ভারতে রাসায়নিক কারখানায় বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪২
Published: 1st, July 2025 GMT
ভারতের তেলেঙ্গানায় একটি রাসায়নিক কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪২ জনে দাঁড়িয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় পুলিশ এ তথ্য জানিয়েছে। খবর দ্য ওয়ালের।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল সোমবার সকালে তেলেঙ্গানার সাঙ্গারেড্ডি জেলায় শিল্পতালুক এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, কারখানার ছাদ উড়ে গিয়ে ১০০ মিটার দূরে পড়ে। ধ্বংসস্তূপের তলা থেকে একের পর এক উদ্ধার করা হচ্ছে কারখানা শ্রমিকদের মরদেহ। সোমবার রাত পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ছিল ১৩। মঙ্গলবার সকাল থেকে আরো মরদেহ উদ্ধার করার পর তা প্রথমে ৩৪ এবং পরে ৪২-এ গিয়ে পৌঁছেছে।
উদ্ধারকাজের শেষ পর্বের কাজ এখনও চলছে বলে জেলার পুলিশ সুপার জানিয়েছেন। প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে, সোমবার সকালে একটি রিঅ্যাক্টর ফেটে বিস্ফোরণ ঘটে। তেলেঙ্গানার স্বাস্থ্যমন্ত্রী দামোদর রাজানরসিংহ জানান, বিস্ফোরণের সময় ৯০ জনের মতো শ্রমিক কারখানায় কাজ করছিলেন। রাসায়নিক ও আগুনে ঝলসে কারখানাটির আরো অনেক কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন।
আরো পড়ুন:
মহেশপুর সীমান্তে ভারতীয় নারী আটক
ভারতে রাসায়নিক কারখানায় বিস্ফোরণে নিহত ৫, আহত ১৫
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী এই দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর শোকপ্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নিহতদের পরিবারকে ২ লাখ রুপি এবং আহতদের ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছেন।
পুলিশের উচ্চ পদস্থ একজন কর্মকর্তা সোমবার বলেছিলেন, বিস্ফোরণের কারণ জানা যায়নি। ধ্বংসস্তূপ পুরোপুরি না সরানো গেলে ফরেনসিক কাজ শুরু করতে দেরি হচ্ছে। বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, কয়েকজন বিস্ফোরণের জেরে উড়ে গিয়ে প্রায় শখানেক মিটার দূরে গিয়ে ছিটকে পড়েন। কারখানার বিস্ফোরণে একটি বাড়ি ভেঙে পড়ে এবং সংলগ্ন একটি বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে।
জেলা প্রশাসক ও এসপি ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থেকে আগুন নেভানো ও উদ্ধারকাজের তদারক করেন। তারা জানান, সিগাচি ইন্ডাস্ট্রিজ প্রাইভেট লিমিটেড নামে ওই কারখানায় মাইক্রোক্রিস্ট্যালিন সেলুলোজ ও খাবারে মেশানোর রাসায়নিক তৈরি হতো। বিস্ফোরণের জেরে গোটা এলাকা রাসায়নিক ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। তাতে অনেকের শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। পুলিশ-প্রশাসন দ্রুত আশপাশের মানুষকে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে নিয়ে যায়।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতে পুতিনকে কেন গ্রেপ্তার করা হবে না
যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০২৩ সালের মার্চে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সে সময় পুতিনকে একজন ‘যুদ্ধাপরাধী’ আখ্যায়িত করে বলেছিলেন, এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ন্যায়সংগত। তবে যুক্তরাষ্ট্র আইসিসির সদস্য কোনো দেশ নয়।
২০০০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন রোম সংবিধিতে স্বাক্ষর করেছিলেন, ওই সংবিধির আলোকে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট কখনো ওই চুক্তিকে আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক করার জন্য অনুসমর্থনের জন্য পদক্ষেপ নেয়নি।
বিল ক্লিনটন রোম সংবিধিতে স্বাক্ষরের দুই বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের সম্পৃক্ততার অবসান ঘটান। এর পেছনে যুক্তি হিসেবে তিনি বলেছিলেন, প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে।
সে কারণে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কার্যকারিতা আমেরিকার মাটিতে নেই।
এদিকে ট্রাম্প প্রশাসন প্রকাশ্যে আইসিসির প্রতি বৈরিতা করছে। নেদারল্যান্ডসের হেগ শহরে অবস্থিত এই আদালতের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ওয়াশিংটন। আফগানিস্তানে যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্রের সেনারা যুদ্ধাপরাধ করেছেন, এমন অভিযোগের তদন্ত করায় আইসিসির ওই সব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এ পদক্ষেপ নেয় ট্রাম্প প্রশাসন।
আইসিসির এখতিয়ারের এই ঘাটতিই পুতিনের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আজকের বৈঠকের স্থান হিসেবে আলাস্কাকে বেছে নেওয়ার একটি কারণ হতে পারে।
অবশ্য আইসিসির স্বাক্ষরকারী দেশ মঙ্গোলিয়ায় ২০২৩ সালের আগস্টে সফর করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সে সময় তাঁকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিলের অনুরোধ করা হলেও তাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিল দেশটি। সে জন্য মঙ্গোলিয়াকে কোনো পরিণতি ভোগ করতে হয়নি।
শেষ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক আইন কেবল ততটাই কার্যকর হয়, যতটা দেশগুলোর সরকার এবং তাদের নেতারা কার্যকর করতে চান। আর এই ক্ষেত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে দেখা করতে চান এবং এই সাক্ষাৎ তাঁর পছন্দ মতো করতে তাঁকে আটকানোর মতো কিছুই নেই।