অকালে মাকে হারিয়েছেন ইতি গৌড়। বাবাও অসুস্থ। সংসারে অভাব লেগেই আছে। তবে, এসব বাধা আটকাতে পারেনি ইতির পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার স্পৃহাকে। চা বাগানের টিলায় দারিদ্র্যের মধ্যে বেড়ে ওঠা ইতি সব বাধা ডিঙিয়ে একের পর এক একাডেমিক সাফল্যের সিঁড়ি পেরিয়ে পৌঁছে গেছেন দেশের শীর্ষ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল চা বাগানের সবুজ টিলায় ইতি গৌড়ের বাড়ি। পিছিয়ে পড়া চা শ্রমিক জনগোষ্ঠী থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়ে প্রশংসায় ভাসছেন ইতি। তার সাফল্যে চা বাগানের বাসিন্দারাও খুশি। ইতির সাফল্যকে অনুপ্রেরণা হিসেবে দেখছেন তারা। তাকে অভিনন্দন জানাতে আসছেন অনেকেই। বরমচাল চা বাগান থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার ক্ষেত্রে ইতিই প্রথম। 

সরেজমিনে বরমচাল চা বাগানে গেলে কথা হয় সেখানকার অনেক বাসিন্দার সঙ্গে। তবে, ইতি গণমাধ্যমের সামনে আসতে নারাজ। 

স্থানীয় শিক্ষানুরাগী গণেশ কানু বলেছেন, “ইতি যে সফলতা অর্জন করেছে, এতে আমরা আনন্দিত। বরমচাল চা বাগানের জন্য সবচেয়ে সৌভাগ্যের বিষয়। ইতি গৌড় অবহেলিত স্থান থেকে উঠে এসেছে। সে আমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। সে এর আগে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যলয়ে সুযোগ পেয়েছিল। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়।” 

ইতির বাবা শংকর গৌড় বলেন, “আমার মেয়ে অনেক বড় হবে, এটাই আমার স্বপ্ন।”

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপংকর ঘোষ বলেন, “অভাব-অনটনকে পিছে ফেলে ইতি গৌড় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। চা শ্রমিকের সন্তানের জন্য এটি বড় সফলতা।” 

চা বাগানের নিয়মিত শ্রমিকের খাতায় ইতির নাম লেখা থাকলেও সে নাম মুছে যাবে মেধার টানে। ইতির নাম এখন দেশের সর্বেচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাতায় লেখা হয়ে গেছে। 

দুই বছর আগে ইতির মা সুমিত্রা গৌড় মারা যান। বাবা শংকর গৌড় মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে অসুস্থ হয়ে আছেন। ইতির মাসি ষষ্ঠী গৌড় পরিবারের দেখাশোনা করেন। 

ঢাকা/আজিজ/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

চা শ্রমিকদের অনুপ্রেরণা ইতি গৌড় 

অকালে মাকে হারিয়েছেন ইতি গৌড়। বাবাও অসুস্থ। সংসারে অভাব লেগেই আছে। তবে, এসব বাধা আটকাতে পারেনি ইতির পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার স্পৃহাকে। চা বাগানের টিলায় দারিদ্র্যের মধ্যে বেড়ে ওঠা ইতি সব বাধা ডিঙিয়ে একের পর এক একাডেমিক সাফল্যের সিঁড়ি পেরিয়ে পৌঁছে গেছেন দেশের শীর্ষ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল চা বাগানের সবুজ টিলায় ইতি গৌড়ের বাড়ি। পিছিয়ে পড়া চা শ্রমিক জনগোষ্ঠী থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়ে প্রশংসায় ভাসছেন ইতি। তার সাফল্যে চা বাগানের বাসিন্দারাও খুশি। ইতির সাফল্যকে অনুপ্রেরণা হিসেবে দেখছেন তারা। তাকে অভিনন্দন জানাতে আসছেন অনেকেই। বরমচাল চা বাগান থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার ক্ষেত্রে ইতিই প্রথম। 

সরেজমিনে বরমচাল চা বাগানে গেলে কথা হয় সেখানকার অনেক বাসিন্দার সঙ্গে। তবে, ইতি গণমাধ্যমের সামনে আসতে নারাজ। 

স্থানীয় শিক্ষানুরাগী গণেশ কানু বলেছেন, “ইতি যে সফলতা অর্জন করেছে, এতে আমরা আনন্দিত। বরমচাল চা বাগানের জন্য সবচেয়ে সৌভাগ্যের বিষয়। ইতি গৌড় অবহেলিত স্থান থেকে উঠে এসেছে। সে আমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। সে এর আগে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যলয়ে সুযোগ পেয়েছিল। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়।” 

ইতির বাবা শংকর গৌড় বলেন, “আমার মেয়ে অনেক বড় হবে, এটাই আমার স্বপ্ন।”

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপংকর ঘোষ বলেন, “অভাব-অনটনকে পিছে ফেলে ইতি গৌড় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছে। চা শ্রমিকের সন্তানের জন্য এটি বড় সফলতা।” 

চা বাগানের নিয়মিত শ্রমিকের খাতায় ইতির নাম লেখা থাকলেও সে নাম মুছে যাবে মেধার টানে। ইতির নাম এখন দেশের সর্বেচ্চ বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খাতায় লেখা হয়ে গেছে। 

দুই বছর আগে ইতির মা সুমিত্রা গৌড় মারা যান। বাবা শংকর গৌড় মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের কারণে অসুস্থ হয়ে আছেন। ইতির মাসি ষষ্ঠী গৌড় পরিবারের দেখাশোনা করেন। 

ঢাকা/আজিজ/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ