স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সাবেক দুই পিও, বরখাস্ত এনসিপি নেতাকে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ
Published: 21st, May 2025 GMT
স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগমের সাবেক ব্যক্তিগত কর্মকর্তা (পিও) তুহিন ফারাবি (ছাত্র প্রতিনিধি), ডা. মাহমুদুল হাসান ও এনসিপির সাময়িক বরখাস্ত যুগ্ম সদস্য সচিব গাজী সালাউদ্দীন তানভীরকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে কমিশনের বিশেষ অনুসন্ধান ও তদন্ত সংক্রান্ত দু'টি শাখার কর্মকর্তারা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
তাদের জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে দুদকের জনসংযোগ বিভাগ। এর মধ্যে তুহিন ফারাবি ও গাজী সালাউদ্দীনকে গত মঙ্গলবার ডাকা হয়েছিল। স্বাস্থ্য উপদেষ্টার সাবেক ওই দুই পিও একদিন পর হাজির হয়েছেন।
জানা গেছে, উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সাবেক এপিএস মোয়াজ্জেম হোসেনকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার ডাকা হয়েছে।
তাদের বিরুদ্ধে তদবির, চাঁদাবাজি, টেন্ডার বাণিজ্যসহ নানা অনিয়ম, দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এইসব অভিযোগ সম্পর্কে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাদেরকে তলব করা হয় গত ১৫ মে।
দুদকের প্রাথমিক অনুসন্ধানে তাদের নামে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। জিজ্ঞাসাবাদকালে তাদের ওইসব সম্পদের উৎস সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়।
দুর্নীতির অনুসন্ধান করে তাদেরকে আইনের আওতায় আনার জন্য কিছুদিন ধরে বিভিন্ন মহল থেকে সরকারের প্রতি দাবি জানানো হচ্ছে। গত ১৫ মে ঢাকার সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে এই দাবিতে সমাবেশ করে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ।
তুহিন ফারাবির বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য উপদেষ্টার দফতরে কাজ করার সময় ক্ষমতার অপব্যবহার, তদবির বাণিজ্য, চাঁদাবাজি, টেন্ডার বাণিজ্যসহ নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে নামে-বেনামে শত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাকে নিজের এবং স্ত্রী ও সন্তানদের জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, তার ও স্ত্রীর আয়করের হালনাগাদ নথির সত্যায়িত ফটোকপি, নিজের ও স্ত্রী, সন্তানদের নামে পরিচালিত ব্যাংক হিসাবের বিবরণী জমা দিতে বলা হয়েছিল। ডা.
গাজী সালাউদ্দীন তানভীরকে জাতীয় পরিচয়পত্রের সত্যায়িত ফটোকপিসহ হাজির হতে বলা হয়েছিল। সাবেক এপিএস মোয়াজ্জেম হোসেনকে তার নিজের, স্ত্রী ও সন্তানদের জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট (যদি থাকে), আয়কর নথি, ব্যাংক হিসাবের হিসাব বিবরণীসহ হাজির হতে বলা হয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ব স থ য উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
তুলা আমদানিতে কর বসিয়ে প্রতিবেশী দেশের স্বার্থ রক্ষা কি না, প্রশ্ন বস্ত্রকলমালিকদের
তুলা আমদানির ওপর সম্প্রতি ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর (এআইটি) আরোপ করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। প্রতিবেশী দেশের স্বার্থ রক্ষার জন্য এই নিয়ম করা হয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন বস্ত্রকলমালিকেরা।
আজ শনিবার রাজধানীর গুলশান ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বস্ত্রকলের মালিকদের সংগঠন বিটিএমএ নেতারা এ প্রশ্ন তোলেন। একই সঙ্গে তাঁরা অনতিবিলম্বে আগামী সোমবারের মধ্যে এই অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, ‘বাংলাদেশে আমার নিজের কারখানায় তুলা থেকে উৎপাদিত সুতার চেয়ে ভারত থেকে সুতা আমদানি করতে কম খরচ হবে। তাহলে আমরা নিয়মনীতি কি পার্শ্ববর্তী দেশকে সচ্ছল করার জন্য? তাদের কর্মসংস্থান বাড়ানোর জন্য করছি? সরকার কি নিরলসভাবে কাজ করছে ওদের স্বার্থ রক্ষার্থে; এ বিষয়টি একটু ভাবার প্রয়োজন রয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে ২ শতাংশ অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহার ছাড়াও দেশি বস্ত্রকলে উৎপাদিত তুলার সুতা ও কৃত্রিম আঁশ এবং অন্যান্য আঁশের সংমিশ্রণে তৈরি সুতার ওপর উৎপাদন পর্যায়ে কেজিপ্রতি সুনির্দিষ্ট কর ৫ টাকা অব্যাহতি প্রদানের সুপারিশ করেছে বিটিএমএ।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন, অমল পোদ্দার, হোসেন মেহমুদ, মো. খোরশেদ আলম, রাজিব হায়দার, সালেহউজ্জামান খান প্রমুখ।
বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, ‘একদিকে ১৮ শতাংশ সুদহার, অন্যদিকে আমাদের পুঁজি থেকে ১-২ শতাংশ করে প্রায় ৫০ শতাংশ আয়কর কেটে নিলে আমাদের পক্ষে ব্যবসা পরিচালনা করা সম্ভব নয়।’
বিটিএমএ পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, বস্ত্রকলমালিকেরা মরে যাচ্ছেন। এমনিতেই বিদ্যমান নানা চ্যালেঞ্জের কারণে অধিকাংশ কারখানামালিক তাঁদের কারখানা বিক্রি করে দিতে চান। তার সঙ্গে নতুন করে এআইটি মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে যোগ হয়েছে।
বিটিএমএর আরেক পরিচালক মো. খোরশেদ আলম বলেন, দেশের বস্ত্রকল ধ্বংসের পরিকল্পনা নতুন নয়। এটি শুরু হয়েছে কয়েক বছর আগেই। এ ধরনের নানা ষড়যন্ত্র চলছে বলে জানান তিনি।
বিটিএমএ পরিচালক হোসেন মেহমুদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কের কারণে ব্যবসায়ীরা দেশটি থেকে তুলা আমদানি বাড়ানোর বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছেন। এমন পরিস্থিতিতে দুই শতাংশ অগ্রিম আয়কর আরোপ করা হলো। ফলে ব্যবসায়ীরা যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলে আমদানি বাড়ানোর পথে যেতে পারবে না।
বিটিএমএর তথ্যানুযায়ী, সংগঠনটির ১ হাজার ৮৫৮টি সুতাকল, উইভিং ও ডাইং-প্রিন্টিং-ফিনিশিং বস্ত্রকল রয়েছে। এ খাতে বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ২৩ বিলিয়ন ডলার। দেশের শীর্ষ রপ্তানি আয়ের খাত তৈরি পোশাকশিল্পের সুতা ও কাপড়ের ৭০ শতাংশের জোগানদাতা হচ্ছে বস্ত্র খাত। ফলে বস্ত্রশিল্পের যেকোনো সমস্যা তৈরি হলে তা পোশাকশিল্পেও এর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।