Samakal:
2025-07-13@10:10:47 GMT

সর্দার ডাংগুলি

Published: 23rd, May 2025 GMT

সর্দার ডাংগুলি

‘বাবা, সব ভেড়ার পশম ছাঁটাই করো। কিন্তু ডাংগুলির কেন করো না?’
রাখালের ছোট্ট ছেলে তার বাবাকে জিজ্ঞেস করে।
বাবা মুচকি হেসে বলেন,
‘ডাংগুলি তো আমাদের সাধারণ কোনো ভেড়া নয়। তিব্বত অঞ্চলের বিশেষ জাতের ভেড়া। দেখিসনি, কত সুন্দর পশম তার! চড়া দাম। আগামী বছর পরিচিত এক পশম ব্যবসায়ী বেশ দাম দিয়ে কিনে নেবে বলেছেন।’
ভেড়াটির নাম ‘ডাংগুলি’। পালের সবাই তাকে ডাকে ‘ডাংগু ভাই’। একই পালের হলেও সে নিজেকে সবার চেয়ে আলাদা মনে করে। তার পশমগুলো বড়, তুলতুলে ও ঝকঝকে। তা নিয়ে সে কী গর্ব তার! অন্য ভেড়াদের নিয়ম করে পশম ছাঁটা হয়। পশম ছাঁটাইয়ের পর ভেড়াগুলোর সৌন্দর্য নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করে ডাংগুলি! ভেড়ারা খালের যে পাড়ে পানি খায়, সে ওই পাড়ে পানি খায় না। চারণভূমিতে তার জন্য আলাদা জায়গা বরাদ্দ থাকে। সে নিজেকে ভেড়াদের সর্দার মনে করে। 
নিয়মে বাঁধা ভেড়াদের জীবন– সকালে পাখির ডাকে ঘুম থেকে ওঠা, সন্ধ্যায় মোরগের ডাকে ঘুমাতে যাওয়া, নির্দিষ্ট চারণভূমিতে সারাদিন চরে চরে ঘাস খাওয়া, রাখাল পশম কাটতে চাইলে লক্ষ্মীবাচ্চার মতো তা কাটতে দেওয়া।
ডাংগুলি এসব নিয়ম মানে না। এসব সাধারণ নিয়ম কেন মানবে সে? উলটো সে নিয়ম বানাবে, অন্যরা সেটি মানবে। তবেই না সে সর্দার!
একদিন সকালে ডাংগুলি সব ভেড়ার উদ্দেশে বলল,
‘প্রিয় ভাই সকল, আমরা সারাজীবন এই চারণভূমির ঘাস খেয়ে বড় হয়েছি। কখনও কি ভেবে দেখেছো, খালের ওপারে কত সুন্দর চারণভূমি রয়েছে! আমরা চাইলেই নতুন ঘাসের স্বাদ নিতে পারি। ’ 
নতুন ঘাসের কথা শুনে ভেড়াদের জিহ্বায় পানি চলে এলো।
ডাংগুলি আরও বললো,
‘আমি থাকতে তোমাদের ভয়ের কিছু নেই। রাখাল যখন দুপুরে খেতে যাবে, সেই সুযোগে আমরা খালের ওপারে ঘাস খেতে যাব।’
পাল থেকে একটি ভেড়া কান তুলে জিজ্ঞাসা করল, ‘কিন্তু ডাংগু ভাই, খালে তো পানি। পার হব কীভাবে?’
ডাংগুলি হাসতে হাসতে বলল, ‘এজন্যই তোমরা নিচু জাতের ভেড়া। একফোঁটাও বুদ্ধি নেই। দেখো না, মানুষরা কীভাবে খালটি পার হয়। সাঁকো দিয়ে।’
পাল থেকে আরেকটি ভেড়া সাহস করে বললো,
‘কিন্তু ডাংগু ভাই, আমাদের তো সাঁকো পার হওয়া নিষেধ। ওটা  মানুষের জন্য।’
ডাংগুলি আবারও অট্ট হাসল। বললো,
‘মানুষরা যা ব্যবহার করে আমরা তা ব্যবহার করতে পারব না কে বলেছে? পরিবর্তনের যুগ এসেছে। নিজেদের মধ্যে পরিবর্তন আনতে হবে। নতুন কিছু করতে হবে। নতুন ঘাসের স্বাদ নিতে হবে।’
ডাংগুলির কথা শুনে ভেড়াদের মনে সাহস এলো। সবাই একসাথে বলে উঠল,
‘জি ভাই, জি ভাই।’ 
ততক্ষণে দুপুর গড়াল। ভেড়াগুলো স্লোগান ধরল,
    ‘তোমার ভাই, আমার ভাই,
    ডাংগু ভাই! ডাংগু ভাই!
    ডাংগু ভাই এগিয়ে চলো,
    আমরা আছি তোমার পাশে।’
    একটি ভেড়া আস্তে করে বলল,
    ‘পাশে নয়, বলো আমরা আছি তোমার পিছে।’
ভেড়ার পাল মিছিল করতে করতে সাঁকোর কাছে এসে পৌঁছাল। সবার আগে সর্দার ডাংগুলি। বুক টান করে, বড় পশমগুলো ফুলিয়ে, হেলে-দুলে সাঁকো পার হতে লাগল। পেছনে ভেড়ার পাল। 
সাঁকোটি ছিল চিকন, সরু এবং বেশ পুরোনো। ভেড়ার পাল যেই-না সাঁকোটির মাঝখানে এসে পৌঁছাল অমনি মড়াৎ করে ভেঙে পড়ল!
সর্দার ডাংগুলিসহ সকল ভেড়া খালের পানিতে পড়ে গেল।  
কিছুদিন আগেই ভেড়াগুলোর পশম ছাঁটাই করা হয়েছিল। তাই তারা পানিতে হাবুডুবু খেয়ে হলেও কোনোমতে নিজ চারণভূমিতে ফিরে আসতে পারল। 
কিন্তু সর্দার ডাংগুলির পশম তো কত সুন্দর ও লম্বা! তার অহংকার সেই পশম। তা তো কাটা হয়নি অনেক মাস। ঘন পশম পানিতে  ভিজে এতই ভারী হয়ে গিয়েছিল যে, সাঁতার তো দূরে থাক–সে পানির ওপরে মাথাটাও তুলতে পারল না। n

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চ রণভ ম স ন দর

এছাড়াও পড়ুন:

চ্যাটজিপিটি ৫ প্রকাশের আগেই এল গ্রোক ৪, মাসিক খরচ ৩০০ ডলার

চ্যাটজিপিটি ৫ প্রকাশের আগেই নতুন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) মডেল উন্মোচন করল ইলন মাস্কের প্রতিষ্ঠান এক্সএআই। বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই, ‘গ্রোক ৪’ নামের এই নতুন চ্যাটবটটি এক সরাসরি সম্প্রচারে (লাইভস্ট্রিম) উন্মোচন করা হয়। একই সঙ্গে চালু হয়েছে এর উচ্চক্ষমতার সংস্করণ ‘গ্রোক ৪ হেভি’ এবং নতুন সাবস্ক্রিপশন প্ল্যান ‘সুপারগ্রোক হেভি’।

প্রতিষ্ঠানটির দাবি, গ্রোক ৪ এখন পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী এআই মডেল। এক্সএআইয়ের মতে, নতুন এই মডেল একাডেমিক জ্ঞান ও বিশ্লেষণী দক্ষতায় এতটাই উন্নত যে, এটি পিএইচডি পর্যায়ের গবেষকের চেয়েও ভালো পারফরম্যান্স দিতে পারে। যদিও মডেলটি এখনো নতুন কোনো প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেনি, ইলন মাস্কের ভাষ্য অনুযায়ী ভবিষ্যতে সেটিও সম্ভব। গ্রোক ৪ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস যন্ত্রের জন্য গ্রোক অ্যাপে এটি ব্যবহার করা যাচ্ছে। ব্যবহারকারীরা এখনই এটি ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছেন।

এক্সএআই জানিয়েছে, ‘হিউম্যানিটি লাস্ট এক্সাম’ নামের এক পরীক্ষায় অংশ নিয়ে গ্রোক ৪ উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে। কোনো ধরনের সহায়ক টুল ছাড়াই এই পরীক্ষায় মডেলটি ২৫ দশমিক ৪ শতাংশ নম্বর পায়। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, এতে গুগলের জেমিনি ২ দশমিক ৫ প্রো এবং ওপেনএআইয়ের ও থ্রি মডেলকেও ছাড়িয়ে গেছে গ্রোক ৪। যখন টুল ব্যবহারের সুযোগ রাখা হয়, তখন সেই পরীক্ষায় গ্রোক ৪ পায় ৪৪ দশমিক ৪ শতাংশ স্কোর, যা গুগলের শীর্ষস্থানীয় মডেলের চেয়েও বেশি।

গ্রোক ৪-এর পাশাপাশি চালু হয়েছে ‘গ্রোক ৪ হেভি’ নামের একটি উন্নত সংস্করণ। এ জন্য চালু করা হয়েছে ‘সুপারগ্রোক হেভি’ নামের একটি সাবস্ক্রিপশন প্ল্যান। এর মাসিক খরচ ৩০০ মার্কিন ডলার। এটি মূলত গবেষক, সফটওয়্যার নির্মাতা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর কাজের সঙ্গে জড়িত পেশাজীবীদের জন্য তৈরি। সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য এটি এখনো অনেক ব্যয়বহুল।

সূত্র: নিউজ১৮

সম্পর্কিত নিবন্ধ