বিএনপির নাম ভাঙিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কিংবা অসদাচরণ করলে কেউ রেহাই পাবে না বলে কঠোর বার্তা দিয়েছে দলটি। শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দলের এ অবস্থানের কথা জানান।           

রিজভী বলেন, ‘স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই, দলের নামে যে কেউ যে কোনো ধরনের অনৈতিক, অবৈধ, সন্ত্রাসী, সহিংসতামূলক কর্মকাণ্ড করলে রেহাই পাবে না। আমরা তাৎক্ষণিক তদন্ত এবং ভিডিও-অডিও সব কিছু পরীক্ষা করব। যদি দেখা যায় কেউ দায়ী, তাঁর বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ 

তিনি বলেন, ‘আমরা তো প্রতিদিনই এটা করি, তার পরও আপনাদের (গণমাধ্যম) মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া যে, আর কেউ যেন সাহস না পায়। দলের অভ্যন্তরে অথবা প্রতিবেশী কারও সঙ্গে অথবা অন্য যে কোনো মানুষের সঙ্গে কোনো ধরনের সহিংস আচরণ করবে, সন্ত্রাসীমূলক আচরণ করবে, সে রেহাই পাবে না।’

দল এবং বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠনের চার থেকে পাঁচ হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান রিজভী। 

গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলায় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়ে রিজভী বলেন, কুড়িগ্রামের চিলমারীতে কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে মশাল মিছিল, ভাঙচুর ও নিজ দলের কর্মীদের আঘাত করার ঘটনা ঘটেছে। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি তদন্ত করে চিলমারী উপজেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক সাঈদ হোসেন পাখি ও সদস্য আবদুল মতির শিরিনকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার পাছথুবী ইউনিয়নের (দক্ষিণ) সাধারণ সম্পাদক খোকন মিয়াকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। খোকন দলের নামে সন্ত্রাস ও অস্ত্রবাজিতে যুক্ত ছিল।

তিনি জানান, বহিষ্কার করা হয়েছে ভোলার তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম হাওলাদারকে। কয়েক দুষ্কৃতিকারী নিয়ে মহিলা দলের এক নেত্রীকে মারধর করেছে ইব্রাহিম। পাটগ্রামে কিছু লোক বিএনপির নামে থানায় ঢুকে ভাঙচুর করেছে এবং দু’জনকে ছিনিয়ে আনার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে, এদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, রাজধানীর বনানী থানা যুবদলের আহ্বায়ক মুনির হোসেনের নেতৃত্বে একদল ব্যক্তি বুধবার রাতে জাকারিয়া হোটেলে ঢুকে নারীদের ওপর হামলা চালায়। এমন ছবি বিভিন্ন গণমাধ্যমের অনলাইনে এসেছে। এটা জানার সঙ্গে সঙ্গে জাতীয়তাবাদী যুবদল এই নামধারী নেতাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে। 

সংবাদ সম্মেলনে দলের যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ র ব যবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

পেরুর প্রেসিডেন্ট নিজের বেতন দ্বিগুণ করায় সাধারণ মানুষের ক্ষোভ

পেরুর প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তে নিজের মাসিক বেতন দ্বিগুণ বাড়িয়ে প্রায় ১০ হাজার ডলার (প্রায় ১২ লাখ ২৬ হাজার টাকা) করায় দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অনেকেই বলছেন, এই অর্থ দরিদ্র মানুষের জন্য ব্যয় করাই ছিল অধিক যুক্তিযুক্ত।

স্থানীয় সময় গত বুধবার রাতে পেরুর অর্থমন্ত্রী জানান, প্রেসিডেন্ট বলুয়ার্তের নতুন বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ হাজার ৫৬৮ সোলেস (প্রায় ১০ হাজার ৬৭ ডলার), যা দেশটির ন্যূনতম মজুরির প্রায় ৩০ গুণ।

প্রেসিডেন্টের আগের বেতন ছিল ১৫ হাজার ৬০০ সোলেস (প্রায় ৪ হাজার ৪০০ ডলার), যা ২০০৬ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট অ্যালেন গার্সিয়া নির্ধারণ করেছিলেন। এর আগে প্রেসিডেন্টের বেতন ছিল ৪২ হাজার সোলেস।

সরকার বলেছে, লাতিন আমেরিকার ১২টি দেশের মধ্যে প্রেসিডেন্ট বলুয়ার্তের আগের বেতন ছিল ১১তম স্থানে, যা শুধু বলিভিয়ার প্রেসিডেন্টের চেয়ে বেশি। রয়টার্স সরকারের এ দাবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি। তবে গত বছর রিও টাইমসের এক প্রতিবেদনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর প্রেসিডেন্টদের বেতন ৩ হাজার ডলার থেকে শুরু করে ২২ হাজার ডলার বলে উল্লেখ করা হয়।

এই সিদ্ধান্তকে ‘একেবারে রসিকতা’ বলে মন্তব্য করেন রাজধানী লিমায় একটি পত্রিকার স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পেনশনভোগী বাসিন্দা রোলান্দো ফনসেকা। তিনি বলেন, ‘পেরুজুড়ে চরম দারিদ্র্য বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্টের উচিত সবার সামনে ভালো দৃষ্টান্ত স্থাপন করা।’

বলুয়ার্তের জনপ্রিয়তা বর্তমানে তলানিতে নেমে এসেছে। সাম্প্রতিক এক জরিপ অনুযায়ী, তাঁর সমর্থন মাত্র ২ থেকে ৪ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। তাঁর পূর্বসূরি পেদ্রো কাস্তিয়ো কংগ্রেস ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করায় তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয় এবং গ্রেপ্তার করা হয়।

ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বলুয়ার্তে নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকে শুরু করে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে ৫০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় তাঁর ভূমিকা নিয়ে তদন্ত হয়েছে। তবে ৬৩ বছর বয়সী এই রাজনীতিক সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

পেরুর দারিদ্র্যের হার এখনো প্রায় ৩০ শতাংশের কাছাকাছি, যা করোনা মহামারির সময় বেড়ে গিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে অর্থনীতি কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও জীবনমানে পরিবর্তন আসেনি বলেই মনে করছেন দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির সাধারণ মানুষ।

প্রসঙ্গত, পেরু ২০১৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ছয়জন প্রেসিডেন্ট পেয়েছে, যাঁদের মধ্যে তিনজনই এখন কারাগারে। প্রেসিডেন্ট বলুয়ার্তের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ২০২৬ সালের জুলাইয়ে। এর আগে চলতি বছরের এপ্রিলে দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ