চুয়াডাঙ্গায় ২০০ কোটি টাকার আম বাণিজ্যের আশা
Published: 23rd, May 2025 GMT
জ্যৈষ্ঠকে বলা হয় মধুমাস। নানা রকম সুস্বাদু ফল ফলে এ মাসে। তাই, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো— আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু প্রভৃতি। কবি জসীম উদ্দীনও তার ‘মামার বাড়ি’ কবিতায় লিখেছেন, ‘ঝড়ের দিনে মামার দেশে আম কুড়াতে সুখ, পাকা জামের মধুর রসে রঙিন করি মুখ।’
মধুমাসে আমের ব্যাপক ফলন হয় দেশের অন্যতম সুস্বাদু আম উৎপাদনকারী জেলা চুয়াডাঙ্গায়। এ জেলার আমের কদর রয়েছে দেশ ও দেশের বাইরে।
স্থানীয় চাষি ও কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, চুয়াডাঙ্গা জেলায় চলতি মৌসুমে ২০০ কোটির বেশি টাকার আম বাণিজ্যের সম্ভাবনা আছে।
আম পাড়ার পঞ্জিকা অনুযায়ী, পহেলা জ্যৈষ্ঠ (১৫ মে) থেকে আঁটি, গুটি ও বোম্বাই আম পাহরণের সময় শুরু হয়েছে। সে মোতাবেক আনুষ্ঠানিকভাবে এ মৌসুমের আম পাড়া উৎসব উদ্বোধন ঘোষণা করেছেন জেলা প্রশাসক জহুরল ইসলাম। এর পরপরই চুয়াডাঙ্গার আমচাষি, শ্রমিক ও ব্যবসায়ীরা দড়ি ও লগি নিয়ে বাগানে-বাগানে মেতে উঠেছেন আম পাড়ার উৎসবে।
আমচাষিরা জানিয়েছেন, তীব্র গরমের কারণে এবার আমবাগানে অতিরিক্ত সেচ দিতে হয়েছে। তাতে খরচ বেশি হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে যদি আমের ক্ষতি না হয়, তাহলে সবাই লাভবান হবেন।
এ বছর ২২ মে থেকে হিমসাগর, ২৮ মে থেকে ল্যাংড়া, ৫ জুন থেকে আম্রপালি (বারি আম-৩), ১৫ জুন থেকে ফজলি ও ২৮ জুন থেকে আশ্বিনা ও বারি আম-৪ সংগ্রহ ও বাজারজাত শুরু হবে।
কিছু কিছু আমচাষি বলছেন, আঁটির আম পাড়ার সময় ২০ বৈশাখ শুরু হলে সবচেয়ে ভালো হয়।
কেউ যেন অপরিপক্ব আম বাজারজাত করতে না পারেন এবং চাষি ও ব্যবসয়ীরা যেন সুষ্ঠুভাবে আম বাজারজাত করতে পারেন, সেজন্য নিয়মিত বাজার মনিটরিং অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম। তিনি চুয়াডাঙ্গার সুস্বাদু আম সংগ্রহের জন্য ভোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
চুয়াডাঙ্গায় এ বছর ২ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। এ জেলায় প্রায় ১২ হাজার কৃষক আম চাষের সঙ্গে জড়িত। আশা করা হচ্ছে, হেক্টর প্রতি ১৫ মেট্রিক টন হিসেবে এ বছর ৩৪ হাজার ৫০০ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের সম্ভাবনা আছে। গড়ে প্রতি কেজি ৬০ টাকা দর হিসেবে এ বছর ২০৭ কোটি টাকার আম বেচা-কেনা হতে পারে।
চুয়াডাঙ্গা মার্কেটিং অফিসার শহিদুল ইসলাম বলেছেন, গত বছরের মতো চলতি বছরেও চুয়াডাঙ্গার সুস্বাদু আম বিভিন্ন জেলায় মার্কেটিং করার জন্য জেলা টু জেলা কানেকটিভিটি বাড়ানো হয়েছে, যাতে কৃষকরা তাদের আম বাজারজাত করতে পারেন।
চুয়াডাঙ্গাসহ দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের জেলাগুলোর বাগানে-বাগানে চলছে আম সংগ্রহ ও বাজারজাত করার প্রস্তুতি। কৃষি বিভাগ ও কৃষকরা বলছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবছর আমচাষি ও ব্যবসায়ীরা অন্যান্য বছরের তুলন বেশি লাভবান হবেন।
ঢাকা/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র আম ব আম প ড় এ বছর আমচ ষ
এছাড়াও পড়ুন:
উল্টো রথযাত্রার মধ্য দিয়ে শেষ হলো রথ উৎসব
উল্টো রথযাত্রার মধ্য দিয়ে শনিবার শেষ হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় অনুষ্ঠান শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব। এ উপলক্ষে রাজধানী, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে উল্টো রথটান ছাড়াও পদাবলি কির্তন, বিশ্ব শান্তি ও মঙ্গল কামনায় অগ্নিহোত্রী যজ্ঞ, প্রার্থনা, আলোচনা সভা, ধর্মীয় বৈদিক নৃত্য, ভাগবতকথা, প্রসাদ বিতরণসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
গত ২৭ জুন রথ শোভাযাত্রা, রথের মেলাসহ নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এবারের রথযাত্রা উৎসব শুরু হয়েছিল। রথযাত্রার ৯ দিনের মাথায় অনুষ্ঠিত হয় উল্টো রথযাত্রা।
গতকাল আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির থেকে স্বামীবাগের ইসকন আশ্রম মন্দির পর্যন্ত বর্ণাঢ্য উল্টো রথের শোভাযাত্রা আয়োজন করে। দুপুরে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে উল্টো রথযাত্রা উদ্বোধন করেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক চারু চন্দ্র দাস ব্রহ্মচারী।
আলোচনা সভার পর বিকেলে বরণানুষ্ঠান ও পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষে তিনটি বিশাল রথে শ্রীশ্রী জগন্নাথ, বলদেব ও সুভদ্রা মহারানীর প্রতিকৃতিসহ উল্টো রথযাত্রা শুরু হয়। ঢাক, কাঁসর, ঘণ্টা ও উলুধ্বনির মধ্যে সব বয়সের শত শত নারী-পুরুষ বর্ণাঢ্য সাজে এতে অংশ নেন। শোভাযাত্রাটি পলাশীর মোড় থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাব, পল্টন, শাপলা চত্বর, টিকাটুলি ও জয়কালী মন্দির হয়ে স্বামীবাগ ইসকন মন্দিরে গিয়ে শেষ হয়।
এ ছাড়া পুরান ঢাকার তাঁতীবাজারের জগন্নাথ জিউ ঠাকুর মন্দির, জয়কালী রোডের রামসীতা মন্দির এবং শাঁখারীবাজার একনাম কমিটিসহ রাজধানীর অন্যান্য মন্দিরেও উল্টো রথযাত্রা হয়।
এদিকে গতকাল বিকেলে চট্টগ্রামে নগরীর তুলসীধাম মন্দিরের কেন্দ্রীয় রথযাত্রা উদযাপন কমিটি, নন্দনকানন শ্রী শ্রী রাধামাধব মন্দির এবং শ্রীকৃষ্ণ ইসকন মন্দিরের উদ্যোগে আলাদা আলাদাভাবে উল্টো রথযাত্রা বের হয়। এসব আয়োজনে অংশ নেন বিপুলসংখ্যক মানুষ।
সনাতনী রীতি অনুযায়ী, প্রতি বছর আষাঢ়ের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে শুরু হয় জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা। পুরীর জগন্নাথ দেবের মন্দির থেকে এই রথযাত্রার প্রচলন।