জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, “বাংলাদেশে গুটিকয়েক মানুষ স্বৈরাচার তৈরি করেছে, ফ্যাসিবাদ তৈরি করেছে, এরাই সব সম্পত্তির মালিক হইছে। এই একটা মাত্র পরিবার, মুজিব পরিবার। এরাই সব সম্পত্তির মালিক হয়ে দেশের জমিদারি নিয়ে নিছিল। আমরা এই জমিদারি প্রথা ভাঙছি গণঅভ্যুত্থানে।” 

তিনি বলেন, “নতুন করে যদি কোনো জমিদারি প্রথা, নতুন করে কোনো স্বৈরাচার-ফ্যাসিস্ট-চাঁদাবাজ তৈরি হয়, তার বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই করতে হবে, কথা বলতে হবে। আমরা বাংলাদেশে যাতে নতুন করে কোনো ভয়ের সংস্কৃতি তৈরি না করি। কোনো অন্যায়-জুলুম দেখলে প্রতিবাদ করতে হবে।”

শুক্রবার (৪ জুলাই) দুপুরে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলা শহরের ফকিরগঞ্জ বাজারে এনসিপির উপজেলা কার্যালয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠান এসব কথা বলেন তিনি। দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে গতকাল বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) বিকেলে এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা পঞ্চগড়ে আসেন।

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশপন্থিদের হাতেই চলবে বাংলাদেশ: নাহিদ 

পুরনো সিস্টেম ও দখলদারিত্ব ফিরে আসার চেষ্টা চলছে: নাহিদ  

নাহিদ ইসলাম বলেন, “আওয়ামী লীগ বারবার বলেছে, তারা অসাম্প্রদায়িক দল, কিন্তু তারা কখনোই সনাতন ধর্মের মানুষের সঙ্গে ইনসাফ করেনি। বিগত আমলে আমরা দেখেছি, আমাদের সনাতন ধর্মাবলম্বী ভাইয়েরা অনেক নির্যাতিত হয়েছেন, তাদের জমি দখল করা হয়েছে। তারা কোনো বিচার পান নাই। আমরা চাই, এই নতুন বাংলাদেশে ইনসাফের ভিত্তিতে, সম্প্রীতির ভিত্তিতে একসাথে নাগরিক হিসেবে সব সুযোগ-সুবিধা পাব।”

তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা নিজ দলের নেতাকর্মীদের ফেলে দেশ থেকে পালিয়ে গেছেন। তার পরিবার ও দলের যারা লুটপাট করে বড়লোক হয়েছেন, অনেক বেশি জুলুমবাজ হয়েছেন, তারাও দেশ থেকে চলে গেছেন। দলের সব নেতাকর্মীকে তারা বিপদে ফেলে গেছেন। তারা কোনো দলের নেতা হতে পারেন না।” 

এনসিপির এই নেতা বলেন, “গণ-অভ্যুত্থানের পর আমাদের প্রত্যাশা দেশটাকে নতুন করে গড়ব বৈষম্যহীন ইনসাফের ভিত্তিতে, সম্প্রীতির ভিত্তিতে। এটি চাঁদাবাজি-সন্ত্রাসমুক্ত একটা দেশ হবে। সেই লক্ষ্যে এই গণঅভ্যুত্থানে যেসব তরুণ-আমরা নেতৃত্ব দিয়েছিলাম, তারা মিলে নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি। যে পার্টি আপনার কথা বলতে চায়, সাধারণ জনগণের কথা বলতে চায়। অন্যায়ের বিরুদ্ধে, জুলুমের বিরুদ্ধে, ইনসাফের রাজনীতি করতে চায়।

সভায় এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ ও উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম উপস্থিত ছিলেন। 

ঢাকা/নাঈম/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন হ দ ইসল ম জ ত য় ন গর ক প র ট এনস প র ইনস ফ

এছাড়াও পড়ুন:

৮ বছরেও শুরু হয়নি কুবির ২ বিভাগের কার্যক্রম

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) দীর্ঘ ৮ বছর আগে অনুমোদন পাওয়া দুটি বিভাগ এখনো চালু হয়নি। অনুমোদন সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় শিক্ষক নিয়োগ, অবকাঠামোগত প্রস্তুতি এবং প্রশাসনিক কার্যক্রমের ধীরগতির কারণে বিভাগ দুটি কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিজ্ঞান অনুষদের অধীনে ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ এবং ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধীনে ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ চালুর অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ থেকেই বিভাগ দুটি চালু হওয়ার কথা থাকলেও, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত ও শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে তা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে নতুন অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের পরে বিভাগ দুটি চালুর পরিকল্পনা করা হয়। কিন্তু এই সময়ের মধ্যে নতুন ভবন নির্মাণ হয়নি।

আরো পড়ুন:

শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় কুবি প্রক্টরের জরুরি নির্দেশনা 

সিএনজি চালকের বিরুদ্ধে কুবি শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ

এছাড়া, তৎকালীন অর্গানোগ্রামে ৩১টি বিভাগের মধ্যে এই দুইটি বিভাগ অন্তর্ভুক্ত ছিল না, যা পরবর্তীতে চালু করা নিয়ে জটিলতা তৈরি করে।

সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে বৈঠক করে এই বিষয়ে পুনরায় আলোচনা করে। ইউজিসি নির্দেশনা অনুযায়ী, নতুন অর্গানোগ্রামে বিভাগের অন্তর্ভুক্তি ও নতুন বিভাগের প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

সে অনুযায়ি ১৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত কুবির ৮৯তম অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল মিটিংয়ে পূর্বের ‘মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ’ এর পরিবর্তে ‘লজিস্টিক্স ও মার্চেন্ডাইজিং বিভাগ’ এবং ‘বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’-এর পরিবর্তে ‘পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ’ নামে অন্তর্ভুক্তির সুপারিশ করা হয়। এছাড়াও অর্গানোগ্রামে নতুন আরও ১৮টি বিভাগের নাম অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

তৎকালীন বন ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের প্রস্তাবক রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সৈয়দুর রহমান বলেন, “২০১৭ সালে অনুমোদন থাকলেও জায়গা সংকটের কারণে বিভাগ চালু করা সম্ভব হয়নি। পরে প্রশাসন পাল্টালেও কেউ উদ্যোগ নেয়নি।”

এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, “অর্গানোগ্রামে অন্তর্ভুক্তি মানে এখনই চালু হবে না। অনুমোদন থাকলেও তৎকালীন সময়ে চালু করা সম্ভব হয়নি। এখন ইউজিসি নির্দেশনায় নতুন করে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “তৎকালীন প্রশাসন বলতে পারবে কেন বিভাগ চালু হয়নি। আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা মাধ্যমে নতুন করে উদ্যোগ নিয়েছি। আগামী ২ বছরের মধ্যে আশা করি বিভাগ চালু করা সম্ভব হবে, তখন নতুন ক্যাম্পাসও প্রস্তুত থাকবে।”

ঢাকা/এমদাদুল/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ