চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় অস্ত্রের মুখে দুটি বসতঘরে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বুধবার রাত ২টা থেকে সাড়ে ৩টার মধ্যে উপজেলার উত্তর পদুয়া সাদেক সিকদার পাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ডাকাত দল টাকা ও মালামাল লুট করে এবং এক পরিবারের দুই ভাইকে কুপিয়ে জখম করে।

ডাকাত দল মেহেদী হাসান ও তাঁর প্রতিবেশী আবুল কাসেমের পাকা বসতঘরের দরজা ভেঙে লুটপাট চালায়। এ সময় আহত দুজন হলেন সাদেক সিকদার পাড়া এলাকার বাসিন্দা মেহেদী হাসানের দুই ছেলে রায়হান উদ্দিন (২৫) এবং রিফাত হোসেন (২২)। বর্তমানে তাঁরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আমানুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল রাত ২টার দিকে প্রায় ৩০ সদস্যের একটি ডাকাত দল এলাকায় আসে। তাদের কাছে বন্দুক, ছুরিসহ দেশি অস্ত্র ছিল। এ সময় তারা আবুল কাসেমের ঘর থেকে ৬০ হাজার টাকা, ৪টি মুঠোফোন, আড়াই ভরি সোনার গয়নাসহ মালামাল লুট করে। এ ছাড়া মেহেদী হাসানের ঘর থেকে ৩ লাখ টাকা, সোনার গয়না, মুঠোফোনসহ অন্যান্য মালামাল নিয়ে যায়। এ সময় বাধা দিলে মেহেদী হাসানের দুই ছেলেকে কুপিয়ে জখম করে তারা। পরে আশপাশের এলাকার মসজিদের মাইকে ডাকাত আসার খবর প্রচার করা হলে তারা পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।

লোহাগাড়া থানার দায়িত্বরত উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল আলীম প্রথম আলোকে বলেন, খবর পাওয়ার পর পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এ সময়

এছাড়াও পড়ুন:

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বে বাড়িঘরে লুটপাট-আগুন, এক পক্ষ এলাকাছাড়া

রাস্তা-সংলগ্ন বাড়ি দুটির ফটকে তালা ঝুলছে। রাস্তা থেকে বসতঘরের খোলা জানালা দিয়ে আগুনে পোড়া আসবাবসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র দেখা যাচ্ছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নের ছলিমের বাড়ির মুজিবুর রহমানের ঘরের চিত্র এটি।

গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বে মুজিবুরের ঘরসহ ছলিমের বাড়ির গোষ্ঠীর ৩০টি বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের পর আগুন দেওয়া হয়। ঘটনার পর ছলিমের বাড়ির লোকজন গ্রামছাড়া। অভিযোগ উঠেছে, প্রতিপক্ষ চান্দের বাড়ির লোকজন এই হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালিয়েছে।

১৪ মে পূর্ববিরোধ ও মাদক সেবনে বাধা দেওয়াকে কেন্দ্র করে দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে মিয়াজুল হোসেন (৫০) নামের এক ব্যক্তি নিহত হন। তিনি নাটাই গ্রামের তোতা মিয়ার ছেলে এবং চান্দের বাড়ির গোষ্ঠীর লোক। তিনি সদর উপজেলা থেকে আশুগঞ্জের লালপুর পর্যন্ত সড়কে চলাচলকারী সিএনজিচালিত অটোরিকশা পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি ছিলেন। স্থানীয় সূত্র জানায়, ঘটনার পর ১৫ ও ১৬ মে চান্দের বাড়ি গোষ্ঠীর লোকজন প্রতিপক্ষ ছলিমের বাড়ির গোষ্ঠীর বাড়িঘরে হামলা-লুটপাট চালায়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সদরের নাটাই দক্ষিণ ইউনিয়নের চান্দের বাড়ি ও ছলিমের বাড়ি গোষ্ঠীর মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে অনেক বছর ধরে বিরোধ চলে আসছে। চান্দের বাড়ি গোষ্ঠীর নেতৃত্বে আছেন সাবেক ইউপি সদস্য তকদির হোসেন ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোবারক হোসেন। ছলিম বাড়ির গোষ্ঠীর নেতৃত্বে আছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুল্লাহ বাহার, সাবেক ইউপি সদস্য গোলাম মিয়া, সাইদ মিয়া ও স্থানীয় বিএনপি নেতা কামাল হোসেন।

আরও পড়ুনব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে অটোরিকশা মালিক সমিতির নেতা নিহত১৪ মে ২০২৫

গত শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, নাটাই মধ্যপাড়া, পশ্চিম পাড়া ও পূর্ব পাড়ায় ছলিমের বাড়ির লোকজনের অধিকাংশ বাড়িঘর ফাঁকা। নারী-পুরুষ কেউ নেই। বাড়িঘরে তালা ঝুলছে। বাইরে থেকে আগুনে পোড়া, লুটপাট ও ভাঙচুরের অবশিষ্ট অংশ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে। মধ্যপাড়ায় কয়েকজন বৃদ্ধ নারীকে দেখা যায়। তাঁদের একজন মুজিবুর রহমানের বাড়ির ফটকের তালা খুলে দিলে ভেতরে ঢুকে বসতঘরে আগুনে পোড়া আসবাব ও তোশক থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। কয়েকজন জানান, তাঁদের ৪২ ভরি স্বর্ণালংকার লুট হয়েছে। এ ছাড়া ৯ জনের ৩৭টি গরু নিয়ে গেছে হামলাকারীরা।

নাটাই মধ্যপাড়ার জামাল মিয়ার স্ত্রী সুমি বেগম বলেন, গত বুধবার রাত নয়টার দিকে চান্দের বাড়ির লোকজন অতর্কিতে হামলা চালায়। কোলের তিন মাস বয়সী ছেলেকে টানাহেঁচড়া করেছে। বসতঘরের পাঁচটি কক্ষে তারা আগুন দিয়েছে। আগুনে সব পুড়ে গেছে।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে হামলা–লুটপাটের পর অগ্নিসংযোগ করা হয়। গত শনিবার সদর উপজেলার নাটাই উত্তর ইউনিয়নে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শরীয়তপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা নিহত, বাড়িঘরে আগুন
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্বে বাড়িঘরে লুটপাট-আগুন, এক পক্ষ এলাকাছাড়া