সাকিব আল হাসান খুব যে পরিকল্পনা করে আজমানে গিয়েছিলেন, তা নয়। যুক্তরাষ্ট্রে ক্রিকেট অনুশীলনের সুযোগ–সুবিধা কম। ভালো বোলার–ব্যাটসম্যান নেই, যাঁরা অনুশীলনে সহায়তা করতে পারবেন। ওদিকে খেলা থেকে দূরে থাকতে থাকতে ব্যাটিং–বোলিংয়ে জং ধরার অবস্থা।

দেশে এসেও কিছু করার উপায় নেই। অনুশীলনের জন্য বিকল্প জায়গা খুঁজছিলেন সাকিব। এমন জায়গা দরকার, যেখানে ক্রিকেটীয় সুযোগ–সুবিধা আছে, আবার কন্ডিশনটাও নতুন করে মাঠের পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সাহায্য করবে। এসব ভাবনা থেকেই এ মাসের শুরুতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আজমানে গিয়ে ৮–১০ দিন অনুশীলন করলেন। সেখানে সুযোগ পেয়েছেন সেন্টার উইকেটে ব্যাটিং করারও।

কিন্তু সাকিব নিজেও কি তখন জানতেন, এই অনুশীলনটাই তাঁর কাজে লেগে যাবে ছয় মাস পর প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফেরার উপলক্ষে! কিংবা এও কি জানতেন, শিগগিরই তিনি খেলায় ফিরবেন পিএসএলের দল লাহোর কালান্দার্সের হয়ে?

প্রতিযোগিতামূলক খেলায় ফেরার সুযোগ পেয়ে সাকিবও দারুণ আনন্দিত। গতকাল যুক্তরাষ্ট্র ছেড়েছেন পাকিস্তানের উদ্দেশে। আগামীকাল সকালে ইসলামাবাদ পৌঁছে অনুশীলন করার কথা বিকেলেই। রাওয়ালপিন্ডিতে পরশু লাহোর কালান্দার্সের হয়ে সাকিব খেলতে নামবেন পেশোয়ার জালমির বিপক্ষে।

ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে সাকিবের এজেন্ট ভারতীয় প্রতিষ্ঠান সেকেন্ড ইনিংস স্পোর্টস অ্যান্ড এন্টারটেইনমেন্ট (এসআইএসই)। ২০১৪ সাল থেকে সাকিবের ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট দেখভাল করে আসা প্রতিষ্ঠানটির অন্যতম অংশীদার রুদ্রদীপ ব্যানার্জী। সাকিব ছাড়া আরও বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি ক্রিকেটারের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলানোর দায়িত্ব রুদ্রদীপের। তাঁদের মধ্যে আছেন লিটন দাস, নাহিদ রানা, শরীফুল ইসলাম, নাজমুল হোসেন, আফিফ হোসেন, সাব্বির রহমান ও নাসুম আহমেদ। এর মধ্যে শুধু নাজমুল আর নাসুমকেই এখনো কোনো বিদেশি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলাতে পারেনি তারা। এ ছাড়া ক্রিস গেইলসহ অনেক বড় বড় ক্রিকেটার–কোচ বিপিএলে এসেছেন তাঁর মাধ্যমে। রুদ্রদীপ একসময় খেলোয়াড় সরবরাহ করেছেন ঢাকা লিগেও।

প্রথম আলোকে কাল রুদ্রদীপ জানিয়েছেন, সামনে নির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্য না নিয়েই সাকিব আজমানে অনুশীলন করেছিলেন। কাল হোয়াটসঅ্যাপে রুদ্রদীপ এই প্রতিবেদককে খোলামেলা বলেছেন, পিএসএল দিয়ে সাকিবের আবারও প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে ফেরার পেছনের গল্প।

এই ছবি পোস্ট করে সাকিবকে দলে ভেড়ানোর কথা জানিয়েছে লাহোর কালান্দার্স.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ র য ঞ চ ইজ

এছাড়াও পড়ুন:

পিসিবির দেওয়া আইনি নোটিশ ভিডিওতে ছিঁড়ে ফেললেন মুলতানের মালিক

পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) দল মুলতান সুলতানসের মালিক আলী খান তারিন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) পাঠানো আইনি নোটিশের জবাবে কড়া প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। ভিডিও বার্তায় তিনি প্রকাশ্যে সেই নোটিশ ছিঁড়ে ফেলেছেন। বোর্ডের সঙ্গে করা ১০ বছরের চুক্তির কয়েকটি ধারা লঙ্ঘনের অভিযোগে মূলত এ নোটিশ পাঠানো হয়েছিল তাঁকে।

আগামী ডিসেম্বরেই শেষ হচ্ছে পিএসএলের প্রথম দশক। একই সঙ্গে শেষ হবে মুলতান সুলতানসের বর্তমান মালিকানার মেয়াদও। নতুন করে মালিকানা ধরে রাখতে হলে আবারও দরপত্রে অংশ নিতে হবে আলী তারিনকে।

মুলতান সুলতানসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত মাসে পিসিবি তাদের মালিককে আইনি নোটিশ পাঠিয়ে পিএসএল ব্যবস্থাপনা নিয়ে করা সব সমালোচনামূলক মন্তব্য প্রত্যাহার করে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে বলেছে।

আরও পড়ুনআফগানিস্তানের ঘটনায় আইসিসির ওপর ক্ষুব্ধ পাকিস্তান১৯ অক্টোবর ২০২৫

নোটিশে হুমকি দেওয়া হয়, তা না মানলে ফ্র্যাঞ্চাইজির চুক্তি বাতিল করা হবে। এমনকি আলী তারিনকে আজীবনের জন্য কোনো ক্রিকেট দলের মালিকানা পাওয়া থেকেও নিষিদ্ধ করা হবে। যদি এই কালোতালিকাভুক্তি কার্যকর হয়, তাহলে বর্তমান চুক্তির মেয়াদ শেষে নতুন দরপত্রপ্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার সুযোগও হারাবেন তিনি।

কিন্তু কোনো হুমকিই আলী তারিনকে থামাতে পারছে না। বরং তিনি প্রকাশ্যে পিসিবির সিদ্ধান্তগুলোর বিরোধিতা চালিয়ে যাচ্ছেন। গত এক বছরে তিনি পিএসএল ব্যবস্থাপনার অন্যতম কড়া সমালোচক হয়ে উঠেছেন। বিশেষ করে যোগাযোগের ঘাটতি ও স্বচ্ছতার অভাব নিয়ে তিনি ধারাবাহিকভাবে প্রশ্ন তুলেছেন।

মুলতান সুলতানসের পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গঠনমূলক সমালোচনাকে অপরাধ হিসেবে দেখা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। এটি বর্তমান ব্যবস্থাপনার সংকীর্ণ মানসিকতার পরিচায়ক। স্পষ্ট বোঝা যায়, পিএসএল এখন আর প্রশ্ন বা জবাবদিহির জন্য উন্মুক্ত নয়। এমনকি তাঁদের কাছ থেকেও নয়, যাঁরা লিগটিকে শক্তিশালী করতে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছেন। সৎ প্রতিক্রিয়া বন্ধ করে দিয়ে কোনো বড় লিগ গড়ে তোলা যায় না। আলী তারিন পাকিস্তানি ক্রিকেটের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ, আর তাঁর একমাত্র লক্ষ্য পিএসএলকে এমন জায়গায় নিয়ে যাওয়া, যা খেলোয়াড় ও সমর্থকেরা প্রাপ্য।’

আরও পড়ুনভেঙে গেল রিজওয়ানের বিশ্ব রেকর্ড, টি–টোয়েন্টিতে এখন এক বছরে সর্বোচ্চ রান কার৭ ঘণ্টা আগে

পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়, যখন আলী তারিন গতকাল বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি ভিডিও বার্তা প্রকাশ করেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমাকে এখন উল্টো আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। যদি তোমরা আরও যোগ্য হতে, তাহলে জানতে, এ ধরনের বিষয় এভাবে সমাধান করা হয় না।’

আলী তারিন আরও জানান, তাঁর আইনজীবী দল ক্ষমা চাওয়ার কোনো আইনি ভিত্তি খুঁজে পায়নি। তবু পিএসএলের স্বার্থে বিষয়টি বিবেচনা করতে পারেন। তবে ভিডিওর একেবারে শেষে তিনি নোটিশটি ছিঁড়ে ফেলেন। সঙ্গে রসিকতা করে বলেন, ‘আশা করি, আমার এই ক্ষমা প্রার্থনার ভিডিও আপনাদের ভালো লেগেছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পিসিবির দেওয়া আইনি নোটিশ ভিডিওতে ছিঁড়ে ফেললেন মুলতানের মালিক