ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে নিহত ১, অগ্নিসংযোগ
Published: 14th, May 2025 GMT
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে নিয়াজুল মিয়া (৪৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ১৬ জন।
বুধবার (১৪ মে) বিকেলে সদর উপজেলার নাটাই গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ মোজাফ্ফর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত নিয়াজুল মিয়া একই গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে।
আরো পড়ুন:
গাইবান্ধায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে নিহত ১
গাজীপুরে সংঘর্ষে আহত ৪, কৃষকের হাতের কব্জি বিচ্ছিন্ন
স্থানীয়রা জানান, নাটাই ইউনিয়নের চান্দের গোষ্ঠীর সঙ্গে সলিমের গোষ্ঠীর দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছে। গত সোমবার সলিম গোষ্ঠীর একজন যুবক চান্দের গোষ্ঠীর এক বাড়িতে মাদক সেবন করতে যান। এ সময় চান্দের গোষ্ঠীর লোকজন বাধা দিলে তাদের সঙ্গে ওই যুবকের বাকবিতণ্ডা হয়। এ নিয়ে একাধিকবার দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়ায়।
আজ বুধবার বিকেলে উভয় পক্ষ আবারো সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় টেঁটার আঘাতে চান্দের গোষ্ঠীর নিয়াজুল মিয়াসহ অন্তত ১৬ জন আহত হন। হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে রাত ৮টার দিকে নিয়াজুল মিয়া মারা যান। তার মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে প্রতিপক্ষের প্রায় ১০টি ঘর লুটপাট ও ভাঙচুরের পর অগ্নিসংযোগ করে চান্দের গোষ্ঠীর লোকজন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, “সংঘর্ষে একজন নিহত হয়েছেন। দোষীদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।”
তিনি বলেন, “অন্তত ১০টি ঘরে নিহতের পক্ষের লোকজন আগুন দিয়েছেন। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস কাজ করছে।”
ঢাকা/মনিরুজ্জামান/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ ন হত আহত আগ ন ব র হ মণব ড স ঘর ষ
এছাড়াও পড়ুন:
গাজায় হামলার তীব্রতা বাড়িয়েছে ইসরায়েল
ইসরায়েলের যুদ্ধবিমান ও কামান থেকে চালানো হামলায় তছনছ হচ্ছে গাজা সিটির উত্তরাঞ্চল। রাতভর অঞ্চলটি কেঁপে কেঁপে উঠছে বিস্ফোরণের শব্দে। গত সোমবার রাতে সেখানে হামলায় অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছেন। আর গতকাল মঙ্গলবার থেকে আগের ২৪ ঘণ্টায় গাজা উপত্যকাজুড়ে হত্যা করা হয়েছে ৮৯ ফিলিস্তিনিকে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবে গাজায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি নিয়ে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে আলোচনা চলছিল। জুলাইয়ের শেষ দিকে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলে আলোচনা থেকে সরে যায় দুই পক্ষ। এরপর গাজা সিটির পুরো নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরিকল্পনা করে ইসরায়েল সরকার। তখন থেকেই সেখানে তীব্র হামলা চলছে। কত দিন এই হামলা চলবে, তা স্পষ্ট করেনি ইসরায়েল।
গতকাল গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগের ২৪ ঘণ্টায় নিহত ৮৯ জনের মধ্যে ৩১ জন ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে হত্যার শিকার হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন ৫১৩ জন। এ নিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলের হামলায় নিহত ফিলিস্তিনির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬১ হাজার ৫৯৯ জনে। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৫০ হাজারের বেশি মানুষ।
হতাহত ফিলিস্তিনিদের প্রায় সবাই বেসামরিক মানুষ। প্রত্যক্ষদর্শী ও চিকিৎসাকর্মীরা জানিয়েছেন, সোমবার রাতে গাজা সিটির জাইতুন এলাকায় দুটি বাড়ি ও মধ্যাঞ্চলের একটি অ্যাপার্টমেন্টে হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে ১১ জন নিহত হন। এ ছাড়া দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে একটি বাড়িতে হামলায় এক শিশু ও তার মা–বাবাসহ সাতজন নিহত হয়েছেন। মাওয়াসি উপকূলে নিহত হয়েছেন চারজন।
তবে ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি, গাজার বেসামরিক মানুষের হতাহত হওয়ার সংখ্যা যতটা সম্ভব কমাতে চাচ্ছে তারা। গতকাল তারা বলেছে, আগের মাসে উত্তর গাজায় কয়েক ডজন ফিলিস্তিনি যোদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছে। এরই মধ্যে আগামী অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গাজাজুড়ে সামরিক নিয়ন্ত্রণ আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা করছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
নেতানিয়াহুর এই পরিকল্পনা নিয়ে বিশ্বজুড়ে সমালোচনা চলছে। এ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর প্রধানও। তাঁর মতে, এতে গাজায় বেঁচে থাকা জিম্মিদের জীবন হুমকিতে পড়বে। এ ছাড়া এমন পরিকল্পনা ইসরায়েলি সেনাদের জন্য মৃত্যুফাঁদে পরিণত হতে পারে। গাজায় বর্তমানে প্রায় ৫০ জন জিম্মি বন্দী আছেন। তাঁদের ২০ জন জীবিত বলে ধারণা করা হয়।
এদিকে খাবারের চরম সংকটের কারণে গাজায় অনাহারে মৃত্যুর সংখ্যাও বাড়ছে। গতকাল ভূখণ্ডটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, আগের ২৪ ঘণ্টায় গাজায় না খেতে পেয়ে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। তাঁদের মধ্যে দুটি শিশু। এ নিয়ে সংঘাত শুরুর পর থেকে অনাহারে ২২৭ জনের মৃত্যু হলো। তাঁদের মধ্যে শিশু ১০৩।
কায়রোয় যাবেন হামাস নেতাএদিকে গাজায় যুদ্ধবিরতির আলোচনা আবার শুরু করতে মিসরের রাজধানী কায়রোয় যাচ্ছেন হামাস নেতা খলিল আল–হায়া। আলোচনার বিষয়ে জানাশোনা আছে, এমন একজন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েলের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে ফিরতে প্রস্তুত রয়েছেন হামাস নেতারা।
তবে যুদ্ধবিরতির মূল শর্তগুলো নিয়ে এখনো হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে দূরত্ব রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের পুরোপুরি প্রত্যাহার এবং হামাসের অস্ত্র ত্যাগের মতো শর্তগুলো। তবে স্বাধীন একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র না প্রতিষ্ঠা পর্যন্ত অস্ত্র ত্যাগের বিষয়টি নাকচ করে দিয়েছে ফিলিস্তিনি সংগঠনটি।
পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে আরবের একজন কূটনীতিক রয়টার্সকে জানিয়েছেন, মধ্যস্থতাকারী কাতার ও মিসর এখনো আলোচনা আবারও শুরুর আশা ত্যাগ করেনি। আর গাজা সিটিতে ইসরায়েলের নতুন করে অভিযান শুরুর যে পরিকল্পনা, তা হামাসকে আলোচনার টেবিলে ফেরানোর জন্যও হতে পারে।