‘যুদ্ধ নয়, বরং কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে ভারত - পাকিস্থান সমস্যার সমাধান ঘটুক । রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে শান্তি ফিরুক ।’ এমন দাবিতে কলকাতায় বড় মিছিল করেছে বাম দলগুলোর জোট বামফ্রন্ট।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টায় মধ্যে কলকাতার ধর্মতলার লেলিন মূর্তির পাদদেশ থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ মিছিলে পা মেলান হাজার হাজার বাম নেতা, কর্মী ও সমর্থকরা। সেই মিছিলে যোগ দেয় বামফ্রন্টের বাইরে থাকা নাম দল সিপিআইএমএল লিবারেশন ও এসইউসিআই ।
যৌথ বিবৃতি দিয়ে রাজ্য বামফ্রন্টের তরফে জানানো হয় সিপিআই(এম), সিপিআই, ফরওয়ার্ড ব্লক, আরএসপি, সিপিআই (এমএল) লিবারেশন, এসইউসিআই(সি), আরসিপিআই, এমএফবি, ওয়ার্কাস পার্টি, বলশেভিক পার্টি এদিনের মিছিলে অংশ নিয়েছে।
বামফ্রন্টের ওই বিবৃতিতে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে চলা পরিস্থিতি নিয়েই বক্তব্য পেশ করা হয়েছে ৷ সেখানে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, সন্ত্রাসবাদী হামলা হতে পারে এমন খবর আগে থেকেই ছিল, তাহলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হল না কেন ? কাশ্মীর কেন্দ্রশাসিত রাজ্য, সেখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেন্দ্রীয় সরকারের হাতে । তাই এই সব প্রশ্নের জবাব কেন্দ্রীয় সরকারকেই দিতে হবে । ভারত ও পাকিস্তান দু’টি দেশের জনগণই যুদ্ধ চায় না । তাই উভয় দেশের প্রতিনিধিদের কূটনৈতিক আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে ।
পাকিস্তান যে সন্ত্রাসবাদের মদতদাতা, সেটাও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে ৷ এই কাজকে বন্ধ করার জন্য পাকিস্তানের উপর সর্বাত্মক চাপ দেওয়া উচিত বলেই মনে করে বামফ্রন্ট ৷ কিন্তু সেটা করতে গিয়ে দু’টি পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে সামরিক সংঘাত না-হওয়ায়ই উত্তম ৷ তা
বামেদের বক্তব্য, অতীতেও সামরিক অভিযান হয়েছে ৷ তারপরেও সন্ত্রাসবাদ নির্মূল হয়নি ৷ তাই রাজনৈতিক পথে সমাধান করা উচিত ৷
যুদ্ধবিরতি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যকে ‘অনধিকার চর্চা’ বলে মনে করে বামফ্রন্ট।
তাদের বক্তব্য, কাশ্মীরের প্রশ্ন নিয়ে পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা করলেও কোনো তৃতীয় পক্ষের সঙ্গে কথা না বলা, মধ্যস্থতা না করা ভারতের দীর্ঘদিনের অবস্থান । ভারত সরকার ও দেশের রাজনৈতিক দলগুলো এই প্রশ্নে একমত । সিমলা চুক্তির মর্মবস্তুও তাই । এই অবস্থায় ভারত মার্কিন মধ্যস্থতা মেনে নিচ্ছে কেন, তার উত্তর কেন্দ্রীয় সরকারকেই দিতে হবে।
বামদলগুলোর যুদ্ধবিরোধী এমন কর্মকাণ্ড স্বাভাবিকভাবেই ভালোভাবে নেয়নি বিজেপি।
বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘এ সব হলো বামেদের পাকিস্তানপ্রেমের নির্দশন। ওরা পাকিস্তান গঠনের পক্ষে ছিল। যে বিশিষ্টরা এখন রাস্তায় নামতে চাইছেন, তারা মুর্শিদাবাদে অশান্তির সময়ে নীরব ছিলেন। রাজ্যের মানুষ এদের কোনো গুরুত্ব দেয় না।’
সুচরিতা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স প আই সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ফোবিয়া বা অহেতুক ভয় দূর করুন
ভীতি মানুষের একেবারে স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া। তবে এই ভীতি যদি অযৌক্তিক হয়, তখন সেটিকে বলা হয় ফোবিয়া বা অযৌক্তিক ভীতি। ফোবিয়ার উপযুক্ত কারণ নেই। তবুও বিশেষ কিছু পরিস্থিতি, বস্তু বা প্রাণী থেকে অযৌক্তিক ভয় পাওয়া। যেমন– টিভিতে সাপ দেখে ভয় পেয়ে চিৎকার করা, উঁচু জানালা থেকে বাইরে তাকালে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়া ইত্যাদি। আরেকটি লক্ষণ হচ্ছে– যেসব বিষয়ে ব্যক্তির অযৌক্তিক ভয় আছে, সেই বিষয় বা পরিস্থিতি এড়িয়ে চলা। যেমন– যিনি মানুষের ভিড় বা খোলা জায়গায় ভয় পান, তিনি দাওয়াতে যান না, বাজারে যান না, বদ্ধ জায়গায় ভয় পান, সব সময় ঘরের দরজা খোলা রাখেন, লিফটে ওঠেন না। কখনও যদি এ ধরনের পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েই যান, তখন তাঁর মধ্যে উৎকণ্ঠা বা অ্যাংজাইটির লক্ষণগুলো তৈরি হয়। যেমন রক্তচাপ পরিবর্তন হওয়া, হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসা, বুক ধড়ফড় করা, ঘাম হওয়া, মুখ ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া, মাথা ঘোরা, চিৎকার করা, অস্বাভাবিক আচরণ করা, মুখের ভেতর শুকিয়ে যাওয়া ইত্যাদি। শৈশবের ঘটনা-দুর্ঘটনা, একজন মানুষের বেড়ে ওঠা, তার মনের গড়ন, ব্যক্তিত্ব ইত্যাদি কারণে ফোবিয়া হতে পারে। সাধারণভাবে ফোবিয়াকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়– সুনির্দিষ্ট ফোবিয়া কোনো বস্তু বা বিশেষ পরিস্থিতির প্রতি অহেতুক অযৌক্তিক ভয়। যেমন কোনো বিশেষ প্রাণী বা পোকার প্রতি ফোবিয়া, সাপের ছবি দেখে উদ্বিগ্ন হওয়া, উঁচু জায়গায় উঠে ভয় পাওয়া ইত্যাদি।
সামাজিক অনুষ্ঠান, সভা, দাওয়াতে মানুষের সঙ্গে কথা বলতে, নিজেকে প্রকাশ করতে প্রচণ্ডভাবে অস্বস্তিবোধ করে। এ কারণে সে সামাজিকতা এড়িয়ে চলে। অ্যাগোরাফোবিয়া উন্মুক্ত খোলা জায়গা, জনবহুল এলাকা, বাজার, বাস, ট্রেন ইত্যাদিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। ফলে সে এগুলো এড়িয়ে চলে। ভয় পাওয়ার মতো কোনো কারণ না থাকা সত্ত্বেও যদি কেউ ভয় পায়, সেটিই ফোবিয়া। যেমন সাপকে সবাই ভয় পায়, কিন্তু সাপের ছবি বা ভিডিও দেখে অযৌক্তিক ভয় পাওয়াটাই ফোবিয়া। ফোবিয়ার চিকিৎসায় প্রধানত সাইকো থেরাপি-কগনিটিভ থেরাপি, বিহেভিয়ার থেরাপি ইত্যাদির সঙ্গে ওষুধ প্রয়োগ করা হয়। একটু ধৈর্য ধরে চিকিৎসা করালে ভালো ফল পাওয়া যায়। v
[বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক]