২০১২ সালে ফেসবুককে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করার প্রস্তুতি নেওয়ার সময় বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিলেন মেটার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ। সে সময় কম্পিউটারের বদলে স্মার্টফোনে ইন্টারনেট ব্যবহার জনপ্রিয় হতে শুরু করায় অনেকেই আশঙ্কা করেছিলেন, নতুন পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মেলাতে না পারলে ফেসবুকের ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে পড়বে। ঠিক তখনই জাকারবার্গের নজরে পড়ে ইনস্টাগ্রাম অ্যাপ। সেসময় ইনস্টাগ্রাম অ্যাপ শুধু আইফোনে ব্যবহার করা যেত। আর তাই দুই বছর আগে চালু হলেও কোনো আয় করতে পারছিল না ইনস্টাগ্রাম কর্তৃপক্ষ। কর্মিসংখ্যাও ছিল বেশ কম, মাত্র ১৩ জন। এরপরও ইনস্টাগ্রাম অ্যাপে নতুন সম্ভাবনা খুঁজে পান জাকারবার্গ।

ইনস্টাগ্রাম অ্যাপের ভবিষ্যৎ পর্যালোচনার পর জাকারবার্গ সরাসরি ইনস্টাগ্রামের সহপ্রতিষ্ঠাতা কেভিন সিসট্রমের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর কোনো কর্মকর্তা বা আইনজীবীর মধ্যস্থতা ছাড়াই ২০১২ সালের এপ্রিল মাসে ১০০ কোটি মার্কিন ডলারে ইনস্টাগ্রাম কিনে নেয় ফেসবুক। ইনস্টাগ্রাম কেনার ঘোষণা প্রচারের পরপরই প্রযুক্তি বিশ্লেষক ও বিনিয়োগকারীদের অনেকে জাকারবার্গের নেওয়া সিদ্ধান্তকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ও ‘অপরিণামদর্শী’ আখ্যা দিয়েছিলেন। একটি ছোট প্রতিষ্ঠানকে বিপুল অর্থের বিনিময়ে কেনার যৌক্তিকতা নিয়েও সন্দিহান ছিলেন তাঁরা। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রমাণ হয়েছে, ইনস্টাগ্রাম কেনার সিদ্ধান্ত ছিল জাকারবার্গের দূরদর্শিতার সেরা উদাহরণ। চুক্তির কিছুদিনের মধ্যেই ইনস্টাগ্রাম চালু করে অ্যান্ড্রয়েড সংস্করণ। প্রথম দিনেই অ্যাপটি ১০ লাখ বার ডাউনলোড করা হয়, যা তখনকার মানদণ্ডে ছিল অভাবনীয় সাফল্য।

আরও পড়ুন মার্ক জাকারবার্গের করা সবচেয়ে বড় ভুল কোনটি জানেন১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

জাকারবার্গের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ছিল ইনস্টাগ্রামের স্বতন্ত্রতা ধরে রাখা। অধিগ্রহণের পরও কেভিন সিসট্রমকে প্রতিষ্ঠানটির নেতৃত্বে থাকতে দেন জাকারবার্গ। এতে ইনস্টাগ্রামের নিজস্বতা অটুট থাকে, যা অ্যাপটির জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ফলে ইনস্টাগ্রাম পরিণত হয় একটি বড় মাধ্যমে, যেখানে সাধারণ ব্যবহারকারীরাও হয়ে উঠেছেন কনটেন্ট নির্মাতা, ইনফ্লুয়েন্সার এবং উদ্যোক্তা।

আরও পড়ুনমার্ক জাকারবার্গ ঘন ঘন বৈঠকের বদলে যেভাবে প্রতিদিন কাজ করেন ১৬ মে ২০২৫

বর্তমানে প্রতি মাসে ইনস্টাগ্রামের সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা ২০০ কোটিরও বেশি। ব্যবহারকারীর দিক থেকে এটি বর্তমানে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। মেটার সামগ্রিক বিজ্ঞাপন আয়ে ইনস্টাগ্রামের অবদানও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। ২০২৪ সালে মেটার মোট বিজ্ঞাপনী আয়ের প্রায় ৪১.

৪৯ শতাংশই এসেছে ইনস্টাগ্রাম থেকে। ২০২৫ সালে এই হার বেড়ে ৪৯ দশমিক ৯ শতাংশে পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সূত্র: নিউজ১৮

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইনস ট গ র ম অ য প ম র ক জ ক রব র গ ইনস ট গ র ম র ইনস ট গ র ম ক জ ক রব র গ র ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

নুরাল পাগলার দরবার থেকে চুরি হওয়া জেনারেটর উদ্ধার, যুবক গ্রেপ্তার

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নুরাল পাগলার দরবার থেকে চুরি হওয়া একটি জেনারেটর উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় মো. মিজানুর রহমান (২৪) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়।

গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সদর উপজেলার মিজানপুর ইউনিয়নে অভিযান চালিয়ে মিজানুরকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও গোয়ালন্দ ঘাট থানা-পুলিশ। মিজানুরের বাড়ি রাজবাড়ী সদর উপজেলার লক্ষ্মীকোল সোনাকান্দর গ্রামে।

আরও পড়ুননিহতের বাবার মামলায় গ্রেপ্তার আরও ২, দেড় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতির দাবি১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

এ নিয়ে দুই মামলায় মোট ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেন রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. শরীফ আল রাজীব।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ৫ সেপ্টেম্বর গোয়ালন্দের নুরাল পাগলার দরবারে বিক্ষুব্ধ জনতা হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এ সময় মিজানুর রহমান জেনারেটর চুরি করে নিয়ে যাচ্ছেন—এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরে ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে মিজানুরকে শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হয়। মিজানুরকে দরবারে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ, লাশ পোড়ানো ও হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে তাঁকে রাজবাড়ীর আদালতে সোপর্দ করার প্রস্তুতি চলছে।

আরও পড়ুননুরাল পাগলার দরবারে হামলায় হত্যা মামলা, মসজিদের ইমামসহ চারজন গ্রেপ্তার০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ওই দিন পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় উপপরিদর্শক (এসআই) সেলিম মোল্লা বাদী হয়ে প্রায় তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে ৬ সেপ্টেম্বর মামলা করেন। এই মামলায় মোট ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদিকে দরবারে হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, হত্যা ও কবর থেকে লাশ তুলে মহাসড়কে পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় নিহত ভক্ত রাসেল মোল্লার বাবা আজাদ মোল্লা বাদী হয়ে ৮ সেপ্টেম্বর মামলা করেন। ওই মামলায় সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় এখন পর্যন্ত মিজানুরসহ নয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ