Samakal:
2025-12-02@02:55:11 GMT

জৈব সারে মাসে লাখ টাকা আয়

Published: 4th, July 2025 GMT

জৈব সারে মাসে লাখ টাকা আয়

মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের রিমন শেখ। ২০১৯ সালে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজে পড়ছিলেন অর্থনীতি বিষয়ে। নিজের থাকা-খাওয়া ও লেখাপড়ার খরচ জোগাতেন টিউশনি করে। কোনো মাসে খরচ কম হলে কিছু টাকা সঞ্চয়ও করতেন। তবে করোনা মহামারি সবকিছু ওলটপালট করে দেয়। টিউশনি বন্ধ হয়ে যায়। উপায় না পেয়ে চলে আসেন নিজ গ্রামে। 
টিউশনি না থাকায় বিকল্প আয়ের পথ খুঁজতে থাকেন তিনি। লকডাউন থাকায় বাড়িতে বসেই লেখাপড়া চালাতে থাকেন। এ সময় জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরামর্শ নিয়ে টিউশনি থেকে সঞ্চয় করা মাত্র সাড়ে তিন হাজার টাকা বিনিয়োগে ছোট পরিসরে শুরু করেন ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরির প্রজেক্ট। ধীরে ধীরে উদ্যোগটি বড় হতে থাকে এবং এখন তা ৪০ লাখ টাকার একটি প্রকল্পে রূপ নিয়েছে। এই কেঁচো কম্পোস্ট সার থেকেই সব খরচ বাদে মাসে লাখ টাকা আয় হচ্ছে তাঁর। এরই মধ্যে কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ থেকে অর্থনীতিতে অনার্স-মাস্টার্স শেষ করেছেন। এখন চাকরির পিছে না ঘুরে অন্যকে তাঁর প্রকল্পে কাজ করার সুযোগ করে দিচ্ছেন।
সদর উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো.

আশরাফুল আলম বলেন, জৈব সারে মাটির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি করে এবং ফসল উৎপাদনের প্রয়োজনীয় ১৬টি উপাদান আছে এতে। রাসায়নিক সার একবার ব্যবহার করে পরেরবার তার দ্বিগুণ সার প্রয়োগ না করলে ফসল ভালো হয় না। জৈব সার একবার ব্যবহার করলে তার সুফল অন্তত দুবার পাওয়া যায়। জৈব সারে জমির স্বাস্থ্য ও প্রাণ সতেজ থাকে। রাসায়নিক সার ব্যবহারে তাৎক্ষণিক সুফল পাওয়া যায়। আর জৈব সারে দীর্ঘস্থায়ীভাবে মাটির উর্বরা শক্তি বাড়ে। ফলে কৃষকরাও এখন জৈব সারের দিকে ঝুঁকছেন। রিমনের তৈরি ভার্মি কম্পোস্ট সার তাঁর বাড়ি থেকেই কৃষকরা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। 
রিমন বলেন, ‘করোনার সময় কুষ্টিয়ায় টিউশনি হারিয়ে হতাশ না হয়ে আয়-রোজগারের পথ খুঁজতে থাকি। বাড়ির পাশেই বাবার এক বিঘার একটি আম বাগান আছে। ওই বাগানে সাড়ে তিন হাজার টাকার কেঁচো কিনে ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরি করতে শুরু করি। ফার্মের নাম দিই সোনার বাংলা এগ্রো। আমি ছাত্র হওয়ায় খবর পেয়ে কৃষি বিভাগের লোকজন সার তৈরির নানা কৌশল সম্পর্কে ধারণা দেন। আমিও দক্ষতার সঙ্গে তা রপ্ত করে জৈব সারের যে ধরনের উপাদান থাকা দরকার সেভাবে ভার্মি কম্পোস্ট সার তৈরিতে সক্ষম হই। ২০২৩ সালের মার্চ মাসে সদর উপজেলার সাবেক কৃষি কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন আমার সার ঢাকায় ল্যাব টেস্টে পাঠিয়েছিলেন। টেস্টে এই সারে সব উপাদান বিদ্যমান রয়েছে। ফলে আমার সারের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে।’ 
রিমনের পিতা জমিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এখন আমার ছেলের প্রজেক্ট দেখাশোনা করি। ছেলে আমাকে আর বাইরে কাজ করতে দেয় না। এখানে এখন চারজন নিয়মিত শ্রমিক আছে। তাদের কাজে আমিও সহযোগিতা করি। প্রতি মাসে লেবার খরচ ৫০ হাজার টাকা। এ ছাড়া ৫০ হাজার টাকার গোবর ও ১৫ হাজার টাকার বস্তা কিনতে হয়। বর্তমানে মাসে ২৫ টন ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন হচ্ছে। প্রতি টন সার বিক্রি হচ্ছে ১২ হাজার টাকায়। এ ছাড়া কেঁচো বিক্রি হচ্ছে চার হাজার টাকা কেজি। সব খরচ বাদ দিলেও মাসে লাখ টাকা আয় হচ্ছে। ছেলের এখন লক্ষ্য গোবর না কিনে গরু কিনবে। টাকা জমাচ্ছে। গাভি ও ষাড় গরু কিনে আলাদা ফার্ম করা হবে। সরকারি সহায়তা পেলে খুব দ্রতই ফার্ম করা সম্ভব হবে।’ 
রিমনের সফলতা দেখে ভার্মি কম্পোস্ট সার প্রস্তত করার প্রজেক্ট হাতে নিয়েছেন নতুন উদ্যোক্তা সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এখন লাভের মধ্যে আছি। আশা করছি, আর চার-পাঁচ মাস পর থেকে মাসে ৩০-৪০ হাজার টাকা আয় হবে।’  
স্থানী কৃষক মামুনুল হক বলেন, জৈব সারে জমির প্রাণ সতেজ থাকে। রাসায়নিক সার ব্যবহারে তাৎক্ষণিক সুফল পাওয়া যায়। জৈব সারে দীর্ঘস্থায়ীভাবে মাটির উর্বরা শক্তি বাড়ে। ফলে কৃষকরা এখন জৈব সারের দিকে ঝুঁকছেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ মো. সামসুল আলম বলেন, মেহেরপুর কৃষিতে সমৃদ্ধ একটি জেলা। জমির স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য জৈব সারের কোনো বিকল্প নেই। ভার্মি কম্পোস্ট সারে জমির শক্তি ১০ গুণ বেড়ে যায়। এ সার ব্যবহারে মাটির উর্বরা শক্তি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাসায়নিক সার ব্যবহারের মাত্রা কমানো যায়। বাণিজ্যিকভাবে এই সার উৎপাদন ও বিক্রি করে ভাগ্যের আমূল পরিবর্তন করেছেন শিক্ষিত তরুণ উদ্যোক্তা রিমন শেখ। তাঁর এই সাফল্য তরুণদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে অনুপ্রেরণা জোগাচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ ধরনের তরুণ উদ্যোক্তাদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছে বলে জানান তিনি। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কম প স ট স র ত স র ব যবহ র ট উশন

এছাড়াও পড়ুন:

৬টি ভাষার প্রশিক্ষক নেবে সরকার, ঘণ্টাপ্রতি বেতন ৮০০ টাকা, পদ ১২৪

৬টি ভাষা শিক্ষা কোর্স পরিচালনার জন্য অতিথি ভাষা প্রশিক্ষক নিয়োগ দিচ্ছে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)। মোট পদসংখ্যা ১২৪। বিএমইটির নিয়ন্ত্রণাধীন ইনস্টিটিউট অব মেরিন টেকনোলজি (আইএমটি)/কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্র (টিটিসি)/ শিক্ষানবিশি প্রশিক্ষণ দপ্তরগুলোয় প্রশিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে।

চাকরির বিবরণ

পদের নাম: অতিথি ভাষা প্রশিক্ষক

১. ভাষা প্রশিক্ষণ কোর্সের নাম: জাপানিজ

পদসংখ্যা: ৫১

আবেদনের যোগ্যতা: ন্যূনতম এইচএসসি/সমমান পাসসহ জাপানিজ ভাষাগত দক্ষতায় JLPT N3/সমমান লেভেল পাস হতে হবে। জাপানে তিন বছরের অধিক সময় অবস্থানকারীরা/স্বনামধন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে তিন বছরের অধিক সময় জাপানিজ ভাষা প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনকারীরা অগ্রাধিকার পাবেন।

২. কোরিয়ান

পদসংখ্যা: ০১

আবেদনের যোগ্যতা: ন্যূনতম এইচএসসি/সমমান পাসসহ কোরিয়ান ভাষাগত দক্ষতা পরীক্ষায় TOPIK Level-3/সমমান পাস হতে হবে। কোরিয়ায় তিন বছরের অধিক সময় অবস্থানকারীরা/স্বনামধন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে তিন বছরের অধিক সময় কোরিয়ান ভাষা প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনকারীরা অগ্রাধিকার পাবেন।

৩. ইংরেজি

পদসংখ্যা: ৩১

আবেদনের যোগ্যতা: সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতকোত্তর/সমমান ডিগ্রি থাকতে হবে। ইংরেজি ভাষাভাষী দেশে তিন বছরের অধিক সময় অবস্থানকারীরা/স্বনামধন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে তিন বছরের অধিক সময় ইংরেজি ভাষা প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনকারীরা/IELTS-এ ৬.৫ পয়েন্ট অর্জনকারী প্রার্থীরা অগ্রাধিকার পাবেন।

আরও পড়ুনকারণ ছাড়াই চাকরিচ্যুতি ও নেতিবাচক পুলিশ প্রতিবেদন: আতঙ্কে চাকরিপ্রত্যাশীরা২৯ নভেম্বর ২০২৫

৪. আরবি

পদসংখ্যা: ২৬

আবেদনের যোগ্যতা: সংশ্লিষ্ট বিষয়ে স্নাতকোত্তর/সমমান ডিগ্রি থাকতে হবে। আরবি ভাষাভাষী দেশে তিন বছরের অধিক সময় অবস্থানকারীরা/স্বনামধন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে তিন বছরের অধিক সময় আরবি ভাষা প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনকারীরা অগ্রাধিকার পাবেন।

৫. জার্মান

পদসংখ্যা: ০৭

আবেদনের যোগ্যতা: ন্যূনতম এইচএসসি/সমমান পাসসহ জার্মান ভাষাগত দক্ষতা পরীক্ষায় ন্যূনতম Level-B1 পাস থাকতে হবে। জার্মানিতে তিন বছর বা অধিক সময় কাজের/স্বনামধন্য কোন প্রতিষ্ঠানে তিন বছরের অধিক সময় জার্মান ভাষা প্রশিক্ষক হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রার্থীরা অগ্রাধিকার পাবে।

৬. ইতালিয়ান

পদসংখ্যা: ০৮

আবেদনের যোগ্যতা: ন্যূনতম এইচএসসি/সমমান পাসসহ ইতালিয়ান ভাষাগত দক্ষতা পরীক্ষায় ন্যূনতম Level-A2 পাস থাকতে হবে। ইতালিতে তিন বছর বা অধিক সময় কাজের/স্বনামধন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে তিন বছরের অধিক সময় ইতালিয়ান ভাষা প্রশিক্ষক হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রার্থীরা অগ্রাধিকার পাবেন।

আরও পড়ুনবিগ ফোর-এর জায়গায় কি উচ্চশিক্ষার নতুন গন্তব্যে জার্মানি, ফ্রান্স ও স্পেন৩০ নভেম্বর ২০২৫বয়সসীমা

২২-৪৫ বছর (অধিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বয়স ও শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিলযোগ্য)।

বেতন

ঘণ্টাপ্রতি ৮০০ টাকা

আবেদনের নিয়ম

বিএমইটিয়ের ওয়েবসাইট থেকে নির্ধারিত আবেদন ফরম ডাউনলোড করে পূরণ করে আবেদনপত্রের স্ক্যান কপি [email protected] ই-মেইলে প্রেরণ করতে হবে।

আবেদনের শেষ তারিখ

৮ ডিসেম্বর ২০২৫

আরও পড়ুনঅফিসার পদে বেসরকারি ব্যাংকে নিয়োগ, কর্মস্থল ঢাকা৩০ নভেম্বর ২০২৫নির্দেশনা ও শর্তগুলো

১. প্রাপ্য সম্মানী থেকে ১০% হারে আয়কর কর্তন করা হবে।

২. আমন্ত্রণ প্রাপ্তিসাপেক্ষে নির্বাচিত অতিথি ভাষা প্রশিক্ষকেরা দায়িত্ব পালন করবেন। কোনো কারণ দর্শানো ব্যতীত কর্তৃপক্ষ যেকোনো সময় তাঁর আমন্ত্রণ বাতিল করার ক্ষমতা রাখে।

৩. প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে বাছাই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে, সে ক্ষেত্রে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

৪. প্রার্থীকে দেশের অভ্যন্তরে যেকোনো উপজেলা/জেলায় কাজ করার মানসিকতা থাকতে হবে।

বিস্তারিত দেখুন বিএমইটির ওয়েবসাইটে

সম্পর্কিত নিবন্ধ