চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে একটি মালবাহী ট্রেনের গার্ড রেক (ট্রেনের শেষের বগি, যেখানে বসে নিরাপত্তাকর্মী ট্রেনের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন) লাইনচ্যুত হয়েছে। আজ শুক্রবার বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে উপজেলার উথলীতে রেলস্টেশন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনার পর খুলনা থেকে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে চলাচলকারী সারা দেশের সব ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাত সাড়ে আটটায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সেখানে কোনো উদ্ধারকারী ট্রেন পৌঁছায়নি। এতে খুলনা থেকে উত্তরাঞ্চলগামী এবং ঢাকা ও উত্তরাঞ্চল থেকে খুলনাগামী বিভিন্ন ট্রেন বিভিন্ন স্টেশনে আটকা পড়ায় ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খুলনার মোংলা বন্দর থেকে ৩২টি ট্যাংকারভর্তি মোলাসেস (চিটাগুড়) নিয়ে মালবাহী ট্রেনটি সিরাজগঞ্জে যাচ্ছিল। ট্রেনটি চুয়াডাঙ্গার উথলী রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রম করার আগেই গার্ড রেকটি লাইনচ্যুত হয়। এরপর সেখানে ট্রেন থামিয়ে লাইনচ্যুত রেকটি উদ্ধারে কাজ শুরু করে কর্তৃপক্ষ।

এদিকে উথলীতে ট্রেনের গার্ড রেক লাইনচ্যুত হওয়ায় খুলনা থেকে রাজশাহীগামী আন্তনগর সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে এবং ঢাকা থেকে খুলনাগামী নকশিকাথা মেইল ট্রেনটি চুয়াডাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনে থামিয়ে রাখা হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই ট্রেনের যাত্রীরা।

উথলী রেলস্টেশনের মাস্টার মিন্টু কুমার রায় বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, উথলীতে ট্রেনের রেক লাইনচ্যুত হওয়ায় স্টেশনের ওপর দিয়ে সারা দেশের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। দুর্ঘটনার বিষয়টি রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় কার্যালয়কে জানানো হয়েছে। সেখান থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন রওনা দিয়েছে। উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত এ পথে সব ধরনের ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ল ইনচ য ত ট র নট

এছাড়াও পড়ুন:

পেরুর প্রেসিডেন্ট নিজের বেতন দ্বিগুণ করায় সাধারণ মানুষের ক্ষোভ

পেরুর প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তে নিজের মাসিক বেতন দ্বিগুণ বাড়িয়ে প্রায় ১০ হাজার ডলার (প্রায় ১২ লাখ ২৬ হাজার টাকা) করায় দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অনেকেই বলছেন, এই অর্থ দরিদ্র মানুষের জন্য ব্যয় করাই ছিল অধিক যুক্তিযুক্ত।

স্থানীয় সময় গত বুধবার রাতে পেরুর অর্থমন্ত্রী জানান, প্রেসিডেন্ট বলুয়ার্তের নতুন বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ হাজার ৫৬৮ সোলেস (প্রায় ১০ হাজার ৬৭ ডলার), যা দেশটির ন্যূনতম মজুরির প্রায় ৩০ গুণ।

প্রেসিডেন্টের আগের বেতন ছিল ১৫ হাজার ৬০০ সোলেস (প্রায় ৪ হাজার ৪০০ ডলার), যা ২০০৬ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট অ্যালেন গার্সিয়া নির্ধারণ করেছিলেন। এর আগে প্রেসিডেন্টের বেতন ছিল ৪২ হাজার সোলেস।

সরকার বলেছে, লাতিন আমেরিকার ১২টি দেশের মধ্যে প্রেসিডেন্ট বলুয়ার্তের আগের বেতন ছিল ১১তম স্থানে, যা শুধু বলিভিয়ার প্রেসিডেন্টের চেয়ে বেশি। রয়টার্স সরকারের এ দাবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি। তবে গত বছর রিও টাইমসের এক প্রতিবেদনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর প্রেসিডেন্টদের বেতন ৩ হাজার ডলার থেকে শুরু করে ২২ হাজার ডলার বলে উল্লেখ করা হয়।

এই সিদ্ধান্তকে ‘একেবারে রসিকতা’ বলে মন্তব্য করেন রাজধানী লিমায় একটি পত্রিকার স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পেনশনভোগী বাসিন্দা রোলান্দো ফনসেকা। তিনি বলেন, ‘পেরুজুড়ে চরম দারিদ্র্য বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্টের উচিত সবার সামনে ভালো দৃষ্টান্ত স্থাপন করা।’

বলুয়ার্তের জনপ্রিয়তা বর্তমানে তলানিতে নেমে এসেছে। সাম্প্রতিক এক জরিপ অনুযায়ী, তাঁর সমর্থন মাত্র ২ থেকে ৪ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। তাঁর পূর্বসূরি পেদ্রো কাস্তিয়ো কংগ্রেস ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করায় তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয় এবং গ্রেপ্তার করা হয়।

ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বলুয়ার্তে নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকে শুরু করে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে ৫০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় তাঁর ভূমিকা নিয়ে তদন্ত হয়েছে। তবে ৬৩ বছর বয়সী এই রাজনীতিক সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

পেরুর দারিদ্র্যের হার এখনো প্রায় ৩০ শতাংশের কাছাকাছি, যা করোনা মহামারির সময় বেড়ে গিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে অর্থনীতি কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও জীবনমানে পরিবর্তন আসেনি বলেই মনে করছেন দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির সাধারণ মানুষ।

প্রসঙ্গত, পেরু ২০১৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ছয়জন প্রেসিডেন্ট পেয়েছে, যাঁদের মধ্যে তিনজনই এখন কারাগারে। প্রেসিডেন্ট বলুয়ার্তের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ২০২৬ সালের জুলাইয়ে। এর আগে চলতি বছরের এপ্রিলে দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ