চলতি মাসেই খুলতে পারে চিলমারী-হরিপুর ব্রিজ
Published: 4th, July 2025 GMT
স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বলেছেন, “এলজিইডি এত বড় ব্রিজ আগে কোথাও নির্মাণ করেনি। আমরা এই ব্রিজের সব প্রকার কাজ পরিদর্শন করেছি। ইতোমধ্যে ব্রিজের ৯৬ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। আগামী ১০ হতে ১৫ দিনের মধ্যে বাকি কাজ শেষ হবে।”
তিনি বলেন, “জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে রংপুর জেলা একটি উল্লেখযোগ ভূমিকা পালন করেছে। আবু সাঈদ আমাদের একজন স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব। এ কারণে মাননীয় উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলে চলতি মাসের শেষের দিকে হরিপুর-চিলমারী তিস্তা সেতু উদ্বোধনের তারিখ নিধারণ করে আপনাদের (গণমাধ্যম) জানানো হবে। উত্তরবঙ্গের মানুষের ভাগ্য বদলাতে এই ব্রিজের গুরুত্ব অনেক বেশি।”
শুক্রবার (৪ জুলাই) গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের তিস্তা নদীর ওপর ১৪৯০ মিটার তিস্তা পিসি গার্ডার সেতু পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদেও বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
বৌলতলী সেতু পাল্টে দিচ্ছে ২০ গ্রামের চিত্র
মামলার উপাদান থাকা সত্ত্বেও এফআরটি দিয়ে অভিযুক্তদের নিষ্পত্তি
মো.
এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুর রশীদ বলেন, “শুধুমাত্র ব্রিজের ওপরে লাইটিংয়ের কাজ এবং আর্চ ব্রিজের কাজ একটু বাকি রয়েছে। অন্যান্য কাজ সম্পন্ন হয়েছে।”
এ সময় অন্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন- স্থানীয় সরকার বিভাগের যুগ্ম সচিব সামছুল ইসলাম, উপদেষ্টার একান্ত সচিব (যুগ্ম সচিব) মো. আবুল হাসান, প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুল মালেক, রংপুর অঞ্চলের তত্ত্বাবধায় প্রকৌশলী মো. আনিছুল ওয়াহাব খান, গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোযাজ্জম আহমদ, গাইবান্ধাভ এলজিইডির নিবার্হী প্রকৌশলী উজ্জ্বল চৌধুরী, সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী অফিসার রাজ কুমার বিশ্বাস, সচিবের একান্ত সচিব মো. আব্দুল্লাহ আল নোমান সরকার, উপজেলা প্রকৌশলী তপন কুমার চক্রবর্তী।
এর আগে, সচিব ও তার সফরসঙ্গীরা হরিপুর-চিলমারি ব্রিজ পয়েন্টে এসে প্রকল্প কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর তারা ব্রিজের গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের হরিপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী পয়েন্ট পরিদর্শন করে কাজের অগ্রগতি দেখেন।
এলজিইডি সূত্র জানায়, সৌদি আরব সরকারের অর্থায়নে প্রায় ৮৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে ১,৪৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতু। এলজিইডির তত্ত্বাবধানে চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন সেতুটির নির্মাণ কাজ পরিচালনা করছে। সেতুর উভয় পাশে ৮৬ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক এবং প্রায় ৩.৫ কিলোমিটার নদী শাসন কাজ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
ঢাকা/মাসুম/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
গাইবান্ধায় চোর সন্দেহে মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় তিস্তা নদীর দুর্গম চরাঞ্চলে গরু চোর সন্দেহে আব্দুস সালাম (৫০) নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় দুলালী বেগম (৪৩) নামে এক নারীকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার (১ নভেম্বর) সকালে উপজেলার বেলকা ইউনিয়নের বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের তিস্তার চরে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
আরো পড়ুন:
গাজীপুরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা
ঝিনাইদহে কৃষকের হাত-পা ও গলা বাঁধা মরদেহ উদ্ধার
নিহত আব্দুস সালাম একই ইউনিয়নের রামডাকুয়া গ্রামের ওমেদ আলীর ছেলে। স্বজনরা জানান, সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছিল।
আটক দুলালী বেগম বেলকা নবাবগঞ্জ গ্রামের আব্দুল গণি মিয়ার স্ত্রী।
সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, ‘‘খবর পাওয়ার পর পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে। হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার দুলালী বেগম ছাড়াও যারা জড়িত ছিল, তা শনাক্তে তদন্ত চলছে।’’
নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) গভীর রাতে সালাম আব্দুল গণি মিয়ার গোয়ালঘরে প্রবেশ করে। বিষয়টি টের পেয়ে দুলালী বেগম স্বামী ও আশপাশের লোকজনকে খবর দেয়। স্থানীয়রা সালামকে রশি দিয়ে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে। একপর্যায়ে তিনি অচেতন হয়ে পড়লে তাকে পুকুরপাড়ে রেখে দেওয়া হয়। ভোরের দিকে আবার তাকে পাশের গোয়ালঘরে নিয়ে নির্যাতন চালানো হয়। এতে ঘটনাস্থলে তার মৃত্যু হয়।
অভিযুক্ত আব্দুল গণি মিয়া বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে শ্যালো মেশিন চুরি হয়ে গেছে। রাতে গোয়ালে সালামকে দেখি। তাই প্রতিবেশীদের খবর দেই। পরে তারা এসে মারধর করে।’’
আটক দুলালী বেগম বলেন, ‘‘এক সপ্তাহ আগে মেশিন হারিয়েছে। রাতে শব্দ শুনে দেখি গোয়ালের বাঁধন খুলছে। পরে লোকজন এসে মারধর করে।’’
নিহতের স্বজনরা জানান, আব্দুস সালাম দীর্ঘদিন ধরে মানসিকভাবে ভারসাম্যহীন ছিলেন এবং মানুষের সাহায্যে জীবন চলত। তার বিরুদ্ধে আগে কখনো চুরির অভিযোগ ওঠেনি। তারা দাবি করেন, পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতের তিনটি ছোট ছেলে রয়েছে, বাবাকে হারিয়ে তারা অসহায় অবস্থায় পড়েছে।
বেলকা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইব্রাহিম খলিলুল্যাহ জানান, ঘটনাস্থল দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় খবর পেতে দেরি হয়। স্বজনদের বক্তব্য অনুযায়ী নিহত ব্যক্তি মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) বিদ্রোহ কুমার কুণ্ডু, সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ঢাকা/মাসুম/বকুল