১৬টি মামলায় অব্যাহতি পেলেন মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান
Published: 4th, July 2025 GMT
দীর্ঘ ১৭ বছরের অপেক্ষা, নিরব লড়াই আর আইনি জটিলতার অবসান ঘটিয়ে ১৬টি মিথ্যা মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ও হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ নেতা মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান।
২০১৩ সাল থেকে শুরু হওয়া এসব মামলার ভার কাঁধে বয়ে চলেছেন এই আলেম-নেতা। অবশেষে ২০২৫ সালের ২২ জুন থেকে ৩ জুলাই পর্যন্ত আদালতের ধারাবাহিক রায় অনুযায়ী এসব মামলা থেকে মুক্তি মিলেছে তার।
অভিমত জানাতে গিয়ে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে মাওলানা ফেরদাউসুর রহমান বলেন, “বিগত স্বৈরাচার সরকার আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা সাজিয়ে দীর্ঘদিন ধরে হয়রানি করেছে। কিন্তু ৫ আগস্ট ২০২৪ সালে তাদের পতনের পর প্রমাণ হয়েছে, এসব ছিল নিছক রাজনৈতিক প্রতিহিংসা। আল্লাহর কৃপায় আজ আমি মুক্ত।”
তবে এখানেই শেষ নয়। মাওলানা ফেরদাউস আরও জানান, “১৬টি মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেও এখনো আমার নামে ১৩টি মিথ্যা মামলা ঝুলে আছে। এসব মামলাও দ্রুত নিষ্পত্তি চাই, যেন আমি স্বাভাবিক রাজনৈতিক কার্যক্রমে মনোযোগ দিতে পারি।”
তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, একটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচি পালন করলেই যদি বারবার মামলা আর হয়রানির শিকার হতে হয়, তবে দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়।
“আমাদের সব কর্মসূচি ছিল শান্তিপূর্ণ। তারপরও নানা অজুহাতে মামলা হয়েছে। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড মানেই সমালোচনা থাকবে, কিন্তু জুলুম-নির্যাতন কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়,” — যোগ করেন তিনি।
নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক অঙ্গনে ফেরদাউসুর রহমান বরাবরই ছিলেন ধর্মীয় ও রাজনৈতিক সচেতনার প্রতীক। তার বিরুদ্ধে করা এসব মামলা বরাবরই প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ র জন ত ক
এছাড়াও পড়ুন:
কৃষকদের বাদ দিয়ে সিন্ডিকেট করে ব্যবসায়ীর ধান ক্রয়ের অভিযোগ
ময়মনসিংহের ধোবাউড়ায় বোরো মৌসুমে কৃষি অফিসের তালিকাভুক্ত কৃষকদের পরিবর্তে বহিরাগত ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের অভিযোগ উঠেছে। বিপাকে পড়েছেন তালিকাভুক্ত প্রান্তিক কৃষকরা।
জানা গেছে, চলতি বছর বোরো মৌসুমে কৃষক অ্যাপসের মাধ্যমে অনলাইনে গুদামে ধান বিক্রির আবেদন করেন কৃষকরা। অনলাইন থেকে লটারির মাধ্যমে কৃষক নির্বাচিত করা হয়। মুন্সিরহাট খাদ্যগুদামের আওতায় ধোবাউড়া সদর, ঘোষগাঁও এবং বাঘবেড় ইউনিয়নের ৬৯৬ জন কৃষক নির্বাচিত হন। প্রত্যেক কৃষকের কাছে তিন টন করে ৬১০ টন ধান ক্রয়ের কথা এই গুদামে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে গত ২৮ মে থেকে ৩৬ টাকা কেজি দরে কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় শুরু হয়, যা শেষ হয় ২৮ জুন। তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও এক ছটাক ধান বিক্রি করতে পারেননি কয়েকজন কৃষক।
অভিযোগ রয়েছে, মুন্সিরহাট এলএসডি গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বাইরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সমন্বয় করে তাদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করেছেন। এদিকে তালিকাভুক্ত কয়েকজন কৃষক খাদ্যগুদামে একাধিকবার ধান বিক্রি করতে গেলে বরাদ্দের ধান কেনা শেষ বলে জানিয়ে দেওয়া হয়।
বাঘবেড় ইউনিয়নের মান্দালিয়া এলাকার প্রান্তিক কৃষক গিয়াস উদ্দিন বলেন, ‘আমার পরিবারের পাঁচটি নাম তালিকায় রয়েছে। সরকারি শর্ত পূরণ করে আমি ধান রেডি করে গুদামে বিক্রি করতে গেলে বলা হয় ধান কেনা শেষ। পরে আবার বরাদ্দ পেলে ধান নেওয়া হবে। এদিকে দেখি রাতের আঁধারে গুদামে গাড়ি ভর্তি ধান যাচ্ছে অথচ আমাদের ধান নিচ্ছেন না। পরে জানতে পারলাম, একটি প্রভাবশালী মহলের কাছ থেকে গুদামের কর্মকর্তারা ধান কিনছেন।’
এমন অভিযোগ মুন্সিরহাট এলাকার ওলি মাহমুদেরও। তার ভাষ্য, তিনি ধান নিয়ে গেলে বলা হয় ধান কেনা শেষ। অথচ রাতে গাড়িতে করে আসা ধান কিনছে। তিনি বলেন, ‘আমরা তালিকাভুক্ত থাকা সত্ত্বেও ধান দিতে পারলাম না। অথচ ধান কেনা শেষ হয়ে গেল। তাহলে আমার বরাদ্দের ধান দিল কে? এই বিচার কে করবে?’
কৃষকদের বাদ দিয়ে বাইরের ব্যবসায়ী চক্রর কাছ থেকে ধান কেনার অভিযোগ তুলে জড়িতদের বিচার দাবি করেছেন কৃষক শাহ আলম।
সিন্ডিকেটের মাধ্যমে ধান সংগ্রহের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মুন্সিরহাট এলএসডি খাদ্যগুদামের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। তার ভাষ্য, যারা অনলাইনে আবেদন করেছেন সবারই তালিকায় নাম আসায় বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। একদিকে বরাদ্দের পরিমাণ কম ও কৃষক বেশি থাকায় যারা আগে ধান নিয়ে আসছে তাদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিশাত শারমিন বলেন, এ বছর নিবন্ধিত কৃষকদের কাছে ধান ক্রয় করা হচ্ছে। যারা আগে আসছেন, তারা আগে ধান বিক্রি করতে পারবেন। মুন্সিরহাটের এই ঘটনা জানার পর খাদ্য কর্মকর্তাকে সরেজমিন তদন্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সরকারি ধান ক্রয়ে কোনো অনিয়ম মেনে নেওয়া হবে না। প্রকৃত কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তারপরও কেউ অনিয়ম করলে লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।