দেশের মানুষ জাতীয় সংগীতকে প্রাণের চেয়ে বেশি ভালোবাসে। কিন্তু জাতীয় সংগীত গাইতে বাধা দেওয়া হলেও অন্তর্বর্তী সরকার কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। দেশে পূর্ণাঙ্গ সরকার না থাকায় একটি গোষ্ঠী জাতীয় সংগীতসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ভূলুণ্ঠিত করার চেষ্টা করছে।

জাতীয় সংগীতকে কটাক্ষ এবং বগুড়ায় উদীচীর কর্মসূচিতে হামলার প্রতিবাদে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন কর্মসূচিতে বক্তারা এসব কথা বলেন। আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের বিপরীত পাশে সত্যেন সেন চত্বরে এ কর্মসূচির আয়োজন করে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।

সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর হয় সংক্ষিপ্ত সমাবেশ। আবার সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে এ আয়োজন শেষ হয়। সমাবেশ থেকে জাতীয় সংগীত পরিবেশনে বাধা সৃষ্টিকারীদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।

এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উদীচীর সহসভাপতি মাহমুদ সেলিম। ৩০ লাখ শহীদের রক্ত এবং দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা ও জাতীয় সংগীত পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই জাতীয় সংগীত যখন গাইতে দেওয়া হয় না, তখন প্রশাসন কিছু বলে না, সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয় না। তখন মনে সন্দেহ জাগে এই সরকার কি স্বাধীনতার পক্ষের?

সূচনা বক্তব্যে উদীচীর সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, পূর্ণাঙ্গ সরকার না থাকায় একটি গোষ্ঠী নানাভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ভূলুণ্ঠিত করার চেষ্টা করছে। এ দেশের নতুন প্রজন্মের মধ্যেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রবাহিত। সুতরাং কোনোভাবেই মুক্তিযুদ্ধের অর্জনগুলোকে ধূলিসাৎ করা সম্ভব নয়।

যারা এ ধরনের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে লিপ্ত, নানাভাবে বিভিন্ন জায়গায় হেনস্তা করছে এবং উদীচীসহ প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর অনুষ্ঠানে বাধা তৈরি করছে, অবিলম্বে এই গোষ্ঠী ও তাদের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান উদীচীর সাধারণ সম্পাদক।

জাতীয় সংগীতকে প্রাণের চেয়ে বেশি ভালোবাসেন মন্তব্য করে কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের সাধারণ সম্পাদক প্রণয় সাহা বলেন, জাতীয় সংগীত সম্পর্কে নানা রকম কটাক্ষ করা হচ্ছে। গত ৫ আগস্টের পর একদল মৌলবাদী শক্তি মনে করছে, তারা যা ইচ্ছা তা–ই বলবে। কিন্তু সেটা এ দেশের মানুষ হতে দেবে না।

আরও পড়ুনবগুড়ায় উদীচীর জাতীয় সংগীত পরিবেশন মঞ্চে হামলা১৪ মে ২০২৫

বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জাতীয় সংগীত পরিবেশনে স্বাধীনতাবিরোধী, সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী শক্তি বাধার সৃষ্টি করছে বলে মন্তব্য করেন চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন। এই চিহ্নিত অপশক্তিকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।

উদীচীর কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য কঙ্কণ নাগের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন যুব ইউনিয়নের সাবেক নেতা গোলাম রাব্বি খান। সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের শিশু-কিশোরেরাও অংশ নেয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র ক

এছাড়াও পড়ুন:

ফিলিস্তিনি বন্দীকে নির্যাতনের ভিডিও ফাঁস, ইসরায়েলে সেনাবাহিনীর সাবেক প্রসিকিউটর গ্রেপ্তার

ইসরায়েলি পুলিশ দেশটির সেনাবাহিনীর সাবেক একজন প্রসিকিউটরকে গ্রেপ্তার করেছে। একজন ফিলিস্তিনি বন্দীর ওপর ইসরায়েলি সেনাদের নির্যাতনের ভিডিও ফাঁস হওয়ার পর ওই নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

মেজর জেনারেল পদমর্যাদার ওই সাবেক প্রসিকিউটরের নাম ইয়াফাত তোমের-ইয়েরুশালমি। গতকাল সোমবার রাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রী।

জানা যায়, অনলাইনে ওই ভিডিওটি ফাঁস হওয়ার পর ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছিল। তখন তিনি তাঁর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর নিখোঁজ ছিলেন।

ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, সৈন্যরা এক বন্দীকে আলাদা স্থানে নিয়ে ঘিরে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁদের সঙ্গে একটি কুকুর রয়েছে। তাঁরা দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণের সরঞ্জাম ব্যবহার করে নিজেদের কার্যকলাপ এমনভাবে আড়াল করে রেখেছেন, যাতে কেউ দেখতে না পারে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ভিডিও ফাঁসের ঘটনাকে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পর থেকে ‘জনসংযোগের ওপর সবচেয়ে তীব্র আক্রমণ’ বলে মন্তব্য করেছেন।

আরও পড়ুনফিলিস্তিনি বন্দীর ওপর নির্যাতনের ভিডিও ফাঁস ঘিরে ইসরায়েলের শীর্ষ আইনি কর্মকর্তার পদত্যাগ০১ নভেম্বর ২০২৫

অধিকৃত পশ্চিম তীরের রামাল্লা থেকে আল-জাজিরার নউর ওদেহ বলেন, ওই নারী প্রসিকিউটরের আটকের ঘটনা ইসরায়েলে ‘রাজনৈতিক ও আইনি ঝড়’ তৈরি করেছে। তবে আটক হওয়া ব্যক্তির ওপর বাড়তি মনোযোগ মূল ঘটনা থেকে নজর সরিয়ে দিচ্ছে।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলের কারাগারগুলোয় অন্তত ৭৫ জন ফিলিস্তিনি বন্দীর মৃত্যু হয়েছে।

আরও পড়ুন‘স্বপ্ন ছিল বুকে জড়িয়ে ধরার, এখন আশা দাফনটা যদি অন্তত করতে পারি’২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ