জুলাই যোদ্ধার বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিকর ভিডিও দিয়ে অপপ্রচার শনাক্ত: বাংলাফ্যাক্ট
Published: 4th, July 2025 GMT
জুলাই যোদ্ধার বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলকভাবে তৈরি করা একটি বিভ্রান্তিকর ভিডিওর অপপ্রচার শনাক্ত করেছে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি)-এর ফ্যাক্ট চেক ও মিডিয়া রিসার্চ টিম ‘বাংলাফ্যাক্ট’।
বাংলাফ্যাক্ট অনুসন্ধান টিম জানিয়েছে, ভিডিওটি আসলে আওয়ামী লীগের এক সাবেক সংসদ সদস্যের বাড়ি থেকে সেনাবাহিনীর অস্ত্র উদ্ধারের, যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে জুলাই যোদ্ধার সঙ্গে জড়িয়ে প্রচার করা হচ্ছে।
এক বিবৃতিতে বাংলাফ্যাক্ট জানায়, সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ সেনাবাহিনী এক জুলাই যোদ্ধার কাছ থেকে স্নাইপার রাইফেল উদ্ধার করেছে বলে দাবি করে একটি ভিডিও প্রচার করা হয়। কিন্তু যাচাই করে দেখা যায়, ভিডিওটি কোন জুলাই যোদ্ধার নয়। এটি আসলে আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি রিফাত আমিনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র উদ্ধার ঘটনার।
আরো পড়ুন:
পাবিপ্রবিতে মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজমবিষয়ক কর্মশালা
সাগর-রুনিকে ঘিরে নির্মিত ‘অমীমাংসিত’ পেল ছাড়পত্র
অনুসন্ধান টিম আরো জানায়, ভিডিওতে থাকা ‘নাগরিক টিভি’-র লোগো থেকে যাচাই করে তাদের ইউটিউব চ্যানেলে গত ১৫ জুন প্রকাশিত একই ভিডিও পাওয়া যায়। সেখানে দেখা যায়, ঘটনার দিন সাতক্ষীরায় রিফাত আমিনের বাড়িতে সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ টিম অভিযান চালায় এবং অস্ত্রসহ বিভিন্ন অবৈধ সামগ্রী উদ্ধার করে।
পরবর্তীতে দেশের একাধিক গণমাধ্যমেও একই ঘটনার খবর প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদগুলোতে বলা হয়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সাতক্ষীরা শহরের মুনজিতপুর এলাকায় আওয়ামী লীগের সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রিফাত আমিনের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। সেখানে তার ছোট ছেলে সাফায়েত সরোয়ার রুমনকে আটক করা হয়। অভিযান থেকে একটি রাইফেল, ৩০০ পিস ইয়াবা, বিদেশি মদ এবং মাদকসেবনের সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
বাংলাফ্যাক্টের অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে, সাবেক এমপির বাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধারের ভিডিওকে জুলাই যোদ্ধার ঘটনা বলে প্রচার করা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মিথ্যা।
বাংলাদেশে চলমান গুজব, ভুয়া খবর ও অপতথ্যের বিরুদ্ধে লড়াই করে জনগণের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছে বাংলাফ্যাক্ট।
সূত্র: বাসস
ঢাকা/এসবি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
তেজগাঁওয়ে গাড়ি আটকে দেড় কোটি টাকা মূল্যের বিদেশি মুদ্রা ডাকাতিতে ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মী জড়িত
রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রাইভেট কার আটকে এম এম আয়াত ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস নামের একটি প্রতিষ্ঠানের ১ কোটি ৬৪ লাখ টাকা মূল্যের বিদেশি মুদ্রা ডাকাতির ঘটনায় ওই প্রতিষ্ঠানের এক কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। তুহিন নামের ওই কর্মীই সেদিন প্রাইভেট কারে করে বিদেশি মুদ্রাগুলো পল্টন থেকে উত্তরায় যাচ্ছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, তুহিনকে আটকের পর তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে লুটে নেওয়া বিদেশি মুদ্রার মধ্যে ৪ লাখ সৌদি রিয়াল উদ্ধার এবং ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এসব তথ্য জানান।
বিদেশি মুদ্রা ডাকাতির এ ঘটনায় তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি মামলা হয়। তাতে বলা হয়, মেসার্স এম এম আয়াত ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের কর্মী তুহিন গত মঙ্গলবার নগদ ৪ লাখ ৯১ হাজার ৫০০ সৌদি রিয়াল, ৪০০ ওমানি রিয়াল, ৩০ কুয়েতি দিনার এবং ১২ হাজার ৩৫০ সংযুক্ত আরব আমিরাতের দিরহাম নিয়ে প্রাইভেট কারে করে পল্টন থেকে উত্তরায় যাচ্ছিলেন। সন্ধ্যার দিকে তিনি তেজগাঁওয়ের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট–সংলগ্ন কেন্দ্রীয় ঔষধাগারের (সিএমএসডি) প্রধান ফটকের উত্তর পাশে যাত্রীছাউনির সামনে পৌঁছান। তখন ডাকাত দল প্রাইভেট কারটি ঘিরে ফেলে। অস্ত্রের মুখে তুহিনের কাছ থেকে বিদেশি মুদ্রাগুলো লুট করেন তারা। অজ্ঞাতপরিচয় ১০-১২ জনের একটি দল মুখোশ পরে দেশি অস্ত্র দেখিয়ে ওই ডাকাতি করে।
মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা বলেন, মামলার তদন্তে নেমে পুলিশ আয়াত ট্যুরসের কর্মী তুহিনের যোগসাজশ পায়। তাঁকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, তুহিনসহ অন্যরা কয়েক দিন আগে ‘গল্প সাজিয়ে’ ডাকাতির পরিকল্পনা করে। সেই অনুযায়ী, তুহিন বায়তুল মোকাররম এলাকা থেকে ভাড়া করা প্রাইভেট কারযোগে বিদেশি মুদ্রাভর্তি লাগেজ নিয়ে উত্তরা যাওয়ার পথে তার লাইভ লোকেশন হোয়াটসঅ্যাপে ডাকাতদের কাছে পাঠান।
গাড়িটি তেজগাঁওয়ে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার এলাকায় যাত্রীছাউনির সামনে পৌঁছালে প্রাইভেট কারের গতিরোধ করে বিদেশি মুদ্রাভর্তি লাগেজ নিয়ে পালিয়ে যায় ডাকাত দল। তারা মুদ্রাগুলো নিজেদের মধ্যে ‘ভাগ বাঁটোয়ারা’ করে ‘আত্মগোপনে’ চলে যায়।
তুহিনের সঙ্গে গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন তালহা নূর (৩৫), শারমিন (২৫), মো. শাহিন শিকদার (৩৭), ইয়াসিন আরাফাত (৩৬), মো. রফিকুল ইসলাম (৩৬), মো. শুভ হাওলাদার (২৫), মো. আবদুল্লাহ আল মামুন (২৫), মো. আরিয়ান (১৯), মো. সাব্বির হোসেন (২০), মো. জাহিদুল ইসলাম ওরফে সোহাগ (২৫), মো. জয়(২৩) ও মো. বিজয় (২০)।