ফরিদপুরে হা-মীম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ. কে. আজাদের বাড়িতে চড়াও, পটিয়া, মুরাদনগর ও লালমনিরহাটসহ সারাদেশে অব্যাহত ‘মব সন্ত্রাসের’ বিস্তার লাভ করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাম জোট। শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। 

বিবৃতিতে বলা হয়, অভ্যুত্থানের পর মাজার ভাঙা, বাউল আখড়া, ভিন্ন মতাবলম্বীদের ওপর হামলা, আদিবাসীদের ওপর নির্যাতন, নারীদের পোশাক নিয়ে ‘মোরাল পুলিশিং’ ও সাম্প্রদায়িক নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে। একইসঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি চিহ্ন, ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভাঙা হয়েছে এবং তা অব্যাহত রয়েছে।

এতে বলা হয়, ‘সরকারের প্রেস সচিব যেভাবে মবকে প্রেশার গ্রুপ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তথ্য উপদেষ্টা ‘মব’কে গণআদালত, গণজাগরণ মঞ্চসহ অন্যান্য গণআন্দোলনের সঙ্গে তুলনা করেছেন। এতে জনমনে প্রশ্ন হতে পারে, তাহলে সরকার কি ‘মব’কে প্রশ্রয় দিচ্ছে?

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি হতে চলেছে। দেশবাসীর প্রত্যাশা গণঅভ্যুত্থানে হত্যাকাণ্ডের বিচার, প্রয়োজনীয় সংস্কার ও দ্রুত নির্বাচন করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা। কিন্তু অব্যাহত মব সন্ত্রাস করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়ে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করার অপপ্রয়াস বলে মনে করে বাম জোট। নির্বাচন যত বিলম্ব হবে সংকট তত বাড়তে থাকবে। অবিলম্বে মব বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ এবং মব সৃষ্টিকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন বাম জোটের নেতারা।

বিবৃতিতে অন্যদের মধ্যে সই করেন- বাম গণতান্ত্রিক জোটের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, সিপিবি সভাপতি মোহাম্মদ শাহ আলম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল- বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাংলাদেশের বিপ্লবী কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, বাসদ (মার্কসবাদী)-এর কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মাসুদ রানা, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু এবং বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক পার্টির নির্বাহী সভাপতি আব্দুল আলী।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: এ ক আজ দ

এছাড়াও পড়ুন:

রাষ্ট্র সংস্কার না হ‌লে দেশ অন্ধকারে ঢেকে যাবে: এবি পার্টি

আমার বাংলাদেশ পার্টি (এবি পার্টি) আয়োজিত জুলাই গণঅভ্যুত্থান উদযাপনের অংশ হিসেবে "কোটা না মেধা: এক রক্তস্নাত অধিকারের সংগ্রাম' শীর্ষক ৩৬ দিনব্যাপী চিত্র প্রদর্শনী শুরু হ‌য়ে‌ছে।

বুধবার (২ জুলাই) বিকেল ৪টায় এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও শিক্ষাবিদ ড. দিলারা চৌধুরী।

এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ প্রদর্শনী প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। প্রদর্শনী চলবে বুধবার থেকে ১৩ জুলাই পর্যন্ত।

এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জুর সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসাইনের সঞ্চালনায় চিত্রপ্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডা. জাহেদ উর রহমান, শহীদ জিসানের মা জেসমিন আক্তার, শহীদ নুরু ব্যাপারীর স্ত্রী রোমানা বেগমসহ বিশিষ্টজনেরা।

প্রদর্শনীর উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে দিলারা চৌধুরী বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর আমরা এখনো কোন গান, সিনেমা, নাটক কিছুই সুন্দরভাবে করতে পারিনি। হাজার শহীদের রক্তের বিনিময়ে মানুষ মুক্তি পেল সেটাকে আমাদের ধরে রাখতে হবে, যেভাবেই হোক। এত ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ের পর দেশে যদি কোনো সংস্কার না হয়, আগের ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থাই যদি চলতে থাকে তাহলে শহীদদের স্বজন কিংবা আহত, পঙ্গুত্ববরণকারীদের আমরা কি জবাব দেব।”

তিনি বলেন, “রাষ্ট্র সংস্কার যদি সম্ভব না হয়, আবারো নতুন কোন ফ্যাসীবাদের কবলে পড়ি তাহলে আমার ভয় হয়, দেশ একটা গভীর অন্ধকারে ঢেকে যাবে।”

তিনি সব রাজনৈতিক দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ গঠনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, “আমরা এই গণঅভ্যুত্থান যদি ধরে রাখতে না পারি এর ভুক্তভোগী আপনাদেরই হতে হবে।”

মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, “ক্ষমতার মোহে অন্ধ ও চরম অহঙ্কারী হয়ে শেখ হাসিনা কোটা নিয়ে জাতির সাথে উপহাস করতে চেয়েছিল।সৃষ্টিকর্তা মহান আল্লাহর ইচ্ছায় তাঁর অহঙ্কারের চরম শিক্ষা অবধারিত হয়ে পড়ে। ফলে জঘন্যতম নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালিয়েও তার শেষ রক্ষা হয়নি।”

জুলাইয়ের নির্মমতা স্মরণ করে তিনি বলেন, “এ গণহত্যা পৃথিবীর যেকোনো পৈশাচিক দুঃশাসনের ইতিহাসকে ম্লান করেছে। গুম, খুন, লুটপাট, হেলিকপ্টার থেকে গুলি, কারফিউ জারিসহ সব ধরনের অত‍্যাচার চালিয়ে জনগণকে দমন করার চেষ্টা হয়েছে।”

“জুলাই ৩৬ দিনের নৃশংসতা যেই দেখবে সে-ই বলবে, বিশ্বে শেখ হাসিনার চাইতে নির্দয় নারী ঘাতক আর হতে পারে না। তিনি শেখ হাসিনাসহ সব খুনি ও সহযোগীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।”

ডা. জাহেদুর রহমান বলেন, “পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গেছে এখন মনে হয় খুনি হাসিনার কাছে ক্ষমা চাই। তিনি এমন নির্লজ্জ খুনি এখনো ভারতে বসে দেশের মানুষকে হুমকি দিচ্ছে, যারা আন্দোলন করেছে, প্রোফাইল লাল করেছে তারা ক্ষমা চাইলে তিনি ক্ষমা করবেন। কতবড় আস্ফালন, এখনো খুনিরা দেশের মানুষকে হুমকি দেয়।”

তিনি চিত্র প্রদর্শনীর দেখে বলেন, “জুলাই নিয়ে গান হওয়া দরকার, সিনেমা হওয়া দরকার, হাজার হাজার ছবি সব জায়গায় প্রদর্শন হওয়া উচিত।”

শহীদ জিসানের মা জেসমিন আক্তার বলেন, “আমার ছেলে আব্দুর রহমান জিসান রায়েরবাগ শহীদ হন। জিসানের শহীদের পর তার শোক ও দুঃখে তার স্ত্রী আত্মহত্যা করে। আমার একসাথে দুটি সন্তান হারাতে হয়েছে। জিসান ছিল আমার একমাত্র ছেলে। আমি খুনি হাসিনার বিচার চাই।”

শহীদ নুরু ব্যাপারীর স্ত্রী রোমানা বেগম বলেন, “আমার স্বামী রায়েরবাগে শহীদ হন।পরিস্থিতি এমন ছিল আমার স্বামীর লাশটাও তখন আমি আনতে পারিনি।”

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম, লে. কর্নেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভুইয়া, আনোয়ার সাদাত টুটুল, এবিএম খালিদ হাসান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল হালিম খোকন, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খানসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নেতৃত্বের ঘাটতিতে গণঅভ্যুত্থানের বৈপ্লবিক সম্ভাবনা কাজে লাগেনি
  • গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ছাত্র ফ্রন্টের মাসব্যাপী কর্মসূচি
  • নতুন করে কোনো ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি না করি: নাহিদ
  • শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ ও ‘শহীদ দিবস’ পালন বাধ্যতা
  • সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থান ও শহীদ দিবস পালনের নির্দেশ
  • দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য মাউশির নতুন নির্দেশনা
  • জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে বিরূপ মন্তব্য, চুল কেটে থানায় হস্তান্তর
  • ৫ আগস্ট ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’. সাধারণ ছুটি ঘোষণা
  • রাষ্ট্র সংস্কার না হ‌লে দেশ অন্ধকারে ঢেকে যাবে: এবি পার্টি