হবিগঞ্জের বাহুবলে স্বেচ্ছাশ্রমে প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ একটি রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু করেছেন মিরপুর ইউনিয়নের পূর্ব লাকুড়িপাড়া গ্রামবাসী। দীর্ঘদিন ধরে বেহাল রাস্তাটি মেরামতে জনপ্রতিনিধিদের কাছে দাবি জানিয়ে আসছিলেন তারা। প্রতিকার না পেয়ে স্থানীয় প্রবাসীদের আর্থিক সহযোগিতায় নিজেরাই সংস্কারের উদ্যোগ নেন।    
উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের ভূগলি থেকে পূর্ব লাকুড়িপাড়া পর্যন্ত রাস্তাটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত। এই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন ফদ্রখলা, রাউদাগাঁও, দত্তপাড়া, নোয়াগাঁও, লাকুড়িপাড়াসহ ৬-৭টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াত করে। রাস্তাটি কয়েক বছর ধরে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল। বর্ষা মৌসুমে রাস্তাটিতে হাঁটাও মুশকিল হয়ে পড়ে। কাদাপানিতে পথচারীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। বিশেষ করে শিক্ষার্থী, নারী ও বয়স্কদের চলাফেরায় বেশি ভোগান্তি হতো।
রাস্তাটি সংস্কারের বিষয় নিয়ে এলাকার প্রবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন গ্রামবাসী। কয়েকজন প্রবাসী অর্থ সহায়তা পাঠালে এলাকার যুবকেরা স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু করেন। গতকাল শুক্রবার সকালে রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হয়। প্রথম দিনে রাস্তাটির চার ভাগের এক ভাগ সংস্কার করা হয়েছে। 
পূর্ব লাকুড়িপাড়া গ্রামের বাসিন্দা জুবাইদ মিয়া জানান, রাস্তাটি সংস্কারে তারা বারবার জনপ্রতিনিধিদের কাছে দাবি জানিয়েছেন।  কোনো কাজ হয়নি। গ্রামের প্রবাসীদের সহায়তায় রাস্তাটির সংস্কার শুরু হয়েছে। রাস্তাটি এবার অন্তত চলাচলের উপযোগী হবে বলে আশাবাদ জানান তিনি। 
স্থানীয় অটোরিকশাচালক আয়াত আলী জানান, ভাঙাচোরা সড়কে গাড়ির ক্ষতি হয়। ঝাঁকুনির পাশাপাশি সময়ও বেশি লাগে। এ কারণে যাত্রীরা বেশি টাকা দিতে চাইলেও এই সড়কে যেতে মন চায় না। তারা চান রাস্তাটি স্থায়ীভাবে পাকা করা হোক। 
রজবুন্নেছা নামে একজন বাসিন্দা বলেন, গ্রামের কোনো রোগী নিয়ে জরুরিভাবে হাসপাতালে যেতে চাইলে ভাঙাচোরা রাস্তার কারণে সম্ভব হয় না। কোনো ধরনের যানবাহন মেলে না। চালকেরা কেউ রাজি হলেও অনেক বেশি ভাড়া দাবি করেন। 
মাহি নামে এক শিক্ষার্থী জানায়, বৃষ্টি হলে রাস্তায় চলাচল করা যায় না, শার্ট-প্যান্ট ময়লায় নষ্ট হয়। 
প্রবাসীর অর্থায়ন ও গ্রামবাসীর স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগের প্রশংসা করেন মিরপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো.

শামীম মিয়া। তিনি বলেন, রাস্তাটির সংস্কারে দু’বার টেন্ডার প্রক্রিয়া হলেও কোনো কারণে তা বাতিল হয়েছে। ছোটখাটো কাজ হলে ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে করা যেত। এটি তাদের সক্ষমতার বাইরে। রাস্তাটি সংস্কারে সহযোগিতার আশ্বাস দেন তিনি। 
উপজেলা প্রকৌশল বিভাগের সার্ভেয়ার উজ্জ্বল মণ্ডল জানান, রাস্তাটি সংস্কারে টেন্ডার হয়েছিল। ঠিকাদারের মৃত্যুর কারণে তা বাতিল হয়েছে। ফের টেন্ডারের জন্য চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। 
বাহুবলের ইউএনও মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, প্রবাসীরা যেভাবে এলাকাবাসীর কষ্ট লাঘবে এগিয়ে এসেছেন, তা সত্যিই অনুকরণীয়। রাস্তাটি শিগগিরই পাকাকরণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গ র মব স প রব স

এছাড়াও পড়ুন:

শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত

নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।

দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।

ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্‌যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।

৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।

ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট

সম্পর্কিত নিবন্ধ