প্রচলিত খাদ্যাভ্যাসে ক্যান্সারের ঝুঁকি
Published: 23rd, May 2025 GMT
সুপারশপগুলোতে গেলে নানা প্রকার প্রক্রিয়াজাত ও রেডি টু কুক খাবারের প্রতি মানুষ আকৃষ্ট হয়। প্রতিদিন সকালের নাশতার পরোটা থেকে শুরু করে নাগেটস, সসেজ, চিকেন ফ্রাই বা বলের মতো মুখরোচক আইটেম থাকে খাবারের তালিকায়। অনেকেই ব্যস্ত নাগরিক জীবনে একটু সময় বাঁচাতে এসব খাবারে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছেন।
ক্রেতাদের ব্যাপক চাহিদার কথা মাথায় রেখে আমাদের দেশেও শীর্ষস্থানীয় খাদ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো নিত্যনতুন প্রক্রিয়াজাত খাবার বাজারে ছাড়ছে। অথচ এসব খাবার দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে প্রচুর পরিমাণে লবণ ও অন্যান্য প্রিজারভেটিভ, যা মানুষের স্বাস্থ্যে ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একাডেমি অব সায়েন্সের একটি নিজস্ব পরিষদ আছে, যার নাম ন্যাশনাল রিসার্চ কাউন্সিল। কী কী খাবার মানবদেহে ক্যান্সারের মতো ঘাতক ব্যাধির প্রকোপ বাড়াতে পারে তার কিছু নির্দেশনা এখান থেকে দেওয়া হয়েছিল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল চর্বি ও প্রক্রিয়াজাত খাবারের পরিমাণ কমানো এবং আঁশ জাতীয় খাবার, ফলমূল, শাকসবজি অর্থাৎ প্রকৃতি থেকে যে খাবারগুলো সরাসরি পাই তার পরিমাণ বাড়ানো। জটিল কার্বোহাইড্রেট যেমন ভাত, রুটি, আলু ইত্যাদি খাবার যথাযথ পরিমাণে গ্রহণ করা এবং সরল কার্বোহাইড্রেট যেমন পরিশোধিত চিনি এবং প্রক্রিয়াজাত ও ঝলসানো খাবারের পরিমাণ কমানো।
ক্ষতিকারক ট্রান্সফ্যাট ও চর্বির পরিমাণ অনেক বেড়েছে। কারণ যুগের পরিবর্তনে নতুন প্রজন্ম ফাস্টফুড কালচারে আসক্ত হয়ে পড়ছে। পিৎজা, পাস্তা, চিকেন ফ্রাই, চাউমিন, সসেজ– এসব যেন চিরায়ত বাঙালি খাবারের বিকল্প হয়ে উঠছে। নানা রকম মসলায় সল্টেড চিপস ও গ্রিল্ড এবং রেডি টু কুক খাবার রক্তে ক্যান্সারের ঝুঁকি ব্যাপক বাড়িয়ে দিচ্ছে। পাশাপাশি এগুলো উচ্চ রক্তচাপ, কোলেস্টেরল এমনকি শারীরিক স্থূলতার জন্য বিশেষভাবে দায়ী। কেননা যারা জটিল কার্বোহাইড্রেট ও আঁশ জাতীয় খাবার নির্দিষ্ট পরিমাণে গ্রহণ করেন, তাদের মাঝে পাকস্থলী, অন্ত্র প্রভৃতির ক্যান্সারের প্রকোপ কম দেখা যায়। ভিটামিন এ পাকস্থলী, রক্তনালি ও ফুসফুসের ক্যান্সার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে। অন্যদিকে রেডি টু কুক বা প্রক্রিয়াজাত খাবার গ্রহণ শরীরের অতিরিক্ত পরিমাণ পাচক রস নিঃসরণে সাহায্য করে। দিন দিন আমরা স্বাস্থ্য সচেতন ও আধুনিক হওয়ার নামে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসেই অভ্যস্ত হয়ে উঠছি। খাবারের প্রাকৃতিক গুণ
যখন সম্পূর্ণভাবে বিনষ্ট হয় তখন তা মানবদেহে প্রায় বিষ হিসেবে কাজ করে। প্রকৃতির সঙ্গে আমাদের ভারসাম্য
রক্ষা ও যোগাযোগ যতটা নিবিড় হবে ততই সুস্বাস্থ্য ও সমৃদ্ধি বয়ে আনবে।
nমাহজাবিন আলমগীর:
শিক্ষিকা, মোহাম্মদপুর, ঢাকা
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রক র য় জ ত র পর ম ণ
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারের প্রস্তাবিত নীতিতে ইন্টারনেটের দাম ২০% বাড়বে: আইএসপিএবি
সরকারের প্রস্তাবিত নীতিমালায় বিভিন্ন ফি ও চার্জ আরোপের কারণে গ্রাহক পর্যায়ে ইন্টারনেট সেবার খরচ আরও অন্তত ২০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়বে বলছেন দেশের ইন্টারনেট সেবাদাতারা।
ইন্টারনেটের দাম বাড়ার বিষয়টি দায়িত্বশীল নেতৃত্বের হাতে ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর হস্তক্ষেপ চেয়েছেন সেবাদাতারা।
আজ সোমবার রাজধানীর একটি হোটেলে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারস অ্যাসোসিয়েশন (আইএসপিএবি) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানায়।
সম্প্রতি বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) ফিক্সড টেলিকম সার্ভিস প্রোভাইডারদের (এফটিএসপি) জন্য একটি গাইড লাইনের খসড়া করেছে। এ নিয়ে আপত্তি তুলেছে আইএসপিএবি।
নতুন গাইডলাইনে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ রেভিনিউ শেয়ার এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলের জন্য ১ শতাংশ দিতে হবে। এ ছাড়া এফটিএসপি অপারেটরদের ক্রয়মূল্য ১৪ শতাংশ বাড়বে।
আইএসপিএবির সভাপতি আমিনুল হাকিম বলেন, টেলিযোগাযোগ খাত নিয়ে সরকার তার উদ্দেশ্য থেকে বেরিয়ে এসেছে এবং জনগণের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না। সরকার ভুল পথে এগিয়ে যাচ্ছে।
আমিনুল হাকিম বিদ্যমান নীতির সঙ্গে প্রস্তাবিত নীতির তুলনামূলক উপস্থাপনা তুলে ধরে বলেন, বিদ্যমান নীতিতে সরকার এই খাত রেভিনিউ শেয়ারিং, সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল এবং ভ্যাটসহ ২১ দশমিক ৪৫ শতাংশ পায় কিন্তু নতুন নীততে তা ৪০ দশমিক ২৫ শতাংশ হবে। সরকারি নীতিতে শহর ও গ্রামে বৈষম্য বাড়বে।
আমিনুল হাকিম বলেন, বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসা সরকার বৈষম্য উপহার দিচ্ছে। সরকার একদিকে ইন্টারনেটের দাম কমানোর কথা বলছে, অন্যদিকে নিজেরা দাম বাড়াচ্ছে। তিনি আরও বলেন, স্টারলিংকের জন্য সরকার লাইসেন্স ফি ধরেছে ১০ হাজার ডলার অর্থাৎ ১২ লাখ টাকা। কিন্তু দেশের আইএসপিদের জন্য তা ২৫ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। তাঁর প্রশ্ন, স্টারলিংককে এত সুবিধা দেওয়ার কারণ কি?
সংবাদ সম্মেলনে আইএসপিএবি বলেছে, প্রস্তাবিত খসড়া গাইডলাইনে মোবাইল অপারেটরদের ফিক্সড ওয়্যারলেস একসেস এবং লাস্ট মাইল ফাইবার সংযোগের মাধ্যমে ফিক্সড কানেক্টিভিটি দেওয়ার স্পষ্ট অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যা দেশীয় এবং নিজস্ব বিনিয়োগে গড়ে ওঠা আইএসপিগুলোর জন্য চরম অসম প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করবে। এ ছাড়া বড় প্রভাব পড়বে সাধারণ গ্রাহকের ওপর।