Samakal:
2025-05-15@08:52:31 GMT

শিক্ষক ৩, শিক্ষার্থী ৫

Published: 15th, May 2025 GMT

শিক্ষক ৩, শিক্ষার্থী ৫

কুমিল্লার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে মাত্র পাঁচজন শিক্ষার্থী নিয়ে। সেখানে কর্মরত আছেন তিনজন শিক্ষক। এমন দৈন্যদশা সদর দক্ষিণ উপজেলার চৌয়ারা ইউনিয়নের যশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।

সম্প্রতি বিদ্যালয়টিতে গিয়ে দেখা গেছে, দুই কক্ষের একটি ভবনে পাঁচটি বৈদ্যুতিক পাখা থাকলেও বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। শিক্ষকরা বলেছেন, বিদ্যুৎ লাইন আনা হলেও বৈদ্যুতিক তার চুরি হয়ে গেছে একাধিকবার। পানির মোটর ও নলকূপ নষ্ট। পতাকা স্ট্যান্ডের রশিও চুরি হয়ে যায়।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৪০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় যশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। আগে এখানে অনেক শিক্ষার্থী থাকলেও শিশুরা পাশের একটি মাদ্রাসা ও কিন্ডার গার্টেনমুখী হওয়ায় ধীরে ধীরে কমতে থাকে শিক্ষার্থী। অনেকে ভর্তি হলেও কয়েকদিন এসে ফেরত চলে যায়।

বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছেন, কোনো কোনো অভিভাবক সন্তানদের বিদ্যালয়ে ভর্তি করালেও কিছুদিন পর আবার কিন্ডার গার্টেন ও মাদ্রাসায় ভর্তি করান। শিক্ষকদের অভিযোগ, এক মাস আগে পানির মোটরও চুরি হয়ে গেছে। কদিন পর পর চোর এসে বৈদ্যুতিক তারগুলো নিয়ে যেত। বিদ্যুৎ অফিসে জানালে তারা ঠিক করে দিয়ে যেত। 
একটা সময় বিরক্ত হয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ সংযোগ আর দেয়নি।

বিদ্যালয়ের বেহাল দশা আর নিজের হতাশার কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন সহকারী শিক্ষক মোসা.

মানছুরা আক্তার চৌধুরী। তাঁর ভাষ্য, তিনি আগে যে স্কুলে ছিলেন সেখানে শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৫০০। হঠাৎ করে ২০২০ সালে এই স্কুলে পদায়ন করা হয় তাঁকে। মানসিকভাবে বড় ধাক্কা খান তিনি। এসে দেখেন স্কুলে তেমন কোনো শিক্ষার্থী নেই। এর পর এলো করোনা মহামারি। তখন ছিল মাত্র একজন শিক্ষার্থী। এর পর এলাকায় ঘুরে ১৭ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করান তারা। কিন্তু কোনো শিক্ষার্থী থাকতে চায় না। তিনি বলেন, ‘স্কুলটিতে আসার কোনো রাস্তা নেই। পাশের একটি মাদ্রাসার ভেতর দিয়ে আসতে হয়। কয়েকদিন কোনো শিক্ষার্থী মাদ্রাসার ওপর দিয়ে এলে তারপর থেকে আর আসে না। পরে দেখি তারা মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে গেছে। অনেকে আবার কিন্ডার গার্টেনে ভর্তি হচ্ছে। এখানে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি আমরা।’

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফাতেহা বেগম জানান, দুই বছর ধরে এই বিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। স্থানীয় কিশোররা আড্ডা দিতে এসে নলকূপগুলোর ভেতরে পাথর ঢুকিয়ে দেয়, তাই কোনো নলকূপও নেই। পানির ব্যবস্থা না থাকায় অচল স্কুলটির দুটি শৌচাগার। যে কারণে তিন শিক্ষককে স্থানীয়দের বাড়িতে যেতে হয়। তাঁর অভিযোগ, বিদ্যালয়ের ভেতরের জিনিপত্রও কয়েকদিন পর পর চোরে নিয়ে যায়। তালার ভেতর শলা ও ময়লা ঢুকিয়ে নষ্ট করে রেখে যায়। গ্রিল কেটে নিয়ে যায়। বৈদ্যুতিক তাঁর ও পতাকার স্ট্যান্ডের দড়ি পর্যন্ত নিয়ে গেছে অনেকবার। তিনি বলেন, ‘আমি ২০১৯ সাল থেকে এখানে আছি। আমি আসার পর দু’বার জিডি করেছি। এখানকার মানুষ চান না স্কুলটি থাকুক। কারণ আমরা আশপাশের চার গ্রাম ঘুরেও কোনো শিক্ষার্থীকে আনতে পারছি না।’

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামীম ইকবাল জানান, সম্প্রতি এই উপজেলায় যোগদান করেই বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছেন তিনি। স্থানীয়দের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে বিদ্যালয়টি জাগানোর চেষ্টা করা হবে।

সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবাইয়া খানম বলেন, ‘স্কুলটির বেহাল দশার কথা আমি জানি। সেখানে স্থানীয়দের সঙ্গে উঠান বৈঠক করেছি। কিন্তু একজন অভিভাবকও কোনো রেসপন্স করেননি। মাদ্রাসার একটি প্রভাব সেখানে আছে তা সবাই বলেছেন, শিক্ষকরাও বলেছেন। তাই স্কুলের বিকল্প সড়ক করার জন্য বরাদ্দের 
ব্যবস্থা করেছি।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র একট উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে শান্তির বার্তা ছড়াতে আলিয়ার বিশেষ উদ্যোগ

ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের আবহে যখন প্রতিবেশীর নিন্দায় সমস্বরে গর্জন ছেড়েছেন বলিউড তারকারা, তখন আলিয়া ভাট মনে করিয়ে দিয়েছেন, ‘প্রতিটি বীরসন্তানের উর্দির নেপথ্যে একজন রাত জাগা মা রয়েছেন।’

সেসব  লৌহমানবীদের কথা ভেবে অভিনেত্রী নিজেও দু’চোখের পাতা এক করতে পারছেন না। ভারতীয় গণমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটালে জানা গেছে, উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিতে রত্নগর্ভাদের জন্য হাতে কলম তুলে নিয়েছেন আলিয়া।

দীর্ঘ ইনস্টাগ্রাম পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘গত কয়েক রাত ধরে একটা ভিন্ন অনুভূতি হচ্ছে। বাতাস এক ধরনের নীরবতা বিরাজ করছে। রুদ্ধশ্বাস পুরো দেশ এবং গত কয়েকদিন ধরে আমরা সেই নীরবতা অনুভব করে চলেছি। একটা চাপা উদ্বেগ  কাজ করছে। প্রতিটি খবরের প্রতিটি কথা, এমনকি রাতে খাবারের টেবিলে পর্যন্ত নিস্তব্ধতা, উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে।’

সেই পোস্টেই দেশের অতন্দ্র প্রহরী সেনা জওয়ানের বীরত্বকে কুর্নিশ জানিয়ে আলিয়ার সংযোজন, ‘কোথাও বিপদসঙ্কুল পাহাড়ের ঢালে, কোথাও নিকষ অন্ধকারে আমাদের সেনারা বিনিদ্র রজনী কাটাচ্ছে। সর্বদা সজাগ থাকছে। সিংহভাগ দেশবাসী যখন গৃহবন্দি, তখন আমাদের দেশের নারী-পুরুষরা (জওয়ান) অন্ধকারে দাঁড়িয়ে নিজেদের জীবন বাজি রেখে ঘুম বিসর্জন দিচ্ছেন, শুধু আমরা যেন শান্তিতে ঘুমোতে পারি, সেজন্য। এটা শুধু সাহসিকতার প্রতীক নয়, এটা ওঁদের আত্মত্যাগ। আর এ প্রতিটি সেনা জওয়ানের উর্দির নেপথ্যে একজন মা রয়েছেন, যিনি বিনিদ্র রজনী কাটাচ্ছেন। সেই মা যিনি জানেন যে, তাঁর বীর সন্তানেরা ঘুমপাড়ানি গান ছাড়িয়ে প্রতিটি মুহূর্তে অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হচ্ছে। এমন এক উত্তেজনার রাত, যে নীরবতা যে কোনো মুহূর্তে ভেঙে যেতে পারে।’ 

পোস্টে আলিয়া আরও জানিয়েছেন, রোববার তিনি যখন মাতৃদিবস পালন করছিলেন তখন দেশের সেসব বীর সন্তানদের মায়ের কথা ভেবে তাঁর মন কেঁদে উঠেছিল।

আলিয়া লিখেছেন, ‘মাতৃ দিবসে ফুল বিতরণ এবং আলিঙ্গন করার সময়ে মনে পড়ল সেসব রত্নগর্ভাদের কথা, যাদের মেরুদণ্ড ইস্পাতসম। সেই লৌহমানবীদের কথা, যারা এই বীর সেনাদের পরম যত্নে বড় করেছেন। যারা এ সংঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন তাদের জন্য গভীরভাবে শোকাহত। ওরা তো আর কোনোদিন বাড়ি ফিরবে না। ওদের নাম এখন দেশের আত্মার সঙ্গে খোদাই করা হয়ে গেছে। পুরো দেশ কৃতজ্ঞ তাদের পরিবারের প্রতি।’

পোস্টের এ লেখায় আলিয়া সমাপ্তি টেনেছেন সেই সমস্ত জওয়ানদের মা-বাবার জন্য প্রার্থনা জানিয়ে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ময়লা ফেলে পরিত্যক্ত জায়গা দেখিয়ে পুকুর ভরাট, ১০ জনকে আসামি করে মামলা
  • ফিলিস্তিনিদের পক্ষে সোচ্চার ইহুদি পরিবারগুলোতে অসন্তোষ তুঙ্গে, ঘটছে ভাঙন পর্যন্ত
  • ঝিনাইদহে ৩ বাড়িতে অজ্ঞান পার্টির হানা, নগদ অর্থ ও স্বর্ণালংকার লু
  • সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ওপর শাকের আঁটি
  • স্মার্ট ক্লাসরুম, নাকি শিক্ষক
  • ‘চল চল যমুনা যাই’— এই ধরনের রাজনীতি আর হতে দেব না: তথ্য উপদেষ্টা
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে নিহত ১, অগ্নিসংযোগ
  • সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট ও ইসলামপন্থী নেতা শারার সঙ্গে বৈঠক করলেন ট্রাম্প, সম্পর্ক স্বাভাবিক করায় আগ্রহ
  • দেশের উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে শান্তির বার্তা ছড়াতে আলিয়ার বিশেষ উদ্যোগ