বিএনপি চেয়ারপাসনের উপদেষ্টা ও রাজশাহী বিভাগীয় সমন্বয়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম বলেছেন, “ বিএনপি হলো স্বাধীনতা পক্ষের দল, গণতন্ত্রের পক্ষের দল। এই দেশকে যদি রক্ষা করতে হয় বিএনপি ছাড়া কোনো বিকল্প নাই। দেশের সংকট এখনো কাটে নাই। ওই ফ্যাসিস্ট সীমান্তের অপর পাশে বসে আছে। তিনি (শেখ হাসিনা) বলেন, যে কোনো সময় নাকি দেশে ঢুকে পড়বেন।’’

শুক্রবার (৪ জুলাই) বিকালে পাবনার ভাঙ্গুড়া সরকারি হাজী জামাল উদ্দিন ডিগ্রি অনার্স কলেজ মাঠ চত্বরে পাবনা-৩ (চাটমোহর-ভাঙ্গুড়া-ফরিদপুর) এলাকার বিএনপি ও সহযোগী সংগঠন কর্তৃক আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

আব্দুস সালাম বলেন, ‘আমার ভুয়া ভুয়া স্লোগান সারা দেশে ভাইরাল হয়েছে। আরো একটি দলকে ভুয়া বানাতে হবে। যারা বিএনপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। যারা বিএনপির সঙ্গে বিরোধিতা করে বিএনপির ক্ষতি করতে চায়। তাদেরকেও ভুয়া প্রমাণিত করতে হবে। তারা বিএনপির কিছুই করতে পারবে না। কারণ জনগণ বিএনপির পক্ষে আছে। আমার ধর্ম, আমার দাড়ি, আমার টুপি এবং প্রত্যেক ধর্মের মানুষকে যদি রক্ষা করতে হয় তাহলে বিএনপির বিকল্প নেই।”

আরো পড়ুন:

‘নির্বাচন হলেই তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেবেন’

সদরঘাটে চাঁদাবাজির অভিযোগে তেল ব্যবসায়ীর সংবাদ সম্মেলন

তিনি বলেন, “বেগম খালেদা জিয়া বিএনপি নেতাকর্মীদের ফেলে পালিয়ে যাননি। বেগম খালেদা জিয়া নিশ্চিত মৃত্যু ভেবেও দলের নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন।  আজ কেন আপনারা তাকে রেখে দূরে সরে যাবেন। ভারতকে ঠেকাতে হলে অন্য কোনো দল দিয়ে হবে না।” 

বিএনপির এই নেতা বলেন, “কয়েকদিন পর পর সীমান্ত দিয়ে ভারত এ দেশে পুশিং ইন করছে। তারা কোনো এজেন্সির লোক কি না তো আমরা জানি না। ভারতকে এখন পর্যন্ত এই সরকার একটা কঠিন ধমক পর্যন্ত দিতে পারেনি। কঠিন ধমক দিতে হলে বিএনপিকেই দরকার।” 

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য পাবনা জেলা বিএনপি আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব। বক্তব্য দেন- জাতীয়তাবাদী কৃষক দল-এর সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল, কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন। 

ভাঙ্গুড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক নূর মুজাহিদ স্বপনের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব জাফর ইকবাল হিরোকের সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে আরো বক্তব্য দেন- পাবনা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট মাকসুদুর রহমান মাসুদ খন্দকার, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, আনিসুল হক বাবু, আবু ওবায়দা শেখ তুহিন, নুর মোহাম্মদ মাসুম বগা। 

সভায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আরিফা সুলতানা রুমা, চাটমোহর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব হাসাদুল ইসলাম হীরা, ফরিদপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাকিম খান, চাটমোহর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুর রহিম কালু, ভাঙ্গুড়া উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল আজিজ, যুগ্ম আহ্বায়ক আবু হেনা মোস্তফা কামাল রেজা উপস্থিত ছিলেন।

ছবি ক্যাপশনঃ পাবনা-৩ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনকে দলীয় প্রতীক তুলে দিচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপাসনের উপদেষ্টা ও রাজশাহী অঞ্চলের বিএনপির সমন্বয়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সালাম।

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ ব এনপ র স উপজ ল সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারে থাকবেন নাকি ভোটে নামবেন, মাহফুজ সিদ্ধান্তহীন, কোন দিকে যাবেন আসিফ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল হতে পারে আগামী সপ্তাহে। শিক্ষার্থী প্রতিনিধি হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকারে থাকা দুই উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া পদত্যাগ করে ভোটের লড়াইয়ে অংশ নেবেন, নাকি সরকারে থেকে যাবেন—এ নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা চলছে। যদিও দুই উপদেষ্টার কেউ এখন পর্যন্ত এ নিয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলেননি।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম পদত্যাগ ও নির্বাচন করার বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেননি বলে গত রোববার রাতে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন। অন্যদিকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ঢাকা থেকে ভোট করবেন, সেটা আগেই জানিয়েছেন। তবে তিনি বিএনপি, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), নাকি স্বতন্ত্র—কোন পথে হাঁটবেন, সেটা এখনো খোলাসা করেননি। তাঁর রাজনৈতিক ঠিকানাও এখনো নিশ্চিত হয়নি বলে জানা গেছে।

ঢাকায় আসিফ মাহমুদের সম্ভাব্য নির্বাচনী আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা না করা, তাঁর সমর্থকদের মুখে এনসিপির সমালোচনা এবং বিএনপির প্রতি সহানুভূতিশীল মনে হতে পারে এমন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ—এসব বিবেচনা করে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অনেকেই মনে করছেন, আসিফ মাহমুদ এনসিপিতে না গিয়ে বিএনপির প্রার্থী হতে পারেন।

এদিকে দুই উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে সম্প্রতি আবারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র থেকে জানা গেছে। এর আগেও সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে তাঁদের পদত্যাগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। তখন তাঁরা আরও সময় চেয়েছিলেন। এরপর আরও একাধিকবার পদত্যাগের পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল বলে জানা গেছে।

এর মধ্যে আসিফ মাহমুদের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, তিনি জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সরকার থেকে পদত্যাগ করতে পারেন।

তবে মাহফুজ আলমের ঘনিষ্ঠ কোনো কোনো সূত্র বলছে, তিনি পদত্যাগ না করে এই সরকারের শেষ সময় পর্যন্ত উপদেষ্টা পরিষদে থেকেও যেতে পারেন। সে ক্ষেত্রে তিনি নির্বাচনে অংশ নেবেন না। আর যদি নির্বাচনে অংশ নেন, তাহলে তফসিলের আগে সরকার থেকে পদত্যাগ করবেন।

এর মধ্যে আসিফ মাহমুদের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, তিনি জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই সরকার থেকে পদত্যাগ করতে পারেন।

এদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) শনিবার বলেছেন, ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে, অর্থাৎ আগামী সপ্তাহে নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হতে পারে।

মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদ জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ নেতা ছিলেন। তাঁদের আন্দোলনের সহকর্মীরা গত ফেব্রুয়ারিতে এনসিপি গঠন করেন।

আসিফ মাহমুদ ঢাকা-১০ আসন (ধানমন্ডি, কলাবাগান, নিউমার্কেট ও হাজারীবাগ) থেকে নির্বাচন করতে পারেন বলে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা আছে। অন্যদিকে মাহফুজ আলম যদি নির্বাচন করেন, সে ক্ষেত্রে তাঁর গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর-১ আসন থেকে প্রার্থী হতে পারেন।

ঢাকা-১০ ও লক্ষ্মীপুর-১ আসনে বিএনপি এখনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি। সেটি সরকারের এ দুই তরুণ উপদেষ্টার জন্যই কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে জামায়াত এ দুই আসনেই প্রার্থী দিয়েছে।

আসিফ মাহমুদ ঢাকা-১০ আসন (ধানমন্ডি, কলাবাগান, নিউমার্কেট ও হাজারীবাগ) থেকে নির্বাচন করতে পারেন বলে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা আছে। অন্যদিকে মাহফুজ আলম যদি নির্বাচন করেন, সে ক্ষেত্রে তাঁর গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুর-১ আসন থেকে প্রার্থী হতে পারেন।

এনসিপির একাধিক দায়িত্বশীল নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দলটিতে মাহফুজ আলম ও আসিফ মাহমুদের প্রভাব রয়েছে। দুজনের চাওয়া ছিল, বিএনপির সঙ্গে আসন সমঝোতা বা জোট করবে এনসিপি। এ নিয়ে অনানুষ্ঠানিক কিছু আলাপ–আলোচনাও হয়েছিল। তবে এখন সেটার আর সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।

বরং এনসিপি তৃতীয় একটি রাজনৈতিক জোট গঠনের প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। এ জোটের জন্য এনসিপির সঙ্গে আলোচনায় আছে এবি পার্টি, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, গণ অধিকার পরিষদ ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি)। যদিও ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতাদের উদ্যোগে গঠিত রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম আপ বাংলাদেশকে এ জোটে রাখা নিয়ে এনসিপির দিক থেকে আপত্তি রয়েছে। আবার জোটে আসা নিয়ে গণ অধিকার পরিষদের নেতাদের মধ্যেও দ্বিধাবিভক্তি রয়েছে। এ দুটি কারণে নতুন জোট গঠনের বিষয়টি এগোচ্ছে না।

উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ভাই মাহবুব আলম জানান, তাঁর ভাইয়ের সরকার থেকে পদত্যাগ করে নির্বাচন করার সম্ভাবনা রয়েছে। তা না হলে তিনি নিজেই এনসিপি থেকে নির্বাচন করতে চান। এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।কোন দিকে যাবেন আসিফ মাহমুদরাজধানীর ধানমন্ডি থানা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে এই এলাকার ভোটার হওয়ার আবেদন করার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। ৯ নভেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ