদেশ সারাবিশ্ব থেকে ২২২ কোটি ডলার দামের তুলা আমদানি করেছিল, যার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ছিল মাত্র ৩৩ কোটি ডলার। বিশ্বব্যাপী তুলা রপ্তানিতে যুক্তরাষ্ট্রের অংশ ছিল ৩৫ দশমিক ৮১ শতাংশ। বাংলাদেশে মার্কিন তুলার আমদানি শুল্ক শূন্য শতাংশ। একই বছর বাংলাদেশ ১৮৯ কোটি ডলারের তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) আমদানি করেছিল, যার মধ্যে প্রায় ৫ কোটি ডলারের এসেছিল যুক্তরাষ্ট্র থেকে। ওই বছর আমেরিকা থেকে রপ্তানি করা মোট এলপিজির দাম ছিল ২০৮৮ কোটি ডলার, যা বিশ্ববাজারের প্রায় ৩৬ শতাংশ। একইভাবে প্রাথমিক অনুমান অনুসারে, বাংলাদেশের যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও সয়াবিন, গম, প্রাকৃতিক গ্যাস, স্বর্ণ, ভুট্টা, ভ্যাকসিন, গহনা সামগ্রী, বোর্ড, প্যানেল, লৌহঘটিত বর্জ্য, স্ক্র্যাপ ইত্যাদির আমদানি বাড়ানোর প্রচুর সুযোগ রয়েছে। এর বাইরে গম, দুধ, ক্রিম উল্লেখযোগ্য।

বাণিজ্য উপদেষ্টা ইউএসটিআরকে দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করেছিলেন, বাংলাদেশের শুল্ক তালিকায় বর্তমানে ১৯০টি পণ্যের ওপর শুল্কহার শূন্য, অর্থাৎ কোনো শুল্ক নেই। ট্যারিফ লাইনের আরও ১০০টি পণ্যকে শুল্কমুক্ত তালিকায় যুক্ত করার চিন্তা করা হচ্ছে। বর্তমানে এনবিআর ১০০টি পণ্য খুঁজে বের করতে কাজ করছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম অনুযায়ী শূন্য শুল্ক অন্যান্য দেশের জন্যও প্রযোজ্য হবে। 
এদিকে ইউএসটিআরের পরামর্শ অনুযায়ী সরাসরি যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য কেনার প্রতিশ্রুতি দেবে বাংলাদেশ। উদাহরণস্বরূপ, বাংলাদেশ জেনারেল মোটরস থেকে গাড়ি এবং এলজি পণ্য কোরিয়া ও ভারত থেকে আমদানি করে, যদিও এগুলো আমেরিকান ব্র্যান্ড। বাংলাদেশ বিমান কেনার সময় বোয়িংকে অগ্রাধিকার দেওয়ার চিন্তা করছে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি বাড়াতে বাংলাদেশ অ-শুল্ক বাধা দূর করার নানা পদক্ষেপ নেবে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ ল ককর র ওপর আমদ ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

লিখিত প্রস্তাব চায় যুক্তরাষ্ট্র, তারপর আলোচনা শুরু

পাল্টা শুল্ক আরোপ নিয়ে দর-কষাকষি করতে বাংলাদেশ সরকারের কাছে লিখিত প্রস্তাব চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) দপ্তর। তারা বলেছে, বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে লিখিত প্রস্তাব পেলে আনুষ্ঠানিক দর-কষাকষি শুরু হবে।

বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনকে ৭ মে লেখা এক চিঠিতে এ কথা বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ার। এর আগে গত মাসে বাণিজ্য উপদেষ্টা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য–ঘাটতি কমাতে পদক্ষেপ নেওয়া এবং আলোচনার আগ্রহের কথা জানিয়ে জেমিসন গ্রিয়ারকে চিঠি দিয়েছিলেন।

গত ৭ এপ্রিল জেমিসন গ্রিয়ারকে দেওয়া চিঠিতে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের শুল্ক তালিকায় বর্তমানে ১৯০টি পণ্যের ওপর শুল্কহার শূন্য অর্থাৎ কোনো শুল্ক নেই। বাংলাদেশের ট্যারিফ লাইনের আরও ১০০টি পণ্যকে শুল্কমুক্ত তালিকায় যুক্ত করার চিন্তা করা হচ্ছে।

উপদেষ্টার সেই চিঠির উত্তরেই এই চিঠি দিয়েছেন জেমিসন গ্রিয়ার। গতকাল শনিবার চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণার পর থেকে সরকার ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বিশেষ গুরুত্ব সহকারে এই বিষয়ে কাজ করছে। সম্প্রতি আমাদের একটি প্রতিনিধিদল যুক্তরাষ্ট্র গিয়ে ইউএসটিআরসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠক করেছে।’ তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য–ঘাটতি কমাতে আমরা একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করছি। ইউএসটিআরের পক্ষ থেকে চিঠি পাওয়ার আগে থেকেই এই কর্মপরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছিলাম। এটি প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। আশা করছি খুব শিগগির আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য–ঘাটতি কমাতে আমাদের কর্মপরিকল্পনার কথা যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসটিআরকে জানাতে পারব।’

শুল্কহার কমানো, অশুল্ক বাধা দূর করা এবং পারস্পরিক বাণিজ্যকে আরও লাভজনক করতে বিভিন্ন সংস্কারমূলক উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ—এ কথা জানানো হয় উপদেষ্টার চিঠিতে।গ্রিয়ারের চিঠিতে কী আছে

চিঠির শুরুতে জেমিসন গ্রিয়ার পাল্টা শুল্ক কার্যক্রমের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারের স্ব–উদ্যোগী পদক্ষেপের জন্য বাণিজ্য উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, ইউএসটিআর বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য–ঘাটতি কমানোর বিষয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত। বাংলাদেশের কৃষি ও শিল্প খাতে শুল্ক ও অশুল্ক বাধাগুলো কমানো এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে বাণিজ্য–ঘাটতি কমানো যায়।

যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থসংশ্লিষ্ট সংস্কার উদ্যোগের জন্য নেওয়া ইতিবাচক পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে জেমিসন গ্রিয়ার বলেন, তাঁরা বাংলাদেশ সরকারকে শ্রম অধিকার লঙ্ঘন এবং ডিজিটাল বাণিজ্যে বাধার মতো অন্য অবৈধ বাণিজ্য চর্চাগুলো সমাধান করার উৎসাহ দিচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আপনার (বাংলাদেশ) সরকারের কাছ থেকে একটি লিখিত প্রস্তাব পেতে আগ্রহী, যাতে আমরা আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করতে পারি।’

এর আগে গত ৭ এপ্রিল জেমিসন গ্রিয়ারকে দেওয়া চিঠিতে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশের শুল্ক তালিকায় বর্তমানে ১৯০টি পণ্যের ওপর শুল্কহার শূন্য অর্থাৎ কোনো শুল্ক নেই। বাংলাদেশের ট্যারিফ লাইনের আরও ১০০টি পণ্যকে শুল্কমুক্ত তালিকায় যুক্ত করার চিন্তা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপ করা ন্যূনতম ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্কের প্রভাব বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের ওপর এরই মধ্যে পড়তে শুরু করেছে। অনেক মার্কিন ক্রেতা প্রতিষ্ঠান বাড়তি শুল্কের অর্ধেকটা রপ্তানিকারকদের কাছ থেকে কেটে নিচ্ছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ শুল্কের পুরোটা নেওয়ার ঘটনাও ঘটছে।

উপদেষ্টার চিঠিতে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে সব রপ্তানি পণ্যের ওপর গড়ে ১৫ শতাংশ হারে শুল্ক দিয়ে আসছে বাংলাদেশ। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর গড়ে ৬ দশমিক ১০ শতাংশ হারে শুল্ক রয়েছে। এর মধ্যে কাঁচা তুলা আমদানিতে শুল্ক নেই। আর লোহার স্ক্র্যাপ আমদানিতে শুল্কহার ১ শতাংশ।

শুল্কহার কমানো, অশুল্ক বাধা দূর করা এবং পারস্পরিক বাণিজ্যকে আরও লাভজনক করতে বিভিন্ন সংস্কারমূলক উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ—এ কথা জানানো হয় উপদেষ্টার চিঠিতে।

পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণার পাঁচ দিন পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দেন। এতে পাল্টা শুল্ক তিন মাস স্থগিত করার অনুরোধ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পণ্য বাংলাদেশের বাজারে প্রবেশে শুল্ক-সুবিধা দেওয়া হবে। গ্যাস টারবাইন, সেমিকন্ডাক্টর, চিকিৎসাসামগ্রীর মতো বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান রপ্তানি পণ্যের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক কমানোর কথাও বলেন প্রধান উপদেষ্টা।

পাল্টা শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলাপ–আলোচনা শুরু করেছে বাংলাদেশ। এভাবেই এগোতে হবে। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনায় ইউএসটিআর কী কী প্রাধান্য দিচ্ছে, সেটি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দর-কষাকষি চলছে

যুক্তরাষ্ট্র যেসব দেশ থেকে পণ্য আমদানি করে, সেসব দেশের ওপর গত ২ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক বা রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ আরোপ করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্বের ৫৭টি দেশের ওপর বিভিন্ন হারে বাড়তি পাল্টা শুল্ক বসানো হয়। তাতে বাংলাদেশের পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক দাঁড়াত ৩৭ শতাংশ। তবে ৯ এপ্রিল পাল্টা শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন প্রেসিডেন্ট। যদিও সব দেশের ওপর ন্যূনতম ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক কার্যকর করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপ করা ন্যূনতম ১০ শতাংশ পাল্টা শুল্কের প্রভাব বাংলাদেশের রপ্তানিকারকদের ওপর এরই মধ্যে পড়তে শুরু করেছে। অনেক মার্কিন ক্রেতা প্রতিষ্ঠান বাড়তি শুল্কের অর্ধেকটা রপ্তানিকারকদের কাছ থেকে কেটে নিচ্ছেন। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ শুল্কের পুরোটা নেওয়ার ঘটনাও ঘটছে।

পাল্টা শুল্ক আরোপের পরিপ্রেক্ষিতে চীন, ভারত, ভিয়েতনাম, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ), জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ ১৮টি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদারের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের দর-কষাকষি চলছে। আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য একটি কাঠামোও দাঁড় করিয়েছে তারা।

বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রকে কী ‘অফার’ করবে আর দেশটির কাছ থেকে কী চাইবে, সেটি আগে চূড়ান্ত করতে হবে। তারপরই আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করা দরকার।সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান

জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, পাল্টা শুল্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলাপ–আলোচনা শুরু করেছে বাংলাদেশ। এভাবেই এগোতে হবে। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনায় ইউএসটিআর কী কী প্রাধান্য দিচ্ছে, সেটি ভালো করে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যে কী কী প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তা চলতি বছর ইউএসটিআরের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। সেটির ভিত্তিতে শুল্ক-অশুল্ক বাধা দূর করতে কী কী করা হয়েছে, সামনের দিনে কী করা হবে এবং তার বাইরে কী দিতে পারবে, তা সুনির্দিষ্ট করতে হবে।

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রকে কী ‘অফার’ করবে আর দেশটির কাছ থেকে কী চাইবে, সেটি আগে চূড়ান্ত করতে হবে। তারপরই আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু করা দরকার। বাংলাদেশ অতিরিক্ত শুল্ক বাতিল, যুক্তরাষ্ট্রের তুলা ব্যবহারে উৎপাদিত পোশাক রপ্তানিতে শুল্কছাড় এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি আলোচনা শুরুর দাবি করতে পারে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লিখিত প্রস্তাব চায় যুক্তরাষ্ট্র, তারপর আলোচনা শুরু