দেড় কোটি প্রবাসী বাংলাদেশির ভোটাধিকার নিশ্চিতের দাবি
Published: 4th, July 2025 GMT
দেশের বাইরে বসবাসকারী প্রায় দেড় কোটি প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে প্রবাসী ভোটাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ, যুক্তরাজ্য। আজ শুক্রবার ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানায় তারা।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটাধিকার নিশ্চিতে কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন প্রবাসী ভোটাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ, যুক্তরাজ্যের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক নাজির আহমদ। নব্বইয়ের দশকে হাইকোর্টের একজন বিচারপতি প্রবাসীদের ভোটাধিকারের পক্ষে রায় দিয়েছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা দেশের রাজনীতিবিদদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরেও কোনো রাজনৈতিক দল কেন এই অধিকার নিশ্চিত করেনি, সেটা আমাদের জানা নেই।’
প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সকে বাংলাদেশের অর্থনীতির স্বীকৃত ‘লাইফ লাইন’ বলে মন্তব্য করেন নাজির আহমেদ। তিনি বলেন, বৈষম্য ও ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে প্রবাসী বাংলাদেশিরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। বিভিন্ন দেশে প্রবাসীরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে দূতাবাস ও হাইকমিশন ঘেরাও করেছেন, সভা-সমাবেশ করেছেন। মধ্যপ্রাচ্যে বিক্ষোভ করতে গিয়ে অর্ধশত প্রবাসী জেল খেটেছেন। সর্বশেষে প্রবাসীরা গত বছর ৫ আগস্টের আগে মাসব্যাপী রেমিট্যান্স পাঠানো বন্ধ করে পতিত সরকারের টনক নাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
রেমিট্যান্সের প্রবাহ বাড়ায় অন্তর্বর্তী সরকার ‘রিজার্ভে হাত না দিয়েই’ বৈদেশিক ঋণের কিস্তি পরিশোধ করেছে দাবি করে নাজির আহমদ বলেন, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে শুধু প্রয়োজন, সত্যিকারের সদিচ্ছা ও যথাযথ প্রতিশ্রুতি। এই কাজ বাস্তবায়নে দেশে যোগ্য ও প্রশিক্ষিত লোকবলের অভাব থাকলে সরকার পশ্চিমা বিশ্বে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্য থেকে বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নিতে পারে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রবাসীরা তাঁদের নিজ দেশের নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন উল্লেখ করে নাজির আহমদ বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারই পারে প্রবাসীদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে। বিগত ৫৪ বছর ধরে অসম্পন্ন থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিদের এই দাবি পূরণের এখনই উপযুক্ত সময়।’
এ সময় আয়োজকেরা প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিতে নির্বাচন কমিশনের দৃশ্যমান তৎপরতা, দ্রুত সময় ভোটার তালিকা প্রস্তুত ও যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ হাইকমিশনারকে রিটার্নিং অথবা প্রিসাইডিং কর্মকর্তা নিযুক্ত করে প্রয়োজনীয় বুথ সরবরাহ করে সরাসরি ভোটের ব্যবস্থা নিশ্চিত করাসহ পাঁচটি দাবি উপস্থাপন করেন।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, আইনজীবী মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রব স দ র ন শ চ ত কর সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যু সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব: সালাহউদ্দ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ইস্যুর সমাধান আলোচনার টেবিলেই সম্ভব।’’
তিনি মনে করেন, আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান এলে যেকোনো অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া ঠেকানো যাবে।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘‘আগামী নির্বাচনকে যদি অনিশ্চিত করা হয় বা বিলম্বিত করা হয়, তাহলে তার সুযোগ নেবে ফ্যাসিবাদী বা অসাংবিধানিক শক্তি। এর পরিণতি জাতি অতীতে বহুবার ভোগ করেছে। আমরা আবার সে পরিস্থিতি চাই না।’’
অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতা নিয়ে পৃথক এক প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘‘সুপ্রিম কোর্টের মতামতের ভিত্তিতেই সাংবিধানিকভাবে এই সরকার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সে দেওয়া সেই মতামত এখনো বহাল আছে। এর বিপরীতে সুপ্রিম কোর্ট কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। তাই এ বিষয়ে প্রশ্ন তোলা আসলে রাজনৈতিক বক্তব্য, এর কোনো আইনি ভিত্তি নেই।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘যেকোনো সাংবিধানিক আদেশ জারি হলে তা আগামীকাল বা পরশু চ্যালেঞ্জ হতে পারে। আমরা এমন খারাপ নজির জাতির সামনে আনতে চাই না। তাই সমাধানের বিকল্প প্রস্তাব উত্থাপন করেছি। সবাইকে বিবেচনায় নিতে আহ্বান জানাচ্ছি।’’
পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘‘রাজনৈতিক দলের আন্দোলনের অধিকার আছে। তবে পিআর পদ্ধতি চাপিয়ে দেওয়ার বিষয় নয়, শেষ পর্যন্ত জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।’’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘‘পিআর পদ্ধতিতে ঝুলন্ত পার্লামেন্টের ঝুঁকি থেকে যায়। তাতে রাষ্ট্র ও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ সম্ভব হয় না। আমরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে যেতে পারি না।’’
সালাহউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, ‘‘জনগণই হলো সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ। এই দেশের জনগণ মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে এবং বারবার গণতন্ত্রকে সংকট থেকে উদ্ধার করেছে।’’
আগামী সংসদে কিছু মৌলিক বিষয়ে সংশোধনের পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি বলেন, ‘‘আমরা কিছু বিষয়ে ইতোমধ্যে একমত হয়েছি। তবে, ঐকমত্য কমিশনের সনদের ভেতরে যেসব পরিবর্তন হবে, সেগুলোতে অবশ্যই গণভোট নিতে হবে।’’
ঢাকা/আসাদ/রাজীব