ভারী বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে দেশের ২১টি জেলা জলাবদ্ধতার শিকার হয়েছে। যার ফলে ৭২ হাজার ৭৬ হেক্টর জমির ফসল পানিতে ডুবে গেছে। আউশ, আমন বীজতলা, শাকসবজি, পাট, ফলবাগানসহ বিভিন্ন ফসল তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকদের মাথায় হাত। ফলে আগামী কয়েক মাসে কৃষি উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। উৎপাদন ব্যাহত হলে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখাও কঠিন হবে। কৃষককে বাঁচাতে, ভোক্তার স্বার্থে সর্বোপরি খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত রাখতে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

কৃষি মন্ত্রণালয় ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কুমিল্লা, নোয়াখালী ও ফেনী জেলা। এসব জেলার কৃষকদের কাছে দ্রুত ছুটে যেতে হবে জেলা প্রশাসন, কৃষি বিভাগসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। ফেনী ও নোয়াখালীর পরিস্থিতি আলাদাভাবে বলতেই হয়। গত বছরেও স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার শিকার হয়েছিল এ দুই জেলা।

এখনো বন্যার সেই ক্ষত সারেনি। এবার আবারও একটা ধাক্কা খেতে হলো জেলা দুটিকে। বৃষ্টি থেমে যাওয়ায় ফেনী ও নোয়াখালীর বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। মানুষজন আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। তবে এখনো অনেক এলাকায় পানিবন্দী হয়ে আছে হাজারো মানুষ। অসংখ্য ঘরবাড়ি ভেঙেছে, গ্রামীণ সড়কগুলো এখনো জলমগ্ন। পুকুর ও হ্যাচারির খামারিরাও ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছেন।

ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য যে টাকা সরকার থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এই দুই জেলার বন্যা ও জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মুসাপুর রেগুলেটর, বামনী ক্লোজার ও ফেনীতে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের নকশা চূড়ান্ত করা এবং নোয়াখালীর খাল ও ড্রেনেজ অবমুক্ত করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কথা হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত ও তীর প্রতিরক্ষা কাজের কথাও জানানো হয়েছে। আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, জুলাই মাসে এমন বৃষ্টি স্বাভাবিক। তাহলে কেন আমাদের বাঁধগুলো এই স্বাভাবিক বৃষ্টিতেই ভেঙে পড়ছে? কেন লাখো মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ছেন? ৭ হাজার ৩৪০ কোটি টাকার যে বাঁধ মেরামত প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, তা কেন বাস্তবায়িত হচ্ছে না? আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতা, রাজনৈতিক আনুকূল্যের অভাব বা ঠিকাদার–সংক্রান্ত ঝামেলা যা–ই হোক, সেসব জটিলতা দূর করে জনদুর্ভোগ দূর করুন।

অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও দুর্বল নিষ্কাশনব্যবস্থার কারণে জেলার শহর এলাকায় জলাবদ্ধতা ঘটছে। মানুষ ত্রাণ বা চিড়া-গুড় নয়, চায় স্থায়ী সমাধান। দেশের পূর্বাঞ্চল এখন বন্যাপ্রবণ এলাকায় পরিণত হচ্ছে। সেখানকার কৃষি ও জনজীবন রক্ষায় বাড়তি মনোযোগ দরকার।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টস জিতে ব্যাট করছে বাংলাদেশ

নারীদের ওয়ানডে বিশ্বকাপে নিজেদের পঞ্চম ম্যাচে আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ। বিশাখাপত্তনমে বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে তিনটায় মাঠে গড়িয়েছে ম্যাচটি। বাংলাদেশের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষের ম্যাচে বাংলাদেশ দুটি পরিবর্তন এনেছে। অস্ট্রেলিয়াও তাদের একাদশে দুটি পরিবর্তন এনেছে।

আরো পড়ুন:

নাঈমকে বাদ দিয়ে সৌম‌্যকে ফেরাল বিসিবি, নতুন মুখ মাহিদুল

বিশ্বকাপের আরো এক ম্যাচ বৃষ্টির পেটে

টস জিতে জ্যোতি বলেন, “আজ আমাদের মূল লক্ষ্য হলো বোর্ডে ভালো একটা স্কোর দাঁড় করানো। আগের ম্যাচে আমরা কমপক্ষে ৩০–৪০ রান কম করেছি। আজ দলে দুটি পরিবর্তন এনেছি ফারিহা তৃষ্ণা ও নিশিতা আখতার ফিরেছেন একাদশে। আমাদের বোলিং ইউনিটটা খুবই শক্তিশালী। আগের ম্যাচে নাহিদা আক্তার চোট পেয়েছে, ওর কিছুটা সময় লাগবে সেরে উঠতে। আগের ম্যাচের পর মানসিকভাবে সামলে ওঠা কঠিন ছিল, কিন্তু কোনো অজুহাত দিতে চাই না। আমরা চাই খেলা উপভোগ করতে, নিজেদের শতভাগ উজাড় করে দিতে।”

অ্যালিসা হিলি বলেন, “আমিও আসলে টস জিতলে ব্যাটিংই নিতে চেয়েছিলাম। আজ বাতাসটা মনোরম, সূর্যের আলোও ভালো—মেয়েরা খেলতে উপভোগ করবে নিশ্চয়ই। ২০১১ সালে এই মাঠটা ছিল আমার প্রিয় জায়গা, তাই এখানে খেলতে ফিরতে পেরে ভালো লাগছে। নতুন প্রতিপক্ষ, নতুন চ্যালেঞ্জ। দলে দুটি পরিবর্তন এনেছি- ডার্সি ব্রাউন ফিরেছে কিম গার্থের জায়গায়, আর জর্জিয়া ওয়ারহ্যাম খেলছে সোফি মোলিনিউক্সের জায়গায়। ইন্দোরে টানা দুইটা গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ আছে, তাই সবাইকে সতেজ রাখতে চাই। ব্রাউনকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে, ও কীভাবে শুরু করে সেটা দেখার জন্য মুখিয়ে আছি।”

বাংলাদেশ একাদশ:
রুবিয়া হায়দার, ফারজানা হক, শারমিন আখতার, নিগার সুলতানা (অধিনায়ক ও উইকেটকিপার), সোবহানা মোস্তারি, শর্না আখতার, ফাহিমা খাতুন, রাবেয়া খান, রিতু মনি, নিশিতা আখতার নিশি ও ফারিহা তৃষ্ণা।

অস্ট্রেলিয়া একাদশ:
অ্যালিসা হিলি (অধিনায়ক ও উইকেটকিপার), ফিবি লিচফিল্ড, এলিস পেরি, বেথ মুনি, আনাবেল সাদারল্যান্ড, অ্যাশলি গার্ডনার, তাহলিয়া ম্যাকগ্রা, জর্জিয়া ওয়ারহ্যাম, ডার্সি ব্রাউন, আলানা কিং ও মেগান শাট।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ