পৃথক অগ্নিকাণ্ডে নরসিংদীর মাধবদী ও কুষ্টিয়ার খোকসায় অর্ধশতাধিক দোকান পুড়ে গেছে। গতকাল শুক্রবার ভোরে মাধবদী বাজারের মুড়িপট্টিতে ও সকালে খোকসার জানিপুর বাজারে এ দুর্ঘটনা দুটি ঘটে।
মাধবদীর অগ্নিকাণ্ডের বিষয়ে স্থানীয় লোকজন জানান, শুক্রবার ভোর ৫টার দিকে একটি দোকানে আগুন ধরে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যে সেই আগুন আশপাশের সব দোকানে ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের চেষ্টায় প্রায় দুই ঘণ্টা পর সকাল ৭টার দিকে আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে সকাল সোয়া ১০টা বেজে যায়।
স্থানীয় ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, আগুনে ১৪টি মুদি দোকান, ১১টি স্বর্ণালংকার তৈরির দোকান, ৯টি ইলেকট্রনিক সামগ্রী ও প্লাস্টিকের দোকান, ৫টি স্টেশনারি দোকান ও অন্য ৫টি দোকানসহ মোট ৪৫টি দোকান পুড়ে গেছে। স্বর্ণালংকার তৈরির প্রতিটি দোকানে গ্যাসের সিলিন্ডার ছিল। যে কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে বেগ পেতে হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত মুদি দোকানি আবদুল আজিজ মৌলভী বলেন, তাঁর দোকানটি পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়েছে। সব মিলিয়ে বাজারের ৬৭টি দোকান পুড়ে গেছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫০ কোটি টাকা। তিনি বলেন, আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা যথাসময়ে এসেছিলেন। আশপাশের পুকুরগুলোতে পানি না থাকায় তাদের কাজে দেরি হয়।
মাধবদী বাজার ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার (ইনচার্জ) মো.
খোকসায় পুড়ল পাঁচ দোকান
শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে খোকসার জানিপুর বাজারের প্রধান সড়কে অবস্থিত স্কুল মার্কেটের সিদ্দিকুর রহমানের টেলিভিশনের শোরুমে শুরুতে আগুন ধরে যায়। এ সময় বাজারের অধিকাংশ দোকান বন্ধ ছিল। বাজারের অন্য ব্যবসায়ী ও পথচারীরা ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের মোবাইল ফোনে খবর দেন। তাদের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে খোকসা ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে আসে। তারা ব্যবসায়ী ও পথচারীদের সহায়তায় প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এ দুর্ঘটনায় সিদ্দিকুর রহমানের টেলিভিশনের শো রুম, দুটি ওষুধের দোকান ও দুটি ক্রীড়াপণ্য বিক্রির প্রতিষ্ঠানের মালপত্র, আসবাব ও নগদ টাকা পুড়ে যায়। ব্যবসায়ীদের দাবি, তাদের প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সিদ্দিকুর রহমান বলেন, রাতে যাওয়ার সময় তিনি নিজে দোকানের মেইন সুইচ বন্ধ করে রেখে যান। এ কারণে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুন ধরার আশঙ্কা কম। সিসিটিভি ক্যামেরার চার্জার থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আগ ন ব যবস য় আগ ন ন ম ধবদ
এছাড়াও পড়ুন:
কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’
নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন, মানবিকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের চিত্র নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে ‘কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পঞ্চম আসরে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের এই আলোচিত চলচ্চিত্রটি।
৭ দিনব্যাপী এ উৎসবে মিসর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ভারতের নির্বাচিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে উৎসবে।
আরো পড়ুন:
দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে
সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন ভাবনা
২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ায়। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের লেখা ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেন মাসুম রেজা।
চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী।
উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, “আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন এত কিছু ভাবিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা সত্যিই অকল্পনীয়। ‘নয়া মানুষ’ ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের প্রকৃত দর্শন তুলে ধরছে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।”
চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিচ্ছে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। কাশ্মীর ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ‘নয়া মানুষ’ অংশ নিচ্ছে, যা দেশের চলচ্চিত্রের জন্যও একটি বড় সাফল্য।”
চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে চলচ্চিত্রটির। চিত্রগ্রহণ পরিচালনা করেছেন কমল চন্দ্র দাস। সিনেমাটির সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়।
মানবতার বার্তা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জীবনবোধের অনন্য মেলবন্ধন নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ এবার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিচ্ছে শান্তি ও সহমর্মিতার বার্তা।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত