নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল করে সব অংশীজনের সমন্বয়ে একটি ইনক্লুসিভ নতুন কমিশন গঠনসহ ১০টি প্রস্তাব দিয়েছে নারী অধিকার আন্দোলন নামের একটি প্ল্যাটফর্ম।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন থেকে সরকারের কাছে এসব প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালা বাতিলসহ কমিশনের সংস্কারের দাবিতে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে নারী অধিকার আন্দোলন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের কিছু ইতিবাচক প্রস্তাব রয়েছে, সেগুলো নিয়ে আলোচনা করা যায়। কিন্তু ইসলামের আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক প্রস্তাবনাগুলো বাদ দিতে হবে।

বক্তারা আরও বলেন, অভিন্ন পারিবারিক আইন নিয়ে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। কারণ, এক দেশে দুই ধরনের আইন থাকলে পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে ভিন্ন ভিন্ন আইনে সমাধান চাওয়া হবে। সবচেয়ে বড় কথা, আল্লাহর আইনের বিপক্ষে যাওয়া যাবে না। এ জন্য এই কমিশন বাতিল করতে হবে।

মানববন্ধনে নারী অধিকার আন্দোলনের সভানেত্রী মমতাজ মান্নান বলেন, ‘একপেশে নারী সংস্কার কমিশনের সংস্কার করতে হবে। কমিশন মুসলিম পারিবারিক ও উত্তরাধিকার আইন সংস্কারসহ আরও কিছু সুপারিশ করেছে, যা দেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। প্রশ্ন উঠেছে, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম নারীদের প্রতিনিধিত্ব এই কমিশনে নেই কেন?’

মমতাজ মান্নান ১০ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন। এগুলো হলো—

১.

একপেশে নারী সংস্কার কমিশন বাতিল করতে হবে এবং সব অংশীজনের সমন্বয়ে একটি ইনক্লুসিভ নতুন কমিশন গঠন করতে হবে।

. প্রতিবেদনে ধর্মবিদ্বেষী মনোভাব ও পক্ষপাতমূলক চিন্তাভাবনা পরিহার করতে হবে।

. যৌন পেশাকে (নারী অধিকার আন্দোলনের ভাষায় পতিতাবৃত্তি) আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার সুপারিশ বাতিল করতে হবে।

৪. সব ক্ষেত্রে নারী–পুরুষের সমতার সুপারিশ বাতিল করে ইসলামের নীতি বহাল রাখতে হবে।

. জাতিসংঘের সিডও সনদের দুটি ধারার [ধারা ২ ও ধারা ১৬.১ (গ)] সংরক্ষণ প্রত্যাহার–সংক্রান্ত প্রস্তাবটি বাতিল করতে হবে।

৬. ইসলামের উত্তরাধিকার আইনটি বলবৎ থাকতে হবে।

. অভিন্ন পারিবারিক আইনের অধ্যাদেশ জারি করার প্রস্তাবটি পুনর্বিবেচনা করে কোরআনবিরোধী সব ধারা বাতিল করতে হবে।

. স্ত্রীর অসম্মতিতে শারীরিক সম্পর্ককে ‘ম্যারিটাল রেপ’ আখ্যা দিয়ে ধর্ষণের আওতায় আনার সুপারিশ বাতিল করতে হবে।

৯. বহুবিবাহ বিলোপ করার প্রস্তাব বাতিল করতে হবে।

১০. বিবাহবিচ্ছেদের সময় স্ত্রীর মোহরানা আদায়ের সুপারিশ বাতিল করতে হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র স প র শ ব ত ল কর ব ত ল করত প রস ত ব র আইন

এছাড়াও পড়ুন:

অন্তঃসত্ত্বা নারীকে মারধরের অভিযোগ, নওগাঁয় ইউএনওর অপসারণ চেয়ে মানববন্ধন

নওগাঁর ধামুইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহরিয়ার রহমান ও ধামুইরহাট পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুস সালামের বিরুদ্ধে অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ দুজনকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আজ বুধবার দুপুরে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের শাস্তি ও ইউএনওর অপসারণের দাবিতে উপজেলা পরিষদ চত্বরে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী।

মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, উপজেলার মঙ্গলকোঠা আবাসিক এলাকায় ধামুইরহাট পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলা নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার সকালে পৌরসভার লোকজনের সঙ্গে এলাকাবাসীর বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। ময়লা ফেলতে বাধা দেওয়ার খবর পেয়ে ইউএনও শাহরিয়ার রহমান ও পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুস সালাম ঘটনাস্থলে যান। এ সময় ওই দুই কর্মকর্তা প্রকাশ্যে মঙ্গলকোঠা এলাকার এক অন্তঃসত্ত্বা নারীসহ দুই নারীকে মারধর করেন।

গৃহবধূ সামিরন খাতুন বলেন, ‘পৌরসভার লোকজন গাড়িতে করে আমাদের এলাকায় ময়লা ফেলতে এলে এলাকার সবাই মিলে বাধা দিই। বসতবাড়ির আশপাশে ময়লা ফেললে সমস্যা হবে বলে ইউএনওকে ময়লা না ফেলতে এলাকাবাসী অনুরোধ করেন। কিন্তু ইউএনও আমাদের কথা না শুনে আমাকেসহ মিতুকে (অন্তঃসত্ত্বা নারী) নিজেই লাঠি দিয়ে মারধর করেন। আমরা ইউএনওর অপসারণসহ তাঁর কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’

মানববন্ধনে স্থানীয় আবদুল কুদ্দুস বলেন, ‘ইউএনও আমার গর্ভবতী স্ত্রীর গায়ে তুলেছে সবার সামনে। একজন ইউএনওর আচরণ এমন হলে আমরা বিচার কার কাছে পাব?’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও শাহরিয়ার রহমান বলেন, পৌরসভার পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা একটি খাস জমিতে ময়লা ফেলতে গেলে স্থানীয় কয়েকজন বাধা দেন এবং পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের গালমন্দ করে তাড়িয়ে দেন। বিষয়টি সমাধানের জন্য তিনি ওই এলাকায় গেলে এলাকার কিছু লোক তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। সেখানে কয়েকজন অবৈধ দখলদার নারী-পুরুষ বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করেন। একপর্যায়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও আনসারদের গায়ে হাত তোলেন। নারীদের মারধরের অভিযোগের বিষয়ে তিনি দাবি করেন, ‘সেখানে কারও গায়ে হাত তোলা হয়নি। কিছু স্বার্থান্বেষী মহল আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে।’

জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল প্রথম আলোকে বলেন, আজ মানববন্ধন করে কিছু লোক ইউএনওর বিরুদ্ধে নারীকে মারধরের অভিযোগ করেন। উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও জেলা প্রশাসনের মধ্যস্থতায় বিষয়টি মীমাংসা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সিদ্ধিরগঞ্জে ব্যবসায়ীর উপর হামলা, প্রতিবাদে মানববন্ধন
  • নোয়াখালীকে স্বতন্ত্র বিভাগ ঘোষণার দাবিতে ব্লকেড, মানববন্ধন
  • কুমিল্লায় ড্যাবের এক নেতার বিরুদ্ধে আরেক নেতার অনুসারীদের মানববন্ধন
  • গণঅভ্যুত্থানে হত্যায় বিএনপি নেতাকর্মীদের আসামি করার প্রতিবাদে বিক
  • অন্তঃসত্ত্বা নারীকে মারধরের অভিযোগ, নওগাঁয় ইউএনওর অপসারণ চেয়ে মানববন্ধন
  • খুবির অধীনে মৎস্য বীজ খামার অন্তর্ভুক্তির দাবি
  • খাগড়াছড়িতে মারমা কিশোরীকে ধর্ষণ ও প্রতিবাদকারীদের ওপর হামলার বিচার দাবিতে মানববন্ধন