Samakal:
2025-07-01@03:38:20 GMT

শিক্ষক ৩, শিক্ষার্থী ৫

Published: 15th, May 2025 GMT

শিক্ষক ৩, শিক্ষার্থী ৫

কুমিল্লার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় চলছে মাত্র পাঁচজন শিক্ষার্থী নিয়ে। সেখানে কর্মরত আছেন তিনজন শিক্ষক। এমন দৈন্যদশা সদর দক্ষিণ উপজেলার চৌয়ারা ইউনিয়নের যশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।

সম্প্রতি বিদ্যালয়টিতে গিয়ে দেখা গেছে, দুই কক্ষের একটি ভবনে পাঁচটি বৈদ্যুতিক পাখা থাকলেও বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। শিক্ষকরা বলেছেন, বিদ্যুৎ লাইন আনা হলেও বৈদ্যুতিক তার চুরি হয়ে গেছে একাধিকবার। পানির মোটর ও নলকূপ নষ্ট। পতাকা স্ট্যান্ডের রশিও চুরি হয়ে যায়।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৪০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় যশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। আগে এখানে অনেক শিক্ষার্থী থাকলেও শিশুরা পাশের একটি মাদ্রাসা ও কিন্ডার গার্টেনমুখী হওয়ায় ধীরে ধীরে কমতে থাকে শিক্ষার্থী। অনেকে ভর্তি হলেও কয়েকদিন এসে ফেরত চলে যায়।

বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছেন, কোনো কোনো অভিভাবক সন্তানদের বিদ্যালয়ে ভর্তি করালেও কিছুদিন পর আবার কিন্ডার গার্টেন ও মাদ্রাসায় ভর্তি করান। শিক্ষকদের অভিযোগ, এক মাস আগে পানির মোটরও চুরি হয়ে গেছে। কদিন পর পর চোর এসে বৈদ্যুতিক তারগুলো নিয়ে যেত। বিদ্যুৎ অফিসে জানালে তারা ঠিক করে দিয়ে যেত। 
একটা সময় বিরক্ত হয়ে বিদ্যুৎ বিভাগ সংযোগ আর দেয়নি।

বিদ্যালয়ের বেহাল দশা আর নিজের হতাশার কথা বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন সহকারী শিক্ষক মোসা.

মানছুরা আক্তার চৌধুরী। তাঁর ভাষ্য, তিনি আগে যে স্কুলে ছিলেন সেখানে শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৫০০। হঠাৎ করে ২০২০ সালে এই স্কুলে পদায়ন করা হয় তাঁকে। মানসিকভাবে বড় ধাক্কা খান তিনি। এসে দেখেন স্কুলে তেমন কোনো শিক্ষার্থী নেই। এর পর এলো করোনা মহামারি। তখন ছিল মাত্র একজন শিক্ষার্থী। এর পর এলাকায় ঘুরে ১৭ জন শিক্ষার্থী ভর্তি করান তারা। কিন্তু কোনো শিক্ষার্থী থাকতে চায় না। তিনি বলেন, ‘স্কুলটিতে আসার কোনো রাস্তা নেই। পাশের একটি মাদ্রাসার ভেতর দিয়ে আসতে হয়। কয়েকদিন কোনো শিক্ষার্থী মাদ্রাসার ওপর দিয়ে এলে তারপর থেকে আর আসে না। পরে দেখি তারা মাদ্রাসায় ভর্তি হয়ে গেছে। অনেকে আবার কিন্ডার গার্টেনে ভর্তি হচ্ছে। এখানে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছি আমরা।’

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ফাতেহা বেগম জানান, দুই বছর ধরে এই বিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ নেই। স্থানীয় কিশোররা আড্ডা দিতে এসে নলকূপগুলোর ভেতরে পাথর ঢুকিয়ে দেয়, তাই কোনো নলকূপও নেই। পানির ব্যবস্থা না থাকায় অচল স্কুলটির দুটি শৌচাগার। যে কারণে তিন শিক্ষককে স্থানীয়দের বাড়িতে যেতে হয়। তাঁর অভিযোগ, বিদ্যালয়ের ভেতরের জিনিপত্রও কয়েকদিন পর পর চোরে নিয়ে যায়। তালার ভেতর শলা ও ময়লা ঢুকিয়ে নষ্ট করে রেখে যায়। গ্রিল কেটে নিয়ে যায়। বৈদ্যুতিক তাঁর ও পতাকার স্ট্যান্ডের দড়ি পর্যন্ত নিয়ে গেছে অনেকবার। তিনি বলেন, ‘আমি ২০১৯ সাল থেকে এখানে আছি। আমি আসার পর দু’বার জিডি করেছি। এখানকার মানুষ চান না স্কুলটি থাকুক। কারণ আমরা আশপাশের চার গ্রাম ঘুরেও কোনো শিক্ষার্থীকে আনতে পারছি না।’

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শামীম ইকবাল জানান, সম্প্রতি এই উপজেলায় যোগদান করেই বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেছেন তিনি। স্থানীয়দের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে বিদ্যালয়টি জাগানোর চেষ্টা করা হবে।

সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুবাইয়া খানম বলেন, ‘স্কুলটির বেহাল দশার কথা আমি জানি। সেখানে স্থানীয়দের সঙ্গে উঠান বৈঠক করেছি। কিন্তু একজন অভিভাবকও কোনো রেসপন্স করেননি। মাদ্রাসার একটি প্রভাব সেখানে আছে তা সবাই বলেছেন, শিক্ষকরাও বলেছেন। তাই স্কুলের বিকল্প সড়ক করার জন্য বরাদ্দের 
ব্যবস্থা করেছি।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র একট উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

আসুন ঐক্যবদ্ধ হয়ে অদৃশ্য শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করি : মামুন মাহমুদ

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেছেন, এখানে দেখতে পাচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি সিদ্ধিরগঞ্জ থানা এবং ফতুল্লা থানা ঐক্যবদ্ধ হয়েছে।

দীর্ঘদিন পরে হলেও ফতুল্লা থানা বিএনপির সবাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পাশাপাশি বসে এ অনুষ্ঠানের অতিথি হয়েছে। সে জন্য জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে শহিদুল ইসলাম টিটু এবং এড. আব্দুল বারী ভূইয়াকে বিশেষ ভাবে ধন্যবাদ জানাই।

আজকে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপি সিনি: সহসভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন সভাপতিত্ব করছেন এটাই হচ্ছে ঐক্য প্রক্রিয়ার একটি অংশ। বিএনপি একটি বড় দল। এখানে নেতৃত্যের প্রতিযোগিতা থাকতে পারে। কিন্তু রাজনীতির নামে বিভাজন সৃষ্টি করা রাজনীতি হতে পারে না।

এমন কোনো কাজ করবো না যেনো দলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়। ফতুল্লার একটি অনুষ্ঠানে আমি বলেছিলাম আসেন সকলেই আমরা ঐক্যবদ্ধ হই। ঐক্যবদ্ধভাবে হয়ে আমাদের যে অদৃশ্য শত্রু তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করি। 

রবিবার (২৯ জুন) বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপি আয়োজিত সদস্য নবায়ন ও সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রম অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুনের সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব, শরীফ আহমেদ টুটুল,  ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি ও জেলা বিএনপি সদস্য মো: শহিদুল ইসলাম টিটু, সাধারণ সম্পাদক এড. আব্দুল বারী ভূঁইয়া, জেলা বিএনপির সদস্য মোহাম্মদ রিয়াজুল ইসলাম, অকিল উদ্দিন ভূঁইয়া, মহানগর ছাত্র দলের সাবেক সভাপতি এড. রাকিবুর রহমান সাগর।  

আমি যে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের একজন কর্মী সেই হিসেবে আমার একটি স্বীকৃতি এই দলের একটি সদস্য ফরম পূরণ করে এ দলের সদস্য হতে পারবো এটি অত্যন্ত সৌভাগ্যের, আনন্দের, মর্যাদার, গর্ভের বিষয়। আমি যে সারা জীবন রাজনীতি করবো এই রশিদটি আমার ঘরে সারা জীবন শোভা পাবে।

আমার পরিবারের সদস্যরা এটি দেখবে এবং স্বীকার করবে যে আমার বাবা বা ভাই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের একজন কর্মী ছিলো। আজকে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া তিনি বার বার জনগনের ভোটে প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন তিনিও কিন্তু দলের একজন সদস্য।

আমাদের প্রিয় অভিভাবক যার নির্দেশে আমরা গত ১৫ বছর রাজপথে লড়াই সংগ্রাম করেছি আমাদের নেতা আগামী দিনের বাংলাদেশ যার দিকে তাকিয়ে রয়েছে আমরা প্রত্যেক মিছিলে মিটিংয়ে বলি তারেক রহমান বীরের বেশে আসবে ফিরে বাংলাদেশে। সেই কথার বাস্তবায়ন হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছি।

তিনিও কিন্তু এই দলের একজন সদস্য পদ গ্রহন করে এই দলের একজন কর্মী। সুতরাং কর্মী হিসেবে এই সদস্য পদ যিনিই পূরন করবেন তিনিই সম্মানিত। তিনি গর্ব করে বলবেন আমি জাতীয়তাবাদী দলের একজন কর্মী। 

তিনি আরো বলেন, অনেকে স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেছে আবার অনেকে অস্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেছে। বিগত ১৫ বছর ফ্যাসিবাদী সরকার তাদের ক্ষমতার চেয়ারটাকে পাকাপোক্ত রাখার জন্য এমন কোনো অত্যাচার নিপিড়ন নাই যা আমাদের নেতাকর্মীদের উপর করে নাই।

আর সেই নিপিড়ন নির্যাতন করতে গিয়ে আমরা আমাদের অনেক সহকর্মী ভাইদেরকে হারিয়েছি। অনেকে গুম হয়েছে, তাদেরকে এখনো আমরা খুঁেজ পাই নাই। অনেকে এমন ভাবে নিহত হয়েছেন, যাকে ধরে নিয়ে এমন ভাবে নির্যাতন করেছেন তিন মাস জেল খেটে এসে বিনাচিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে।

এটাকে আমরা স্বাভাবিক মৃত্যু বলবো নাকি অস্বাভাবিক মৃুত্য বলবো বুঝে উঠতে পারিনা অনেক সময়। কিন্তু দু:খ লাগে এভাবে যদি হিসেব করি আমাদের কাছ থেকে অসংখ্য নেতাকর্মী এই ভাবে রোগে-শোকে বিনাচিকিৎসায় ভোগে মৃত্যুবরণ করেছে। সুতরাং তারাও তো আমাদের সদস্য ছিলো একসময়। সদস্য পদ তারাও পূরণ করেছিলো।

আজকে তাদের স্মৃতি পরিবারের লোকজন বয়ে বেড়ায় এবং সদস্য ফরম নিয়ে আমাকে দেখায় আমার বাবাও কিন্তু বিএনপির সদস্য ছিলো। তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের পরিবারের সদস্যদের বিএনপির সদস্য করতে হবে। কেউ যেন বাদ না পরে।

গত ১৫ বছর যারা ফ্যাসিবাদের দোসর ছিলো, ফ্যাসিবাদের সাথে যুক্ত ছিলো, যারা আমাদের উপর জুলুম অত্যাচার করেছে, মিথ্যা মামলা দিয়েছে আমাদের বাড়িঘর পুলিশ নিয়ে গিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে, আমাদেরকে ধরিয়ে দিয়েছে, আমাদের উপর হামলা করেছে, আমাদের জায়গা সম্পত্তি জোর করে দখল করেছে, আমাদের ব্যবসা বানিজ্য দখল করেছে শুধুমাত্র তারা এ সদস্য ফরম পূরণ করতে পারবে না।

যদি আপনাদের কারো সহযোগিতায় ফ্যাসিবাদের কোনো দোসর সদস্য হয় তাহলে আমরা পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তাদেরকে কিন্তু সদস্যপদ বাতিল করে দেওয়ার পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান থাকবে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • একজনের প্রেমে পড়েছিলাম, এখন সে আমার বউ
  • সাজা মওকুফের পর রাজশাহী কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন ৭ জন
  • ৪ কোটি শিশুকে শরণার্থী বানিয়েছে যুদ্ধ আর সংঘাত
  • গানে নিয়মিত সাবিনা ইয়াসমীন, কণ্ঠে তুললেন ‘প্রাণের বাংলাদেশ’
  • চট্টগ্রামে আরও ১০ জন করোনায় আক্রান্ত
  • ভুয়া খবরে বিরক্ত মাহি, জানালেন সত্যিটা
  • রৌমারীতে ২২,১০০ পিস ইয়াবাসহ একজন মাদক ব্যবসায়ী আটক
  • ট্রেন্ডিংয়ে ১ নম্বরে ‘মাটির মেয়ে’ দেখে দর্শকেরা কে কী বলছেন
  • যুক্তরাষ্ট্রে এলোপাতাড়ি গুলি, নিহত ২
  • আসুন ঐক্যবদ্ধ হয়ে অদৃশ্য শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করি : মামুন মাহমুদ