Samakal:
2025-07-05@01:54:06 GMT

ভূমি অধিগ্রহণ না করেই কাজ

Published: 4th, July 2025 GMT

ভূমি অধিগ্রহণ না করেই কাজ

সাঁথিয়া উপজেলার গাগড়াখালী-সোনাতলা বাইপাস সড়ক উন্নয়নকাজ শুরু হয়েছিল ছয় বছর আগে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আগের অপ্রশস্ত সড়কের পাশে মাটি ফেলাসহ কয়েকটি কালভার্ট নির্মাণের কাজ শুরু করে। সড়কের বর্ধিত অংশের বেশির ভাগই ব্যক্তিমালিকানাধীন হওয়ায় জমির মালিকেরা ক্ষতিপূরণের দাবিতে কাজে বাধা দেন। তারা একজোট হয়ে ক্ষতিপূরণের দাবিতে আদালতে মামলা করলে কাজ বন্ধ হয়ে যায়।
বর্তমানে সড়কটি খুঁড়ে রাখায় খানাখন্দে ভরে গেছে। বৃষ্টিতে বেহাল সড়কটি কাদাপানিতে সয়লাব। পাটগাড়ি এলাকায় কালভার্ট নির্মাণ করে ফেলে রাখা হয়েছে। সংযোগ সড়ক না থাকায় সেটিও কোনো কাজে আসছে না। এতে অবর্ণনীয় ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন এ পথে চলাচলকারী ৫০ হাজার মানুষ। 
সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের পাবনা কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২৪ জুলাই ভূমি অধিগ্রহণ ছাড়াই গাগড়াখালী-সোনাতলা বাইপাস সড়কের কাজ শুরু হয়। আট কিলোমিটারে  ব্যয় ধরা হয় ২৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। কাজ পায় ঢাকার এমএম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড। ২০২২ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত কাজের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। প্রথমদিকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সড়কের পাশে মাটি ফেলাসহ কয়েকটি কালভার্ট নির্মাণের কাজ শুরু করে। 
গাগড়াখালি, ফেচুয়ান ও তেঘরি গ্রামের সড়কের বর্ধিত অংশের বেশির ভাগ জমিই ব্যক্তিমালিকানাধীন। মালিকদের ক্ষতিপূরণ না দিয়ে কাজ শুরু করায় তারা বাধা দেন এবং ক্ষতিপূরণ চেয়ে আদালতে মামলা করেন। এখনও মামলার চূড়ান্ত রায় হয়নি। এ কারণে কাজ বন্ধের জন্য আদালত থেকে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। বর্ধিত অংশ অধিগ্রহণের জন্য টাকা জেলা প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। কাগজপত্র জমা দিয়ে ভূমিমালিকরা টাকা তুলে নিতে পারবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। নামমাত্র কয়েকজন জমির মালিক ক্ষতিপূরণ পেলেও অনেকেই পাননি। কর্তৃপক্ষ বলছে তাদের কাগজপত্র সঠিক নয়। 
এ বিষয়ে জমির মালিক তেঘড়ি গ্রামের সৈয়দ গোলাম মওলা বলেন, ‘আমার কাগজপত্র সঠিক আছে। আমার মতো গাগড়াখালি, ফেচুয়ান ও তেঘরি গ্রামের ৩০ থেকে ৩৫ জনের কাগজপত্র ঠিক থাকলেও তারা ক্ষতিপূরণ পায়নি।’ 
তেঘড়ি গ্রামের সৈয়দ গোলাম মাওলা, গোলাম রসুল, আব্দুস সাত্তার, আব্দুল ওহাব, গোলাম মোস্তফা, আব্দুল বারি, আলমগীর হোসেন, রিজিয়া খাতুনসহ কয়েকজন জমির মালিক বলেন, ‘২০১৯ সালের ২৭ আগস্ট ক্ষতিপূরণ চেয়ে পাবনা আদালতে মামলা করেছি। ছয় বছর পেরিয়ে গেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে সাড়া পাইনি। ক্ষতিপূরণ পেলে মামলা তুলে নেব।’ 
মামলার বাদী ফেচুয়ান গ্রামের মকবুল হোসেন, সুজন হোসেন ও আজিজ খাঁ জানান, সড়ক হলে সবারই সুবিধা হয়। জমির মালিকরা সড়কের জন্য জায়গা ছেড়ে দিতে প্রস্তুত। এ ক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। 
কথা হলে সওজের উপসহকারী প্রকৌশলী মাহবুব হাসান জানান, সোনাতলা থেকে পাটগাড়ি পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ঠিকাদারের সময় পেরিয়ে যাওয়াসহ কিছু জটিলতার কারণে কাজ শুরু করা যায়নি। 
সরেজমিন পাটগাড়ি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সড়ক ছাড়াই কালভার্ট নির্মাণ করা হয়েছে। এ কালভার্টের দুই পাশে মাটি ফেলে রাখায় কাদামাটিতে একাকার। এ পথ দিয়ে চলাচল এখন কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে। সড়কটি দ্রুত নির্মাণের জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন তেঘড়ি গ্রামের গোলাম কিবরিয়া, পাটগাড়ি গ্রামের রফিকুল ইসলাম সান, স্কুলশিক্ষার্থী সিমি খাতুনসহ অনেকে। 
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএম বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপক প্রহ্লাদ কুমার বলেন, ‘আমরা যথাসময়ে কাজ শুরু করেছিলাম। ভূমি অধিগ্রহণ জটিলতা এবং মামলার কারণে কাজ বন্ধ রাখতে বাধ্য হই। এরই মধ্যে সময় পেরিয়ে যাওয়ায় আমাদের সঙ্গে চুক্তি বাতিল হয়েছে।’
পাবনা সওজের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী  সাদেকুর রহমান বলেন, ‘যাদের জমির কাগজপত্র সঠিক ছিল, তারা টাকা পেয়েছেন। যাদের কাগজ সঠিক নেই, তারা পাননি। জটিলতা এখনও কাটেনি। মেয়াদ শেষ হওয়ায় প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে গেছে। নতুন প্রকল্প এলে প্রস্তাবনা পাঠানো হবে। অনুমোদন হলে দরপত্র আহ্বান করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সড়কটির কাজ শুরু করা হবে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র ক গজপত র গ গড় খ ল র জন য সড়ক র

এছাড়াও পড়ুন:

টাকা ছাড়া কথাও বলেন না শিক্ষা কর্মকর্তা

টাকা ছাড়া কিছুই বোঝেন না গাজীপুর সদর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সালাম। তাঁর সঙ্গে কথা বলতে গিয়েও যেন টাকা দিতে হয় শিক্ষকদের। তাঁর কাছে জিম্মি সদর উপজেলার ১৬৩টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ হাজার ১০০ শিক্ষক ও ৯৬৩টি কিন্ডারগার্টেনের কয়েক হাজার শিক্ষক। 

শিক্ষকদের অভিযোগ– বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নিবন্ধন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বরাদ্দ, শিক্ষক বদলি ও বিদ্যালয় পরিদর্শন, সব ক্ষেত্রেই টাকা দিতে হয়। প্রতিবাদ করলেই বাধ্যতামূলক বদলি করে দেন। শিক্ষা কর্মকর্তা সালামের বিরুদ্ধে একাধিক বিভাগীয় মামলাও হয়েছে। তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম। তিনি বলেন, ‘চাকরির ১৯ বছর আমাকে ২২ বার বদলি করা হয়েছে। দুদকে ২টি মামলা হয়েছে। তবে মামলাগুলো নিষ্পত্তি হয়েছে। আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।’

সূত্র মতে, আব্দুস সালাম চলতি বছরের গোড়ার দিকে গাজীপুর সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। এর আগে তিনি সুনামগঞ্জের শাল্লা, গাইবান্ধা সদর, রাঙামাটির বরকলসহ কয়েকটি উপজেলায় দায়িত্ব পালন করেছেন। আগের প্রতিটি কর্মস্থলে দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ায় শাস্তিমূলক বদলি হয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে অন্তত ৩টি বিভাগীয় মামলা রয়েছে।

ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গত ২ জুন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন গাজীপুর কেজি স্কুল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোছাদ্দিকুর রহমান। অভিযোগে বলা হয়, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শনের সময় নিবন্ধনের জন্য আব্দুস সালাম ৩ লাখ টাকা করে ঘুষ দাবি করেছেন।

ভাওয়াল মডেল একাডেমির পরিচালক লুৎফর রহমানের ভাষ্য, গত মে ৬ শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম তাঁর স্কুল পরিদর্শন করেন। নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে তাঁর কার্যালয়ে যেতে বলেন। এরপর সব কাগজপত্রের একটি ফাইল নিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর হাতে ফাইল দিলে তিনি বলেন, ‘ফাইল ঠিক থাকলে এটা ধুইয়া পানি খান। ফাইল দরকার নাই। আমাকে টাকা দেওয়া লাগবে।’

ভবানীপুর এলাকার মা একাডেমি স্কুলের প্রধান শিক্ষক মুসলিমা খাতুন জানান, নিয়ম অনুযায়ী তাঁর স্কুলের নিবন্ধনের জন্য সব কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়। এরপরও নিবন্ধন বাবদ ৩ লাখ টাকা দাবি করেছেন শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম।

বানিয়ারচালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শিখা আক্তারের ভাষ্য, স্কুল মেরামতের জন্য সম্প্রতি সদর উপজেলার তিনটি স্কুলে ২ লাখ টাকা করে বরাদ্দ আসে। টাকা ছাড় করতে আব্দুস সালাম তাঁর অফিসের কর্মচারীর মাধ্যমে প্রতিটি স্কুলপ্রধানের কাছে ৪০ হাজার টাকা চেয়েছেন। কিন্তু তিনি টাকা দিতে রাজি হননি।

তাঁর বিরুদ্ধে কয়েক দফা সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগও দেওয়া হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতেই শিক্ষা অধিদপ্তর তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদ ভূঁইয়া বলেন, ‘একটি প্রশিক্ষণে ঢাকায় আছি। তবে তাঁর বিরদ্ধে করা অভিযোগ মন্ত্রণালয় তদন্ত করছে।’

শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, কেজি স্কুলগুলোর নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করেছে সরকার, কিন্তু নিবন্ধন করছে না কেউ। নিবন্ধন না করে স্কুল চালানো মানে শিক্ষার্থীদের কাছ কর্তৃপক্ষ চাঁদাবাজি। স্কুলগুলো নিবন্ধন করতে চাপ দেওয়া হচ্ছে। নিবন্ধন করতে বলায় ঘুষ চাওয়ার মিথ্যা অভিযোগ করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হাজারো মানুষের দুর্ভোগ দুই কিমি কাঁচা সড়কে
  • রূপগঞ্জে নিরাপদ সড়কের দাবিতে সেচ্ছাসেবীদের মানববন্ধন
  • স্বপ্নপূরণে দ্বিধাহীন তটিনী
  • চট্টগ্রামের রাউজান থেকে আজমানে গিয়ে আবাসন সম্রাট, অর্থের উৎস নিয়ে প্রশ্ন
  • মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন নিয়ে বিআরটিএর নতুন নির্দেশনা
  • এস আলম ও পিকে হালদারসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে দুদকের ৩ মামলা
  • টাকা ছাড়া কথাও বলেন না শিক্ষা কর্মকর্তা
  • তখন ভোট নিয়ন্ত্রণ করেছিল এনএসআই-ডিজিএফআই
  • নতুন গ্রহাণুর দিকে চোখ নাসার, ধেয়ে যাবে পৃথিবীর পাশ দিয়ে এ সপ্তাহে