ইনক্লুসিভ নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠনসহ ১০ দফা প্রস্তাব
Published: 15th, May 2025 GMT
নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল করে সব অংশীজনের সমন্বয়ে একটি ইনক্লুসিভ নতুন কমিশন গঠনসহ ১০টি প্রস্তাব দিয়েছে নারী অধিকার আন্দোলন নামের একটি প্ল্যাটফর্ম।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধন থেকে সরকারের কাছে এসব প্রস্তাব তুলে ধরা হয়। নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশমালা বাতিলসহ কমিশনের সংস্কারের দাবিতে এই মানববন্ধনের আয়োজন করে নারী অধিকার আন্দোলন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশনের কিছু ইতিবাচক প্রস্তাব রয়েছে, সেগুলো নিয়ে আলোচনা করা যায়। কিন্তু ইসলামের আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক প্রস্তাবনাগুলো বাদ দিতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, অভিন্ন পারিবারিক আইন নিয়ে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। কারণ, এক দেশে দুই ধরনের আইন থাকলে পরিবারের সদস্যদের পক্ষ থেকে ভিন্ন ভিন্ন আইনে সমাধান চাওয়া হবে। সবচেয়ে বড় কথা, আল্লাহর আইনের বিপক্ষে যাওয়া যাবে না। এ জন্য এই কমিশন বাতিল করতে হবে।
মানববন্ধনে নারী অধিকার আন্দোলনের সভানেত্রী মমতাজ মান্নান বলেন, ‘একপেশে নারী সংস্কার কমিশনের সংস্কার করতে হবে। কমিশন মুসলিম পারিবারিক ও উত্তরাধিকার আইন সংস্কারসহ আরও কিছু সুপারিশ করেছে, যা দেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। প্রশ্ন উঠেছে, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম নারীদের প্রতিনিধিত্ব এই কমিশনে নেই কেন?’
মমতাজ মান্নান ১০ দফা প্রস্তাব তুলে ধরেন। এগুলো হলো—
১.
একপেশে নারী সংস্কার কমিশন বাতিল করতে হবে এবং সব অংশীজনের সমন্বয়ে একটি ইনক্লুসিভ নতুন কমিশন গঠন করতে হবে।
২. প্রতিবেদনে ধর্মবিদ্বেষী মনোভাব ও পক্ষপাতমূলক চিন্তাভাবনা পরিহার করতে হবে।
৩. যৌন পেশাকে (নারী অধিকার আন্দোলনের ভাষায় পতিতাবৃত্তি) আইনি স্বীকৃতি দেওয়ার সুপারিশ বাতিল করতে হবে।
৪. সব ক্ষেত্রে নারী–পুরুষের সমতার সুপারিশ বাতিল করে ইসলামের নীতি বহাল রাখতে হবে।
৫. জাতিসংঘের সিডও সনদের দুটি ধারার [ধারা ২ ও ধারা ১৬.১ (গ)] সংরক্ষণ প্রত্যাহার–সংক্রান্ত প্রস্তাবটি বাতিল করতে হবে।
৬. ইসলামের উত্তরাধিকার আইনটি বলবৎ থাকতে হবে।
৭. অভিন্ন পারিবারিক আইনের অধ্যাদেশ জারি করার প্রস্তাবটি পুনর্বিবেচনা করে কোরআনবিরোধী সব ধারা বাতিল করতে হবে।
৮. স্ত্রীর অসম্মতিতে শারীরিক সম্পর্ককে ‘ম্যারিটাল রেপ’ আখ্যা দিয়ে ধর্ষণের আওতায় আনার সুপারিশ বাতিল করতে হবে।
৯. বহুবিবাহ বিলোপ করার প্রস্তাব বাতিল করতে হবে।
১০. বিবাহবিচ্ছেদের সময় স্ত্রীর মোহরানা আদায়ের সুপারিশ বাতিল করতে হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র স প র শ ব ত ল কর ব ত ল করত প রস ত ব র আইন
এছাড়াও পড়ুন:
দোষ ঢাকতে ছাত্রলীগ কর্মী দিয়ে মানববন্ধনের ঘোষণা জবি আইইআর পরিচালকের
র্যাগিংয়ের ঘটনা ধামাচাপা দিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) পরিচালক অধ্যাপক ড. মনিরা জাহান নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাদের সহযোগিতায় মানববন্ধন আয়োজন করেছেন।
সোমবার (১১ আগস্ট) দিবাগত গভীর রাতে ইনস্টিটিউটের অফিসিয়াল ফেসবুক গ্রুপে একটি মানববন্ধনের ঘোষণা দেওয়া হয়। সেখানে র্যাগিং সংক্রান্ত সংবাদকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা দাবি করা হয়।
মানববন্ধনটি মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বরে (ভাস্কর্য চত্বর) অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে ঘোষণার কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই পোস্ট ফেসবুক থেকে সরিয়ে ফেলা হয়।
আরো পড়ুন:
সাংবাদিক তুহিন হত্যার বিচারের দাবিতে মেট্রোপলিটন প্রেস ক্লাবের মানববন্ধন
কুড়িগ্রামে গৃহবধূকে নির্যাতনের প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ
জানা যায়, মানববন্ধনের ডাক যিনি দিয়েছেন, তিনি আইইআরের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং তার ইনস্টিটিউটের পরিচালক ও সহকারী পরিচালকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। তিনি ইনস্টিটিউটের নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন এবং র্যাগিংয়ের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে।
গত ৩০ জুলাই আইইআরে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের ওপর ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা অমানবিক নির্যাতন চালান। এতে এক শিক্ষার্থী প্যানিক অ্যাটাকে জ্ঞান হারান এবং প্রায় সব নবীন শিক্ষার্থী নির্যাতনে শিকার হন। অভিযুক্তদের সংখ্যা প্রায় ১৭ জন।
তবে, অভিযোগ রয়েছে—ঘটনাটি যথাযথ তদন্ত ও বিচার না করে পরিচালক মনিরা জাহান ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। সাংবাদিকরা বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি ব্যক্তিগত তথ্য চেয়ে বিব্রত করেছেন এবং উল্টো সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হেনস্তার অভিযোগ তুলেছেন। সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর শিক্ষার্থীদের উসকে দিয়ে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও বিদ্রুপ করতে উৎসাহিত করেছেন।
আইইআরয়ের র্যাগিং কাণ্ডে সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়পরায়ণ বিচার দাবিতে সংশ্লিষ্ট মহলের মধ্যে উদ্বেগ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য দ্রুত এবং স্বচ্ছ তদন্ত জরুরি বলে বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেছেন।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী