Samakal:
2025-08-17@04:49:28 GMT

শিক্ষক ৩, শিক্ষার্থী ৫

Published: 15th, May 2025 GMT

শিক্ষক ৩, শিক্ষার্থী ৫

কুমিল্লার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে মাত্র পাঁচজন শিক্ষার্থী নিয়ে। সেখানে কর্মরত আছেন তিনজন শিক্ষক। এমন দৈন্যদশা সদর দক্ষিণ উপজেলার চৌয়ারা ইউনিয়নের যশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।

সম্প্রতি বিদ্যালয়টিতে গিয়ে দেখা গেছে, দুই কক্ষের একটি ভবনে পাঁচটি বৈদ্যুতিক পাখা থাকলেও বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। শিক্ষকরা বলেছেন, বিদ্যুৎ লাইন আনা হলেও বৈদ্যুতিক তার চুরি হয়ে গেছে একাধিকবার। পানির মোটর ও নলকূপ নষ্ট। পতাকা স্ট্যান্ডের রশিও চুরি হয়ে যায়।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৪০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় যশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। আগে এখানে অনেক শিক্ষার্থী থাকলেও শিশুরা পাশের একটি মাদ্রাসা ও কিন্ডার গার্টেনমুখী হওয়ায় ধীরে ধীরে কমতে থাকে শিক্ষার্থী। অনেকে ভর্তি হলেও কয়েকদিন এসে ফেরত চলে যায়।

বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছেন, কোনো কোনো অভিভাবক সন্তানদের বিদ্যালয়ে ভর্তি করালেও কিছুদিন পর আবার কিন্ডার গার্টেন ও মাদ্রাসায় ভর্তি করান। শিক্ষকদের অভিযোগ, এক মাস আগে পানির মোটরও চুরি হয়ে গেছে। কদিন পর পর চোর এসে বৈদ্যুতিক তারগুলো নিয়ে যেত। বিদ্যুৎ অফিসে জানালে তারা ঠিক করে দিয়ে যেত। 
একটা সময় বিরক্ত হয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ সংযোগ আর দেয়নি।

বিদ্যালয়ের বেহাল দশা আর নিজের হতাশার কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন সহকারী শিক্ষক মোসা.

মানছুরা আক্তার চৌধুরী। তাঁর ভাষ্য, তিনি আগে যে স্কুলে ছিলেন সেখানে শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৫০০। হঠাৎ করে ২০২০ সালে এই স্কুলে পদায়ন করা হয় তাঁকে। মানসিকভাবে বড় ধাক্কা খান তিনি। এসে দেখেন স্কুলে তেমন কোনো শিক্ষার্থী নেই। এর পর এলো করোনা মহামারি। তখন ছিল মাত্র একজন শিক্ষার্থী। এর পর এলাকায় ঘুরে ১৭ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করান তারা। কিন্তু কোনো শিক্ষার্থী থাকতে চায় না। তিনি বলেন, ‘স্কুলটিতে আসার কোনো রাস্তা নেই। পাশের একটি মাদ্রাসার ভেতর দিয়ে আসতে হয়। কয়েকদিন কোনো শিক্ষার্থী মাদ্রাসার ওপর দিয়ে এলে তারপর থেকে আর আসে না। পরে দেখি তারা মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে গেছে। অনেকে আবার কিন্ডার গার্টেনে ভর্তি হচ্ছে। এখানে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি আমরা।’

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফাতেহা বেগম জানান, দুই বছর ধরে এই বিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। স্থানীয় কিশোররা আড্ডা দিতে এসে নলকূপগুলোর ভেতরে পাথর ঢুকিয়ে দেয়, তাই কোনো নলকূপও নেই। পানির ব্যবস্থা না থাকায় অচল স্কুলটির দুটি শৌচাগার। যে কারণে তিন শিক্ষককে স্থানীয়দের বাড়িতে যেতে হয়। তাঁর অভিযোগ, বিদ্যালয়ের ভেতরের জিনিপত্রও কয়েকদিন পর পর চোরে নিয়ে যায়। তালার ভেতর শলা ও ময়লা ঢুকিয়ে নষ্ট করে রেখে যায়। গ্রিল কেটে নিয়ে যায়। বৈদ্যুতিক তাঁর ও পতাকার স্ট্যান্ডের দড়ি পর্যন্ত নিয়ে গেছে অনেকবার। তিনি বলেন, ‘আমি ২০১৯ সাল থেকে এখানে আছি। আমি আসার পর দু’বার জিডি করেছি। এখানকার মানুষ চান না স্কুলটি থাকুক। কারণ আমরা আশপাশের চার গ্রাম ঘুরেও কোনো শিক্ষার্থীকে আনতে পারছি না।’

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামীম ইকবাল জানান, সম্প্রতি এই উপজেলায় যোগদান করেই বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছেন তিনি। স্থানীয়দের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে বিদ্যালয়টি জাগানোর চেষ্টা করা হবে।

সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবাইয়া খানম বলেন, ‘স্কুলটির বেহাল দশার কথা আমি জানি। সেখানে স্থানীয়দের সঙ্গে উঠান বৈঠক করেছি। কিন্তু একজন অভিভাবকও কোনো রেসপন্স করেননি। মাদ্রাসার একটি প্রভাব সেখানে আছে তা সবাই বলেছেন, শিক্ষকরাও বলেছেন। তাই স্কুলের বিকল্প সড়ক করার জন্য বরাদ্দের 
ব্যবস্থা করেছি।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র একট উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

বনানীতে সিসা বারে যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যা, জড়িত ৫ জন শনাক্ত

রাজধানী ঢাকার বনানী এলাকায় ‘৩৬০ ডিগ্রি’ নামের একটি সিসা বারে রাহাত হোসেন রাব্বি (৩১) নামের এক যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে চারটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত রাহাত ইন্টারনেট সংযোগের ব্যবসা করতেন। পুলিশের ধারণা, আর্থিক লেনদেন নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে রাহাতকে হত্যা করা হয়েছে। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে রাহাত হত্যার সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে একজনের নাম–পরিচয় পাওয়া গেছে।

বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রাসেল সারোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, সিসা বারের দ্বিতীয় তলার সিঁড়িতে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে রাহাতের পায়ে ছুরিকাঘাত করেন তাঁর পূর্বপরিচিত কয়েকজন যুবক। গুরুতর আহত অবস্থায় কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

ওসি রাসেল সারোয়ার আরও বলেন, রাহাত তাঁর বন্ধুদের সঙ্গে সিসা বারে ছিলেন। কথা-কাটাকাটির জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা রাহাতের পূর্বপরিচিত এবং তাঁরা প্রায়ই এই সিসা বারে আসতেন। ঘটনাস্থলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি।

রাহাতের ওপর হামলার দৃশ্য ধারণ হয়েছে সিসা বারের একাধিক সিসি ক্যামেরায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, রাহাত সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় প্রথমে তিনজন তাঁকে ঘিরে ধরেন। এর মধ্যেই তাঁর ঊরুতে ছুরিকাঘাত করা হয়। এক যুবক রাহাতের ওপর হামলা ঠেকাতে চাইলে তাঁকেও মারধর করা হয়। একপর্যায় রাহাত সিঁড়ি থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় ভবনের লিফটের কাছে আসেন। হামলাকারীদের একজন রাহাতকে কিছু একটা দিয়ে পেটান। সবশেষে আরেকজন এসে রাহাতের ডান হাতের কনুইতে ছুরিকাঘাত করে সিঁড়ি দিয়ে নেমে যান।

নিহত যুবকের চাচাতো ভাই শাকিল শাজাহান ও ফুফু কাজল আক্তার বলেন, রাহাত ইন্টারনেট ব্যবসায়ী ছিলেন। মহাখালী এলাকার রবিউল আলম হাজারীর দুই ছেলের মধ্যে তিনি বড়। রাতে বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে বের হয়ে আর বাসায় ফেরেননি। ভোরে তাঁর মুঠোফোন থেকে এক বন্ধু জানান, রাহাত ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছেন।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে সিসা নিষিদ্ধ মাদক। তবে অভিযোগ রয়েছে, পুলিশ ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কিছু কর্মকর্তার সঙ্গে প্রভাবশালীরা যোগসাজশ করে রাজধানীর অভিজাত এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে সিসা বার পরিচালনা করে আসছেন। অনেকটা প্রকাশ্যে ৩৬০ ডিগ্রি নামের একটি সিসা বার ব্যবসা পরিচালনা করলেও সেটা জানতেন না বলে জানিয়েছেন বনানী থানার ওসি রাসেল সারোয়ার।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ৩৬০ ডিগ্রি নামের একটি সিসা বারের নামে আগেও দুটি মামলা করা হয়েছিল। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের একটি সূত্র বলছে, নিয়মিত অভিযান না হওয়ায় এভাবে প্রকাশ্যে চলছে সিসা বার। গুলশান এলাকায় দায়িত্ব পালন করছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের পরিদর্শক শামসুল কবির। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আগে ‘অ্যারাবিক কুজি’ নামে সিসা বারটি পরিচালিত হতো। কিছুদিন আগে অভিযান চালিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এখন ৩৬০ ডিগ্রি নতুন নাম দিয়ে একই মালিক ব্যবসা পরিচালনা করছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাছের ঘের দখল নিয়ে দুই পক্ষের গোলাগুলিতে একজন নিহত
  • সোনালি সাফল্যের আড়ালে ধূসর বাস্তবতা
  • গোমস্তাপুরে ২ শিশুর অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে গুঞ্জন
  • পাথর লুটে জড়িত বড় নেতারা গ্রেপ্তার হচ্ছেন না
  • ‘রুকন না হলে চাকরি থাকবে না’ বিষয়ে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ব্যাখ্যা
  • বিপ্লবের এক বছর পর আশা হতাশায় রূপ নিচ্ছে
  • ডাকসু নির্বাচন: চতুর্থ দিনে মনোনয়ন ফরম নিলেন একজন
  • কক্সবাজার সৈকতে গোসলে নেমেছিলেন চার বন্ধু, ঢেউয়ে ভেসে একজনের মৃত্যু
  • সার্কভুক্ত ‘দেশি’ ফুটবলার আশীর্বাদ নাকি শঙ্কা
  • বনানীতে সিসা বারে যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যা, জড়িত ৫ জন শনাক্ত