সহিংসতা বেড়েছে। বদলেছে নির্যাতনের ধরনও। বিভিন্ন স্থানে একের পর এক দলবদ্ধ ধর্ষণ, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ও মুক্তচিন্তকদের ওপর ভয়াবহভাবে হামলা এবং নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। নতুন আপদের নাম এখন ‘মব সন্ত্রাস’। এতে আতঙ্কিত, ভীতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছে দেশবাসী।

শুক্রবার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘ভিত্তিহীন মামলায় গ্রেপ্তার লালমনিরহাটের পরেশ, বিশু ও রাজবাড়ীর আহম্মদ আলীর নিঃশর্ত মুক্তি এবং কুমিল্লা, ভোলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দলবদ্ধ নারী ধর্ষণকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে’ এ আয়োজন করে ‘সুন্দর পৃথিবীর স্বপ্ন’। 

সমাবেশে বক্তারা বলেন, সরকারের এখন প্রধান কাজ ‘মব’ বন্ধ করা। এটি বন্ধ করা না গেলে বাংলাদেশ ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হবে। ভিত্তিহীন মামলায় লালমনিরহাটের পরেশ চন্দ্র শীল ও তাঁর ছেলে বিশু চন্দ্র শীল এবং রাজবাড়ীর আহম্মদ আলীকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়েছেন তারা। একই সঙ্গে বেআইনিভাবে কারাবন্দি ব্যক্তিদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার দাবি জানানো হয়। এ ছাড়া সমাবেশ থেকে কুমিল্লা, ভোলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত নারী নির্যাতন ও ধর্ষণের বিচার নিশ্চিত এবং দেশব্যাপী সাম্প্রদায়িক হামলা ও মব সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়। সেই সঙ্গে মৌলবাদের আস্ফালনের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থানের জন্য দেশ ও জাতির প্রতি আহ্বান জানান বক্তারা।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে ‘সুন্দর পৃথিবীর স্বপ্ন’-এর প্রধান উপদেষ্টা মুজিব রহমান বলেন, সারাদেশে আজ মব আতঙ্ক। সরকারের এখন প্রধান কাজ মব বন্ধ করা, মানুষের আইনের অধিকার নিশ্চিত করা, বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করা।

সভাপতির বক্তব্যে আয়োজক সংগঠনের সভাপতি শাহদাৎ হোসেন বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের নারীদের মানবাধিকার, মর্যাদা, সম্মান ও নিরাপত্তার অবস্থা সবাইকে প্রত্যক্ষভাবে দেখিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মুরাদনগরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নারীকে ধর্ষণের ঘটনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে নারীর প্রতি সহিংসতা বেড়েছে। এর অন্যতম কারণ, একটি গোষ্ঠী নারীকে ঘরবন্দি করতে চাইছে। ওই নারীর প্রতি যা ঘটেছে তা শুধু আক্রোশ থেকেই করা হয়েছে। যেন এসব ভীতিকর অবস্থা দেখে অন্য নারীরাও ঘর থেকে না বের হন।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান সময়েও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই। মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে নাগরিক। বিশেষ করে নারীর প্রতি যে ধরনের সহিংসতা ঘটছে, তা স্পষ্ট যে, মৌলবাদী গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে। এ অবস্থা প্রতিরোধে সবাইকে একত্রভাবে আন্দোলন শুরু করতে হবে। সবাইকে নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। সেই সঙ্গে নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনার রাজনীতিকীকরণ বন্ধ করে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে প্রকৃত অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য এবং ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানান শাহদাৎ হোসেন। 

সরকারের উপদেষ্টারা আওয়ামী শাসনামলের চেয়ে বেশি শোষণ করছেন বলে অভিযোগ করেন সংগঠনের উপদেষ্টা মিজান হাকিম। তিনি বলেন– হত্যা, খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজিসহ এমন কী নেই, যা এ সময়ে হয়নি। এসব বন্ধ করার দাবি জানান তিনি।

শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক এলিজা রহমান বলেন, ‘এখন বাংলাদেশ যেভাবে চলছে, এভাবে আমরা একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রের দিকে যাচ্ছি, এভাবে চলতে থাকলে আমরা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত হব। এভাবে চলতে পারে না, এসব বন্ধ করতে হবে।’

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ‘সুন্দর পৃথিবীর স্বপ্ন’-এর বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ ইবনে ইকবাল, সমাজকল্যাণ সম্পাদক মুশফিকুল ইসলাম শিমুল, মুক্তচিন্তা পরিষদ-বাংলাদেশের উপদেষ্টা হারুন-উর রশিদ, বাংলাদেশ গার্মেন্টস ও শিল্পশ্রমিক ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক অলক চৌধুরীসহ আরও অনেকে। সঞ্চালনা করেন মুক্তচিন্তা পরিষদ-বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন সাদী।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: মব জ স ট স মব আতঙ ক উপদ ষ ট বক ত র অবস থ ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

আষাঢ়ের সন্ধ্যায় সাহিত্যবন্দনা

আষাঢ়ের স্নিগ্ধ সন্ধ্যা। তবে বৃষ্টির ছোঁয়া ছিল না। ছিল আকাশজুড়ে সজল মেঘের আনাগোনা। এমন এক মুহূর্তে গতকাল শুক্রবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ের গ্র্যান্ড বলরুমে বসেছিল সাহিত্যানুরাগীদের আসর; হয়ে গেল ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান। 

অনুষ্ঠানে সংগীতশিল্পী শামা রহমানের কণ্ঠে যখন গুঞ্জরিত হলো ‘আবার এসেছে আষাঢ় আকাশ ছেয়ে/ আসে বৃষ্টির সুবাস বাতাস বেয়ে...’, তখন অনুষ্ঠানস্থলে যেন ঢুকে পড়ল বর্ষার চিরপরিচিত আবহ। তার আগে পঞ্চকবির গানের সঙ্গে নৃত্য দিয়ে শুরু হয়েছিল অনুষ্ঠান। 
ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কারের ১৩তম আসরে এবার আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক হাসনাত আবদুল হাই। তাঁর সমৃদ্ধ সাহিত্যকর্ম ও দীর্ঘ সাহিত্যযাত্রাকে সম্মান জানিয়ে এ পুরস্কার তুলে দেওয়া হয় উৎসবমুখর এই সন্ধ্যায়। 

এ ছাড়া সাহিত্যের তিনটি শাখায় পুরস্কার পেয়েছেন তিনজন সুলেখক। আমিনুল ইসলাম ভুইয়া পেয়েছেন ‘প্লেটো প্রবেশিকা’ গ্রন্থের জন্য প্রবন্ধ, আত্মজীবনী, ভ্রমণ ও অনুবাদ শ্রেণিতে পুরস্কার। কবিতা ও কথাসাহিত্য বিভাগে ধ্রুব এষ পুরস্কার পেয়েছেন ‘আমাদের পরাবাস্তব টাউনের দিনরাত্রি’ গ্রন্থের জন্য। উম্মে ফারহানা তাঁর গ্রন্থ ‘টক টু মি’র জন্য জিতে নিয়েছেন তরুণ সাহিত্যিক পুরস্কার।
দেশের লেখক, কবি, অনুবাদক, শিক্ষাবিদ, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী এবং সাহিত্যপ্রেমী মননশীল মানুষের উপস্থিতিতে এই আয়োজন রূপ নেয় মিলনমেলায়। গতকাল দেওয়া হলো ২০২৩ সালে প্রকাশিত গ্রন্থের জন্য ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার। করোনার কারণে দু’বছর এই পুরস্কার দেওয়া সম্ভব হয়নি। ২০২৬ সালে একসঙ্গে দেওয়া হবে ২০২৪ ও ২০২৫ সালে প্রকাশিত গ্রন্থের ওপর পুরস্কার।     
আজীবন সম্মাননা পুরস্কার গ্রহণ করে প্রতিক্রিয়ায় হাসনাত আবদুল হাই বলেন, এ পুরস্কারপ্রাপ্তি নিঃসন্দেহে আনন্দ ও গৌরবের। পঞ্চাশের দশকে ছাত্রাবস্থা থেকে যখন লেখালেখি শুরু করেছিলাম, তখন সেটি ছিল শখের জন্য। পরে লেখা শুরু করলাম দায়বদ্ধতা থেকে। সমাজ, রাষ্ট্র, দেশ ও মানুষের প্রতি আমার এ দায়বদ্ধতা। লেখক হিসেবে আমার যা কিছু অর্জন, তা আমার একার সফলতা নয়। হাসনাত আবদুল হাই তাঁর বাবা-মা, প্রয়াত স্ত্রী ও পুত্রবধূর কথা স্মরণ করে বলেন, পাঠক আছে বলেই বই ছাপা হয়। আমরা লিখে যেতে পারি। 

নব্বই ছুঁইছুঁই হাসনাত আবদুল হাই বলেন, দীর্ঘ জীবনের অধিকারী হওয়া অনেক আনন্দের। আবার অনেক কষ্টেরও। অনেক স্বজনকে চলে যেতে দেখেছি। শোক সইতে সইতে পাথর হতে হয়। কিন্তু নিজেই বললেন, তিনি চলে যেতে চান না। কবির ভাষায় শক্ত উচ্চারণ তাঁর– যেতে পারি, কিন্তু কেন যাব? না যাওয়ার কারণ হিসেবে তিনি বললেন, অনেক বই সংগ্রহ করেছেন, সেগুলো পড়ে যেতে যান। আর মা-হারা ১০ বছর বয়সী নাতির সঙ্গে তিনি কাটাতে চান দীর্ঘ সময়। কবিতার ভাষায় নাতিকে উদ্দেশ করে তিনি বললেন– তোকে দেব আমি আমার ছেলেবেলা।   

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রাবন্ধিক ও বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক। অতিথি হিসেবে মঞ্চে আরও উপস্থিত ছিলেন হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ. কে. আজাদ, ব্র্যাক ব্যাংকের ভাইস চেয়ারপারসন ফারুক মঈনউদ্দীন আহমেদ, বিচারকমণ্ডলীর সদস্য প্রাবন্ধিক ফয়জুল লতিফ চৌধুরী, সাহিত্যিক খালিকুজ্জামান ইলিয়াস।  অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমকাল সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী।

তিন পুরস্কার ও প্রতিক্রিয়া
লেখক আমিনুল ইসলাম ভুইয়া পুরস্কার পাওয়ার পর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, যে বইটির জন্য পুরস্কার পেলাম তা আসলে একটি সহায়ক পুস্তক; প্লেটো পাঠের সহায়িকা। প্লেটোর সব সংলাপ তথা ২৮টি সংলাপ অনুবাদ করেছি। আমাদের দেশে গ্রিক সাহিত্য বিশেষত দর্শন যে খুব একটা শক্ত শিকড় পেয়েছে, তা বলা যাবে না। আমার এই প্রচেষ্টা মাটির প্রদীপের অধিক কিছু বলে গণ্য হওয়ার নয়। তবুও প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। 

আমিনুল ইসলাম ভুইয়া বলেন, এ দেশে লেখকদের খুব একটা সম্মান দেওয়া হয় না। আপনারা পুরস্কার দিয়ে আমার লেখাকে আলোতে আনার যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তার জন্য কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ। পুরস্কার প্রদানকারী বিচারকদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা, যদিও তাদের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত পরিচয় নেই। 
কিছুটা নিভৃতচারী ও লাজুক স্বভাবের ধ্রুব এষ পুরস্কার গ্রহণ করে ডায়াসের সামনে দাঁড়িয়ে দুই শব্দে শুধু বললেন, ‘আমি খুশি।’  
তরুণ লেখিকা উম্মে ফারহানা পুরস্কার গ্রহণ করে বললেন, সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ। কারণ পরিশ্রম করার ক্ষমতা তিনিই দেন। সবার উৎসাহ অনুপ্রেরণায় লেখা শুরু করেছিলাম। এ পুরস্কারপ্রাপ্তির পর এখন  শিক্ষকের পাশাপাশি নিজেকে লেখক হিসেবেও পরিচয় দিতে পারব। সারাজীবন লিখে যেতে চাই। 

সমকালের উপসম্পাদক মাহবুব আজীজের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের আলোচনায় উঠে আসে সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতার কথা। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এবারের প্রতিযোগিতায় সাহিত্যের তিনটি বিভাগে ৪৬৭টি বই জমা পড়ে। সেখান থেকে প্রাথমিক বাছাই শেষে ১৮টি গ্রন্থ বিচারকমণ্ডলীর বিবেচনার জন্য নির্বাচিত হয়।
জুরি বোর্ডে ছিলেন সাহিত্যিক বেগম আকতার কামাল, গবেষক ড. ফয়জুল লতিফ চৌধুরী, কবি আবিদ আনোয়ার এবং অনুবাদক খালিকুজ্জামান ইলিয়াস। তাদের নিখুঁত বিশ্লেষণ ও বিচারে নির্বাচিত হয় তিনটি গ্রন্থ।
পুরস্কার হিসেবে আজীবন সম্মাননায় দেওয়া হয় পাঁচ লাখ টাকার চেক, ক্রেস্ট ও সম্মাননা স্মারক। প্রবন্ধ, আত্মজীবনী, ভ্রমণ ও অনুবাদ এবং কবিতা ও কথাসাহিত্য বিভাগে দুই লাখ টাকা করে; আর তরুণ সাহিত্যিক শ্রেণিতে পুরস্কার ছিল এক লাখ টাকা। সবাইকে শুরুতে উত্তরীয় পরিয়ে দেন অতিথিরা। পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রত্যেকের ওপর সংক্ষিপ্ত প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়।   

অতিথিরা যা বললেন
প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, দর্শন, বিজ্ঞান, সাহিত্য ও শিল্পকলায় আমাদের আরও উন্নতি করার সুযোগ আছে। সে জন্য আমাদের দরকার রাজনৈতিক জাগরণ। তবে তেমন জাগরণের কোনো লক্ষণ আমরা এখনও দেখতে পাচ্ছি না। 
আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, এ জাতির মুক্তির জন্য দক্ষ চিন্তক দরকার। চিন্তাই মানুষকে মুক্তি দেয়। আজ যারা পুরস্কৃত হলেন, তারা এই দেশ, সমাজ, মানুষকে নিয়ে চিন্তা করেছেন। তিনি বলেন, পুরস্কার লেখকদের অনুপ্রাণিত করে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্তির পর আরও সমৃদ্ধ লেখা লিখেছেন। আজকের লেখক, কবি, সাহিত্যিকদেরও স্বদেশপ্রেম ও বিশ্বপ্রেম নিয়ে মানুষের পাশে থাকতে হবে।

হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ. কে. আজাদ বলেন, এই সাহিত্য পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান শুধু একটি সাংস্কৃতিক আয়োজন নয়। এটি আমাদের সামাজিক দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে একটি শুভ উদ্যোগ। ব্র্যাক ব্যাংক-সমকাল সাহিত্য পুরস্কার যারা পেলেন তারা সত্যিকারের মূল্যায়নের ভিত্তিতে তা পেয়েছেন। এ প্রাপ্তি গৌরবের এবং ভবিষ্যতের জন্য অনুপ্রেরণার।
এ আয়োজনে সঙ্গে থাকায় ব্র্যাক ব্যাংককে ধন্যবাদ জানিয়ে এ. কে. আজাদ বলেন, একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান যখন শিল্প-সাহিত্যের প্রতি দায়বদ্ধতা প্রকাশ করে, তা সমাজে সুস্থতা ও ভারসাম্যের বার্তা বয়ে আনে। ব্র্যাক ব্যাংক এ দায়িত্ব বরাবরই পালন করে চলেছে। তিনি বলেন, সমকাল বরাবরই বাংলাদেশে শিল্প ও সাহিত্যচর্চার একটি শক্ত ভিত রচনা করে এসেছে। আশা করি, আগামী দিনেও এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। 

ব্র্যাক ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক মঈনউদ্দীন আহমেদ বলেন, এই সাহিত্য পুরস্কার এখন দেশের সাহিত্যচর্চায় একটি মর্যাদার প্রতীক। তরুণ লেখকদের জন্য এটি যেমন প্রেরণা, পাঠকদের জন্যও তেমনি রুচিশীল পঠনের এক অনন্য দ্বার। আমরা গর্বিত এই উদ্যোগের অংশ হতে পেরে।
ফয়জুল লতিফ চৌধুরী বলেন, বিচারক হিসেবে এক মাসের মধ্য সব বই পড়ে বিচার করাটা খুব কঠিন। তবে অসম্ভব নয়। তিনি ভালো বই লেখা ও প্রকাশের ওপর গুরুত্ব দেন। 
সভাপতির বক্তব্যে সমকাল সম্পাদক শাহেদ মুহাম্মদ আলী বলেন, সংবাদপত্র ও সাহিত্য হাত ধরাধরি করে চলে। পত্রিকা হিসেবে সমকাল সাহিত্যের সঙ্গে তার যুগল পথচলা অব্যাহত রাখবে। সংবাদপত্র যেমন সমাজের কথা বলে; সাহিত্যও তাই। সংস্কৃতি ছাড়া সংবাদপত্র বড় হতে পারে না। কারণ দুটিই মুক্তচিন্তার বাহক। সংবাদপত্র সমাজের দর্পণ। সংস্কৃতি জাতির আত্মার প্রতিচ্ছবি। তিনি আশা করেন, এই সাহিত্য পুরস্কার দেশের সাহিত্য জগতের গতিপথকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করবে।

অনুষ্ঠানে বিশিষ্টজন:
অনুষ্ঠানে রাজনীতিবিদদের মধ্যে উপস্থিত ছিলন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব ও সাংস্কৃতিক সেলের সম্পাদক লুৎফর রহমান প্রমুখ।  

ব্যবসায়ীদের মধ্যে এসেছিলেন আইসিসি বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, বিসিআই সভাপতি আনোয়ার উল আলম চৌধুরী পারভেজ, সায়হাম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ শাফকাত আহমেদ প্রমুখ। ছিলেন ব্র্যাক বাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিএফও এম. মাসুদ রানা, হেড অব কমিউনিকেশন ইকরাম কবীরসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা। 
লেখক, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, নারীনেত্রীর মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শিরীন হক, রামন্দেু মজুমদার, বেগম আকতার কামাল, নাসরীন জাহান, সাংবাদিক মোজাম্মেল হোসেন মঞ্জু, খ ম হারুন, মাসুক হেলাল, মোহন রায়হান, মাহরুখ মহিউদ্দীন, রেজানুর রহমান, সিরাজুল ইসলাম, ফারুক মাহমুদ, শোয়াইব জিবরান, তুষার দাশ, নাজিব তারেক, নাসিমা আনিস, কামরুল হাসান, জুনান নাশিত, স্বকৃত নোমান, শিমুল সালাহ্‌উদ্দীন,  মতিন রায়হান, মনিকা চক্রবর্তী, আফরোজা সোমা, ফারহানা রহমান, শিহাব সরকার প্রমুখ।


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ